আইন সকলের জন্য সমান, এ কথা হাজার বার শুনেছি, পড়েছি। কিন্তু সে যে মানুষ, পশু নির্বিশেষে সকলের জন্য সমান তা প্রমাণ করে দিল ফ্রান্সের কোর্ট। নেহাতই নিরীহ মোরগ কোর্ট কেস জিতে প্রমাণ করে দিল যে আইন কোনও পক্ষপাতিত্ব করে না। জানি, জানি এতটা পড়ে ভাবছেন, ভুলভাল খবর দেওয়াটাই আমার কাজ। মোটেই তা নয়! বিষয়টা মজার কোনও গল্পের বিষয়বস্তু মনে হলেও একেবারে খাঁটি সত্যি। ঘটনাটা তা হলে জানাই আপনাদের।
ফ্রান্সের অতলান্তিক সমুদ্রের ধারে একটি ছোট্ট দ্বীপ ওলেহোর বাসিন্দা আমাদের গল্পের নায়ক মরিস। চার বছরের মোরগ দিব্যি অভ্যেসবশত রোজ সকাল থেকেই হাঁকডাক করত। কারণ ছোট থেকেই সে এমনটা করে এসেছে। কিন্তু তার কোনও ধারণাই ছিল না, তার এই সামান্য অভ্যেস তাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে পারে। ওলেরনে মরিসের প্রতিবেশী হয়ে এলেন ষাটোর্ধ্ব দম্পতি। তাঁদের আদি বাড়ি ফ্রান্সের আর এক শহর লিমোসে। ওলেহোতে দ্বিতীয় বাড়িটা কিনে ভেবেছিলেন এবার থেকে ছুটিছাটায় এখানেই আসবেন। আরামে, নিশ্চিন্তে কাটিয়ে দেবেন দিনগুলো। কিন্তু বাধ সাধল মরিসের ডাক। প্রতি দিন সকালের তার ডাকের চোটে ঘুমোতে পারতেন না এই দম্পতি। ব্যস আর কী, মরিসের বিরুদ্ধে ঠুকে দিলেন মামলা।
তাঁদের উকিল ভিনসেন্ট হুবারডো জানিয়েছেন, “ছুটিতে এসে একটু নিরিবিলিতে থাকতে চান ওই দম্পতি। কিন্তু মোটে আরাম পাচ্ছেন না।” অগ্যতা মরিসকে হাজির হতে হল আদালত। তবে মরিস যেন প্রতিনিধি হয়ে উঠল ফ্রান্সের গ্রামীণ জীবনযাপনের। কারণ মরিস তো প্রথম নয়, এর আগেও গরুর ডাক, চার্চের ঘণ্টার আওয়াজের বিরুদ্ধে মামলা নথিবদ্ধ হওয়ার ঘটনা আছে ফ্রান্সে।
ফলে যাঁরা গ্রামাঞ্চলে থাকেন, তাঁরা সকলেই চাইছেল নির্দোষ মরিস যেন বেকসুর খালাস হোক। আর হলও তাই। ওই বরিষ্ঠ দম্পতি হেরে গেলেন মরিসের কাছে। মরিসের মালিক করিন ফোসো জানিয়েছিন, “আজ মরিসের জয় আসলে সমগ্র ফ্রান্সের জয়। মরিসদেরও তো প্রয়োজন এমন কোনও আইন যা তাদের স্বাভাবিক জীবনযাপন করার জন্য শাস্তি দিতে না পারে।” করিন নিজেও ওলেরনের বাসিন্দা। দীর্ঘা ৩৫ বছর ধরে ওখানেই আছেন। তাঁর বয়সও ৬০-এর উপর।
ফ্রান্সের শহরের সঙ্গে শহরতলি এবং গ্রামাঞ্চলের ঝামেলা অনেক দিনের। শহুরে মানুষেরা প্রায়ই গ্রামাঞ্চলে বাড়ি কেনেন। কিন্তু এখানেও তাঁরা শহুরে জীবনের আদবকায়দা খোঁজেন। গ্রামের মানুষের যে নিজস্ব জীবনধারা আছে, তা মানতে চান না এবং মানিয়েও নিতে পারেন না।
দম্পতির উকিল অবশ্য এই হার মানতে রাজি নন। তিনি এখনও মনে করেন মোরগ, কুকুরের ডাক সবই শব্দ দূষণের পর্যায় পড়ে। এগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। করিনের উকিল জুলিয়েন প্যাপিনো অবশ্য বলেছেন মরিসের ডাক যে অন্যদের বিরক্তি কারণ হতে পারে, তার কোনও প্রমাণ পাওয়া যায় নি। উলটে কেস হেরে এখন ওই দম্পতিকে করিনকে ৯০০ পাউন্ড জরিমানা দিতে হবে।
মেয়র ক্রিস্টোফ সুয়ের অবশ্য প্রথম থেকেই মরিসের সঙ্গে ছিলেন। গ্রামীন জীবনধারাকে কোনওভাবেই নষ্ট করতে চান না সুয়ের। ওঁর বক্তব্য গ্রামাঞ্চলে থাকতে গেলে স্থানীয় সংস্কৃতি, ঐতিহ্য মেনেই থাকতে হবে। আর তার একটা বড় অংশ খামার প্রাণীদের স্বাধীনতা।
মরিস জিতে গেছে ঠিকই, কিন্তু শহর আর গ্রামের দ্বৈরথ এখনও শেষ হয়নি। আরও একটি মোরগ, হাঁস, গুজের বিরুদ্ধে কেস দায়ের করা আছে ফ্রান্সের কোর্টে। এবার দেখা যাক মরিসের মতো তারাও বেকসুর প্রমাণিত হন, নাকি তাদেরকেই শহুরে মানুষদের সঙ্গে আপস করতে হয়!
One Response
my brother and I are lucky having found this forum, it is really the thing my friends from work and I were scouring the internet for. The detailed information on this great website is with out a doubt appreciated and is going to help my buddies all throughout the week intuitive help. It seems like everyone on the blog acquired incredible amounts of specific details about the things I am interested in and the other hyper links and information really are shown. Typically I’m not searching the web much and as we feel like it Im totally looking this type of factual information or stuff likewise just like it. Can’t express my gratitude. If you know anyone that wanted major helpful services like: [url=https://keenerlegal.com/counterfeit-takedown/]intellectual property litigation lawyers[/url] and [url=https://www.gotwebsite1.com/index.html]facebook advertising companies[/url] I can help.