১.
তার সঙ্গে দেখা নেই কতকাল হয়ে গেল তবে কি প্রেমের দিন শেষ
দেখা না হলেই বুঝি ভুলে যেতে হবে সেই পথে পথে হাত ধরে হাঁটবার অবাধ স্বদেশ
আগে কি জানতাম, বলো সম্পর্কেরও জ্বর হয় শ্বাসকষ্ট অসহ্য হয়ে আসে
আগ্রাসী চুম্বনের জন্য বুকে যত জোর লাগে ফুরিয়ে গিয়েছে দীর্ঘশ্বাসে
২.
পরস্পর থেকে আজ দূরে থাকা প্রয়োজন কাছে থাকো ভালোবাসা নিয়ে কাজ নেই আজ আর প্রেমের কবিতা লিখে ইনিয়ে বিনিয়ে
আমি জানি তুমি আছ, কাছেই তো আছ তুমি না-ই এলে রোগশয্যাপাশে দূরত্ব বজায় রেখে জলপটি দাও জ্বরে ভিজিয়ে প্রেমের নির্যাসে
রোগের যন্ত্রণা থেকে তীব্র আরও তীব্র লাগে তোমাকে না ছোঁয়ার আপশোস কবে কবে কবে বলো উন্মাদ চুম্বন করব ছুড়ে ফেলে যতেক মুখোশ
৩.
কে তুমি অপেক্ষা করছ আঁধারে হৃদয়খানি জ্বেলে সরে গেছি দূরে আছি তোমাকেও ফেলে
সরে গেছি পাছে তুমি কষ্ট পাও রোগ সংক্রমণে এ কথা জানো তো তুমি? পাপ নেই অগোচর মনে
অসুখ ছোঁয়াচে কত, ভালোবাসা তারও চেয়ে বেশি অসুস্থ শরীর, তাতে মনে মনে কোল ঘেঁষাঘেঁষি
একা ঘরে বন্দি আমি দরজাতে কার ছায়া কাঁপে
অপেক্ষা জ্বেলেছ তুমি — জানি আমি, জানি ঠিক সেরে উঠব তারই স্পর্শতাপে
মন্দাক্রান্তা কবিতা লিখছেন নব্বইয়ের দশক থেকে। তাঁর জন্ম কলকাতায়। নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তারি পড়েও ফাইনাল পরীক্ষা দেননি। কবিতার টানে প্রথাগত পড়া ছেড়ে মননচর্চা শুরু। প্রথম বই ১৯৯৯ সালে 'হৃদয় অবাধ্য মেয়ে।' সে বছরই এই বই আনন্দ পুরষ্কার এনে দেয় তাঁকে। এরপর 'বলো অন্যভাবে', 'ছদ্মপুরাণ', 'উৎসারিত আলো', 'এসবই রাতের চিহ্ন' প্রভৃতি একের পর এক কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়। উপন্যাসও লিখেছেন তার পাশাপাশি। 'ঝাঁপতাল', 'দলছুট', 'ঋতুচক্র' পাঠকমহলে বহুল সমাদৃত হয়।
2 Responses
প্যাণ্ডেমিক, মনে মনে কতো কী যে চলে,
অনুভবী, গভীর লেখনী সে কথাই বলে I
করোনা সৃষ্ট এই ক্রান্তিকালে মন্দাক্রান্তার কবিতা যেন বাসন্তী সমীরণ। দমবন্ধ মনে স্বস্তিদায়ক অক্সিজেন। এমন বাংলামি স্থায়ীত্ব পাক।