(Gorichen Peak) এই বছরের অক্টোবর মাসে আমার পর্বতারোহণ সংস্থা মাউন্টেনিয়ার্স এসোসিয়েশন অফ কৃষ্ণনগর (ম্যাক)-এর সদস্যদের সঙ্গে অরুণাচল প্রদেশের ২১২৮৬ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট গোরিচেন শৃঙ্গ আরোহণ করতে গিয়েছিলাম। অনেক দিনের স্বপ্ন ছিল এই শৃঙ্গ আরোহণের। কিন্তু বাধা ছিল অনুমতি পাওয়ার। কারণ অরুণাচল প্রদেশ যেতে হলে ভারতীয়দেরও ইনার লাইন পারমিট অর্থের বিনিময়ে নিতে হয়। আর গোরিচেন শৃঙ্গ অরুণাচল প্রদেশের একদম ইন্দো তিব্বতের সীমানার উপর অর্থাৎ ম্যাক মোহন রেখার নিকটে। গত বছরেও গিয়েছিলাম এই শৃঙ্গ আরোহণ করতে, কিন্তু বিভিন্ন কারণে বিফল হয়ে ফিরে আসতে হয়েছিল। বিফল হলেও একটা উপকার হয়েছিল। অভিযানের খুঁটিনাটি বিষয় সবটা জানা হয়ে গিয়েছিল। মনে হয়েছিল আর একটু ভালোভাবে প্রস্তুতি নিলে এই শৃঙ্গ আরোহণ সম্ভব। (Gorichen Peak)

দীর্ঘদিনের মনের গভীরে সযত্নে পুষে রাখা সেই গোরিচেন শৃঙ্গ আরোহণ করতে আর একইসঙ্গে গোরিচেন শৃঙ্গের শীর্ষ থেকে ভারতের প্রথম সূর্যোদয় দেখার সৌভাগ্যের আশায় আবার বেরিয়ে পড়েছিলাম গত ৮ অক্টোবর, অর্থাৎ দুর্গা পূজার পঞ্চমীর দিন। ক্লাব সদস্য আর শুভানুধ্যায়ীদের শুভেচ্ছা পাথেয় করে শিয়ালদহ স্টেশন থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে শুরু হয়েছিল আমাদের অভিযাত্রা। পরদিন সকাল চারটের সময় পৌঁছে গিয়েছিলাম গৌহাটি স্টেশনে। (Gorichen Peak)
ওইদিনই আমরা গৌহাটি থেকে বাসে দুপুর বারোটায় রওনা হয়েছিলাম তাওয়াং-এর উদ্দেশ্যে। তেজপুর, বমডিলা, দিরাং, সেলা পাস অতিক্রম করে ১০ অক্টোবর ভোরবেলা আমরা পৌঁছে গিয়েছিলাম তাওয়াং-এর ৪০ কিলোমিটার আগে জং নামে এক ছোট্ট শৈল শহরে। জং থেকে অভিযানের প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে দুটো ছোট গাড়িতে আরো ৫০ কিলোমিটার পাহাড়ি পথ অতিক্রম করে আমরা পৌঁছে গিয়েছিলাম মনপা উপজাতির গ্রাম মাগোতে। মাগো চু’র (চু অর্থে নদী) পাশ দিয়ে প্রধানত সামরিক বাহিনীর জন্য তৈরি হওয়া এই পথের দৃশ্য মনমুগ্ধকর। (Gorichen Peak)

