গতকাল রাত্রে ওরা আসানসোলে এসেছে। বাবার অফিসের কী কাজ আছে। মা’র অফিসেও এমার্জেন্সি। ফলে সে একাই এসেছে বাবার সঙ্গে। যখন অফিসের কাজে আসানসোল যাবার কথা উঠল, সুজাতা বলেছিল,
– হোটেলে উঠব না। চলো না রাঙাকাকার নতুন বাড়িতে যাই। সেই কবে দেখেছি। ফোনে কথা হলেই, আমরা যাই না বলে কাকা কত দুঃখ করে।
শুনে মিঠু লাফিয়ে উঠেছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সুজাতা আটকা পড়ে গেল। রাঙাদাদু আর্মি অফিসার হয়ে চাকরি থেকে অবসর নেবার পরে এই বিশাল বাগানঘেরা বাড়িটা কিনেছেন এক ড্যানিশ সাহেবের কাছ থেকে। তাঁর নাম স্টিড জেফারসন। তিনি অনেক বিলিতি গাছ আনিয়ে বাগান সাজিয়েছিলেন। তাদের কিছু বেঁচেছে, কিছু বাঁচেনি এদেশের জলহাওয়ায়। কিন্তু হঠাৎ করেই একদিন সিদ্ধান্ত নিলেন দেশে ফিরে যাবেন।
এক বন্ধুর কাছ থেকে এই বাড়ির সন্ধান পেয়ে রাঙাকাকা অর্থাৎ রক্তিম মিত্র এটা কিনে নিলেন একেবারে জলের দরে। রানিদিদা অবশ্য বারণ করেছিলেন,
– তোমার ওই জঙ্গুলে বাড়িতে গিয়ে কে থাকবে বলতো?
রাঙাদাদু কর্ণপাত করেননি। আসলে এমন ছবির মতো বাড়ি দেখেই তিনি মোহিত হয়ে গিয়েছিলেন।

সকালে মিঠুর কিছুতেই বিছানা ছেড়ে উঠতেই ইচ্ছে করছিল না। এক আশ্চর্য স্বপ্নের দৃশ্য তাকে আচ্ছন্ন করে রেখেছিল। আচ্ছা গাছটা কি মেপল? আর ওই দোলনাটা? কে দুলছে সেই দোলনায়? মিঠু তার মুখ দেখতে পাচ্ছে না, কিন্তু পিছন থেকে যেন বড্ড চেনা চেনা লাগছে। বেশ বেলা হয়ে গিয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাস শেষ হতে চলল। কিন্তু বাতাসে এখনো ঠাণ্ডার আমেজ রয়েছে। সকালের দিকে মিহি চাদরের মতো চারপাশে কুয়াশা জড়িয়ে থাকে।
মেয়েটা এখনও উঠছে না দেখে রানিদিদা দেখতে এসেছিলেন। পর্দার ফাঁক দিয়ে সকালের নরম আলো এসে পড়েছে মিঠুর মুখের উপরে। রানি ভাবলেন, সকালের আলোয় একরাশ বেলফুল যেন হেসে উঠেছে। মায়াভরা হাতে মিঠুর গায়ে আদুরে নাড়া দিয়ে বললেন,
– এই মেয়ে, ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে কী বলছিস? খুব স্বপ্ন দেখছিস বুঝি? উঠবি না?
মিঠুর ঠোটের কাঁপন থেমে গেল। আস্তে আস্তে সে স্বপ্নের দুনিয়া থেকে মাটিতে নেমে আসছে। স্বপ্নের রেশ একরাশ খুশি হয়ে তার সারা মুখে ছড়িয়ে পড়ছে। অনেকদিন পরে তার সকালে ঘুম থেকে উঠে এত ভালো লাগছে। সকালে জলখাবার খেয়ে বাগানে নেমে দাদু নাতনির কী আহ্লাদ! রাঙাদাদু সত্যজিৎ রায়ের মতো লম্বা। গমগমে গলায় বুকভরা হাসিতে তিনি বললেন,
– দিদিভাই, এমনি লিকপিকে চেহারা হলে হবে! আমার মতো তাগদওয়ালা হতে হবে তো!
