



















































[ছবিতে ক্লিক করে স্লাইড মোডে দেখুন]
(Tiger in Match Box)
দেশলাইকে জনপ্রিয় করে তুলতে তার কাঠের বাক্সের লেবেলে স্থান পেয়েছে নানাবিধ ছবি। জঙ্গলের নানা বিষয়ও উঠে এসেছে বিস্তারিতভাবে। ধরা যাক, বাঘের কথাই। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই বাঘ নিয়ে অজস্র দেশলাই প্রকাশিত হয়েছে এবং এখনও হয়ে চলেছে। ক্যাট ফ্যামিলির এই গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের মধ্যে যেমন স্থান পেয়েছে আমাদের প্রিয় রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার, প্যান্থেরা টাইগ্রিস যার বিজ্ঞানসম্মত নাম। বাঘ আমাদের ভারতের জাতীয় পশুর মর্যাদা লাভ করেছে। এদের ডাকা হয় ‘প্যান্থেরা টাইগ্রিস টাইগ্রিস’ নামে। (Tiger in Match Box)
বাঘের আবির্ভাব ঘটেছিল উত্তর মেরুবৃত্তের কাছাকাছি।বাঘের প্রাচীনতম জীবাশ্ম মিলেছে নতুন সাইবেরিয়া দ্বীপমালায়। প্রাচীনকালে মধ্য এবং উত্তর এশিয়া জুড়ে বাঘের বিচরণ ক্ষেত্র ছিল। সেখান থেকেই ক্রমে বিস্তীর্ণ এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। পশ্চিমে ককেশাস ও ইলব্রুস পর্বতমালার পূর্ব পাদদেশে বাঘ ছড়িয়ে পড়ে; দক্ষিণ ও পূর্বে আমুর নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে, মাঞ্চুরিয়া, কোরিয়া এবং কিছু কিছু বাঘ উত্তর দিক দিয়ে এসে যায় আসাম, বাংলাদেশ ও ভারতে এবং কিছু পৌঁছে যায় জাভা, সুমাত্রায়। বাঘের ছয়টি উপপ্রজাতি রয়েছে। সেগুলো হলো- সাউথ চায়না টাইগার, ইন্দো-চাইনিজ টাইগার, মালয় টাইগার, সুমাত্রা টাইগার, গ্রেট বেঙ্গল টাইগার এবং সাইবেরিয়া টাইগার। তবে নানা কারণে বালি, জাভা এবং কাস্পিয়ান উপপ্রজাতির বাঘ বিলুপ্ত হয়ে গেছে পৃথিবী থেকে। (Tiger in Match Box)
আরও দেখুন : ডাকটিকিটে মহীয়সীরা
দেশলাইতে এসেছে এই সমস্ত বাঘের রাজকীয় ছবি। তেমনই লেবেলের সৌন্দর্য বাড়িয়েছে সপরিবারে বাঘ, সার্কাসের বাঘ, বাঘের লাফ, শিকার ধরা, বিশ্রামরত বাঘ, গর্জনরত বাঘ- ইত্যাদি অজস্র চিত্র। এমন কি, ভাবলে অবাক হতে হয় যে, রেওয়ার মহারাজা মার্তণ্ড সিংহের প্রথম খুঁজে পাওয়া ‘সাদা বাঘ’-এর ছবিও এসেছে এই দেশলাই লেবেলে। প্রতিনিয়ত আমরা বাঘে-মানুষের সংঘাতের সংবাদ পাই। জঙ্গল সন্নিহিত অঞ্চলে এই সংঘাতের ছবিও কিন্তু দেশলাই লেবেলে এসেছে সচেতনতার বার্তা হিসেবে।এছাড়াও এসেছে চিতা বাঘ, প্যান্থার, জাগুয়ার, সিংহ বা বিড়ালের চিত্র। (Tiger in Match Box)
প্রতি বছর ২৯ জুলাই দিনটি পালিত হয় আন্তর্জাতিক ব্যাঘ্র দিবস হিসেবে। বিশ্ব জুড়ে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় বাঘ সংরক্ষণের বার্তা দিয়ে। কারণ ব্রিটিশ রাজ এবং তৎকালীন রাজা-মহারাজাদের নির্বিচার শিকারের জন্য অনিন্দ্যসুন্দর এই প্রাণীটি বিপন্ন হয়ে পড়েছিল। স্বাধীনতার পরে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধির উদ্যোগে ১৯৬৬ সালে প্রবর্তিত হয় ‘প্রোজেক্ট টাইগার’। এর ফলে ক্রমে দেশে বাঘের সংখ্যা বাড়তে থাকে। তবুও কিন্তু তারা বিপদমুক্ত নয়। চোরাশিকারের সহজ টার্গেট হয়ে মৃত্যুবরণ করে তারা। ভারত সরকারের বন্যপ্রাণ বিভাগের কর্মীরা সদা তৎপর এই প্রাণীদের রক্ষার বিষয়ে। দেশলাইয়ের বুকে ছবিগুলি আমাদের কাছে সেই বার্তাই দিয়ে যায়, ‘বাঘ না থাকলে, মানুষও থাকবে না। অতএব বাঘ সংরক্ষণ করুন।’ (Tiger in Match Box)
সংবাদিক, শিল্পী, সংগ্রাহক, সংগ্রহশালা পরামর্শদাতা।
প্রকাশিত গ্রন্থ: কলকাতার সংগ্রহালয়