Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

জাতি, জাতীয়তা, ভেড়া ও ইত্যাদি…

দেবজ্যোতি

সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৯

Assam NRC
প্রামাণ্য
Bookmark (0)
Please login to bookmark Close

যথেষ্ট হইয়াছে। যথেষ্ট হইয়াছে। তালিবানি তেলপিঁয়াজি বাড়তে-বাড়তে ইদানীং পাঁয়তারাবাজির সমস্ত সীমা-পরিসীমা ছাড়িয়ে গ্যাছে এক্কেবারে।

হিন্দি-হিন্দু-হিন্দুস্তান সাম্রাজ্যবাদ এত কাল তা-ও মোটের ওপর সাংস্কৃতিক আগ্রাসনে, সম্পদের অযৌক্তিক ও অনৈতিক লুণ্ঠন-বণ্টন ছ্যাঁচড়ামোয় সীমিত ছিল। কিন্তু এই বার তা সরাসরি গলা টিপে ধরতে এসে গ্যাছে। জাতিসত্তাভিত্তিক কুচুটেপনা যে ছিল না, তা নিশ্চয়ই নয়, কিন্তু আজ যে ভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় প্রকাশ্য মস্তানির চেহারা নিয়েছে, আকারে-আয়তনে ও গুণগত মাপকাঠিতে তা অভূতপূর্ব।

বদমায়েশির বাড়বাড়ন্ত এই র’ম পর্যায়ে পৌঁছে গেলে, চির কালই বিশৃঙ্খলা, এমনকি বিদ্রোহও মাথাচাড়া দেয়, সারা শরীর জুড়ে ফুসকুড়ির মত অসংখ্য মুখ তৈরি হয়। পড়ে দেখবেন, দুনিয়ার বৃহত্তম সাম্রাজ্যগুলোর ইতিহাস। পিচুটি পরিষ্কার হয়ে যাবে। এখন, কেউ ভারতের ক্ষেত্রে তাকে বিচ্ছিন্নতাবাদ বা আঞ্চলিকতাবাদের বিপদ বলে সাত পাতা সেমিনার সাজাতেই পারেন, কিন্তু সত্য হলো এই যে, এটি ইউনিয়ন অফ ইন্ডিয়া, ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্র, এখানে চলতি কথায় যাকে আমরা কেন্দ্রীয় সরকার বলি, সেন্ট্রাল গভর্নমেণ্ট, আসলে সেটির সরকারি নাম এখনও ইউনিয়ন গভর্নমেণ্ট, অর্থাৎ এটি কোনও এক-ছাঁচে-ঢালা ইউনিটারি রাষ্ট্র না, নেশন স্টেটও না। এখানে, ভূগোলের ভিত্তিতে নয়, ভাষার ভিত্তিতে অর্থাৎ জাতিসত্তাকে মাথায় রেখে রাজ্যগুলো তৈরি হয়েছে, বা অন্তত তাই হওয়ার কথা। খেয়াল করে দেখুন, ইংরিজিতে কিন্তু প্রভিন্স বলা হয়নি, সারা দুনিয়ার অধিকাংশ দেশে প্রশাসনিক অঞ্চল বা রাজ্য বোঝাতে সাধারণত যা বলা হয়, এখানে তার পরিবর্তে স্টেট বলা হয়েছে। খুব একেবারে সুন্দর করে দেখাতে গেলেও ছবিটা যে ভাবে আঁকতে হবে, সেটা হলো, ঐতিহাসিক ভাবে প্রতিষ্ঠিত অনেকগুলো বাস্তব জাতিসত্তা তাদের স্বতন্ত্র আত্মপরিচয় ও আত্মমর্যাদা অক্ষুণ্ণ রেখেই একটি বৃহত্তর সমাগমে যোগদান করে একসাথে চলবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ভালো মনে যদি ধরেই নিই, স্বেচ্ছায়, বা আরও সোনালি করে বললে, সক্রিয় উৎসাহে। ঠিকঠাক একটা ফেডেরাল স্ট্রাকচার বলতে মোটামুটি তো এর’মটাই বোঝায়। এবং, এই বৃহত্তর সামগ্রিক ব্যবস্থাটির একটি সাধারণ সিদ্ধান্তগ্রহণ-পরিচালন পর্ষদ থাকবার প্রয়োজনে একটি, ওই যে বললুম, ইউনিয়ন গভর্নমেন্ট, তাকে রাখা হয়েছে। হ্যাঁ, রাখাই হয়েছে। একটি গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রে বিধি অনুসারে জনগণই রাষ্ট্রকে নিয়োগ করে। রাষ্ট্রের দাসে পরিণত হওয়ার কথা তার নয়। হওয়া সম্ভব না, আরে, সে তো নিজেই মালিক। এই কথাগুলো যদি এক বার পড়ে বুঝতে অসুবিধে হয়, অবিশ্বাস্য ও হাস্যকর মনে হয় আপনার নিজের অভিজ্ঞতার নিরিখে, তা হলে আরও দশ বার করে পড়ুন। আপনি যে রাষ্ট্রব্যবস্থায় বাস করেন, তার সংবিধানের মূল সুর এটাই। মোটামুটি এই ব্যপারটাই সেখানে দাঁতভাঙা ইংরিজিতে লেখা আছে। জনস্বার্থে আমি খানিক জল করে বুঝিয়ে বলবার চেষ্টা করলুম বড়জোর।