মাগো গ্রামটা পাহাড় দিয়ে ঘেরা এক অপরূপ জনপদ। এখানে বেশ কয়েকটা উষ্ণ প্রস্রবণ আছে। দুটো রাত এখানে কাটিয়ে ১২ তারিখ রওনা হয়েছিলাম জিথাং এর উদ্দেশ্যে।
সকাল ৮ টায় আমাদের পথচলা শুরু হয়। পূর্ব দিক বরাবর জিথাং চু’র পাশ দিয়ে আমাদের যাবার রাস্তা। আজকের গন্তব্য জিথাং ভ্যালি। খুব সুন্দর পথ। শীত আসতে শুরু করেছে তাই পথের দুধারে গাছপালাগুলো থেকে পাতা ঝরার আগের মুহূর্তে রং পাল্টাতে শুরু করেছে। ১১ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে দুপুর একটার সময় পৌঁছে গেলাম জিথাং উপত্যকায়। প্রচন্ড ঠান্ডা হওয়া বইছে। এই উপত্যকায় বেশ কয়েকটা ছোট্ট পাথরের তৈরি বাড়ি আছে। কোন চাষবাস না হলেও মাগো গ্রামের অধিবাসীরা গরমকালে কয়েক মাস এখানে থাকে ইয়াক চড়ানোর জন্য। সেদিন রাত্রিবাস আমাদের বয়ে আনা তাঁবুতে। (Gorichen Peak)
আরও পড়ুন: এভারেস্ট অভিযান: এক রূপকথা
পরদিন সকালে খুব সুন্দর আবহাওয়ায় আমরা ঠুনথাং চু’র পাশ দিয়ে হাঁটা শুরু করলাম। সুন্দর পায়ে চলা পথ। খুব বেশি উপর-নিচ করতে হচ্ছে না আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অপরূপ। আমাদের চলার পথের ডান দিক দিয়ে লাফাতে লাফাতে বয়ে চলেছে ঠুনথাং চু। ধীরে ধীরে আমরা এগোতে থাকলাম দ্বিতীয় অস্থায়ী শিবির মেরাথাং এর উদ্দেশ্যে। কোন তাড়াহুড়ো নেই। উপভোগ করতে করতে দুপুর বারোটার সময় আমরা পৌঁছে গেলাম ১১ কিলোমিটার দূরের মেরাথাং। (Gorichen Peak)

আমাদের জিনিসপত্র বয়ে নিয়ে আসা ঘোড়াওয়ালারা সকাল থেকেই তাড়া দিতে শুরু করেছে। কারণ ওরা আমাদের জিনিসপত্র মূল শিবির অর্থাৎ বেস ক্যাম্পে পৌঁছে দিয়ে আজই ফিরে যাবে মাগোতে। অগত্যা আমাদেরও খুব তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে বেরিয়ে পড়তে হলো। আজকের রাস্তা মাত্র ৯ কিলোমিটার। অনেকটা উচ্চতায় চলে এসেছি। গাছপালা আর নেই। সকাল সাড়ে সাতটায় রওনা দিয়ে এগারোটার মধ্যেই পৌঁছে গেলাম মূল শিবিরে। (Gorichen Peak)

ঘোড়াওয়ালাদের বিদায় জানালাম আর নির্দিষ্ট দিনে আবার এখানে আসার জন্য জানিয়ে দিলাম। এই মূল শিবির হচ্ছে যে কোন অভিযানের খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই জায়গাটা অনেক বিস্তৃত স্বাভাবিকভাবেই অনেক দূর দৃষ্টি চলে যায়। জায়গাটা চারিদিক দিয়ে পাহাড় দিয়ে ঘেরা আর জনমানব শূন্য। আমরা এখন স্বাধীন, কারোর ওপর নির্ভর করতে হবে না, শুধুমাত্র প্রকৃতির ওপরেই আমরা নির্ভরশীল। এখান থেকে আমাদের পরিকল্পনা মতন এই অভিযান পরিচালনা করতে পারব। দলনেতা হিসাবে আমি এইবার এই অভিযান নিয়ে অনেক নিশ্চিন্ত। কারণ এই অভিযানের শেষ শিবির পর্যন্ত রাস্তা অনেকটাই চেনা। (Gorichen Peak)

