নরেন্দ্রনাথ, দেবেন্দ্রনাথ আর খগেন্দ্রনাথ। মানুষ নয়। তিনজনই বেড়াল। ধূসর রং, তার মধ্যে কালো ডোরাকাটা— অবিকল বাঘের মতো। নরেন্দ্রনাথ আমার মায়ের ঠাকুর্দার নাম। দেবেন্দ্রনাথ খোদ রবীন্দ্রনাথের বাবা। আর খগেন্দ্রনাথ ঠিক কে, তা আমি আজও জানি না। কিন্তু সদ্য জন্মানো তিন বেড়ালছানার এমনই নাম রেখেছিলাম আমি। তখন আমার বয়স কত হবে? ছয় কিংবা সাত।
চোখ ফোটেনি তাদের তখনও। ছোট্ট ঝুড়ির মধ্যে থাকত। সেই অবস্থাতেই তাদের ধরে নাড়াচাড়া করতাম আমি। যত্ন নিতাম। পরিষ্কার করে দিতাম। তারপর একে একে তারা বড় হল। আর নামগুলো কেমন ছোট হয়ে গেল। নরেন্দ্রনাথ হল ‘নরু’, দেবেন্দ্রনাথ ‘দেবু’ আর খগেন্দ্রনাথ ‘খগু’।
আরও পড়ুন: নেহরু থেকে ইমরান খান— রাষ্ট্রনেতাদের পোষ্যপ্রেম
আসলে আমাকে পুষেছিল এদের মা। তার নাম পুশি। আমাদের পুরনো বাড়িটায় একটা ছোট উঠোন ছিল। দুপুরবেলা সেখানেই সাম্রাজ্য বিস্তার করতাম আমি। লাফালাফি, দৌড়োনো, আবার লেগোর ব্রিক আর পুরনো সোফাসেটকে নৌকা বানিয়ে ভেসে যেতাম কল্পনার কোনও এক রাজ্যে।
এমনই এক দুপুরবেলায় পুশি এসেছিল, দরজার নিচ দিয়ে গলে… ছোট্ট বেড়াল। তবে ছানা নয় ঠিক। শৈশবে ছেলেরা নির্দয় হয়। আমিও ছিলাম। তাই ছোট্ট বেড়ালটাকে প্রবল প্রহারে উদ্যত হলাম। অবশ্য প্রহারের সামগ্রী বলতে সামান্য একটা জুতো বাঁধার কালো ফিতে। তাই দিয়েই দুমদাম মারলাম বেড়ালটাকে। বেড়ালটা এদিক ওদিক পালাল। তারপর দরজার নিচ দিয়ে গলে বেরিয়ে গেল।

দুপুর ঘনিয়ে বিকেল হল। আর আমার হল তীব্র অনুশোচনা। অকারণ একটা বেড়ালকে মারলাম? কেন মারলাম? নিজেকে ঠিক রামায়ণের রাবণের মতো মনে হল। কিংবা ঠাকুরমার ঝুলির রাক্ষসের মতো। নেহাতই নির্দয় আমি।
বিকেল ফুরিয়ে সন্ধে। সন্ধে ফুরিয়ে রাত। ন’টা নাগাদ স্থির করলাম আর কোনও বেড়ালকে কোনওদিন মারব না। কিছুতেই না।
এই ঘটনার দিন তিনেক পরে আবার সে এল। যথারীতি দরজার তলা দিয়ে। ছোট্ট বেড়াল। গায়ে কমলা আর কালোর অনবদ্য ছোপ। আর ভারি সুন্দর মায়াময় একটা চোখ। আমি টপ করে তাকে ধরে কোলে তুলে নিলাম। আর সেও আমার কোলে গুটিশুটি বসে পড়ল। আমি ভাবলাম তাকে পুষলাম। ভালবেসে নামও ভেবে ফেললাম একটা– ‘পুশি’।
তখন বুঝিনি। এখন বুঝতে পারি। আসলে পুশিই আমায় পোষ মানিয়েছিল। মানবিক তিন অনুভূতি— পাপবোধ, অনুশোচনা আর মায়ায় সে আমাকে দগ্ধ করে, মাছের মতো খেলিয়ে খেলিয়ে ছিপে গেঁথেছিল। আসলে মানুষ কখনও বেড়াল পুষতে পারে না। বেড়ালরাই তাদের পোষ্য মানুষদের বেছে নেয়। তারপর ভুলিয়ে-ভালিয়ে তাকে ঠিক পোষ মানায়। নিজের ক্রীতদাস করে ফেলে।