এখন, কথা হচ্ছে, এ সংবিধান লেখা হওয়ার পর দিয়ে, সত্যিই, এর দর্শনভিত্তির প্রায় কিছুই মানা হয়নি। এর জন্যে যাঁদের নেহরুকে দায়ী করবার, সব তাতেই যেমন করে থাকেন আর কী, এ ক্ষেত্রেও তাঁরা তা করতেই পারেন, তাঁদের ব্যপার, আমি নেহরুর উকিল নই। আমি আজ এখানে ফুসকুড়ি নিয়ে কথা বলতে বসেছি। টিপে তাকে ফাটিয়ে দিতে গেলে, হাতুড়ে হঠকারিতায় আনতাবড়ি খোঁচাখুঁচি করতে গেলে, আরোগ্যের পরিবর্তে উল্টে যদি ঘা হয়ে যায়, এতগুলো জাতিসত্তার আত্মমর্যাদাবোধ এবং যাকে বলে সারভাইভাল ইন্সটিংক্ট, যদি একবার প্রখর জাতীয়তাবাদে পরিণত হয় ভিন্ন ভিন্ন বহু, কেস কিন্তু ছেতরে ছেচল্লিশ। ছাপ্পান্ন কেন, ছিয়াত্তর বাজিয়েও তখন আর কাক-কোকিল এক করা যাবে না, মনে রাখবেন। আরে, এই যে এত এত জাতিসত্তা, আজ যে এত একতার গান কোরাস, শতসহস্র বচ্ছর ধরে তারা তো পরস্পরের বিরুদ্ধেই লড়ে এসছে, ফ্রেন্ডলি না, ফুল ডিমপাঁরুটি। এখন, আপনার যদি মনে বিশ্বাস জন্মে থাকে যে, মাত্র এই সত্তর বচ্ছরে তারা সক্কলে সোনটামনা সহোদর হয়ে গ্যাছে, তাইলে আপনি সিজোফ্রেনিয়ার রুগী, অলীক স্বপ্নের সপ্তম স্বর্গ নির্মাণ করে, সে আরশি-অবাস্তবের গোলকধাঁধায় নেশাগ্রস্ত নিজেই। আরে, আজকের বাজারেও নদীর জল কে কতটা পাবে, তাই  নিয়ে বচ্ছরের পর বচ্ছর তিড়িক্কি খেউড় চলে রাজ্যগুলোর মধ্যে, কেস কোর্ট অবধি গড়ায়। একের পর এক রাজ্যে চাকরিতে ভূমিপুত্রদের জন্য সংরক্ষণ হতে থাকে, অন্য রাজ্যের লোকেদের পেঁদিয়ে ভাগানো হয়। এই তো সে দিনও, কাশ্মীরীদের দুর্দশার খবরে কেমনি আমরা উল্লসিত হয়েছি ভাবুন বাকি সক্কলে, আপেল-আপেল মেয়েমানুষের লোভে লালাপোশ হয়েছি, ভুলে গেছেন? ভাইবোন, না? এই দেশে এক জাতির লোক অন্য জাতিকে কী চোখে দ্যাখে, আমরা জানি না? চুটকি হোক, খিস্তি হোক, ঠিক কী চলে পরস্পরের বিরুদ্ধে, জানেন না আপনি? ন্যাকা? অবসরপ্রাপ্ত সত্তরোর্ধ একজন চিকিৎসক এত বচ্ছর ধরে বিনামূল্যে এত এত রোগী দেখে আসবার পরেও, সামান্য কী একটা গাফিলতির মনগড়া অভিযোগে, আসলে অসমে বটেই, প্রায় গোটা উত্তর-পূর্বেই বাঙালি তো শত্রু অনেক কালই, আর জাতিভিত্তিক বিদ্বেষের আগুনে তো সমস্ত ন্যায় নীতি যুক্তি মায়া মমতা মানবিকতার মা-মাসি হয়ে যায়, বিষগ্রস্ত জনতা তখন উন্মত্ত খুনে, পলকে পিটিয়ে লাশ করে দেয় নামপরিচয়ে বাঙালি হিন্দু ডাঃ দেবেন দত্তকে, কিম্বা মালদা দিয়ে রাজস্থান যাওয়া বাঙালি মুসলমান শ্রমিক আফরাজুলকে ঠান্ডা মাথায় ভিডিও লাইভে লোক দেখিয়ে জ্যান্ত জ্বালিয়ে দেয়। শুনুন, আজ হঠাৎ চাট্টি নচ্ছার এসে আপনার-আমার একান্নবর্তী সংসারে আগুন লাগাচ্ছে, নইলে আমরা তো আসলে ভালো, এই ভান করবার কোনও মানে নেই আর। কেউ কাউকে কোনও কালে ছেড়ে দেয়নি এখানে, দেবেও না কক্ষনও। একবার লেগে গেলে কিম্বা লাগিয়ে দিতে পারলেই, মুহূর্তে যে মনীষীদের স্বপ্নদৃষ্ট ও বহুলপ্রচারিত মহান বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের পেছুন ফেটে আমরক্ত বেরিয়ে যাবে ফিনকি দিয়ে, সে কি আর আমরা জানি না?