মূল শিবিরে পৌঁছানোর পরেই শুরু হয়ে গেল আমাদের ব্যস্ততা। চারটে তাঁবু লাগাতে হলো। রান্না করার জায়গাটা একটা বড় বোল্ডারের পাশে ত্রিপল দিয়ে ঢেকে খুব সুন্দর করে তৈরি করা হলো। কারণ যেকোনো সময় তুষারপাত শুরু হতে পারে। এই কদিন যাতে আমাদের কোনও অসুবিধা না হয়, তার জন্য বেশ ভালোভাবে পাথর সাজিয়ে আমাদের রান্নাঘর তৈরি করে নিলাম। আমাদের আগামী কয়েকদিনের অস্থায়ী ঠিকানা এই মূল শিবির। বিশুদ্ধ বাতাস, তার সাথে দিনের বেলা মেঘ মুক্ত ঘননীল আকাশ আর রাত্রিবেলা লক্ষ লক্ষ তারার নিচে আমরা কয়েকদিন তাঁবুর মধ্যে কাটাব। বাইরের পৃথিবীর সঙ্গে কয়েকদিনের জন্য বিচ্ছিন্ন। (Gorichen Peak)
পাঁচটার কিছু আগে থেকেই অনেক দিনের দেখা স্বপ্নটা বাস্তব রূপ পেতে থাকলো। পুব আকাশে ভারতের প্রথম সূর্যোদয়ের সাক্ষী থাকলাম আমরা। সেই মুহূর্তের বর্ণনা দেওয়ার ক্ষমতা আমার নেই। মুহূর্তগুলো ক্যামেরায় ধরে রাখলাম। ধীরে ধীরে পৌঁছে গেলাম একদম শীর্ষে। গোরিচেন শৃঙ্গের মাথায় জায়গা কম থাকার কারণে আমরা একসাথে পৌঁছতে পারলাম না। আমাদের পাঁচজন সদস্য আর তিনজন শেরপা, একে একে শীর্ষে পৌঁছলাম।
১৫ অক্টোবর। গতকালই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, যদি আবহাওয়া ভালো থাকে তাহলে আজ আমরা প্রথম শিবিরে আমাদের জিনিসপত্র রেখে আসবো। এতে একসাথে দুটো সুবিধা পাওয়া যায়। প্রথমটা হচ্ছে, প্রথম শিবির থেকে ঘুরে আসলে এরপরে যখন আমরা ওই শিবিরে গিয়ে থাকবো তখন আমাদের কোন শারীরিক অসুবিধা হবে না। একবার ওই উচ্চতা থেকে ঘুরে আসার ফলে শরীর উচ্চতার সাথে মানিয়ে নেবে। দ্বিতীয় সুবিধা, আমাদের প্রয়োজনীয় খাবারদাবার, তাঁবু বা পাহাড়ে চড়ার সরঞ্জাম পৌঁছে যাবে। (Gorichen Peak)
সুন্দর আবহাওয়াতে সকাল সাতটার সময় আমরা আরোহণ শুরু করলাম। মূল শিবিরে থেকে গেল সুস্মিতা, রমিত আর প্রসূন। রমিত এসেছে ওর গবেষণার বিষয় আলগি সংগ্রহ করতে। ও আজ সারাদিন এই অঞ্চলের ওয়েট ল্যান্ড থেকে ওর গবেষণার প্রয়োজনের যাবতীয় নমুনা সংগ্রহ করবে। আমরা বিকাল তিনটের সময় ফিরে আসলাম মুল শিবিরে। (Gorichen Peak)

পরদিন ছিল আমাদের বিশ্রামের দিন। কোজাগরী পূর্ণিমা। এইরকম এক স্বর্গীয় জায়গায় রাত্রিবাসের বর্ণনা করা মুশকিল। তবে যেহেতু এটা অক্টোবরের মাঝামাঝি, তাই প্রচন্ড ঠান্ডা।
১৭ অক্টোবর। ছিরিং, দর্জি আর তেনজিং যাবে প্রথম শিবিরে জিনিসপত্র পৌঁছে দিতে। রমিত ফিরে যাবে ওর শিলচরের আসাম ইউনিভার্সিটিতে। ওকে আজকের পথটা এগিয়ে দিয়ে আসবে আমাদের কুক লীলা।
১৮ অক্টোবর, শেরপা তিনজন সকালবেলায় রওনা হয়ে গেল প্রথম শিবিরের দখল নিতে। আবহাওয়া বেশ ভালই। দুপুরবেলা লীলা ফিরে এলো রমিতকে রোড হেডে পৌঁছে দিয়ে। (Gorichen Peak)

