যেই বলেছি
যেই বলেছি একতারা আয়, নাম লিখি তোর খাতায়,
অমনি নাচে টুনটুনি রোদ বেলকুঁড়ি, ঝাউ পাতায় ।
যেই বলেছি এই পুঁতি বোন নাকছাবি দ্বীপ কোথায়?
অমনি আতর জুঁই নদীটি ফুলগুলি সব ফোটায়।
যেই বলেছি রূপকথা হাঁস আয় রাঙা পথ বানাই,
অমনি বাজে রাজার পোশাক, রূপনগরের সানাই।
যেই বলেছি কোন মায়াতে দিনগুলো রোজ ফুরোয়?
অমনি সাগর গান ঢেলে দেয় তিন পাহাড়ের চুড়োয়।
যেই বলেছি আজ তারাঢেউ আয় আমাদের পাড়ায়,
অমনি আকাশ ভালোবাসায় নীল দুটি হাত বাড়ায়।
ওলোটপালোট
আকাশে উড়ছে
গাঁটি!
আলোতে হাসছে
পাটি!!
টুপুদি আঁকছে
ওড়া!
বাতাসে দুলছে
ঘোড়া!!
পুকুরে ভাসছে
ঘুড়ি!
হাঁসেরা নাড়ছে
কুঁড়ি!!
পাহাড়ে ছুটছে
পানা!
মেঘেরা শিখছে
ডানা!!
ঠাকুমা বুনছে
বাড়ি!
আমাকে ডাকছে
শাড়ি!!

যে মেয়েটা
যে মেয়েটা ছড়ায় সাগর পারুল চাঁপার মনে।
যে মেয়েটা খুশির খবর পাঠায় হলুদ বনে।
যে মেয়েটা ঘুরে বেড়ায় শিরিন নদীর বাঁকে।
যে মেয়েটা আপন মনে উদাস দুপুর আঁকে।
যে মেয়েটা ধুলো ওড়ায় কুসুমপুরের পথে।
যে মেয়েটা আলোক ছড়ায় দুলদুলুনি নথে।
যে মেয়েটা সাহস জাগায় আশার প্রদীপ জ্বেলে।
যে মেয়েটা রামধনু মন। সরায় আঁধার ঠেলে
যে মেয়েটা রূপকথাপুর। নুপূর পরে নাচে।
যে মেয়েটা সোহাগ দিয়ে ফোটায় কুঁড়ি গাছে।
যে মেয়েটা রোদের কুচি ছড়ায় নদীর কুলে।
যে মেয়েটা মনের আগল সদাই রাখে খুলে।
যে মেয়েটা শালুক ফুলের আদর ভালোবাসে।
যে মেয়েটা খুশির পালক ছড়ায় সবুজ ঘাসে।
যে মেয়েটা টগর, পলাশ, তিতিরপুরের ছুটি।
যে মেয়েটা নদীর সাঁকো। বুনো হাঁসের জুটি।
যে মেয়েটা সাঁতার কাটে গাঁয়ের পুকুরঘাটে।
যে মেয়েটা কাগজ কুড়োয় নিঝুমপুরের হাটে।
যে মেয়েটা ঝুমঝুমি ভোর, কেবল কাছে ডাকে।
সেই মেয়েটাই বাঁশি আমার। হৃদয় জুড়ে থাকে।
মালিপাখি ছদ্মনামে কাব্যচর্চা করেন গদাধর সরকার। তাঁর জন্ম ১৯৬৭ সালে নদিয়ার কৃষ্ণনগরে। সেখানেই বেড়ে ওঠা। পেশায় ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের কর্মচারী। নেশায় কবি। ছোটদের কথা, নীল আকাশ, টুকলু, তিতলি, জীবনকুচি প্রভৃতি পত্রিকায় ইতিমধ্যেই তাঁর লেখা প্রকাশিত হয়েছে। ডি এম লাইব্রেরি থেকে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর বই - মালিপাখির ছড়া সংগ্রহ।