শুনুন, এই সমস্তের মধ্যে একমাত্র বাঙালিই হলো ভালো। মারাঠারা আমাদের মাটি জয় করতে পারেনি, লুঠ করতে এসছে, ভয়াবহ অত্যাচার চালিয়েছে, তবু আমরা উল্টে তাদের জমি দখল করতে যাইনি, গান রচনা করে বাচ্চাকে বর্গীদের ভয়ে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়তে শিখিয়েছি। বাঙালি চিরকাল তার ছানাকে বাবুসোনা বানিয়েছে। ব্যাঁকাকাত্তিক। যেখান দিয়ে পারছে, যে-সে এসে বাঁশের পর বাঁশ দিয়ে যাচ্ছে, হাতে মারছে, ভাতে মারছে, সর্বসমক্ষে অপমান করে যাচ্ছে, বাঙালি আগেও দাঁত ক্যালাতো, এখনও ক্যালাচ্ছে। মিষ্টি। এই ক্যালাতে-ক্যালাতেই এক দিন কবরে চলে যাবে, কাশ্মীর হবে না, গ্যারান্টি। দেখুন, বাঙালি যদি জাতীয়তাবাদী হতে চাইতো, দুনিয়ায় যে কোনও প্রোপ্যাগান্ডা তৈরির সময়ে তো খানিক সত্য খানিক মনের-মাধুরী মিশিয়েই নেওয়া হয় তত্ত্বগঠনের ও রক্তগরমের সুবিধার্থে, তার জন্যে যা যা লাগে, বিশ্বাস করুন, সেই সমস্ত উপকরণ এই উপমহাদেশে আর সক্কলকার চাইতে অনেক বেশি মজুত ছিল বাঙালিরই। সে বলতেই পারতো, এই পৃথিবীর বৃহত্তম বদ্বীপ তার বাসভূমি। শুধু বৃহত্তমই না, উর্বরতমও বটে। শ্রেষ্ঠ দুটো নদী, যাদের যে কোনও একখানার চারআনা পেলেই দুনিয়ার যে কোনও জাতি আগামী চল্লিশখানা শতাব্দী গৌরনিতাই নাচবে দু’হাত তুলে, সেইর’ম দু-দুটো নদী মিলে গিয়ে তৈরি হয়েছে ঈশ্বরের স্বপ্ন এ শ্যামলস্বর্ণভূমি। আদি কাল দিয়ে আজ অবধি কেউ এটা জয় করতে পারেনি, করলেও হয় বেশি দিন ধরে রাখতে পারেনি, নইলে এখানেই সংসার পেতে রয়ে গ্যাছে ওদিকে পড়ে-থাকা তার মূল শিকড়টি ছিঁড়ে, আরে, প্রয়াগ পেরিয়ে একপা এগোতে গেলেই ক্যাদরানি সক্কলকার বেরিয়ে গ্যাছে চিরকাল, এই সে দিনকার মুঘলদেরও তাই, সেই কবেকার পুরাণ কালেও তাই, সগররাজার না কার ষোলো হাজার ছেলে বন্দী হয়ে বসেছিল এই কপিলমুনির আশ্রমে, বিদগ্ধ এক বেদবিরোধী ঋষি, সাংখ্য দর্শনের প্রবক্তা জ্ঞানীশ্রেষ্ঠ এক, এমনিতে এমন তো সব ভাব করে যেন ওদিক দিয়ে জ্ঞান এসে না-পৌঁছুলে এদিকখানা তো হ্যারিকেনই ছিল হাতে চিরটা কাল, ঠিক যেমনি ইউরোপ বলে, তারাই এসে প্রথম নাকি আলো দিয়েছে আমাদের আর, এখনও পশ্চিমমুগ্ধ বামপন্থী দালাল আর ইংরিজিশিক্ষিত এঁটো মধ্যবিত্ত যেমন প্রাণে ধরে বহন করে চলে সে প্রোপ্যাগান্ডা, তেমনি তাদের হাজার-হাজার বচ্ছর আগে দিয়েও কিন্তু অনেকে অনেক কথাই বলেছে, বহু বহু কেরামতি করবার চেষ্টা করেছে, শতসহস্র ডাকিনী হত্যা করে পুরুষপ্রধান ব্রাহ্মণ্যবাদ সারা উপমহাদেশ দিয়ে সাফ করে দিতে পেরেছে তন্ত্রজ্ঞান, মানুষের মনে ভয় আর ঘেন্না মিশিয়ে বিদঘুটে একটা বিদ্রুপ তৈরি করে দিতে পেরেছে পার্মানেণ্ট, কিন্তু বাংলার মাতৃকা, এখানকার তন্ত্র, কিছুই চটকাতে পারেনি, নারী এখানে এখনও পরমপুজ্যা, ওদিককার মতো গাই-ভ্যঁয়েস না, পুরো পৃথিবীর সবচাইতে বড় কার্নিভাল বাঙালির দুর্গাপুজোই এবং তার মূলে এখানকার মাতৃআরাধনাই, দুনিয়ার যে কোনও প্রান্তের তুলনায় এই অঞ্চলই এখনও নারীকেন্দ্রিক অধ্যাত্মসাধনায় মাথায় করে রেখেছে দশমহাবিদ্যা তার। এবং, এখানকার সমস্ত ধর্মে তার প্রভাব পড়েছে, এমনকি অজুতলক্ষ যোজন দূর দিয়ে আসা ধর্মগুলোতেও। সেই জন্যেই, আজও ওরা আমাদের না ঠিকঠাক মুসলমান মনে করে, না ঠিকঠাক হিন্দু। ইতিহাস-পুরাণ জুড়ে দেখুন, ওদের তৈরি-করা বর্ণব্যবস্থা চাপিয়ে দিতে পারেনি বলে হতাশায় আক্রোশে উল্টে আমাদের ম্লেচ্ছ বলেছে চিরটা কাল, শুনুন, আপনাদের সাধের ইন্দ্রপ্রস্থকেন্দ্রিক ভারতবর্ষ তো কোনও কালেই ছিল না রে ভাই, আসমুদ্রহিমাচল, তুর্কী-আফগানরা আসবার আগের দিন পর্যন্ত এই এ দিক দিয়েই তৈরি হতো সাম্রাজ্য, এই মগধ এই গৌড় এই ম্লেচ্ছপাড়া দিয়েই গোটা উপমহাদেশের সবচাইতে বড় এবং গৌরবময় ইতিহাস লেখা হতো চিরদিন। এমনকি, লঙ্কায় সিংহল প্রতিষ্ঠার