মিঠু হিহি করে হেসে বলল,
– আমার কিন্তু মগজাস্ত্রের খুব জোর।
রাঙাদাদু বাতাস কাঁপিয়ে হেসে উঠে বললেন,
– ফেলু মিত্তিরও আমার মতো লম্বাচওড়া আর বলশালী ছিল। মগজের সঙ্গে পেশিশক্তিরও জোর দরকার দিদিভাই।
জেফারসন সাহেব এই বাড়িটা স্ক্যান্ডিনেভিয়া অঞ্চলের বাড়ির মতো করে বানিয়েছিলেন। মাথাটা গম্বুজের মতো। ওক কাঠের মেঝে। বড় বড় কাচের জানালা। মিঠু বলল,
– আচ্ছা দাদু, সাহেব এই বাড়ি বিক্রি করে চলে গেল কেন?
– সে এক রহস্য। সাহেব এই বাগানে কাউকে ঢুকতে দিতেন না। আর তিনি নিজেও প্রয়োজন ছাড়া বাইরে যেতেন না। কেউ কেউ বলে এই বাগানের কিছু গাছ অকারণেই মরে যাচ্ছিল। সেই জন্যে মনের দুঃখে তিনি দেশে ফিরে গেছেন। তিনি নাকি রাত্রে বন্দুক ছুঁড়তেন!
বিশাল বড় বাগান। বাড়ি কেনার পরে কিছুটা পরিষ্কার করিয়েছেন রাঙাদাদু। বাড়ির পিছনে পশ্চিম দিকটা একেবারেই জঙ্গল হয়ে আছে। বড় বড় ঘাস নুড়ি বিছানো পথ ঢেকে দিয়েছে। রাঙাদাদু বললেন,
– দাঁড়াও দিদিভাই আমার বন্দুকটা নিয়ে আসি। ওই দিকে শেয়ালের বাসা। বন্দুক হেঁকে তাদের ভয় দেখাব।
কাঁধে উইনচেস্টার রাইফেল ঝুলিয়ে রাঙাদাদু আঙুল দেখিয়ে গাছ চেনাচ্ছিলেন,
– এটা পাইন, এটা ওক, ওই দেখো সিলভার পাইন। এই ডান দিকেরটা বার্চ। ওই জবুথুবু বুড়োর মতো— ওটা উইলো।
মিঠুর চোখ যেন সেই স্বপ্নে দেখা মেপল গাছটাকে খুঁজছিল। এই তো বসন্ত এসে যাচ্ছে দরজায়। এবার মেপলের ফুল ফোটার কথা। সেই গাছ আর দোলনাটা কই? মিঠুর যেন কেমন জেদ চেপে যাচ্ছে। মাথার ভিতরে হঠাৎ যেন একটা রাগের বাষ্প ফুঁসে উঠছে। সে এমনিতেই ভীষণ জেদি। বিশ্রী বিরক্তি মেশানো গলায় সে বলল,
– রাঙাদাদু সেই মেপল গাছটা কোথায়?
মিঠুর দিকে ফিরে তাকালেন রক্তিম। নাতনির এমন গলার স্বরে আর কথা বলার ভঙ্গিতে তিনি অবাক হয়েছেন। তবু মুখে হাসি রেখে বললেন,
– কই, মেপল গাছ তো দেখিনি।
মিঠু তীব্র চোখে চারপাশে তাকাতে তাকাতে গরগরে গলায় বলল,
– ছিল তো? কোথায় গেল? আর দোলনাটা?
