(Bengali Novel)
লিলি অনেকক্ষণ ধরেই ঘর-বার করছিল। দাওয়ার এক পাশ থেকে ঋত্বিক, তার ছেলে বলে উঠল জোরে
-মা, বাবা ফোন করেছে।
-দে, দে ফোনটা আবার তুই নিয়েছিস?
ঋত্বিক কথাটার উত্তর না দিয়ে রিং হতে থাকা ফোনটা মা’র হাতে তুলে দিল। উঠোনের উল্টো দিক থেকে জা ঝুমুর ইশারা করে জিজ্ঞেস করায়, হাত দিয়ে তাকে অপেক্ষা করতে বলে লিলি বলল
-হ্যালো…
তারক বেশ হই হই গলায় বলে উঠল-
-হ্যাঁগো, উনি এসে গেছে আমি ওঁর গাড়িতে। এক্ষুনি এসে পড়ব।
-ঠিক আছে, ঠিক আছে রাখছি। (Bengali Novel)
আগে কী হয়েছিল জানতে ক্লিক করুন
(Bengali Novel) দৌড়ে ঘরে ঢুকে চেয়ারগুলো ঠিক করে খাটটা আবার হাত দিয়ে ঝেড়ে দিল, তাদের চায়ের কাপ একটু দাগ ধরা, ঝুমুরের কাছে ওর বিয়ে থেকে তোলা একসেট কাপ প্লেট ছিল, সাথে একটা ট্রেও। সে একটু খাবার রান্না করে রেখেছে। আগস্ট মাস পড়েছে, দরদর করে ঘাম হচ্ছে, পেটটাও ভীষণ গুড় গুড় করছে।
কিছুক্ষণ বাদে দাওয়ায় তার মা’র হাতে বোনা একটা আসনে বসেছেন মিতাদি, হাতে একটা হাতপাখা রান্নাঘর থেকে লুচি, ঘুগনি বাড়তে বাড়তে ভাবছিল লিলি, মিছিমিছি ভয় পাচ্ছিল সে। কালো রুপালি মেশানো চুলে একটা হাত খোঁপা একটু ভারী চেহারা, ভারী মায়া ভরা মুখটা, একটুখানি খুঁড়িয়ে চলেন, পরনে কটকি শাড়ি, পুঁথির মালা, মস্ত টিপ, একগাল হাসি। এসে গায়ে হাত বুলিয়ে-
ইনি এসেছেন মিউটিউব থেকে? এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না। সে ভেবেছিল কোনও ভদ্রলোক আসবেন।
-ওমা এইতো লিলি দেখেই চিনেছি। কী সুন্দর ঢলঢলে মুখ্।
তার পেছনেই ছিল ঋত্বিক, তাকে বাড়িতে রিকি বলে।
-তোমার ছেলে তো? কোন ক্লাস বাবু?
-থ্রি।
-বাহ। লিলি ঢিপ করে একটা প্রণাম করল।
-আহা বেঁচে থাকো, সুস্থ থাকো, খুব ভাল হোক। তারক লিলিকে বলল
-দিদিকে ভেতরে নিয়ে যাও।
-ওমা ভেতরে যাব কেন? এই বারান্দায় বসি?
-ও দাঁড়াও, আসন নিয়ে আসি। মাদুর, আসন নিয়ে বাইরে আসতে আসনের উপর বসলেন মিতাদি। বুদ্ধি করে রিকি কোথা থেকে একটা হাতপাখা নিয়ে এসেছে
-এইতো কী স্মার্ট ছেলে গো’ হাত থেকে পাখাটা নিয়ে এক গাল হেসে লিলিকে বললেন,
-তুমি আমার কাছে এসে বসো। তারক তুমিও।
-ইয়ে একটু জল খাবেন তো? একটু ডাব আনিয়েছিলাম আপনাকে দিই?
-বেশতো, লিলি তুমি আমার পাশে এসো। (Bengali Novel)

ইনি এসেছেন মিউটিউব থেকে? এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না। সে ভেবেছিল কোনও ভদ্রলোক আসবেন। ভদ্রমহিলা তাও এরকম সাদাসিধে…
-আচ্ছা বলতো, কবে থেকে কর্তার মনে এই ভিডিওর পোকা নড়ল?
