একটি মৃতের গন্ধ আমাদের সংসারে ভেসে আসে। ঘোলাটে ডিমের মতো এ ঘরের আলোতে মিশে যায়। উইঢিবির মতো বিছানার ওপরে রঙিন চাদর, তার কাঁপা কাঁপা অন্তঃস্থল। পথ্যের মতো সিঁড়িতে কম আয়ুর ফুল। আমাদের সংসার জমে আছে একটি বিষম মাছের কাঁটার চারপাশে। রক্তহীন ঝোলের মধ্যে। ভাঙা পাথরের মূর্তির মতো আমরা কখনও হাসি, কথা বলি অথবা চুলের ভেতর থেকে খুঁজে উড়িয়ে দিই রাতচরা পোকা। নোংরা চাঁদ উঠে আছে আমাদের মাথায়- যা কোনওদিন ডুবে যায় না, চলে যায় না শিরশির করা গাছের পেছনে অথবা সৈনিকের মতো কোনও দীর্ঘাকার টিলার আড়ালে। এই চাঁদের হলুদে আমরা পরস্পরের অনেকটা দূর অবধি দেখি। দেখি আজ্ঞাবহ সব সার সার পথবাতি, চওড়া নির্জন রাস্তা- তাতে শূন্য ভাতের থালার মতো সব আলোকসম্পাত জোনাকির কোষ্ঠ অবধি রাখা। রান্নার আগুনের মতো সব পলায়নপর আকাশের তারা। শুধু একটি গ্রহ-ই কোথা থেকে নেমে এসে তোমার গালের নিম্নাংশে পুষ্পিত জড়ুলের মতো ঝুলে আছে। এই, এইটুকুই যা উত্তল, বাকি সব যেন শেলফে সাজান ভারী ভারী বই। হয়তো গ্রন্থ বলে ওদের। যেসব খুললে হরিণের লালা চুঁইয়ে হাতে-পায়ে, তলপেটের মুখ্য অংশে পড়ে
আমি একদিন স্বপ্নে দেখেছি তুমি দেওয়াল দিয়ে হেঁটে যাচ্ছ। তোমার চুল মাঙ্গলিক ঘণ্টার মতো ঝুলে আছে। তুমি হেঁটে যাচ্ছ একটা সামুদ্রিক ফ্রেসকোর দিকে। সেখানে গালে টোল পড়া আকাশ, চিরপুরুষ সব ঝাউগাছ। উচ্চতায় বেশি নয়। পরিষ্কার বালির ওপরে দাঁড়ানো ওরা। তোমার স্তন থেকে পোশাক সরে যাচ্ছে, পুরনো বাকল খসে যাচ্ছে, এমনকি আমার মুখের ভাপও মুছে যাচ্ছে। তোমার উরু আঁকড়ে ধরা আমার পাঁচ আঙুলের দাগ পিছিয়ে আসছে, তোমার লুকনো জরায়ু থেকে বেরিয়ে, পিছিয়ে আমার সব তরল শুক্র ফিরে আসছে আমার কাছে। তোমার ভেতরে হারিয়ে যাওয়া সব ধূসর টিকটিকিরাও ফিরে আসছে আমার ফোকরে। একেই কি মায়াপাশ ছিন্ন করে চলে যাওয়া বলে? স্বপ্নে আমার মুখের পাশে আরও যে একটা চ্যাপ্টা, আদিম মুখ থাকে তাকে আমি প্রশ্ন করেছিলাম। অথচ দ্যাখো উইঢিবির মতো এই বিছানায় আমি ঠিকই বসে আছি আর তুমি একটা বিগতযৌবনা সোফায়। কথা বলছি, কখনও নীরব ফুলকি উড়ে যাবার মতো হাসছিও। সংসারের মুখে এখন মাসের প্রথম সপ্তাহ। জলে তার অদৃশ্য ধস্তাধস্তির শব্দ হচ্ছে। তৃতীয় সপ্তাহের পর যখন জলে আর কোনও আন্দোলন থাকে না, একটি মৃতের গন্ধ আমাদের আত্মায়, সংসারে ভেসে আসে
One Response
সুন্দর লিখেছিস। চমৎকার।