Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

বাহিরে অন্তরে (৩): ভ্যালেন্টাইন’স ডে

তসলিমা নাসরিন

ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৪

Taslima Nasrin column on Valentine's Day
Bookmark (0)
Please login to bookmark Close

ভ্যালেন্টাইন’স ডে (Valentine’s Day) অদ্ভুত একটা দিন বটে। ছোটবেলায় এরকম দিনের নাম শুনিনি। হঠাৎ যেন উড়ে এসে জুড়ে বসল। জুড়ে বসে ভালো কাজ যদি করতে পারে করুক।

ভ্যালেন্টাইন’স ডে’র উৎস নিয়ে নানা মুনির নানা মত। সবচেয়ে যেটা গ্রহণযোগ্য, সেটা হল, লুপারকালিয়া বলে প্রাচীন রোমে এক উৎসব ছিল, যেটি ফেব্রুয়ারির ১৩ থেকে ১৫ তারিখ অবধি হত। যে উৎসবে নারী-পুরুষ প্রচুর মদ্যপান করত, আর দৈহিক সম্পর্কের জন্য সঙ্গী বেছে নিত। রোমের মানুষ তাদের প্রাচীন ধর্ম ত্যাগ করে খ্রিস্টধর্মে ধর্মান্তরিত হচ্ছিল যত বেশি, প্রাচীন রোমের দেবীর নামে লুপারকালিয়া উৎসবকে তত তারা মানতে পারছিল না। উৎসবটি খুব জনপ্রিয় ছিল বলে পুরো ছেড়েও দিতে পারছিল না। শেষে এমন হল, উৎসবটি করতে লাগল, কিন্তু উৎসবটিকে সেইন্ট ভ্যালেন্টাইনের নামে উৎসর্গ করে, তবে। সেই সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন, খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করার কারণে রোমের সম্রাট দ্বিতীয় ক্লদিয়াস তৃতীয় শতকে যার গর্দান কেটেছিলেন।

Saint-Valentine
সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন

ইতিহাসবিদ নোয়েল লেন্সকি বলেছেন, লুপারকালিয়া উৎসবে পুরুষেরা দেবী লুপারকাসের উদ্দেশে একটি ছাগল আর একটি কুকুর বলি দিত। তারপর সেই মৃত ছাগল বা কুকুরের চামড়া দিয়ে উৎসবের মেয়েদের বেদম মারত। তারা বিশ্বাস করত, এই মার খেলে মেয়েদের প্রজনন ক্ষমতা বাড়ে। লুপারকালিয়া উৎসব ছিল সবার মদ খাওয়ার উৎসব, মদ খেতে খেতে মাতাল হওয়ার উৎসব, মাতাল হতে হতে ন্যাংটো হওয়ার উৎসব, ন্যাংটো হতে হতে লটারির উৎসব, লটারির কৌটো থেকে যে পুরুষ যে মেয়ের নাম ওঠাত, তার সঙ্গে সেই পুরুষ দৈহিক সম্পর্ক করত সে রাতে। শুধু সে রাতে নয়, ইচ্ছে হলে আরও কিছু রাতে, কেউ কেউ বিয়ে করে নিত। রোমের মানুষেরা খ্রিস্টান হওয়ার পর ওই উৎসবের নাম যেমন বদলে দিয়েছে, নগ্ন শরীরে কাপড়ও পরিয়েছে। পোপ প্রথম জেলাসিয়াস পঞ্চম শতাব্দীতে এটিকে খ্রিস্টানদের ছুটির দিন ঘোষণা করেছিলেন।