বেড়াল যে আসলে মানুষের থেকে বেশি বুদ্ধিমান একটা প্রাণী, একথা অনেকেই মানতে চাইবেন না। কিন্তু পৃথিবীতে মানুষ ছাড়া একমাত্র যে প্রাণীটি পদার্থবিজ্ঞানের গবেষণাপত্র লিখেছে সে বেড়ালই। তার নাম চেস্টার। অবশ্য গবেষণাপত্রটি সে লিখেছিল তার ভালো নাম এফডিসি উইলার্ড নামে। আর এই গবেষণাপত্রটা ছাপা হয়েছিল পদার্থবিজ্ঞানের অন্যতম সেরা জার্নাল ফিজিকাল রিভিউ লেটারসে। গবেষণাটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ— বিভিন্ন তাপমাত্রায় অণুর আচরণ নিয়ে।
চেস্টার পুষেছিল মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানী জ্যাক এইচ হেথেরিংটনকে। ১৯৭৫ সালে হেথেরিংটন অণুর এই আচরণ নিয়ে দীর্ঘ গবেষণা করে একটা গবেষণাপত্র লেখেন। তারপর সেটা পড়তে দেন তাঁরই এক সহকর্মীকে। সহকর্মী সেটা পড়ে জানান, গবেষণাটা খুবই ভালো। তবে একটা সমস্যা আছে। গোটা পেপারটাতেই হেথেরিংটন ‘আমি’ না লিখে ‘আমরা’ লিখেছেন। পুরো পেপারটা আবার নতুন করে টাইপ করার আগে হেথেরিংটন সেটা আবার পড়েন। তাঁর মনে হয় কাজটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, এবং সেটাকে প্রকাশ করতে দেরি করা উচিত নয় একদমই। অতএব আমরা কেটে আমি লেখার বদলে তিনি পেপারের লেখক হিসেবে আরও একটা নাম যোগ করে দেন। সেটা তাঁর প্রভু বেড়ালের নাম। ফেলিক্স ডোমেস্টিকা চেস্টার উইলার্ড বা এফডিসি উইলার্ড। এই উইলার্ড আসলে চেস্টারের বাবা।

বলাই বাহুল্য, পেপারটা প্রকাশিত হয়ে যায়, এবং বেশ সাড়াও ফেলে। অনেকদিন পর এই গবেষণাপত্রটা পড়ে মিশিগান উইনিভার্সিটিতে এক পদার্থবিজ্ঞানি হেথেরিংটনের সঙ্গে দেখা করতে আসেন। হেথেরিংটনকে না পেয়ে তিনি এফডিসি উইলার্ডের খোঁজ করেন। তখনই প্রকাশ পায় উইলার্ডের আসল পরিচয়।
পরে মিশিগান ইউনিভার্সিটিও চেস্টারকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটিং ডিসটিংগুইশড ফেলো হিসেবে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানায়। কিন্তু মানবিক এই সব ফালতু পদে যোগ দিতে স্বভাবতই রাজি হয়নি চেস্টারের মতো বুদ্ধিমান বেড়াল। এবং মানুষদের বেড়ালের বৌদ্ধিক ক্ষমতা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল না করতে চেয়ে ফিজিক্সের গবেষণাপত্র প্রকাশেও আর রাজি হয়নি।
শুধু নেহাতই চাপাচাপিতে ১৯৮০ সালে ফরাসি পপুলার সায়েন্সের এক পত্রিকায় একাই সে একটা পেপার লিখেছিল। বলা বাহুল্য, পেপারটা ইংরাজিতে নয়। খাঁটি ফরাসিতে।