রাঙাদাদু যেন চিন্তায় পড়ে গেলেন। তিনি তো কোনও মেপল গাছ দেখেননি এই বাগানে। আবার সামনের ঝোপঝাড়ের দিকে তাকালেন তিনি। বহু গাছ আর গুল্মের ভিড়ে জায়গাটা কেমন অন্ধকার হয়ে আছে। নিজের মনে মাথা নাড়াতে নাড়াতে বললেন,
– বুঝলে দিদিভাই, এবার এই দিকটা সাফাই করাব।
মিঠুর চোখ যেন সেই স্বপ্নে দেখা মেপল গাছটাকে খুঁজছিল। এই তো বসন্ত এসে যাচ্ছে দরজায়। এবার মেপলের ফুল ফোটার কথা। সেই গাছ আর দোলনাটা কই? মিঠুর যেন কেমন জেদ চেপে যাচ্ছে। মাথার ভিতরে হঠাৎ যেন একটা রাগের বাষ্প ফুঁসে উঠছে।
মিঠু সেই কথায় কান না দিয়ে সামনের ঝোপটার দিকে এগোতে গেল। রাঙাদাদু ওর হাত টেনে ধরলেন।
– ওদিকে যেও না দিদি। সাপখোপ থাকতে পারে। তার উপরে কাঁটার খোঁচা।
কিন্তু মিঠুর গায়ে যেন অসুরের বল! রাঙাদাদু হাত ধরে আটকাতে পারছেন না তাকে। মনে মনে ভাবলেন, বাপ রে, এইটুকু মেয়ের গায়ে বেশ জোর তো! তখনই বাড়ি থেকে কাজের মেয়েটি হাঁক দিল। রাঙাদাদু বললেন,
– চলো দিদি, তোমার দিদিমা তলব করেছে। দেরি করলে মহারানি কিন্তু কোর্টমার্শাল করে দেবে।
মিঠুর মুখ নরম হয়ে গিয়েছে ততক্ষণে। দুপুরে খাওয়াদাওয়ার পরে মিঠুর ঘুম ভাঙতে বিকেল গড়িয়ে গেল। মনটা কেমন বিষাদে ভরে গিয়েছে। আজকাল এমন হয়। কিচ্ছু ভালো লাগে না। মোবাইল নিয়ে সে বিছানায় পড়ে থাকল। রাঙাদাদু বসে বসে কত গল্প শোনাচ্ছিলেন। কার্গিল যুদ্ধের গল্প। তারপরে সব গল্পের রাজা ভূতের গল্প এল। রাঙাদাদু বললেন,
– জানো দিদিভাই, আমিও আত্মায় বিশ্বাস করতাম না। কিন্তু ওই যুদ্ধের পরে করি। চোখের সামনে যেন তাদের দেখেছি। তোমরা ভাবো আত্মা বুঝি শুধু ভয়ঙ্কর। যে মানুষটা বেঁচে থেকে ভালোমানুষ ছিল সে মানুষটা আফটার লাইফ খারাপ হয়ে যাবে কেন?

মিঠুর গল্পে মন ছিল না। সে শুধু জানালার দিকে তাকাচ্ছিল। তার মনে হচ্ছিল কে যেন জানালার বাইরে দাঁড়িয়ে তাদের গল্প শুনছে। পাতা নড়বার খসখস শব্দ সে শুনতে পাচ্ছে। অথচ জানালার লাগোয়া তো কোনও গাছ নেই! কোনও ডালপালাও জানালার পাশে উঠে আসেনি। হঠাৎ জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে মিঠু দেখল চাঁদের আলো এসে পড়েছে কী যেন একটা পাতার উপরে। জানালার বাইরে পাতা এল কোত্থেকে? এমন গাছের পাতা সে আগে কোথায় দেখেছে? পাতাগুলো যেন হাত নাড়িয়ে তাকে ডাকছে। রাঙাদাদু কি দেখতে পাচ্ছে না? রানিদিদাও আমতেল মাখানো মুড়ি নিয়ে তাদের গল্পে যোগ দিয়েছেন। দাদু মুড়ি চিবোতে চিবোতে অনর্গল গল্প বলে যাচ্ছিল।