পিছনেও, এই বাংলার মাটি দিয়ে ওঠা সিংহ এক বাঙালির ইতিহাসই এখনও মান্য ওদের মতে। শুনুন, এখনও সারা উপমহাদেশের সবচাইতে বেশি খনিজ সম্পদ এখানে। এখন যারা কথায়-কথায় বেশি ট্যাক্স দিচ্ছে বলে বেশি সুবিধে দিতে হবে বলে কথা শোনাচ্ছে নাকি, মাঝে-মাঝে তো শুনি এমনকি আলাদা হয়ে যাওয়ার কথাও নাকি উঠছে সে সব রাজ্য মিলে, তাদের জেনে রাখা ভালো, হ্যাঁ, এই উপমহাদেশের আর সক্কলকারও কান খাড়া করে শুনে রাখা উচিত, অঙ্গ বঙ্গ কলিঙ্গ পুণ্ড্র সমতট, তোদের খিস্তির এই ম্লেচ্ছদেশের মানচিত্র যদি আজ বেঁকে বসতো, তার সঙ্গে পুরাকালের প্রাগজ্যোতিষ তথা কামরূপ যোগ করে সিরাজের আমলের বাংলা বা বৃটিশের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সিখানা যদি ধরে নিই না একবার বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রোজেক্টেড ম্যাপ হিসেবে, চাট্টি সুগনো জমি আর ব্যাঁকাচোরা বেঁটে পাহাড় ছাড়া কিন্তু কিচ্ছুটি আর পড়ে থাকবে না বাকিদের ব্যাগাডুলিতে, মনে রাখবেন। শুনুন, আপনার দিবাস্বপ্নের গজওয়াতুল হিন্দ কিম্বা আফগান দিয়ে জাভা সুমাত্রা, পারলে পাপুয়া-নিউগিনি অবধি যে অখণ্ড ভারত আঁকছেন ভাই কল্পবিলাসে ভোর, প্রামাণ্য কোনও ইতিহাস ছাড়াই, সত্যি মিথ্যে পোস্ট-ট্রুথ পাঞ্চ করে লারেলাপ্পা ভুসভুসি ফেনা, বাঙালি কিন্তু চাইলেই ইতিহাসের বই খুলে দেখিয়ে দিতে পারে, বলতেই পারে চর্যাপদ পাওয়া গ্যাছে নেপালে আর এই উপমহাদেশে তৈরি হয়ে একমাত্র যে ধর্ম পৃথিবীতে আরও অন্তত কুড়িটা দেশে বিস্তারলাভ করেছে, আড়াই হাজার বচ্ছর আগে তৈরি হয়েও এখনও এত্তগুলো দেশের এত এত মানুষের মাথার মুকুট হয়ে আছে, তারও কেন্দ্র এই প্রয়াগপূর্ব অঞ্চলটাই, এইখান দিয়েই উঠে গিয়ে আমাদের দীপঙ্করই কিন্তু এখনও তাদের অতীশ। এমনকি এও বলতে পারি, সেই কোন কালের দিগ্বিজয়ী সিকন্দর, পুরুর ডায়লগে মুগ্ধ হয়ে সে ভারতবর্ষ ছেড়ে যায়নি, আরে, পুরুকে তো সে প্যাকেট করেই দিয়েছিল, তারপরেও সে আসলে বাড়ির পথ ধরলো তখনই, যখন সে জানতে পারলো আমাদের এই বদ্বীপ এই গঙ্গাহৃদির গল্প, অমন ভয়ঙ্কর রণহস্তীবাহিনী নাকি দুনিয়ার আর কোত্থাওটি নেই, এখানে মনে রাখবেন, পারস্যের বিশ্বখ্যাত হাতিদের কিন্তু সে আগেই পরাস্ত করে এসছে, তবু। এবং, আরও মনে রাখবেন, এ সব কথা বিংশ শতাব্দীতে বসে কোনও বাঙালিত্ববাদী ফ্যাসিস্ত সংগঠনের ভিশনারি গুরুজি লিখছেন না বানিয়ে-বানিয়ে, এ জিনিস ওই ওরাই, গঙ্গাহৃদির বীরত্বের ভয়ে সেই বাপি-বাড়ি-যা জাতির আঁতুড়ঘরেই লেখা হচ্ছে, গ্রীক ও রোমান ইতিহাস ভাষ্যে, এখনকার যোদ্ধা এক নেতা সম্পর্কে ওরাই লিখছে, আমাদের এদিককার আন্তর্জাতিক যোগাযোগ তখনই কত সুদূর ছিল ভাবুন, তিনি ওদের এক রাজার পক্ষ নিয়ে সেই কৃষ্ণসাগরের প্রান্তে অবধি যুদ্ধ করে আসছেন পরে। শুনুন, বিশ্বাস না-হয়, তেইশশো বচ্ছর আগেকার কথা ছাড়ুন, গোটা উপমহাদেশের আর সবখান ছেড়ে এই একটি মাত্র জায়গায় এসে, এই তো সে দিনও, মাত্র দু’চারটে শতক আগেও, পশ্চিম পৃথিবীর তৎকালীন সবচাইতে ওঁচা ডাকাতগুলোর, একটা-দুটো না, চোদ্দখানা জাতি, হ্যাঁ, ফরাসি গ্রিক রাশিয়ান দিনেমার দিয়ে শুরু করে বেলজিয়ান অবধি, এই এলাকাতেই পাশাপাশি ছাউনি ফেলেছিল, বেশি না, বজবজ দিয়ে ব্যান্ডেল অবধি হাওয়া খেয়ে আসুন গঙ্গাবক্ষে এক দিন, হ্যাঁ, ঠিকই বলছি, অন্তত চোদ্দখানা ইউরোপীয় জাতির বসতচিহ্ন এখনও আর্কিওলজি হয়ে জ্বলছে চোখের ওপর, পুরো পৃথিবীতে এর’ম উদাহরণ কিন্তু আর দ্বিতীয়টি নেই, মনে রাখবেন, এমনি-এমনি না, উপমহাদেশ যদি মৌচাক হয়, তার মধু সবটা আসলে এখানেই। শুনুন, বলতে চাইলে, বাঙালি যা যা বলতে পারে, তার সিকিভাগ শুনলেই আপনার এরিয়ান সুপ্রিমেসির ভাট মুহূর্তে ভুট্টা হয়ে যাবে ভাইটি, কিন্তু না, বাঙালি সে লাইনে যাওয়ার না। বাঙালি ভালো।

