১৯৬৭-র ভোটের ফল ঘোষণার রাত থেকে মানুষের বাঁধভাঙা উল্লাস শুরু হয়েছিল৷ ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্টের দিনটি কেমন ছিল, আমার অভিজ্ঞতা নেই৷ পড়েছি বড় হয়ে৷ ১৯৬৭-র ফেব্রুয়ারিতে এল যেন দ্বিতীয় স্বাধীনতা। কংগ্রেসের পরাজয়টাই যেন মানুষের জয়৷ শৈবাল মিত্রের লেখা থেকে এক টুকরো উদ্ধৃত করে সেদিনের সমাজ-রাজনীতির আবহাওয়াটা বোঝা যেতে পারে৷ “অতুল্য ঘোষ আর প্রফুল্ল সেনের পরাজয়ের সুখবর যখন সন্ধের দিকে প্রকাশিত হল, কলকাতা ও পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য শহরে রাস্তায় রাস্তায়, অলিতে গলিতে সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত আনন্দে ফেটে পড়েছিলেন৷ খাদ্য আন্দোলনের সময় সাধারণ মানুষকে প্রফুল্ল সেন কাঁচকলা খাওয়ার নিদান দিয়েছিলেন৷ অতুল্য ঘোষের একটি চোখ দৃষ্টিহীন ছিল৷ এই দুই পরাজিতকে বিদ্রুপ করার জন্য শহরের নানা রাস্তায় কাঁচকলা আর কানা বেগুনের মালা ঝোলানো হয়েছিল৷ অসংখ্য মিছিল বের হল৷ অতুল্য ঘোষ আর প্রফুল্ল সেনের কুশপুত্তলিকা তাঁরা পোড়ান৷”
এই উল্লাস, এই উচ্ছ্বাস বেশিদিন স্থায়ী হয়নি৷ ল্যাম্পপোস্ট থেকে লালরঙের সেলোফেন কাগজগুলো স্বাভাবিক নিয়মে কয়েকদিনের মধ্যেই খসে পড়েছে৷
যুক্তফ্রন্ট সরকার ভেঙে গিয়েছে অস্বাভাবিক দ্রুততায়৷ মাত্র ন-মাসের মধ্যে৷

গোলমাল ছিল গোড়াতেই৷ সরকার গঠন প্রক্রিয়া একেবারেই মসৃণ হতে পারেনি৷ কারণ বিরোধী শক্তি ভোটে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়েছিল দুটো জোটে ভাগ হয়ে৷ সংযুক্ত বাম-মোর্চা বা ইউ এল এফ এবং প্রগতিশীল সংযুক্ত বাম মোর্চা বা পি ইউ এল এফ৷ ১৯৬৪ সালের পর জেনেছিলাম কমিউনিস্ট পার্টিও বাম ও ডান হয়৷ সিপিআই ডান বা দক্ষিণপন্থী৷ সিপিএম বাম৷ ভোটের সময় আমাদের এলাকায় সিপিএমের অফিস বসানো হল ভ্রাতৃ সংঘের গলির বাঁ-দিকে জুয়া খেলে উঠে-যাওয়া বসাকবাবুর সোনার দোকানের বন্ধ ঝাঁপ খুলে৷ আর, ডিহি শ্রীরামপুর রোডে খ্রিস্টান বাড়ির বন্ধ গ্যারেজে সিপিআইয়ের অফিস৷ এই নির্বাচনী অফিস দুটো পরে পাকাপোক্তভাবে দুটো পার্টির আঞ্চলিক অফিস হয়ে যায়৷ সিপিএমের নেতৃত্বে ইউএলএফ ৬৮টি আসনে জেতে৷ কংগ্রেস ভেঙে-আসা বাংলা কংগ্রেস ও সিপিআইয়ের নেতৃত্বে পিইউএলএফ পায় ৬৫টি আসন৷ দুই মোর্চার মিলিত শক্তি ১৩৩৷ ২৮০ আসনের বিধানসভায় কংগ্রেস পেয়েছিল ১২৭ আসন৷ পরাজয় মেনে নিয়ে কংগ্রেস সরকার গড়ার দিকে এগোয়নি৷ দুই মোর্চা মিলিতভাবে সরকার গড়ার প্রশ্নে এগিয়ে থাকলেও তাদের অভ্যন্তরীণ ফারাক ছিল বিস্তর৷ সিপিআই আর সিপিএমের সম্পর্ক ছিল যতটা সম্ভব তিক্ত৷ সিপিএমের কৃষিনীতি আর শ্রমনীতি মোটেও পছন্দ নয় বাংলা কংগ্রেস-পিএসপিদের৷ অবশেষে গোঁজামিল দিয়ে একটা সমঝোতা হল, সাধারণ মানুষের চাপে৷ ৪৩ আসনে জেতা সিপিএম মেনে নেয় ৩৪ আসনে জেতা বাংলা কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রিত্বের দাবি৷ মুখ্যমন্ত্রী হন অজয় মুখার্জি৷ উপমুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু৷
ভোটের সময় আমাদের এলাকায় সিপিএমের অফিস বসানো হল ভ্রাতৃ সংঘের গলির বাঁ-দিকে জুয়া খেলে উঠে-যাওয়া বসাকবাবুর সোনার দোকানের বন্ধ ঝাঁপ খুলে৷ আর, ডিহি শ্রীরামপুর রোডে খ্রিস্টান বাড়ির বন্ধ গ্যারেজে সিপিআইয়ের অফিস৷ এই নির্বাচনী অফিস দুটো পরে পাকাপোক্তভাবে দুটো পার্টির আঞ্চলিক অফিস হয়ে যায়৷
সরকার গড়ার প্রক্রিয়া বিলম্বিত হলে বাংলার মানুষ অস্থির অধৈর্য হয়ে ওঠেন৷ নমুনা হিসেবে একটা ঘটনা বলা যেতে পারে৷ বউবাজার স্ট্রিটে তৎকালীন সিপিআই অফিসে অজয় মুখার্জি, বিশ্বনাথ মুখার্জি, জ্যোতি বসু, হেমন্ত বসু প্রমুখ নেতা রুদ্ধদ্বার আলোচনায় বসেছেন, হাজির হলেন ‘আলোর জাদুকর’ তাপস সেন৷ বললেন, আমি এসেছি রাস্তার লোক হিসেবে৷ রাস্তাঘাটে লোকেরা কী বলে তা কি আপনারা শুনতে পান না? দ্বিতীয় স্বাধীনতার পর বাংলায় অকংগ্রেসি সরকার গড়ার দাবি এতটাই প্রবল হয়ে উঠেছিল৷
কথাগুলো বলবার কারণ, পঞ্চান্ন বছর আগেকার সময়টা একবার ফিরে দেখা, যাঁরা নতুন জানছেন তাঁদের একটু বিশদে ধরিয়ে দেওয়া৷ ১৫/১৬ বছর বয়স কতটুকু বুঝতে পারে! এখন স্পষ্ট, ওই সরকার গড়ার মধ্যেই ছিল ভাঙার বীজ৷ মিলহীন মতাদর্শ নিয়ে জোট কীভাবে টেঁকে? তার ওপর জোটের মধ্যে ছিল কয়েকজনের ব্যক্তিগত উচ্চাশা এবং রাজ্যের ও দিল্লির কংগ্রেসের চক্রান্ত৷ আমাদের পাড়া এই ভাঙনকে খুব কাছ থেকে দেখেছে৷