– বুঝলি দিদি, সেদিন আমি আহত হয়ে একটা পাহাড়ের খোঁদলে আটকে পড়েছি। চারপাশে অনবরত শত্রুদের শেল বর্ষণ চলছে। যে কোনও মুহূর্তে একটা শেল আমার মাথার ওপরে এসে পড়তে পারে। হঠাৎ মনে হল কে যেন আমার পা ধরে টানছে। আবছা আলোয় দেখলাম আমার এতো বড় শরীরটাকে অবলীলায় কে যেন কাঁধে তুলে, হাওয়ার মতো উড়িয়ে নিয়ে চলেছে। তারপরে আমাদের বাঙ্কারের কাছে নামিয়ে সেই ছায়ামূর্তি চলে যাচ্ছে। একবার সে পিছন ফিরে তাকাল। আবছা আলোয় মনে হল, আরে এ তো ক্যাপ্টেন সোঢি! সারা শরীরে ভয়ঙ্কর যন্ত্রণার মধ্যেও কেঁপে উঠেছিলাম। সকালেই তো খবর পেয়েছি, বন্ধু ক্যাপ্টেন সোঢি শহিদ হয়েছে।
রাঙাদাদুর মনটা যেন সহসা বিষণ্ণ হয়ে উঠল। সেই সঙ্গে ঘরের আবহাওয়াও। সেই অবস্থা কাটাতে রানিদিদা হাসার ভঙ্গি করে বললেন,
– রাখো তো তোমার যত আষাঢ়ে গপ্প।
কিন্তু মিঠুর কোনও কথা কানে যায়নি। বাবা আজ ফিরবে না। মিঠু রানিদিদার কোলের কাছে শুয়ে পড়ল। মাঝরাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেল তার। জানালার বাইরে থেকে কে যেন তাকে ডাকছে।
– এই মিঠু! মিঠু…
গলার স্বরটা খুব চেনা। কার গলা? কিছুক্ষণ কান পেতে মিঠু বুঝল গলাটা অবিকল তার নিজের স্বর! মিঠু উঠে জানালার কাছে গেল। বাইরেটা চাঁদের আলোয় ছমছম করছে। ওই তো সেই মেপল গাছটা। গাছে কত ফুল ধরেছে ! আর তার ডাল থেকে ঝোলানো দোলনায় কে দুলছে? তার মতোই তো মেয়েটা দুই বেণী করে চুল বেঁধেছে। রানিদিদা যেমন করে সন্ধ্যাবেলা বেঁধে দিয়েছিল। মিঠুর মনে হল গাছের পাতাগুলো যেন দুলে দুলে তাকে ডাকছে।
মিঠু সন্তর্পণে দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে এল। নুড়ি বিছোনো পথ পেরিয়ে বাগানে নামল। ঘাসের উপর শিশিরে তার পা ভিজে যাচ্ছে। কিন্তু সে যত এগিয়ে যাচ্ছে তত যেন সেই মেপল গাছটা পিছিয়ে যাচ্ছে। আর তার দোলনায় মেয়েটি অবলীলায় দুলে চলেছে। এগোতে এগোতে মিঠু ঠিক সেই সকালবেলার জায়গাটায় চলে এসেছে। এখানটা বেশ ছায়া ছায়া। চাঁদের আলো যেন পথ হারিয়ে ফেলেছে। তবু মিঠুর কোনও ভয় করছে না। ওই তো ওরই মতো এক মেয়ে দোলনায় দুলে চলেছে। আর ঝুরঝুর করে কত ফুল এসে তার গা মাথা ভরিয়ে দিচ্ছে।
এদিকে রানিদিদা ঘুমের ঘোরে পাশ ফিরে মিঠুকে না পেয়ে বিছানায় উঠে বসলেন। কোথায় গেল মেয়েটা! রাত্রি প্রায় দুটো বাজে! দিদা উঠে বাথরুমের কাছে গেলেন। ঘরের লাগোয়া বাথরুম নেই। বাথরুমটা বারান্দার এক পাশে। কই, মিঠু কোথায়? রানিদিদার চিৎকারে রাঙাদাদু-সহ বাড়ির কাজের লোকরাও জেগে গিয়েছে। সবাই হইহই করে ছুটে এসেছে। কোথায় মিঠু? রাঙাদাদুর কাঁধে রাইফেল। তাঁর মনে পড়ল সকালের কথা। মিঠু কি সেই পিছনের ঝোপ জঙ্গলের দিকে গেছে? সবাই সেই দিকে দৌড়ল।
জোরালো টর্চের আলোয় দেখা গেল, ওই তো মিঠুর জামার এক কোণা! কাঁটাঝোপ পেরিয়ে সে ভিতরে ঢুকে গিয়েছে। নিচু হয়ে দু’হাত দিয়ে এক মনে গুল্মের ডালপালা সরাচ্ছে। রক্তিম চেঁচিয়ে উঠলেন,
– দিদিভাই! কী করছ?
