১
পর্দার ভেতর একধরনের কাব্যময়তা আছে।
ভোরেরবেলার নরম আলো যখন তাকে ছোঁয়, তখন সে ঘুম না ভাঙা নারী। অপূর্ব কোমল।
দুপুরে, কড়া দিদিমণির মতো রোদে সে যেন সব ঘুরে ঘুরে কাজ করা মানুষের অভিমান। কড়ি মধ্যমে বেজে বেজে বলে জল পিপাসার গল্প। বিকেলবেলা যখন তাকে দেখি মনখারাপ ছোঁয়া আলোয়, মনে হয়… চেনা মুখ। অনন্ত বিষাদবতী। শরীর জুড়ে অমন বনবাসের লাবণ্য দেখলে অস্থির না হয়ে উপায় থাকে? এদিকে রান্নাঘর জুড়ে সংসারের আঁশটে গন্ধ। পাশে বেড়াল শিশুর ঘুমন্ত মুখ। মায়া। মায়া নেচে ওঠে। এলোচুল গুটিয়ে নিয়ে চা বসাই। আদা…চিনি…এলাচ… আটপৌরে গেরস্থালি ভরে যায় সুবাসে। ঘরভাঙা আলো আমার আর কিচ্ছু করতে পারে না।
২
পাহাড়ি বিকেলের মতো বিষণ্ণ একটা পিয়ানো আমার সমস্ত ঘর জুড়ে ছুটোছুটি করে।
ভেতরে ভেতরে হাঁটা দেয় একটা নিখুঁত পাকদণ্ডী। সে কোথায় পৌঁছতে চায় কে জানে…
প্রেম থেকে অপ্রেমে?
দৃশ্য থেকে বোধে?
শব্দ থেকে নীরবতায়?
বিক্ষোভ থেকে ক্ষমায়?
কিন্তু… তারপর?
পথের শেষে কী থাকে?
শান্তি থাকে?
ছাইরঙা সন্ধের বুকে ফুটে ওঠা মৃদু চা-দোকান? কথোপকথন?
জারুলের ছায়ায় শিশিরের মতো জমে থাকা বিস্মরণ?
বিষাদ ছাড়া কতদিন কিছু দেখিনি তথাগত…
একটা বিকেল দিতে পারো… যে বিকেলে মানুষ শুধু ভালবাসবে। ব্যবসা করবে না।
*ছবি সৌজন্য: wbtourism
শ্রাবণী খাঁ -এর জন্ম ১৯৯২ সালে। তাঁর লেখা কবিতা দেশ, কৃত্তিবাস, বসুমতী, সম্পূর্ণা, মথ-এর মতো বিভিন্ন জায়গায় প্রকাশিত হয়েছে। পেশায় শ্রাবণী একজন ভয়েস আর্টিস্ট।
3 Responses
কবির মনের ভেতরটা দেখতে পেলাম। বিকেলে আলস্য ভেঙে চা করতে যাওয়ার মুহূর্তটাও। খুব সামান্য, আপাততুচ্ছ ক্ষণগুলি দেখার গুণে মুক্তোদানার মতো চকচক করছে এ লেখায়৷ ছাইরঙ সন্ধের বুকে মৃদু চা-দোকানে দুদণ্ড জিরোবার ইচ্ছে বাড়িয়ে দেয়। কবিকে শুভেচ্ছা।
অনেক ধন্যবাদ!
অনেক ধন্যবাদ!