Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

বিশ্বায়ন ও আমরা– কী বদলালো, কী নয়?

প্রবীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

জুলাই ২৭, ২০২৩

Globalization and India
Bookmark (0)
Please login to bookmark Close

‘’দেখুন, ব্যাঙ্গালোরে এসে যখন ট্রাফিক লাইটে দাঁড়াবেন, কিছু ছেলেছোকরা দৌড়ে এসে আপনার গাড়ির জানলায় ধাক্কা দেবে। দেখবেন তাদের হাতে রয়েছে সেলোফেন পেপারে মোড়া আমেরিকান বিজনেস বইগুলোর দু’নম্বরি কপি…ভুলেও আমেরিকান বই কিনবেন না, ওগুলো গতযুগের ব্যাপার… এই শতক শুধু হলুদ আর বাদামি মানুষের।
আপনি আর আমি।‘’

এমনটাই জানিয়েছিল বলরাম, চিনের রাষ্ট্রপতি ওয়েন জিনবাওকে লেখা চিঠিতে। কোন বলরাম? ২০০৮ সালের বুকারজয়ী উপন্যাস ‘দ্য হোয়াইট টাইগার’-এর কেন্দ্রীয় চরিত্র। অরবিন্দ আদিগার কলমে সৃষ্ট বলরামকে বিশ্বায়ন-পরবর্তী ভারতের এক ভরসাযোগ্য মুখপাত্র হিসাবে ভাবা যেতেই পারে। গয়া জেলার এক প্রত্যন্ত গ্রামের ছেলে বলরাম, যার বাবা চালায় রিক্সা, আর যার বাড়ির দোরগোড়ায় বাঁধা থাকে সে বাড়ির সবথেকে মূল্যবান সম্পত্তিটি— একটি মাদি মোষ।

সেই বলরামও বলছে আমেরিকার দিন শেষ, একুশ শতক শুধু চিন আর ভারতের।

boy selling book

বলরাম চরিত্রটি কাল্পনিক হতে পারে, কিন্তু এই যে অসম্ভব আত্মবিশ্বাস, অথবা নিছক দুঃসাহস, অথবা মিডিয়াজাত মূর্খামি, এ সবই বড় বাস্তব। বিশ্বায়ন-পরবর্তী যুগে সংবাদপত্রের উত্তর-সম্পাদকীয়তে, আপাত-ঝকঝকে বিজনেস স্কুলের শ্রেণীকক্ষে, বা ঘরোয়া আড্ডায় এ কথা বার বার শোনা গেছে। অরবিন্দের বই বেরোনোর সাত বছর আগে গোল্ডম্যান-স্যাকস জানিয়েছেন একুশ শতকের অর্থনীতি তার অসীম সম্ভাবনা নিয়ে আবির্ভূত হবে চার ঘোড়ার রথ BRIC-এ, ‘I’ টি বলা বাহুল্য ইন্ডিয়া (বাকিরা যথাক্রমে ব্রেজিল, রাশিয়া এবং চিন)। এসব কথা শুনতে শুনতে আমরা, শিল্পপতি নন্দন নিলেকানির ভাষায়, কখন জানি হয়ে পড়েছি এক Restless nation— বাজার নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রবল আগ্রহ, আর সে বাজারের পূর্ণ ফায়দা তুলতে গিয়ে যতবার মান্ধাতা আমলের সরকারি নীতি প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছে আমরা বারংবার ধৈর্য হারিয়েছি। বিশ্বায়িত বাজারের হাত ধরে আমাদের ছেলেমেয়েরা ছড়িয়ে পড়তে চেয়েছে সারা পৃথিবীতে, অথচ রাজ্যে রাজ্যে বহু সরকার একুশ শতকের শুরুতেও ‘মাতৃভাষা মাতৃদুগ্ধ’ নীতি আঁকড়ে ধরেছে, ফল হয়েছে এই যে, অতি নিম্নবিত্ত ঘরের ভারতীর সন্তানরাও দৌড়েছে পাড়ার মোড়ে আচম্বিতে গজিয়ে ওঠা ইংরেজি মিডিয়াম স্কুলে। নন্দন নিলেকানি, নারায়ণ মূর্তি বা আজিম প্রেমজিদের দাবি মেনে আমাদের ছেলেমেয়েরা উচ্চশিক্ষা বলতে ক্রমেই বুঝেছে কোডিং। দুই তৃতীয়াংশেরও বেশি ভারতীয় দ্বারস্থ হয়েছেন বেসরকারি চিকিৎসাব্যবস্থার।¹  

আর দু’হাজারের শুরুতেই দিল্লি বা মুম্বই অবাক হয়ে দেখেছে মধ্যবিত্ত ‘দো দুনি চার’ ছোলে বাটুরে বা বড়া পাও ছেড়ে লাইন লাগিয়েছে ম্যাকডোনাল্ডস-এর বার্গার খেতে। 