১৯ অক্টোবর, সুস্মিতা আর প্রসূনকে রেখে আমরা ছয় জন সদস্য আর লীলা রওনা হলাম প্রথম শিবিরে থাকার জন্য। চেনা পথ, আজ একটু কম সময় লাগলো প্রথম শিবিরে পৌঁছতে। এই পথে আসার সময় আমরা পেয়েছিলাম দুটো বড় বড় লেক। প্রথম শিবিরে পৌঁছে পাথরের উপরে আমাদের তাঁবু লাগানো হলো। কিচেন তৈরি করা হলো। কিন্তু আমাদের তিনজন শেরপাকে দেখতে পেলাম না। ওরা গিয়েছে দ্বিতীয় শিবির অর্থাৎ শীর্ষ শিবিরের পথ তৈরি করতে। বিকেল তিনটের মধ্যেই ওরা সকলেই ফিরে এলো আর খুশির খবর জানালো যে শীর্ষ শিবির পর্যন্ত ওরা পথ তৈরি করে ফেলেছে। আমরাও খুশি। (Gorichen Peak)

যেকোনও অভিযানে শেরপা বা গাইড ছাড়া অভিযান সফল করা খুব মুশকিল। খুব কম পর্বতারোহী আছেন যাঁরা কোনও গাইড ছাড়া পর্বতারোহণ করতে পারেন। যাইহোক, ছিরিং (আমাদের দীর্ঘদিনের পর্বত অভিযানের পথপ্রদর্শক শেরপা সরদার) জানালো যে পরদিন অর্থাৎ ২০ অক্টোবর খুব ভোরে আমাদের রওনা হতে হবে। কারণ পথে পাথর পড়ার ভয় আছে। অর্থাৎ আমাদের রক ফল জোনের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। (Gorichen Peak)

২০ অক্টোবর, আমরা ছয় জনই খুবই উত্তেজিত। সকলেই সুস্থ। সকাল সাড়ে ছটার মধ্যেই আমরা তৈরি পরবর্তী শিবিরের যাওয়ার জন্য। এত সকালে রওনা হবার কারণ ঠান্ডা। যত বেলা বাড়বে ততই রোদে পাথর পড়ার ভয় বেড়ে যাবে। ঠান্ডা থাকতে থাকতেই আমাদের পার হয়ে যেতে হবে রক ফল জোন। খুব তাড়াতাড়ি আমরা রক ফল জোন অতিক্রম করে গেলাম। তারপর শুরু হল আমাদের দড়িতে জুমার ঠেলে পাথরের দেওয়াল ধরে আরোহণ। (Gorichen Peak)

প্রায় ৩০০ মিটার এইভাবে আরোহণ করে আমরা দ্বিতীয় শিবিরে পৌঁছে গেলাম দুপুর সাড়ে এগারোটায়। শেরপারা আগেই পৌঁছে গিয়েছিল আর বরফের উপরে দুটো তাঁবুও লাগিয়ে ফেলেছিল। আমরা পৌঁছাতেই লীলা আমাদের গরম চা দিয়ে অভ্যর্থনা জানালো। যথারীতি ছিরিংরা রওনা দিয়েছে গোরিচেন শৃঙ্গের শীর্ষ পর্যন্ত পথ তৈরি করতে। আমাদের সামনেই মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে স্বপ্নের শৃঙ্গ মাউন্ট গোরিচেন। সন্ধ্যে ছটার মধ্যেই শেরপারা ফিরে এলো। জানালো, ওরা এই পথের ৬০০ মিটার পর্যন্ত দড়ি লাগিয়ে এসেছে। যেহেতু ধোঁয়াশা ছিল তাই আমরা ওদের এই কর্মকাণ্ড দেখতে পাইনি। (Gorichen Peak)