আর, এ যুগের বাঙালি তো, আহা, আতা গাছে তোতাপাখি। আতা হয়ে সে জন্মেছে, তারপর তাকে শিখিয়ে পড়িয়ে, তোতাপাখি বানিয়ে নিয়েছে সক্কলে।

কে যেন এক জন কবে – রেখেছো বাঙালি করে, মানুষ করোনি – এই র’ম কী একটা যেন লিখে গেসলেন বোধহয়, ঠিক-ঠিক এখন আর মনে পড়ছে না আমার। শুনুন, ফালতু কাঠি করবেন না, ছোটফোট আমি করছি না কাউকে, করে চাট্টি ল্যাজ গজাবে না আমার, মোদ্দা কথা হলো, যিনিই লিখে গিয়ে থাকুন, কেউকেটা কেউ একটা হলেই যে তাঁর সমস্ত ক’টা বাকতাল্লা-বাণী আহ্লাদ করে সারাক্ষণ আমার বুকে বাঁধিয়ে রেখে দিতে হবে, এর’ম কোনও দাসখত কাউকে লিখে দিইনি আমি। অন্তত এই কথাটিকে, আজকের দিনে দাঁড়িয়ে তো কোনও মতেই আর, পাত্তা দেওয়ার মতো কিছুতেই মনে করতে পারছি না, বুঝলেন? বাস্তব বরং বিপরীত।