লিলি একটু ভাবল।
-উনি ভিডিও দেখতেন। দেখে দেখে আমাকে বলতেন, লিলি তুমি তো দিব্যি রান্না করো। একটা ভিডিও করব ভাবছি।
লিলি একটু হেসে ফেলল।
‘তোমার তিন চারটে ভিডিও আমি দেখেছি। গুছিয়ে রান্না করো তুমি। আর ভারী সুন্দর সহজ ভিডিও।’
-প্রথমে একটু প্র্যাকটিস করি, তা ওই সামন্ত কাকাদের পুকুরের ধারে উনুন বানিয়ে বাসনপত্র নিয়ে গিয়ে একটু অভ্যেস করলাম। তারপরে উনি তুললেন।
তারপর একটু ভেবে নিয়ে বলল
-সাহায্য করার জন্য আমার খুড়াতো জা, ঝুমুর, ওই উল্টো দিকেই থাকে, গেছলো।
-তোমার তিন চারটে ভিডিও আমি দেখেছি। গুছিয়ে রান্না করো তুমি। আর ভারী সুন্দর সহজ ভিডিও। বলতে বলতে তারক এসে গেল-
-তোমার আইডিয়া খুব ভাল তারক, কিন্তু সেটাকে আরও অনেক সুন্দর করে করা যাবে। আমরা তোমাদের সাহায্য করব, মিটিউবের পক্ষ থেকে। ভাল করে বুঝিয়ে বলছি। কিন্তু তার আগে চলো তো, ঘুরে দেখি চারপাশটা –
বলতে বলতে রিকির হাত ধরে শাড়িটা গুছিয়ে উঠে দাঁড়ালেন। রিকির মুখে আত্মীয়তার হাসি, এর মধ্যে একদম সাবলীল হয়ে গেছে সে, আগস্ট মাসে যেন একদম শরতের হাওয়া বইতে শুরু করে দিল। (Bengali Novel)
-ঋত্বিকবাবু তুমি এগিয়ে এগিয়ে চলো, তুমি আমার ক্যাপ্টেন।
পাশের বেড়ার গেট খুলে সামনের জমিতে পড়লে ওরা বেড়া বরাবর অনেকগুলো জবা গাছ, করবী গাছ ,বেল ফুল গাছ, খানিকটা এগিয়েই বাঁদিকে একটা টলটলে অপূর্ব সুন্দর পুকুর সামনে ঝোপঝাড় মতো-
-এ পুকুরটা কার’? আমার এক জ্ঞাতির। আরও দু-তিন জনের ভাগ আছে খুব মাছ হয় এখানে…
তাকে থামিয়ে মিতা বললেন-
-আর এই জমিটা তোমার?
-আজ্ঞে, হ্যাঁ খুব খারাপ অবস্থা ছিল পরিষ্কার হয়নি অনেকদিন। এখানে একটা ঘর ছিল বাবার আমলে।
-বাহ! এখানে হবে।
‘ও ছেলে তুই পথ দেখা। কাদের খেতে ভালো সবজি?’
-কী
-লিলির নতুন রান্নাঘর, আর দু’পাশে লোক দিয়ে শাক সবজি চাষ।
-রান্নাঘর এরকম আলাদা জায়গায়? আমাদের তো রান্নাঘর আছে সেটা সারিয়ে…
-না না রান্নাঘরটা হবে উঁচু মাটির চারদিক খোলা আর ব্যাকড্রপে এই টলটলে পুকুর।
স্বামী-স্ত্রী দুজনেই চুপচাপ তাকিয়ে আছে তার দিকে।
-কিন্তু দিদি রান্নাঘর থেকে জিনিসপত্র এনে এখানে আসতে তো বেশ অসুবিধা হবে।(Bengali Novel)
-কিছু হবে না এই রান্না ঘরে রান্নার উপকরণ ব্যবস্থা সব আমি বলে দেব। সবজি তোমরা ক্ষেত থেকে পাও?’ বলতে বলতে থেমে গেলেন তিনি। একগাল হেসে ঋত্বিককে বললেন
-ও ছেলে তুই পথ দেখা। কাদের খেতে ভালো সবজি?