এন্টালি-পদ্মপুকুর পার্কে যুক্তফ্রন্ট সরকারের বিজয় উৎসব ও সংবর্ধনা সভা৷ এলেন খাদ্যমন্ত্রী প্রফুল্লচন্দ্র ঘোষ আর বাংলা কংগ্রেসের কয়েকজন নেতা৷ নেই সিপিআই, সিপিএমের কেউ৷ জিনিসপত্রের দাম তখন রোজ বাড়ছে, বিশেষ করে চালের দাম৷ রেশনে চাল মাঝেমধ্যেই অমিল হচ্ছে৷ কলকারখানায় ধর্মঘট, ঘেরাও অশান্তি ডেকে আনছে৷ প্রফুল্ল ঘোষ স্পষ্টত এসবের জন্য সিপিএম, এসইউসিকে দায়ি করলেন৷ বললেন, যুক্তফ্রন্ট সরকার সংকটের মধ্যে কাজ করছে৷ খাদ্যশস্য সংগ্রহের কাজ বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে৷ পুলিশ সব জায়গায় ঠিক মতো দায়িত্ব পালন করতে পারছে না৷ চাল-গমের কালোবাজারি চলছে৷ তবু তিনি সাধারণ মানুষকে ভরসা দিয়েছিলেন৷ বলেছিলেন, যুক্তফ্রন্ট সরকার পরিস্থিতির দিকে সতর্ক নজর রাখছে৷ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে সংকটের মোকাবিলা করা হবে৷ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে মর্যাদা দেওয়া হবে৷ এরকম ভাষণ পরে বিস্তর শুনেছি, হেসেছি, কিন্তু সেদিন খদ্দরের ধুতি-পাঞ্জাবি আর পায়ে ক্যাম্বিসের জুতো পরা অতি-সাধারণ চেহারার প্রফুল্ল ঘোষকে গরিবের কাছের মানুষ মনে হয়েছিল৷ তাঁর উচ্চারণে বাঙাল টান পেয়ে তাঁকে আমাদেরই একজন ভেবেছিলাম৷
বাংলার মানুষের আকাঙ্ক্ষায় আবেগে নির্মিত যুক্তফ্রন্ট সরকার ভাঙলেন এই প্রফুল্লচন্দ্র ঘোষ৷ স্বাধীনতার ঊষালগ্নে যিনি পশ্চিমবাংলার প্রথম মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন, রসায়নের মেধাবী ছাত্র তিনি, গান্ধীবাদী স্বাধীনতাসংগ্রামী, আপসহীন বাঙালি, কংগ্রেসের অন্তর্দলীয় চক্রান্তের শিকার হয়ে ১৯৪৭-এর ডিসেম্বরে যিনি মুখ্যমন্ত্রিত্বে ইস্তফা দেন, আপসের পথে হাঁটেননি, সেই তিনি কংগ্রেস আর বাংলা কংগ্রেসের একটি গোষ্ঠীর ফ্রন্ট ভাঙার চক্রান্তে জড়িয়ে পড়লেন৷ জড়িয়ে পড়লেন ক্ষমতার লোভে, মুখ্যমন্ত্রী হবেন বলে৷ যুক্তফ্রন্ট ভাঙার চিত্রনাট্য তৈরি করেন হুমায়ুন কবির। এ কাজে সক্রিয় সমর্থন ছিল কেন্দ্রের এজেন্ট রাজ্যপাল ধর্মবীরের৷ এঁদের নির্দেশে কাজটা অতি-গোপনে সম্পন্ন করেন ভান্তু ঘোষ ওরফে আশুতোষ, সংক্ষেপে আশু ঘোষ৷ শোনা যায়, তিনি মোটা অঙ্কের বিনিময়ে কর্মটি সম্পাদন করেছিলেন৷ বাংলা কংগ্রেসের ৯জন, পিএসপি-র ৪জন, ২ নির্দল, ১ স্বতন্ত্র সহ ১৭ বিধায়ককে নিয়ে কংগ্রেসের সমর্থনে প্রোগ্রেসিভ ডেমোক্রাটিক ফ্রন্টের সরকার গড়েন প্রফুল্ল ঘোষ৷ আয়ু মাত্র তিন মাস৷ ২১ নভেম্বর ১৯৬৭ মুখ্যমন্ত্রী হলেন৷ ২০ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৮ ইস্তফা দিলেন৷