তিনি ঝোপঝাড় ভেঙে মিঠুর পাশে গিয়ে দাঁড়ালেন। মিঠু ঠোঁটে আঙুল দিয়ে চুপ থাকতে বলল তাঁকে। সামনের ঝোপ আন্দোলিত করে কে যেন চলে যাচ্ছে! দাদু ভাবলেন কোনও জানোয়ার। বন্দুক তুললেন। মিঠু চিৎকার করে উঠল। কান্না জড়ানো গলায় বলল,
– মেরো না দাদু। মেরো না দাদু, এখানের গাছগুলো সরাবে? প্লিজ?
– এখনই?
মিঠু ঘাড় নাড়ল। কাজের লোক জগাই আলো আর দা নিয়ে এসেছে। বন সরাতেই একটা গাছের কাণ্ড জেগে উঠল ঘাসের আস্তরণ ভেদ করে। হঠাৎ মাটি সরিয়ে মিঠু সেই গাছের কাণ্ডের নিচ থেকে একটা ছোট্ট ফোটো অ্যালবাম বের করে আনল। পলিথিনের আস্তরণ মোড়া বলে এখনও সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যায়নি। রাঙাদাদু সেই গাছের কাণ্ডের উপরে আলো ফেলে ফেলে দেখলেন। মৃত গাছটির সারা গায়ে বুলেটের ক্ষত। মিঠু ততক্ষণে টর্চের আলোতে সেই অ্যালবাম খুলে ধরেছে। দুটো ছবি এখনও স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। ফুলে ফুলে ভরে ওঠা একটি মেপল গাছ। ছবিতে গাছ থেকে ঝুলছে একটি দোলনা। সেই গাছেরই গুঁড়ি যেন পড়ে আছে। মৃত।
জগাই সেই পড়ে থাকা গুঁড়ির মাথার দিকের কিছু জঙ্গল সাফা করে ফেলেছে। আড়াল সরে যেতেই একটা ছোট্ট গাছ যেন মাথা তুলে হেসে উঠল। ছোট্ট একটা মেপল গাছ। মিঠুর সারা শরীর হঠাৎ যেন কেঁপে উঠল। কে যেন তার কানের কাছে ফিসফিস করে ডাকছে তার নাম ধরে।
– মিঠু! এই মিঠু…
সে লক্ষ করল টর্চের আলোর সামনে সেই ছোট্ট গাছটা যেন ছোট্ট এক মেয়ের চেহারা নিয়েছে। তার মাথায় মেপল পাতার মুকুট। মুখটা অবিকল মিঠুর মতো। ছোট্ট আর এক মিঠু।
অবিন সেনের জন্ম ১৯৮৪ সালে হাওড়ার গ্রামে। স্কুলের ম্যাগাজিনের জন্য প্রথম কবিতা লেখা। পরবর্তীকালে কবিতার সঙ্গে সঙ্গে নিতান্ত আলগোছে লেখা হয়েছে কিছু গদ্য বা না-গল্প। সেই সঙ্গে ঐতিহাসিক ও গোয়েন্দা গল্প/উপন্যাস। চারটি বই প্রকাশিত হয়েছে এ পর্যন্ত। দু'টি গল্প সংকলন 'আয়নাঘর' ও 'পালকের ভার'। কবিতার বই 'গ্লোকাল দ্রাঘিমা' এবং রহস্য উপন্যাস 'বিষ কুয়াশা'।