বাঙালি আসলে বড্ড বেশিই মানুষ হয়ে গ্যাছে। সে আর বাঙালি নেই। বহু যুগ আগে দিয়েই। আন্তর্জাতিক হইয়াছে সে। কী পিন্ডির বিশ্বমানব না কী একটা হইয়াছে। প্যালেস্তিনিয় জাতিসত্তার আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার নিয়ে, তার অখণ্ডতা নিয়ে, বালোচদের স্বাধিকার নিয়ে, শ্রীলঙ্কার তামিল আর সোভিয়েতের থাবায় দমবন্ধ তুর্কি জাতিগুলোর দুঃখে, অ্যামাজনের বনবাসীদের বুক ফাটলে হাহাকারে তারও অন্নপ্রাশনের ভাত উঠে আসে মুখ দিয়ে, হংকং-তাইওয়ান-তিব্বতের যন্ত্রণায় সে ডিপ্রেশন খায় সারাটা রাত, খালি নিজের পুঁজ পুঁছবার ন্যাকড়াছেঁড়াটুকুনও তার আর বাকি রয়েছে কি না, সেই খেয়ালটুকুই শুধু নেই। বাঙালি জাতিসত্তা, তার অখণ্ডতা, তার সার্বভৌমত্ব, তার আত্মনিয়ন্ত্রণ, তার অধিকার নিয়ে কথা তুলতে গেলে, বাঙালির বিলুপ্তিশঙ্কা নিয়ে কথা বললেই, ওমনি ব্যপারটা আরও দশখানা অন্য উদাহরণের সঙ্গে মিশিয়ে দিয়ে ঘুলিয়ে ঘ করে দেবে আর চাট্টি চ্যাটাং বাঙালি মিলেই। চূড়ান্ত অন্যায়ের ইতিহাসকেও তত্ত্ব গেঁজিয়ে অতি সাধারণ করে দেবে নিজের জাতির যন্ত্রণা। ধরুন, আপনি চারের দশকের মন্বন্তর নিয়ে দু’কথা লিখতে গেলেন, এই নিয়ে কেন তখনকার ভারতীয় নেতৃত্ব বৃটিশ সরকারের কলার চেপে ধরেনি, ওরা যদি সেই সময়ে এই উপমহাদেশের বিপ্লবের সূতিকাগারকে বিনষ্ট করে দিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে মহামারী তৈরি করতে পারে, কিম্বা ওদের যুদ্ধের প্রয়োজনে ক্ষুধাপীড়িত বাংলার ত্রাণে প্রাপ্য গমভর্তি জাহাজটাকে ঘুরিয়ে অন্য জায়গায় নিয়ে চলে যেতে পারে, তথাকথিত সর্বভারতীয় রাজনৈতিক নেতৃত্ব কেন তৎক্ষণাৎ বিশ্ব জুড়ে বৃটিশের পক্ষে যুদ্ধে যাওয়া ভারতীয় সৈনিকদের সক্কলকে বার্তা পাঠিয়ে বিদ্রোহ করিয়ে দেবে বলে হুমকি দিল না, বাঙালির প্রতি এত বড় অত্যাচার কেন মেনে নেওয়া হলো সে দিন, বাঙালি কি তাহলে ভারতীয় ছিল না তখন, নাকি অন্যান্য ভারতীয়দের কোনও দায় ছিল না বাঙালির প্রতি, এই সব প্রশ্ন যদি তুলি, ওমনি বিশ্বমানব বাঙালি, আঁত-আন্তর্জাতিক বাঙালি, সেই সময়ে ফ্যাসিবাদের বিপদকে আটকাবার তাড়না যে আসলে কত বড় ছিল, যে কোনও পরিস্থিতিতেই তখন মিত্রশক্তির সাথ না-দিলে যে মানবিকতার কত বড় সর্বনাশ হয়ে যেতো, সেই নিয়ে আপনার দেড় ঘণ্টা খেয়ে নেবে বেমালুম এবং সভ্যতার সঙ্কটের চেয়ে ক’মিলিয়ন বাঙালির প্রাণ যে বড় হতে পারে না, পারলে প্রায় এর’ম একটা আবহাওয়ায় এনে ফেলবে গোটা তক্কটা। আর নইলে, এখন যা বাজার পড়েছে, গান্ধীকে গালাগাল করে দায় সেরে দেবে শর্টকাট। যারা সারবে, তাদের উল্টোটা জিজ্ঞেস করে দেখুন, তোদের মোড়লমাতব্বরগুলো তাইলে কী করছিল তখন। উত্তরে ওমনি, অমুকের বাচ্চা, তমুকের দালাল, কিম্বা অ্যান্টি-ন্যাশনাল। আরে, যে জাতি, উনিশশো এগারো বলতে খালি মোহনবাগান বোঝে, তাই নিয়েই মেতে থাকে, হ্যাঁ, নিশ্চয়ই বিরাট ঘটনা, সে নিয়ে মাতাই উচিত, কিন্তু সে মাতনের চোটে চোখে অবধি পড়ে না, রাজধানীটা তোর এখান দিয়ে উঠে হাজার মাইল ফারাকে চলে গেলো, গোটা উপমহাদেশটার ক্ষমতার কেন্দ্র ছিলি তুই, মুহূর্তে কোণায় পরিণত হলি, সে নিয়ে যে জাতির কোনও মাথাব্যথা থাকে না, এত এত নাকি মনীষীর ছড়াছড়ি তখন, কেউ একটা লিখলেন না পর্যন্ত, কোনও হাহুতাশ অবধি শোনা গেলো না, তো সেই জাতির জন্যে আজ অসম দিয়ে বর্গীদেশ অবধি ‘ডিটেনশন ক্যাম্প’ তৈরি হবে না তো কার জন্যে হবে? সেখানে জোগাড়ের কাজ করে শেষে বাঙালি মেয়েই তো জানতে পারবে আজ, এনআরসি তালিকায় তার নিজের নামটাই নেই, এই বন্দিশালা আসলে সে নিজের জন্যেই বানাচ্ছিল এত দিন। ঠিকই আছে। এ জাতির এমনটাই হওয়ার কথা। বাঙালিকে আজ জিজ্ঞেস করুন অসম চুক্তি নিয়ে, বলবে অসমীয়া জাতিসত্তা। জিজ্ঞেস করুন, গোয়ালপাড়া আর বরাক কেন অসমে যাবেকেন আজ এনআরসিতে বাদ-পড়া ১৯লক্ষের নব্বই শতাংশই বাঙালি, এবং তাতেও অসমীয়া জাতীয়তাবাদীরা বলছে, এর নাকি দেড়গুণ তালিকা তাদের কাছে তৈরি করা আছে, দশকের পর দশক ধরে সেখানে বাঙালি খ্যাদাও চলবে বাংলাদেশি মুসলমান তাড়াবার নামে, বাঙালি মাত্রেই, মুসলমান মাত্রেই তারা বিদেশি কিনা, বাংলাদেশি কিনা, কেউ প্রশ্ন তুলবে না। দুনিয়ায় আর একটা জাতি আমায় দেখিয়ে দিন, যার লক্ষ লক্ষ জাতভাই লাথ খাওয়ার মুখে দাঁড়িয়ে আছে আর সে রাগে ফেটে পড়বার বদলে উল্টে লাথমারা মহারাজের জয়গান গাইছে তারা! চ্যালেঞ্জ করছি, মানুষের গোটা ইতিহাসে এ জিনিস আর একটা দেখিয়ে দিন আমায়! এই উপমহাদেশের অন্য যে কোনও জাতির, বেশি না, এক লক্ষ লোককে বিদেশি ঘোষণা করে দ্যাখাক কেউ, দেখি কত দম, জ্বলে জালিয়ানওয়ালাবাগ হয়ে যাবে এক্ষুনি। তাইলে বাঙালি কেন এক হবে না আজ, শেয়ালদা দিয়ে শিলচর লং মার্চ হবে না কেন, কর্ণাটকের নিজস্ব পতাকা আছে, গান্ধী-মোদীর গুজরাটের অবধি অ্যান্থেম আছে, আমাদের কেন নেই, সেই নিয়ে কথা তুলতে যান, বাঙালিরই বড় বড় মাতব্বর দেখবেন কী কী সব ইজম্‌-টিজম্‌ বুঝিয়ে আপনাকে থামিয়ে দিচ্ছে ঠিক। কলকাতা শহরে একা মেয়েকে লোকে বাড়ি ভাড়া না-দিলে আমরা ফেসবুক ফাটিয়ে দেবো, মুসলমানকে না-দিলে কলকাতার গালমন্দ করবো, কলকাতায় কাশ্মীরী ডাক্তারের সন্তানেরা একঘরে হয়ে পড়লে তাদের পাশে দাঁড়াবো সক্কলে, হ্যাঁ, দাঁড়াবারই কথা, একশো বার প্রতিবাদ করবার কথা, কলকাতাকে বাংলাকে আমরা কিছুতেই তালিবানি হতে দেবো না, ঠিক, কিন্তু মাছ খায় বলে বাঙালিকে ভারতের বহু রাজ্যে বহু বড় শহরেও যখন ভাড়ায় একখানা ঘর পেতে গেলে দিনের পর দিন ঘুরতে হবে, তার বেলা বলতে গেলেই ওমনি প্রগতিশীলতাবিরোধী প্রতিপন্ন হয়ে যাবো, না? কেন? মানুষের প্রতি অন্যায় দেখলে চেল্লানো যদি কর্তব্য হয়, সে মানুষ অন্য কেউ হলে সে চিৎকার দিব্যি স্লোগান আর তুমি নিজে হলে, তোমার প্রতি অন্যায় হলে, তার বিরুদ্ধে গর্জে ওঠা ওমনি স্বার্থপরতা, না? কেন হে, বাঙালি? তুমি মানুষ না? মহান?