হেথেরিংটন ভেবেছিলেন তিনি স্বেচ্ছায় চেস্টারের নাম দিয়েছেন। তিনি যে ভুল ভেবেছিলেন তা আমাকে শিখিয়েছিল গদাই। কর্মসূত্রে দীর্ঘদিন মুম্বইতে ছিলাম। মা মাঝে মাঝে গিয়ে থাকত আমার কাছে। প্রতিবারই বাড়ির বেড়ালদের দেখাশোনা, খেতে দেওয়ার বন্দোবস্ত করে। কিন্তু একবার বাড়ি ফিরে বেড়ালগুলোকে আর খুঁজে পায়নি মা। ভীষণ মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল আমাদের দু’জনেরই। ঠিক করেছিলাম আর বেড়াল পুষব না কিছুতেই।
মুম্বাই থেকে কলকাতায় ফিরে এলাম। একদিন জানলা দিয়ে ঠিক পুশির মতোই ছোট্ট একটা বেড়াল এসে হাজির হল। তার পিঠে দগদগে একটা ঘা। আমরা দু’জনেই স্থিতসংকল্প কিছুতেই বেড়াল পোষা হবে না। কিন্তু দগদগে ঘা পিঠে। তাই বাইরে থেকেই তার চিকিৎসা শুরু হল। খেতে দেওয়াও। গদাইয়ের ঘা সেরে গেল। কয়েক মাস পরে তার পেটও ফুলে গেল। আমরা বুঝতে পারলাম গদাই গর্ভবতী।
ঠিক প্রসব করার আগে গদাই সোজা চলে এল ঘরের ভেতর। তারপর গ্যাট হয়ে আমার কোলে বসে পড়ল। কোলের ওপর বেড়ালের প্রসব করানোর মতো সাহস আমার ছিল না। অতঃপর বাধ্য হলাম একটা ঝুড়ির মধ্যে কাপড়চোপড় দিয়ে গদাইয়ের আঁতুড়ঘর তৈরি করতে। গদাই প্রসব করল। তিনজনকে। একজন ছোটবেলাতেই মারা গেল। বাকি দু’জনের নাম রাখা হল গঞ্জালভেস আর বেঞ্জামিন।

পরের বছর গদাই আর বেঞ্জামিন দু’জনে একই সঙ্গে প্রসব করলেন। মোট ছয়জন শিশু সন্তান। দুই মা একই সঙ্গে তাদের সবার পরিচর্যা করে। কিন্তু কদিন পরেই হঠাৎ মারা গেল তিনজন। বাকি দু’জন খাওয়া বন্ধ করে দিল। ডাক্তার জানালেন ভাইরাল ফিভার হয়েছে ওদের। এত ছোট বাচ্চা, স্যালাইনও দেওয়া যাবে না। অতঃপর দশদিন নাগাড়ে ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জে অল্প অল্প করে মাছ-সেদ্ধ জল আর ওষুধ খাওয়ানো। দিনের মধ্যে অন্তত দশ-বারো বার। বাচ্চাগুলো অদ্ভুতভাবে চেয়ে থাকত আমার দিকে। বুঝতে পারতাম খিদে পেয়েছে ওদের। দশদিন এইভাবে চলার পর তারা আবার খাওয়া শুরু করলেন।
বাচ্চারা তো সুস্থ হল। কিন্তু গৃহত্যাগ করল গদাই। আমাদের বাড়ি থেকে তিনটে বাড়ি পরে নতুন বাসা বাঁধল সে। প্রতিদিনই দেখা হয়। গদাইকে ডাকি। গদাই মুখ ঘুরিয়ে নেয়। ধরতে গেলে পালিয়ে যায়। নাগালের বাইরে কার্নিশে বসে এমনভাবে তাকায় যেন ওর সন্তান প্রতিপালনের জন্যই আমায় পুষেছিল। এখন কাজ মিটেছে। গদাইয়েরও আমায় আর দরকার নেই।

গদাই ফিরল ঠিক পাঁচ বছর পর। অদ্ভুতভাবে, এক রাত্রে। তখন লকডাউন। গদাইয়ের পিঠের ওপর আবার দগদগে একটা ঘা। তার ভেতর মাছির লার্ভা। অর্থাৎ ম্যাগট। লকডাউনের মধ্যেই ডাক্তার ডাকা হল। ওষুধ দিয়ে ম্যাগট মেরে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ানো হল। কিন্তু ঘা শুকলো না কিছুতেই। ডাক্তার বদল হল। নতুন ডাক্তার বললেন অপারেশন করতে হবে। অপারেশনের পরে সেলাই খুলে গেল। ঘা ফের ফিরে এল। বায়োপসি করে জানা গেল গদাইয়ের ক্যান্সার হয়েছে। সারবে না।