Lupercalia festival
১৬৩৫ সালের অয়েল পেন্টিং-এ শিল্পীর চোখে লুপারকালিয়া উৎসব

মধ্যযুগের ইংরেজ কবি জেফ্রি চশার, আর উইলিয়াম শেক্সপিয়ার ভ্যালেন্টাইন’স ডে’কে রোমান্টিক দিন বলেছেন, এ নিয়ে পদ্য রচনাও করে গেছেন। চশার যদি ভ্যালেন্টাইন’স ডে’কে (Valentine’s Day) রোমান্টিক আখ্যা না দিতেন, যদি কাব্য করে না বলতেন সঙ্গী পছন্দ করার জন্য নানা রঙের পাখি ঝাঁক বেঁধে ছুটে আসত, তাহলে দিনটির সঙ্গে হয়তো ভালোবাসা এসে মিশত না এমন। ন্যাংটো হয়ে মেয়েদের ওপর নির্যাতন করার ওই প্রাচীন পুরুষতান্ত্রিক উৎসবটিকে ‘রোমান্টিক’ না বলা হলে আমার মনে হয় না, দিনটি প্রেমের দিন হিসেবে এভাবে প্রতিষ্ঠিত হত। যে দুজন ভ্যালেন্টাইন নামের সন্তকে মেরে ফেলা হয়েছিল মধ্য ফেব্রুয়ারিতে, তাঁদের কেউই কিন্তু রোমান্টিক লোক ছিলেন না। রোমের সম্রাট দ্বিতীয় ক্লদিয়াস রোমের সৈন্যদের বিয়ে নিষিদ্ধ করে দিয়েছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, জানি না কেন, বিবাহিত পুরুষেরা ভালো সৈন্য হওয়ার উপযুক্ত নয়। রোমের পুরোহিত ভ্যালেন্টাইন দাঁড়িয়েছিলেন সম্রাটের নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে। গোপনে বিয়ে করেছিলেন তিনি, সৈন্যদের বিয়েও দিয়েছিলেন। ১৪ ফেব্রুয়ারিতে তাঁর গর্দান কাটা যায়, গর্দান কাটার আগে নাকি জেলারের মেয়ের প্রেমে পড়েন তিনি, একটি চিঠির শেষ ছত্রে লিখেছিলেন, ‘ফ্রম ইয়র ভ্যালেন্টাইন’।

Geoffrey Chaucer
মধ্যযুগের ইংরেজ কবি জেফ্রি চশার

আজ একবিংশ শতাব্দীতেও সেই ভ্যালেন্টাইনের নামে দিবস পালন হচ্ছে। তবে দিবসটি এখন ব্যবসায়ীদের জন্য বিশাল দিন। প্রতি বছর ভ্যালেন্টাইন’স ডে’র উপহার ক্যান্ডি, ফুল, কার্ড আর ডিনার বিক্রি হয় কয়েক বিলিয়ন ডলারের।  

ভ্যালেন্টাইন’স ডে’র বিপক্ষে হিন্দু এবং মুসলমান মৌলবাদীরা বেশ সরব। তারা মনে করে, এই দিবসটি আমাদের সংস্কৃতিবিরোধী। আশ্চর্য, প্রেম কি সংস্কৃতির অংশ নয়? যে সংস্কৃতিতে প্রেম নেই, সেই সংস্কৃতি অপসংস্কৃতি। যারা প্রেম দিবসের বিরুদ্ধে মিছিল করে, তারা কি কখনও ধর্ষণের বিরুদ্ধে, ঘৃণা আর বর্বরতার বিরুদ্ধে মিছিল করেছে? নিশ্চিত করেনি।

ভ্যালেন্টাইন’স ডে’র (Valentine’s Day) উৎস যত কুৎসিতই হোক, যত বর্বরই হোক, যত উদ্ভট হোক, দিনটি নিয়ে ব্যবসায়ীরা যত ব্যবসা করুক না কেন, দিনটির সঙ্গে ভালবাসা জড়িয়ে আছে। সেই ভালবাসা জেফ্রি চশারের কারণেই জড়াক, জড়িয়েছে তো! মানুষ তো ইতিহাস জানে না, সে কারণেই দিনটিকে নিখাদ ভালবাসার দিন হিসেবেই বিচার করছে। না হয় করুক। চারদিকে যখন ঘৃণা আর অবিশ্বাস, চারদিকে যখন স্বার্থপরতা আর হিংসে, চারদিকে যখন যুদ্ধ আর অশান্তি— তখন কোনও এক নামে কোনও এক দিবস যদি আসে, যে দিবস মানুষের সঙ্গে মানুষের ভালবাসা, স্নেহ-শ্রদ্ধার সম্পর্ক স্থাপন করতে চায়, এর চেয়ে সুখবর আর কী আছে পৃথিবীতে? মানুষ জন্মেই শিখে যাচ্ছে কী করে নিজের জন্য সব নিতে হয়, ছলে বলে কৌশলে মানুষ শুধু নিতে শিখে যায়, কিন্তু দিতে শেখে না, দিতে কেউ কাউকে শেখায় না। ভ্যালেন্টাইন নামের দিনটি এসে যদি দিতে শেখায়, ক্ষতি কী? ৩৬৫ দিনের মধ্যে ৩৬৪ দিনই তো হিংসে-বিদ্বেষ নিয়ে আছে, বছরের একটি দিন অন্তত যেন ভালবাসা নিয়ে থাকে।