-ও কিছু জানে না গো দিদি। পাজি শুধু ফোন নিয়ে খেলে…
-শুধু জানে না বললে হবে? জানতে হবে (Bengali Novel)

বলতে বলতে একটা আদিগন্ত সবুজ জগতে এসে পড়লেন ওরা। পাশের জমিতে যত্ন করে ফলানো মাচান থেকে কত পুরষ্টু ঝিঙে ঝুলছে। নধর সবুজ। চারদিক আলো হয়ে আছে।
-ঋত্বিক রান্না করার আগে মা যখন সবজি তুলতে আসবে, তুই আসবি তো? বিস্মিত সুরে তারক বলে উঠল
-দিদি এগুলো আমাদের ক্ষেত নয়, মিঠুনদের। অনেক সবজি বাগান ওদের, কী নেই! এখান থেকে যা দেখছেন সামনে, সবই ওদের।
-কী নাম বললে?
-মিঠুন। মৃদুল ঢোল, বড় ভাইয়ের নাম। ওরা অনেক ভাই, ওদের সবজি কলকাতা অব্দি চালান যায়। হেব্বি বড়লোক।
-ফোন নাম্বার আছে?
-ফোন? হ্যাঁ। (Bengali Novel)
কিছুক্ষণ বাদে মন দিয়ে বসে একটু একটু করে মাছের চপ আর চা খেলেন মিতাদি।
-আমাকে দিয়ে দিও। চিন্তা করো না। লিলি, তারক রান্না করার আগের দিন তোমরা ঘুরে দেখে নেবে সবজি, কোথায় কি আছে তারপরে আমাকে জানাবে। বাকিটা আমি দেখে নেব। কথা বলতে বলতে তারা ফিরে এসেছে।
দাওয়ায় বসে তারক ইশারা করল মাছের চপ কচুরি বানানো ছিল। লিলি বলল-
-আমি একটু চা আনি।
চা করতে করতে চট করে চপ, কচুরি গরম করতে থাকল একদম নেতিয়ে গেছে। কিছুক্ষণ বাদে মন দিয়ে বসে একটু একটু করে মাছের চপ আর চা খেলেন মিতাদি। (Bengali Novel)
-এই আমি তো কচুরি খাব না লিলি।
-খান না দিদি বাড়িতে বানানো।
-সে জানি। তুমি বাড়ির জন্য কি রেঁধেছ? লিলি দ্রুত বেগে ভাবতে শুরু করল এঁকে কী করে বলবে? তেলাপিয়া মাছ!
-মটর ডালের বড়া দিয়ে আলু কুমড়োর রসা।
-আমাকে একটুখানি খাওয়াবে?
-দিদি ভাত বসাইনি তো, এখনও।
-পাগল মেয়ে, ভাত লাগবে না বাটি করে একটু নিয়ে এসো।

একটু একটু করে চামচ দিয়ে মুখে তুলছেন মিতা মুখে- আইসক্রিমের মতো, মুখের প্রত্যেকটা রেখা যেন মসৃণ হয়ে যাচ্ছে তৃপ্তিতে, মৌরি মেথির গন্ধ আর একটু কাঁচা লঙ্কা।
-কী যে চমৎকার রান্না তোমার। কতকাল যে এমন খাই না। মুখটা আলো আলো হয়ে গেল লিলির।
-আরেকটু দিই দিদি?
-আমি এনে দিচ্ছি।তাড়াতাড়ি করে তারক বাটিটা নিল।
-জানিস লিলি ছোটবেলা থেকেই না আমি খেতে বড্ড ভালোবাসি। খাবার আমার বন্ধু, প্রাণের আরাম, আত্মার শান্তি, আশ্রয় যা বলবি! হেসে উঠলেন। (Bengali Novel)
-সসপ্যানে ঢাকনায় একটুও আওয়াজ না করে নিঃশব্দে পায়েস নিয়ে আবার ওপরটা সমান করে রাখতাম। মাংস, চর্বির বড়া, মাছের তেল, ডিম… এখন তো ব্লাড সুগার, ওজন… তুইও নিশ্চয়ই খেতে ভালোবাসিস?