প্রফুল্ল ঘোষ স্পষ্টত এসবের জন্য সিপিএম, এসইউসিকে দায়ি করলেন৷ বললেন, যুক্তফ্রন্ট সরকার সংকটের মধ্যে কাজ করছে৷ খাদ্যশস্য সংগ্রহের কাজ বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে৷ পুলিশ সব জায়গায় ঠিক মতো দায়িত্ব পালন করতে পারছে না৷ চাল-গমের কালোবাজারি চলছে৷ তবু তিনি সাধারণ মানুষকে ভরসা দিয়েছিলেন৷ বলেছিলেন, যুক্তফ্রন্ট সরকার পরিস্থিতির দিকে সতর্ক নজর রাখছে৷ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে সংকটের মোকাবিলা করা হবে৷ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে মর্যাদা দেওয়া হবে৷
রাত আটটা নাগাদ যুক্তফ্রন্ট সরকারকে বরখাস্ত করেন রাজ্যপাল ধর্মবীর৷ এর কিছুক্ষণ বাদেই রাজভবনে শপথ নেন প্রফুল্ল ঘোষ৷ সাংবাদিক বরুণ সেনগুপ্তের লেখায় সেই সময়ের চমৎকার একটা বর্ণনা আছে৷
‘…উঠে দেখি ছোট্ট ঘরে ড. ঘোষ শপথ নিচ্ছেন৷ ড. ঘোষ সেদিন বেজায় খুশি৷ সেই ’৪৮ সন থেকে তিনি আবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার চেষ্টা করছিলেন৷ সেই চেষ্টা সফল হল ১৯৬৭ সনে— এতদিন পরে!… তারপর একে একে শপথ নিলেন হরেন মজুমদার ও আমির আলি মোল্লা৷ পাশে সোফায় বসে প্রফুল্ল সেন, হুমায়ুন কবির এবং খগেন দাশগুপ্ত৷ তিনজনই খুব হাসিখুশি ভাব৷ একটু দূরে দাঁড়িয়ে আশু ঘোষ৷ সকালেই আশু ঘোষ তিনটি মালা এনে ঠান্ডি ঘরে রেখে দিয়েছিলেন৷ তিনটি মালা তিন মন্ত্রীকে পরিয়ে দেওয়া হল৷ তারপর আশু ঘোষ রাজ্যপালকে বললেন, স্যার, মাই টাস্ক ইজ ওভার৷ আপনি কি আমাদের একটু চা খাওয়াবেন না?’

রাতের রাজভবনে গোপনে শপথ নেওয়ার পর থেকেই প্রফুল্ল ঘোষের হারিয়ে যাওয়া শুরু৷ হারালেন তাঁর উচ্চতা৷ নানারকম হেনস্থা সইতে হয়েছে, আশু ঘোষের কটুকাটব্য শুনেছেন, বিধানসভায় আক্রান্ত হয়েছেন, প্রকাশ্যে অপমানিত হয়েছেন শারীরিক আঘাতে৷ বাংলার রাজনীতিতে তাঁর ছবি বেশ মলিন, যা হওয়ার কথা ছিল না৷ আর, অন্ধকারের খেলোয়াড় হিসেবে, মিডলম্যান হিসেবে প্রতিপত্তি বাড়তে শুরু করল ভান্তু তথা আশু ঘোষের৷ একটা ছবি কোনওদিন ভুলব না৷ তখন প্রফুল্ল ঘোষের পিডিএফ সরকার ভাঙনের মুখে৷ ডামাডোল চলছে৷ আশু ঘোষের বাড়ির সামনে বাঁধানো চত্বরে পেল্লায় সাইজের কুকুরগুলোকে স্নান করানো হচ্ছে৷ পাশে দাঁড়িয়ে যুক্তফ্রন্টের সেই পদত্যাগী বিধায়কদের কয়েকজন৷ যাঁরা নিজেদের কেন্দ্রে ফেরার সাহস পাচ্ছিলেন না৷ কুকুরস্নান দেখছিলেন৷ এঁদের ‘বন্দি’ রেখেছিলেন আশু ঘোষ৷