জন্ম কলকাতায়। কর্মও মোটের ওপর এখানেই। কারণ, সম্ভবত এ শহরের প্রতি মাত্রারিক্ত মায়া। যৌবনে পা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রথাগত পড়াশুনোর প্রতি দায়বদ্ধতা ক্রমক্ষীয়মান, উল্টে সিলেবাস-বহির্ভূত নানা বিষয়ে আগ্রহ, বিশেষ করে রাজনীতি, ইতিহাস, ধর্ম, মনস্তত্ত্ব, সাহিত‍্য, সঙ্গীত ও সিনেমা। কর্মজীবনে শুরুর দিকে, বিভিন্ন বিনোদনমূলক বাংলা টেলিভিশন চ‍্যানেলে বেশ কিছু জনপ্রিয় অনুষ্ঠানের পরিচালক। পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক সিনেমার দুনিয়ায় সম্মানিত কয়েকটি ফিল্মের সম্পাদক। এরই মধ‍্যে, প্রথম সারির কয়েকটি টেলিভিশন চ‍্যানেলে চাকরি। বর্তমানে স্বাধীন ভাবে তথ‍্যচিত্র ও প্রচারমূলক ছবি নির্মাণ, বিভিন্ন অডিও-ভিস‍্যুয়াল মাধ‍্যমে ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর হিসেবে কর্মরত। আর, ব‍্যবসা সংক্রান্ত পরামর্শদাতা একটি সংস্থার অংশীদার। প্রথম প্রকাশিত গদ‍্য ২০০৬, ঋতুপর্ণ ঘোষ সম্পাদিত ‘রোববার’ পত্রিকায় (সংবাদ প্রতিদিন)। পরে, আনন্দবাজার পত্রিকা, এই সময় ও অন‍্যত্র। প্রবন্ধ বা ফিচারধর্মী লেখার পাশাপাশি প্রকাশিত হয়েছে কয়েকটি ছোটগল্পও।