তিনমাস গদাই ছিল আমাদের বাড়িতে। একটু একটু করে ক্ষয়ে গেল যেন। শেষের দিকে আর নড়তেও পারত না। মাঝে মাঝে আমি ওকে বারান্দার রেলিং-এ শুইয়ে দিতাম। গদাই সামান্য মাথাটা নেড়ে বাইরের পৃথিবীটা দেখার চেষ্টা করত। তারপর একদিন হঠাৎ ঢেকুর তোলার মতো করে গদাই চলে গেল আমাদের ছেড়ে।
গদাই আমাকে পুষেছিল তার প্রসবের জন্য। মৃত্যুর ঠিক আগে গদাই আবার ফিরে এসেছিল আমার কাছে। কারণ ও জানত, ওর সেই সময় সেবা দরকার। আর সেই কয়েকটা মাস অসহ্য যন্ত্রণায়, অসহায়তায় ছটফট করেছি আমি। পোষ্য মানুষটার ওপর এমন নিষ্ঠুর আর স্বার্থপর আচরণের কী কারণ ছিল গদাইয়ের, তা আমি আজও বুঝিনি।

গদাইয়ের মতোই এসেছিল ভুতোও। বুড়ো একটা বেড়াল। দাঁত পড়ে গেছে সব। আর নাক দিয়ে অবিশ্রান্ত সর্দি ঝরে। ডাক্তার জানালেন হাঁপানি আছে ওর। নেবুলাইজার লাগবে। ভুতোকে প্রায়শই নেবুলাইজ করতে হত আমায়। বুড়ো মানুষের মতোই। আমার বিয়ের ঠিক দিন দশেক আগে ভ্যানিশ হয়ে গেল ভুতো। ফিরে এল চারদিন পর। মুখের ভেতর ঘা। তাতে থিকথিক করছে ম্যাগট।
মুখের ভেতর ম্যাগট মারার স্প্রে করা যাবে না। ডাক্তার চেষ্টা করলেন ফর্সেপ দিয়ে বার করতে। কিন্তু অসংখ্য ম্যাগট। কত বার করবেন? ডাক্তার বললেন, বাঁচানো যাবে না ওকে। মাথা ফুঁড়ে বেরিয়ে আসবে ম্যাগট। বলা মাত্র খিঁচুনি শুরু হল ভুতোর। সহ্য করতে পারলাম না। ডাক্তারকে বললাম আইভারমেক্টিন ইনজেকশন দিতে। আইভারমেক্টিন বেড়াল নিতে পারে না। বহু সময় মারা যায়। ডাক্তার কিছুতেই রাজি নন। প্রায় হাত পা ধরে রাজি করালাম তাঁকে। ইঞ্জেকশন দেওয়ামাত্র ভুতো কোমায় চলে গেল।
তিনদিন কোমায় ছিল ভুতো। দুশো ওয়াটের বালব জ্বেলে তার নীচে শুইয়ে রেখেছিলাম ওকে। কিছুতেই টেম্পারেচার পড়তে দেব না। দু’বেলা স্যালাইন দিই। আর প্যারাভেট বলেন, ও বাঁচবে না। কষ্ট না দিয়ে ইউথেনেশিয়া করে দিন। বিয়ের দু’দিন মাত্র বাকি। বুঝতে পারছি না সেদিন কীভাবে ভুতোকে নিয়ে যাব। রাত্রিবেলা ভুতো উঠে বসল নিজে থেকেই। তারপর খেতেও শুরু করল। বিয়ের দিন সম্পূর্ণ সুস্থ ভুতো।

ভুতোর মতোই এসেছিল সমাদ্দারও। লকডাউনের সময়। আমার পেছন পেছন। আশ্চর্য এক বেড়াল। ঠিক কুকুরের মতো পোষ-মানা। যা বলা হয় তাই করে। সারাক্ষণ জাপটে থাকে আমাকে। একদিন রাতে হঠাৎ বেরিয়ে গেল সমাদ্দার। আর খুঁজে পাওয়া গেল না তাকে। তিনদিন পর জানতে পারলাম অ্যাক্সিডেন্টে মারা গিয়েছিল সে।