বাংলার অস্থির রাজনীতিতে দর কষাকষির জায়গায় নিজেকে হাজির করার মতলবে, মিডলম্যান থেকে কিংমেকার হবার বাসনায় কংগ্রেস আর পিডিএফ-এর লোক ভাঙিয়ে দল করেন আশু ঘোষ৷ ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেমোক্রাটিক ফ্রন্ট বা আইএনডিএফ৷ প্রফুল্ল ঘোষের সরকার ফেলে দিয়ে শঙ্করদাস ব্যানার্জিকে মুখ্যমন্ত্রী করে তাঁর দলের সরকার তৈরির চেষ্টা করেন৷ পারেননি৷ ১৯৬৯-এর ভোটে নিজে দাঁড়ান তিনটি কেন্দ্রে৷ এন্টালি, গোসাবা এবং সম্ভবত নদিয়ার একটিতে৷ কোথাও জিততে পারেননি৷ যতদূর জানি, তাঁর দলের একজনও নয়৷ তারপর হারিয়ে যাওয়া…
যুক্তফ্রন্টের শাসনকালেই ঘটে নকশালবাড়ির অভ্যুত্থান৷ ২৪ ও ২৫ মার্চ ১৯৬৭৷ এই ঘটনাও সরকার ভাঙার অন্যতম কারণ ছিল৷ বাংলা কংগ্রেস, এসএসপি চেপে ধরে সিপিএমকে৷ এই সময় শিলিগুড়ি গিয়েছিলেন উৎপল দত্ত৷ তিনি ঘুরে দেখেন নকশালবাড়ি৷ চারু মজুমদারের বাড়িতে যান৷ ফিরে এসে আমাদের পাড়ায় তাঁর অভিজ্ঞতা পেশ করেন৷ সেই প্রথম৷ সময়টা খুবসম্ভব জুলাই মাস হবে৷ লেডিস পার্কে সভার আয়োজন করেছিল অভিযান গোষ্ঠী৷ বামপন্থী ছাত্র-যুবদের সংগঠন৷ এসেছিলেন উৎপল দত্ত আর ঋত্বিক ঘটক৷ নকশালবাড়িতে কৃষকদের আন্দোলন, জোতদার-জমিদারদের বিরুদ্ধে লড়াই আর পুলিশের লাঠি-গুলি-খুন ও চরম নির্যাতনের বিশদ খবর দেন নিজস্ব ভঙ্গিতে৷ ‘কৃষিবিপ্লব’, ‘সশস্ত্র জমিদখল’, ‘মুক্তাঞ্চল’ ইত্যাদি শব্দের সঙ্গে আমাদের সেই প্রথম পরিচয় ৷ ঋত্বিক ঘটক ‘নীলকণ্ঠ’ ছিলেন সেদিনও, বললেন সমাজ বদলানোর কথা কড়া ভাষায়৷ আর বললেন, ভন্তু ঘোষের মতো লোকদের ছুঁড়ে ফেলতে হবে৷ লম্বা লম্বা আঙুল মুঠিবদ্ধ করে আকাশে তুলেছিলেন তিনি৷
গ্রন্থঋণ: ‘জোয়ার-ভাটায় ষাট সত্তর’— অমলেন্দু সেনগুপ্ত
‘পালাবদলের পালা’— বরুণ সেনগুপ্ত
‘বাংলায় বামেরা—রাজপথে ও রাজ্যপাটে’ — অঞ্জন বসু
ছবি সৌজন্য: লেখক
*পরবর্তী পর্ব প্রকাশিত হবের ২১ মার্চ, ২০২৩
মধুময়ের জন্ম ১৯৫২ সালে পূর্ববঙ্গের ময়মনসিংহে, কিশোরগঞ্জে। লেখাপড়া কলকাতায়। শৈশব-যৌবন কেটেছে স্টেশনে, ক্যাম্পে, বস্তিতে। গল্প লিখে লেখালেখি শুরু। পরে উপন্যাস। বই আখ্যান পঞ্চাশ, আলিঙ্গন দাও রানি, রূপকাঠের নৌকা। অনুসন্ধানমূলক কাজে আগ্রহী। পঞ্চাশের মন্বন্তর, দাঙ্গা-দেশভাগ, নকশালবাড়ি আন্দোলন নিয়ে কাজ করেছেন। কেয়া চক্রবর্তী, গণেশ পাইন তাঁর প্রিয় সম্পাদনা। প্রতিমা বড়ুয়াকে নিয়ে গ্রন্থের কাজ করছেন চার বছর। মূলত পাঠক ও শ্রোতা।