Valentine's day
উৎস যাই হোক, ভ্যালেন্টাইন'স ডে নামটার সঙ্গে ভালবাসা জড়িয়ে আছে

দিনটি যদি ব্যবসায়ীদের হাত থেকে মুক্তি পেত, সবচেয়ে ভালো হত। কিন্তু আপাতত মুক্তি পাওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। ব্যবসায়ীরা দিবসটির নামে ব্যবসা করে নিচ্ছে বলে গোটা দিবসটিকে উড়িয়ে দেওয়া ঠিক নয়। তার চেয়ে দিবসটিকে আর কী কী উপায়ে সুন্দর এবং সমৃদ্ধ করা যায়, সে বিষয়ে আমাদের ভাবতে হবে। দিবসটির বিবর্তন সেই আদিকাল থেকে হচ্ছে। আজ মানুষ শুধু প্রেমিক-প্রেমিকাকে নয়, বাবা, মা, ভাই, বন্ধু এবং পোষা কুকুর-বেড়ালকেও ‘হ্যাপি ভ্যালেন্টাইন’ জানাচ্ছে। পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শন করার আর তো সময় সুযোগ নেই কারোর। যদিও আমি মনে করি, ভালবাসা এক দিনের জন্য নয়, ভালবাসা নিত্যদিনের, যদিও আমি ব্যক্তিগতভাবে ভ্যালেন্টাইন’স ডে উদযাপন করি না, কিন্তু সমাজটা যেহেতু স্বার্থান্ধ, আমি চাই এই সমাজ ভালবাসা শিখুক, ভালবাসার চর্চা করুক। ঘৃণা প্রদর্শন নিয়ে জড়তা নেই, কিন্তু ভালবাসা নিয়ে যেহেতু জড়তা আছে, চাই আনুষ্ঠানিকভাবে মানুষের জন্য মানুষ ভালবাসা প্রকাশ করুক। মানুষ প্রকাশ্যে মানুষকে চড় নয়, কিল নয়, লাথি নয়, বরং চুমু খাক। একটি দিন ভালোবাসার চর্চা করলে মানুষ প্রকাশ্যে প্রেম করাকে আর চুমু খাওয়াকে মন্দ বলে ভাববে না, নিষিদ্ধ বলে ভয় পাবে না। মানুষের দ্বিধা কেটে যাক। আজ এই দিনে ভায়োলেন্স নিষিদ্ধ হোক।

ঘৃণা প্রদর্শন নিয়ে জড়তা নেই, কিন্তু ভালবাসা নিয়ে যেহেতু জড়তা আছে, চাই আনুষ্ঠানিকভাবে মানুষের জন্য মানুষ ভালবাসা প্রকাশ করুক। মানুষ প্রকাশ্যে মানুষকে চড় নয়, কিল নয়, লাথি নয়, বরং চুমু খাক। একটি দিন ভালোবাসার চর্চা করলে মানুষ প্রকাশ্যে প্রেম করাকে আর চুমু খাওয়াকে মন্দ বলে ভাববে না, নিষিদ্ধ বলে ভয় পাবে না।

নারীর ওপর নির্যাতন অন্তত একটি দিনের জন্য বন্ধ করবে কি পুরুষ? ভায়োলেন্স অন্তত বছরের একটি দিনে না করুক পুরুষ। ভ্যালেন্টাইন দিবসে যদি ভায়োলেন্স বন্ধ না হয়, তা হলে কোনও মানে নেই এই ভ্যালেন্টাইন দিবসের। তুমি ভালোবাসতে না পারো, অন্তত ঘৃণা কর না। তুমি ফুল দিতে না পারো, অন্তত কাঁটা দিও না। তুমি চুমু খেতে না পারো, অন্তত চড় মেরো না। ভায়োলেন্স বন্ধ না করলে ভ্যালেন্টাইন দিবস পালন করার অধিকারই হয়তো পুরুষের থাকা উচিত নয়! ভ্যালেন্টাইন ডে’তে যেন একটি মেয়েকেও যৌনদাসী হতে না হয়, একটি মেয়েকেও যেন পুরুষের নির্যাতন সইতে না হয়, একটি মেয়েকেও যেন মেয়ে হয়ে জন্ম নেওয়ার কারণে শিক্ষা, স্বাস্থ্য আর স্বনির্ভরতার সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হতে হয়। রাজি?