আমার স্ত্রী বেড়াল পছন্দ করত না একদম। কিন্তু বেড়াল ওকে ঠিক পোষ মানিয়ে ছাড়ল। আমার মতোই ওর বাড়িতেও হানা দিল এক গর্ভবতী বেড়াল। সে আর তার দুই শাবক বিয়ের পর যৌতুক হিসেবে চলে এসেছে আমাদের বাড়িতে। এখন মোট ছয়জন বেড়াল পুষেছেন আমাদের। তাঁদের নাম মেলুকুমার, খেলুকুমারী, টনটন, টেলুমতী, লালুময় এবং কিরোকান্ত। এদের একজনের ইউরিনারি ব্লাডারে ইনফেকশন, একজনের প্যাংক্রিয়াসে। একজনের অ্যালার্জি আছে। একজন প্রবল নার্ভাসনেসে ভোগেন। একজন মারামারি করে ঘা করেন প্রায়দিন। শেষজন রেগে গেলেই কামড়ে দেন।
আমি, আমার বউ, আমার মা— সবাই ওদের পোষ্য। আমাদের কাজ সারাদিন অক্লান্ত ওদের সেবা করা। ওদের ভালো থাকাটাই কবে যেন আমাদের ভালো থাকা হয়ে গিয়েছে।
*ছবি সৌজন্য: Pinterest, Facebook, Adobe stock, Pixabay
শমীক ঘোষ-এর জন্ম কলকাতা, ১৬ জানুয়ারি, ১৯৮৩। পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক। কলেজজীবনের শুরু থেকেই লেখালেখির সূত্রপাত।
কর্মজীবনের শুরু কলকাতাতেই। পরে সরকারি ব্যাঙ্কে চাকরির সূত্রে থেকেছেন আমদাবাদ ও মুম্বাইতে। ২০১৪ সালে বাংলায় লেখালেখি ও ছবি করবার স্বপ্ন নিয়ে কর্পোরেট স্ট্র্যাটেজির চাকরি ছেড়ে কলকাতায় ফেরা। তারপর
পেশার জন্য নানা কিছু--- বিজ্ঞাপনের অনুবাদ, টেলিভিশনের স্ক্রিপ্ট রাইটার। কিছুদিন সাংবাদিকের চাকরিও। বর্তমানে একটি বহুজাতিক টেলিভিশন চ্যানেলে কর্মরত।
প্রথম গল্প ‘ঘোলা’ ২০০৩ সালে দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত। তারপর দীর্ঘ এক দশকের ছেদ পেরিয়ে শমীকের লেখা প্রকাশ পেতে শুরু করে নামকরা বাণিজ্যিক পত্রপত্রিকার পাশাপাশি চেনা-অচেনা লিটল ম্যাগাজিনেও।
প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘এলভিস ও অমলাসুন্দরী’-র জন্য পেয়েছেন সাহিত্য অকাদেমি যুব পুরস্কার (২০১৭), বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের ইলা চন্দ স্মৃতি পুরস্কার (২০১৭) এবং পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমির সোমেন চন্দ স্মৃতি পুরস্কার (২০১৯)। ব্রিটিশ প্রকাশনি সংস্থা Vintage, Penguin Random House, তাদের Hervill Secker Young Translator’s Prize 2018-এর জন্য তাঁর লেখা গল্প বেছে নিয়েছিল। গল্পটি পরে প্রকাশিত হয় প্রখ্যাত ব্রিটিশ সাহিত্য ম্যাগাজিন Granta-এর অনলাইন সংস্করণে। মেক্সিকোর গুয়েদালাহারা বিশ্ববিদ্যালয়ের পত্রিকার লুভিনা-৯৭ এর বিশেষ ভারতীয় সাহিত্য সংখ্যায় তাঁর লেখা গল্প স্প্যানিশে অনুদিত হয়েছে। অনুবাদ হয়েছে বিভিন্ন ভারতীয় ভাষাতেও।