সিদ্ধান্ত হলো, রাত একটার সময় আমরা রওনা দেব শীর্ষ আরোহণ করতে। আজকের রাতটাই আমাদের এই অভিযানের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ রাত এবং তার সাথে কঠিন ও কষ্টকর রাত। সন্ধ্যা ছটার সময় আমরা আমাদের ডিনার খেয়ে শুয়ে পড়লাম।
ঠিক রাত বারোটার সময় লীলা আমাদের তাঁবুতে গরম চা দিল। আমরা একটার মধ্যেই রওনা হলাম সামিটের উদ্দেশে। তাঁবুতে থেকে গেল সুমিত্রা আর আমাদের দীর্ঘদিনের সঙ্গী, কুক লীলা রাজ রাই। বরফের ওপরে বুটের মচমচ শব্দের আওয়াজ তুলে আমরা এগিয়ে চললাম শীর্ষ আরোহণ করতে। প্রচন্ড ঠান্ডা আর অন্ধকার। মাথায় লাগানো টর্চের সাহায্যে দড়ি ধরে আমরা ধীরে ধীরে আরোহণ করতে লাগলাম।

মাথার ওপরে সেই তারা ভরা আকাশ। আমরা এতটাই ভাগ্যবান ছিলাম যে ওই রাত্রে একটুও হাওয়া ছিল না। প্রায় তিন ঘন্টা এইভাবে আরোহণ করার পরে আমাদের গতি স্লথ হলো। কারণ বাকি প্রায় ৪০০ মিটার পথ আরও দড়ি লাগাতে হবে, যেটা কালকে শেরপারা অসম্পূর্ণ রেখে নেমে গিয়েছিল।
পাঁচটার কিছু আগে থেকেই অনেক দিনের দেখা স্বপ্নটা বাস্তব রূপ পেতে থাকলো। পুব আকাশে ভারতের প্রথম সূর্যোদয়ের সাক্ষী থাকলাম আমরা। সেই মুহূর্তের বর্ণনা দেওয়ার ক্ষমতা আমার নেই। মুহূর্তগুলো ক্যামেরায় ধরে রাখলাম। ধীরে ধীরে পৌঁছে গেলাম একদম শীর্ষে। গোরিচেন শৃঙ্গের মাথায় জায়গা কম থাকার কারণে আমরা একসাথে পৌঁছতে পারলাম না। আমাদের পাঁচজন সদস্য আর তিনজন শেরপা, একে একে শীর্ষে পৌঁছলাম। শীর্ষে পৌঁছে প্রথমেই চারিদিকের অপূর্ব সুন্দর দৃশ্যগুলোকে ক্যামেরাবন্দি করলাম।

শ্রদ্ধা জানিয়ে এবার নামার পালা। খুব সাবধানে এবং ধীরে ধীরে আমরা নেমে এলাম সামিট ক্যাম্পে। তখন সময় ঘড়িতে দেখাচ্ছে সকাল দশটা। আমরা খুব খুশি যে প্রথম ভারতীয় সিভিলিয়ান দল হিসাবে আমরা গোরিচেন শৃঙ্গ আরোহণ করতে পেরেছি। এবার নেমে যাব প্রথম শিবিরে। দুপুর বারোটার সময় রওনা হয়ে বিকেলে পৌঁছে গেলাম প্রথম শিবিরে। তারপর পরের দিন আমরা মূল শিবিরে পৌছালাম।

মূল শিবিরে আমাদের দুদিন অপেক্ষা করতে হলো ঘোড়া আসার জন্য। চব্বিশ তারিখ বিকেলে প্রচন্ড তুষারপাতের মধ্যে ঘোড়া পৌঁছে গেল মূল শিবিরে। পরের দিন আমরা নামা শুরু করলাম। অবশেষে একই পথ ধরে ২৯ অক্টোবর আমরা অভিযান সফল করে নিরাপদে ঘরে ফিরলাম।
ছবি সৌজন্য: লেখক
মাউন্ট এভারেস্ট, কাঞ্চনজঙ্ঘা, অন্নপূর্ণা সহ অনেকগুলি শৃঙ্গ জয় করেছেন। ২০১২ সালে তিনি তেনজিং নোরগে ন্যাশনাল অ্যাডভেঞ্চার অ্যাওয়ার্ড পান। তিনি প্রথম বাঙালি অসামরিক এভারেস্ট আরোহী যুগলের একজন এবং প্রথম ভারতীয় অসামরিক কাঞ্চনজঙ্ঘা আরোহী যুগলের একজন।