লিলির মুখ দিয়ে কথা সরছিল না কী নিজের মানুষ মনে হচ্ছে… এত বড় কোম্পানি থেকে আসা মানুষ? সেই কলকাতা থেকে? লিলির বাড়িতে তেমন পয়সা ছিল না কিন্তু সেই দশ বছর বয়সেও লিলি আলু সেদ্ধ হলে মাকে বলত মা কড়াইতে একটুখানি সরষের তেলে, দুটো শুকনো লঙ্কা নেড়ে দাও না একটু কালোজিরা ফোড়ন দিয়ে? তারপর সেই শুকনো লঙ্কা হাতে গুঁড়িয়ে আলু সেদ্ধ মাখত নুন দিয়ে তারপর বাকি তেলটুকু ঢেলে খাওয়ার সময় বাবার মুখে যেন অমৃত খাওয়ার হাসি ফুটে উঠত। (Bengali Novel)
লিলির বাড়িতে তেমন পয়সা ছিল না কিন্তু সেই দশ বছর বয়সেও লিলি আলু সেদ্ধ হলে মাকে বলত মা কড়াইতে একটুখানি সরষের তেলে, দুটো শুকনো লঙ্কা নেড়ে দাও না একটু কালোজিরা ফোড়ন দিয়ে?
-এ আমার লিলির হাত।
-অত জিভ, হাত না হলে চলবে? মা ঝংকার দিয়ে উঠত। লিলি নিজের মনে হেসে ফেলল-
-হ্যাঁ দিদি, আমিও।
-দেখিস খুব জমে উঠবে তোর ভিডিও। তোর নতুন রান্নাঘরে উনুন থাকবে উনুন ধরাতে পারবি তো?
-হ্যাঁ
-কুলোতে মাটির ছোট ছোট বাটিতে মশলা গুছিয়ে রাখবি। নুন, হলুদ, জিরে, ধনে আর সমস্ত কিছু মশলা। এ্যালমুনিয়ামের ঝকঝকে কড়াই থাকবে। বটিতে তরকারি কাটবি, ঝুড়িতে গুছিয়ে রাখবি আর তার পাশে কি রাখবি বল তো মেয়ে?
-কি দিদি?
-শিলনোড়া। সব মশলা বাটা হবে, একদম ফ্রেশ মসলা দিয়ে রান্না। আচ্ছা তোর কোনও জা বা ননদ আছে?
-হ্যাঁ দিদি পাশে থাকে তো। মিতা চুপ করে থাকেন কিছুক্ষণ। শরশর করে হাওয়া দিচ্ছে, চারদিকে মাটি, গাছের থেকে কী তীব্র একটা বনজ গন্ধ…
-কী নাম?
-ঝুমুর, বললাম না উল্টো দিকেই থাকে
-হুম, তোর সাথে ভিডিও করেছে। ওকে লাগবে। (Bengali Novel)

-তোর সাথে কথা বলে নেব। প্রত্যেক দুই সপ্তাহে কী কী রান্না হতে পারে। বুঝলি? খুব তাড়াতাড়ি কিন্তু সব শুরু হয়ে যাবে। ভেবে নে, দুই সপ্তাহের মধ্যে তুই ওই জায়গায় নতুন রান্নাঘরে রান্না শুরু করবি।
-দিদি, আপনাকে যে কী বলব…
-ধুর রান্না করবি তো তুই।(Bengali Novel)
বাড়ি থেকে বেরিয়ে বিদায় নেওয়ার সময় লিলি, ঋত্বিক গাড়ি পর্যন্ত হেঁটে এল। রান্নাঘরের ভেতরে ভাতের জল চাপিয়ে অর্জুনকে চান নিয়ে তাড়া দিতে দিতে লিলির ভেতরটা উথাল-পাথাল হতে লাগল। কান্না, হাসি, আনন্দ, ভয়… কে বলবে উনি অত বড় কোম্পানির মানুষ? যেন কত দিনের চেনা। নিজের মতো সব যেন জানেন, সব জেনেই এসেছেন, নিজে হাতে করে সমস্ত সমস্যা সমাধান করে দেবেন। গলা বন্ধ হয়ে এল লিলির।
ঠাকুর তুমি আছো। তারকের বিডিও অফিসে পিয়নগিরি আর যেটুকু চাষবাস। ঠাকুর কি তবে মুখ তুলে তাকালে এতদিনে? (Bengali Novel)
একই রকম একটা আচ্ছন্ন ভাব নিয়ে ফিরছিল তারক, সে তো কিছু আশা করতেই ভয় পাচ্ছিল সেখানে এত অমায়িক একজন মানুষ… ভাবতে ভাবতে ফোনটা এল। ভিডিও কল।
-হ্যালো মিতাদি
গাড়ির মধ্যে মিতাদির চোখে সানগ্লাস কেমন যেন একটা অন্যরকম লাগছে।
-হ্যাঁ তারক শোনো একটা কথা তোমার মা বাবা তো তোমার কাছে নেই রাইট?