Picture of দেবজ্যোতি

দেবজ্যোতি

জন্ম কলকাতায়। কর্মও মোটের ওপর এখানেই। কারণ, সম্ভবত এ শহরের প্রতি মাত্রারিক্ত মায়া। যৌবনে পা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রথাগত পড়াশুনোর প্রতি দায়বদ্ধতা ক্রমক্ষীয়মান, উল্টে সিলেবাস-বহির্ভূত নানা বিষয়ে আগ্রহ, বিশেষ করে রাজনীতি, ইতিহাস, ধর্ম, মনস্তত্ত্ব, সাহিত‍্য, সঙ্গীত ও সিনেমা। কর্মজীবনে শুরুর দিকে, বিভিন্ন বিনোদনমূলক বাংলা টেলিভিশন চ‍্যানেলে বেশ কিছু জনপ্রিয় অনুষ্ঠানের পরিচালক। পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক সিনেমার দুনিয়ায় সম্মানিত কয়েকটি ফিল্মের সম্পাদক। এরই মধ‍্যে, প্রথম সারির কয়েকটি টেলিভিশন চ‍্যানেলে চাকরি। বর্তমানে স্বাধীন ভাবে তথ‍্যচিত্র ও প্রচারমূলক ছবি নির্মাণ, বিভিন্ন অডিও-ভিস‍্যুয়াল মাধ‍্যমে ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর হিসেবে কর্মরত। আর, ব‍্যবসা সংক্রান্ত পরামর্শদাতা একটি সংস্থার অংশীদার। প্রথম প্রকাশিত গদ‍্য ২০০৬, ঋতুপর্ণ ঘোষ সম্পাদিত ‘রোববার’ পত্রিকায় (সংবাদ প্রতিদিন)। পরে, আনন্দবাজার পত্রিকা, এই সময় ও অন‍্যত্র। প্রবন্ধ বা ফিচারধর্মী লেখার পাশাপাশি প্রকাশিত হয়েছে কয়েকটি ছোটগল্পও।
Picture of দেবজ্যোতি

দেবজ্যোতি

জন্ম কলকাতায়। কর্মও মোটের ওপর এখানেই। কারণ, সম্ভবত এ শহরের প্রতি মাত্রারিক্ত মায়া। যৌবনে পা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রথাগত পড়াশুনোর প্রতি দায়বদ্ধতা ক্রমক্ষীয়মান, উল্টে সিলেবাস-বহির্ভূত নানা বিষয়ে আগ্রহ, বিশেষ করে রাজনীতি, ইতিহাস, ধর্ম, মনস্তত্ত্ব, সাহিত‍্য, সঙ্গীত ও সিনেমা। কর্মজীবনে শুরুর দিকে, বিভিন্ন বিনোদনমূলক বাংলা টেলিভিশন চ‍্যানেলে বেশ কিছু জনপ্রিয় অনুষ্ঠানের পরিচালক। পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক সিনেমার দুনিয়ায় সম্মানিত কয়েকটি ফিল্মের সম্পাদক। এরই মধ‍্যে, প্রথম সারির কয়েকটি টেলিভিশন চ‍্যানেলে চাকরি। বর্তমানে স্বাধীন ভাবে তথ‍্যচিত্র ও প্রচারমূলক ছবি নির্মাণ, বিভিন্ন অডিও-ভিস‍্যুয়াল মাধ‍্যমে ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর হিসেবে কর্মরত। আর, ব‍্যবসা সংক্রান্ত পরামর্শদাতা একটি সংস্থার অংশীদার। প্রথম প্রকাশিত গদ‍্য ২০০৬, ঋতুপর্ণ ঘোষ সম্পাদিত ‘রোববার’ পত্রিকায় (সংবাদ প্রতিদিন)। পরে, আনন্দবাজার পত্রিকা, এই সময় ও অন‍্যত্র। প্রবন্ধ বা ফিচারধর্মী লেখার পাশাপাশি প্রকাশিত হয়েছে কয়েকটি ছোটগল্পও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Subscribe To Newsletter

কথাসাহিত্য

সংস্কৃতি

আহার

বিহার

কলমকারী

ফোটো স্টোরি

উপন্যাস