*পরবর্তী পর্ব প্রকাশ পাবে ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

*অলংকরণ: শুভ্রনীল ঘোষ
*ছবি সৌজন্য: Wikipedia, Shutterstock, Needpix

Author Taslima Nasrin

বর্তমান বাংলা সাহিত্যের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবাদী মুখ তসলিমা নাসরিন। বাঙালি হয়েও তিনি আন্তর্জাতিক। গদ্য ও কবিতার সব শাখাতেই অনায়াস বিচরণ তসলিমার। সাহিত্য-সাধনার পাশাপাশি তাঁকে আমরা চিনি ধর্মনিরপেক্ষ মানবতাবাদী ও নারীবাদী একজন চিন্তাশীল হিসেবেও। নারীর অধিকার, মানবাধিকার, বাক-স্বাধীনতা, মানববাদ, বিজ্ঞান ও সহনশীলতা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে চলেছেন তিনি। লেখালিখির পাশাপাশি তাঁর বিশ্বব্যাপী উদার ও মুক্তচিন্তার জন্য দেশে-বিদেশে তিনি সম্মানিত হয়েছেন একগুচ্ছ পুরস্কার ও সম্মাননায়। 'নির্বাচিত কলাম' ও আত্মজীবনী গ্রন্থের জন্য পেয়েছেন দু'দুবার আনন্দ পুরস্কার। পেয়েছেন ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের শাখারভ পুরস্কার। ফ্রান্স সরকারের মানবাধিকার পুরস্কার, কার্ট টুকোলস্কি পুরস্কার সহ একাধিক পুরস্কার ও সম্মাননা। লিখেছেন 'ফেরা', 'লজ্জা', 'ফরাসি প্রেমিক'-এর মতো অসামান্য উপন্যাস; বেশ কিছু ছোটগল্প, আত্মজীবনীমূলক রচনা, ব্যক্তিগত ও সামাজিক নানা বিষয়ে অসংখ্য প্রবন্ধ।

Picture of তসলিমা নাসরিন

তসলিমা নাসরিন

বর্তমান বাংলা সাহিত্যের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবাদী মুখ তসলিমা নাসরিন। বাঙালি হয়েও তিনি আন্তর্জাতিক। গদ্য ও কবিতার সব শাখাতেই অনায়াস বিচরণ তসলিমার। সাহিত্য-সাধনার পাশাপাশি তাঁকে আমরা চিনি ধর্মনিরপেক্ষ মানবতাবাদী ও নারীবাদী একজন চিন্তাশীল হিসেবেও। নারীর অধিকার, মানবাধিকার, বাক-স্বাধীনতা, মানববাদ, বিজ্ঞান ও সহনশীলতা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে চলেছেন তিনি। লেখালিখির পাশাপাশি তাঁর বিশ্বব্যাপী উদার ও মুক্তচিন্তার জন্য দেশে-বিদেশে তিনি সম্মানিত হয়েছেন একগুচ্ছ পুরস্কার ও সম্মাননায়। 'নির্বাচিত কলাম' ও আত্মজীবনী গ্রন্থের জন্য পেয়েছেন দু'দুবার আনন্দ পুরস্কার। পেয়েছেন ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের শাখারভ পুরস্কার। ফ্রান্স সরকারের মানবাধিকার পুরস্কার, কার্ট টুকোলস্কি পুরস্কার সহ একাধিক পুরস্কার ও সম্মাননা। লিখেছেন 'ফেরা', 'লজ্জা', 'ফরাসি প্রেমিক'-এর মতো অসামান্য উপন্যাস; বেশ কিছু ছোটগল্প, আত্মজীবনীমূলক রচনা, ব্যক্তিগত ও সামাজিক নানা বিষয়ে অসংখ্য প্রবন্ধ।
Picture of তসলিমা নাসরিন