হঠাৎ করে ছোঁড়া প্রশ্নটা যেন অন্য কেউ করছে তারক ঠিক বুঝতে পারল না কী উত্তর দেবে? একটু ভেবে বলল-
-আজ্ঞে না। ওঁরা এখন ভাইয়ের বাড়িতে আছে, কাছে আমার এক দিদিও থাকে।
-এর মধ্যে ওঁরা ফিরবেন? (Bengali Novel)
কিছুক্ষণ চুপ করে রইল তারক। ফোনের মধ্যে সানগ্লাস পরা মৌমিতা তাকিয়ে আছেন তার দিকে। মরিয়া হয়ে তারক বলে উঠল।
-মা এসব মিটিউব পছন্দ করে না লিলির সাথে ঝগড়া লেগে থাকে…
তাকে মাঝ পথে থামিয়ে দিয়ে মিতা বলে উঠলেন
-ওঁদের আমার তেমন কোন দরকারও নেই। ঠিক আছে। শুধু এটা বলো তোমাদের কাছাকাছি কোনও বয়স্ক মানুষ থাকে?
কথাটা যে কোন দিকে যাচ্ছে তারকের কাছে সবকিছু গুলিয়ে গেল।
-পাশে একজন জ্যাঠা থাকেন আসা যাওয়া আছে। দাদু নয়। জ্যাঠা। জ্ঞাতি, তবে বয়স হয়েছে…
-হুম ওঁকে আনতে হবে ভিডিওতে, তোমরা দাদু ডাকবে।
-দাদু ডাকব? (Bengali Novel)
কিছুক্ষণ চুপ করে রইল তারক। ফোনের মধ্যে সানগ্লাস পরা মৌমিতা তাকিয়ে আছেন তার দিকে।
-আর শোনো তোমার ওই বৌদি আর দাদুর সাথে কথা বলে রাখবে ওঁরা প্রায় যেন প্রত্যেক এপিসোডেই থাকেন। আমি বলে দেব। রান্নাঘর বানানোর কাজ সামনের সোমবার থেকে। গ্রামের লোকেদের যাদের বাগান বা পুকুর থেকে সবজি মাছ লাগবে তাঁদের সঙ্গে আমার কথা হয়ে যাবে চিন্তার কিছু নেই। ওকে? আমি ছাড়ছি। পরে কথা হবে।
ফোনটা ছেড়ে দিয়েছেন মিতাদি, ফোনটা ছাড়ার পর একই জায়গায় দাঁড়িয়ে রইল তারক সবকিছু কেমন তাড়াতাড়ি হচ্ছে, পিছলে যাচ্ছে মনে হল তার সবকিছু। কিছুক্ষণ আগের আনন্দে সামান্য অস্বস্তি ঢুকে যাচ্ছে। (Bengali Novel)
(ক্রমশ)
মহুয়া সেন মুখোপাধ্যায় বস্টন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী। মূলতঃ ছোট গল্প এবং আর্টিকেল লেখেন। ছোট গল্প সংকলন ক্যালাইডোস্কোপ এবং অপরাজিতা প্রকাশিত হয়েছে, কমলিনী,দেজ পাবলিকেশন থেকে।একটি ছোট গল্পের অনুবাদ শর্টলিস্টেড হয়েছে, ‘Armory Square Prize for women writers in South Asian literature’ এ। অনুদিত গল্পটি প্রকাশিত হয়েছে বিখ্যাত Words Without Borders এর পাতায় ।আনন্দবাজারের বিদেশ পাতার নিয়মিত লেখেন তাছাড়া রোববার-সংবাদ প্রতিদিন, বাংলা লাইভ, গুরুচণ্ডালী এবং আরো কিছু ম্যাগাজিনে গল্প এবং ছোট বড় প্রবন্ধ নিয়মিত লেখেন।