তসলিমা নাসরিন

বর্তমান বাংলা সাহিত্যের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবাদী মুখ তসলিমা নাসরিন। বাঙালি হয়েও তিনি আন্তর্জাতিক। গদ্য ও কবিতার সব শাখাতেই অনায়াস বিচরণ তসলিমার। সাহিত্য-সাধনার পাশাপাশি তাঁকে আমরা চিনি ধর্মনিরপেক্ষ মানবতাবাদী ও নারীবাদী একজন চিন্তাশীল হিসেবেও। নারীর অধিকার, মানবাধিকার, বাক-স্বাধীনতা, মানববাদ, বিজ্ঞান ও সহনশীলতা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে চলেছেন তিনি। লেখালিখির পাশাপাশি তাঁর বিশ্বব্যাপী উদার ও মুক্তচিন্তার জন্য দেশে-বিদেশে তিনি সম্মানিত হয়েছেন একগুচ্ছ পুরস্কার ও সম্মাননায়। 'নির্বাচিত কলাম' ও আত্মজীবনী গ্রন্থের জন্য পেয়েছেন দু'দুবার আনন্দ পুরস্কার। পেয়েছেন ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের শাখারভ পুরস্কার। ফ্রান্স সরকারের মানবাধিকার পুরস্কার, কার্ট টুকোলস্কি পুরস্কার সহ একাধিক পুরস্কার ও সম্মাননা। লিখেছেন 'ফেরা', 'লজ্জা', 'ফরাসি প্রেমিক'-এর মতো অসামান্য উপন্যাস; বেশ কিছু ছোটগল্প, আত্মজীবনীমূলক রচনা, ব্যক্তিগত ও সামাজিক নানা বিষয়ে অসংখ্য প্রবন্ধ।

One Response

  1. প্রেম দিবস আছে বটে বছরে একটা দিন কিন্তু এই দিনটাতে ও যে‌ হিংসাবৃত্তি, অত্যাচার, নির্যাতন, খুনোখুনি হয়‌ না তার কোন গ্যারান্টি নেই। পৃথিবীর কোন্ কোণায় কোন্ নৃশংস কান্ড ঘটে যাচ্ছে তার সব খবর সব সময়‌ কি প্রকাশ্যে আসে? আসে না। যে‌ পুরুষ ছোট থেকে নারীবিদ্বেষী, নারীকে শ্রদ্ধার চোখে দেখে না, মায়া, মমতাহীন, অপমানিত করার প্রবণতা, কটুক্তি করে সেই পুরুষ কি রাতারাতি একদিনের জন্যে পাল্টে ফেলতে পারবে নিজেকে? কিংবা যে পুরুষ গৃহে স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও পরকীয়ায় মজে থাকে স্ত্রীকে কাঁদিয়ে সে কি একদিনের জন্যেও নিজেকে বদলে ফেলতে পারবে কিংবা যে‌ বা যারা‌ ধর্ষক তারা ও কি এই একটা দিনের জন্যেও নিজেকে সৎ পথে ফিরিয়ে আনতে পারবে? পারবে না, কারণ তার মানসিকতা সেইভাবে গড়ে ওঠেনি। কিংবা বেশ্যা বাড়ীতে মদ খেয়ে ভালবাসার নামে খুব ফূর্তি করবে আর বাড়ীতে স্ত্রী চোখের জলে ভাসাবে।
    প্রকৃত প্রেম করে নারীরা, পুরুষের প্রেম মানে যৌনতা। পুরুষদের প্রেম শুরু হয় বৃদ্ধ বয়সে, যৌবনে নয়। কটা প্রকৃত প্রেমিক পৃথিবীতে জন্মেছে যারা‌ নারীদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং নারীবাদী, নারীর অধিকারকে মর্যাদা দেয় , যদি ও তাদেরকে স্ত্রৈণ বলা হয় তবু ও ভাল কিন্তু কত শতাংশ?
    সুতরাং অপ্রেম দিবসটাই বেশী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Subscribe To Newsletter

কথাসাহিত্য

সংস্কৃতি

আহার

বিহার

কলমকারী

ফোটো স্টোরি

উপন্যাস