mcdonalds food

তবে মৌলিক বদল কী ঘটেছে সে নিয়ে ভাবনাচিন্তা করতে বসলে প্রথমেই মাথায় আসে আমভারতীয়র ঝুঁকি নেওয়ার প্রবণতা। বিশ্বায়ন ও উদারীকরণের ফলে প্রায় অর্ধশতক জুড়ে বসে থাকা আধা-সাম্যবাদী অর্থনীতি গতি বদলে পুঁজিবাদের ওপর প্রবল আস্থা রাখতে শুরু করে। আর পুঁজিবাদী অর্থনীতিতে সাফল্য পেতে গেলে ঝুঁকি নেওয়া অপরিহার্য। দীর্ঘ সময় ধরে এমনকি শহুরে ভারতীয়রাও বিনিয়োগে বিশ্বাস রাখেননি— সঞ্চয়টুকু সঞ্চয় হয়েই ব্যাঙ্ক বা পোস্ট অফিসে পড়ে থাকত, বড়জোর এক-দু’খানি জীবনবিমা কেনা হত। সে যুগ গেছে। অর্থবান মানুষ অবশ্য সবসময়েই জমি বা সোনার ওপর আস্থা রেখেছেন, কিন্তু স্টক বা বন্ড নিয়ে গড় ভারতীয় মধ্যবিত্ত মাথা ঘামাতে শুরু করেছে উদারীকরণের পর পরেই। আর আজ ভারতীয় গৃহস্থালি সম্পদের (যার পরিমাণ প্রায় এগারো ট্রিলিয়ন ডলার) প্রায় পাঁচ শতাংশ রয়ে গেছে শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ হয়ে।² ২০২২-এর হিসাব অনুযায়ী³ ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জে নাম লিখিয়েছেন পাঁচ কোটির বেশ ভারতীয়। একশ তেতাল্লিশ কোটি মানুষের দেশে পাঁচ কোটি এমন কিছু বড় সংখ্যা নয় ঠিকই কিন্তু এ কথাও মনে রাখতে হবে শেয়ার বাজারে টাকা খাটানোর জন্য ন্যূনতম যে পরিকাঠামোর দরকার তা হাতে গোনা কয়েকটি বড় শহর ছাড়া আর কোথাও ছিল না। কিন্তু যে মুহূর্তে মোবাইল ফোনের ডেটা সহজলভ্য হয়ে উঠেছে,মফস্বল বা গ্রামের মানুষও ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগে টাকা খাটাতে পিছপা হচ্ছেন না। ফলে ২০২১ থেকে ২০২২, এই এক বছরেই রিটেল ইনভেস্টর অর্থাৎ অপেশাদারি বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় পঁচিশ শতাংশ।

আরও পড়ুন: পরিবেশ ও প্রকৃতির ওপর বিশ্বায়নের প্রভাব

নব্বইয়ের শেষে দীর্ঘমেয়াদী সুদের হার ছিল চোদ্দ শতাংশ, আর আজ সেই হার সাত শতাংশেরও নীচে। উন্নত দেশগুলির মতন সুদের হার তলানিতে গিয়ে না ঠেকলেও ক্রমেই কমেছে, ফলে মানুষ যে সঞ্চয়কে বিনিয়োগে রূপান্তরিত করতে উৎসাহী হবেন সে নিয়ে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু আমাদের মানসিকতাতেও পরিবর্তন এসেছে। বিশ্বায়িত পৃথিবীকে যত কাছ থেকে দেখেছি, উন্নত দেশগুলির জীবনযাত্রার মান যতই আমাদের প্রভাবিত করেছে, আমরা ততই বুঝেছি ঝুঁকি না নিলে এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উত্তরণের গল্পগুলি কিছুতেই লেখা হয়ে উঠবে না। ফলে রাজস্থানের একটি ছোট শহর কোটায় আজ গড়ে দু লাখ ছাত্রছাত্রী প্রতিবছর ছোটে আই-আই-টি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হতে। গত বছরেই প্রায় আট লাখ ভারতীয় ছাত্রছাত্রী উচ্চশিক্ষার্থে দেশের বাইরে গেছেন, এবং অধিকাংশই গেছেন নিজের গ্যাঁটের কড়ি খরচ করে। ষাট-সত্তরের দশকে যাঁরা তারুণ্য বা যৌবন কাটিয়েছেন, সোভিয়েত বৃত্তি নিয়ে পড়াশোনা করতে গেছেন রাশিয়ায়, বা শুধুমাত্র স্কুলের শিক্ষকদের সহায়তায় আই.আই.টির শক্ত পরীক্ষায় উতরে গেছেন, তাঁদের কাছে এসব প্রায় গল্পকথার মতো হয়ে উঠতে পারত, কিন্তু তাঁরাও জানেন ঘোর বাস্তবটি কী, কারণ নরসিমহা রাও-মনমোহন সিংদের দেখানো রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে শুরুর ঝুঁকিগুলি বাবা-মা হিসাবে তাঁদেরও নিতে হয়েছে। 

stock market
স্টক বা বন্ড নিয়ে গড় ভারতীয় মধ্যবিত্ত মাথা ঘামাতে শুরু করেছে উদারীকরণের পর পরেই

এবার অর্থনৈতিকভাবে যে মানুষগুলি প্রান্তিক শ্রেণীতে পড়েন, তাঁদের দিকে তাকানো যাক। উদারীকরণ ও বিশ্বায়ন কীভাবে প্রভাবিত করেছে তাঁদের জীবনযাত্রাকে? বহু দিক থেকেই তাঁদের চাহিদা ও আমাদের মতন উচ্চ বা নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণীর চাহিদা সমান্তরালে চলে। বিশ্বায়িত পৃথিবীতে ইংরেজি শিক্ষার গুরুত্ব নিয়ে তাঁরাও যথেষ্ট ওয়াকিফহাল। অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় ও এস্থার ডুফলো তাঁদের ‘পুওর ইকোনমিক্স’ বইতে দেখিয়েছেন ভারতের প্রত্যন্ত গ্রামেও বেসরকারি স্কুলের চাহিদা বিস্তর, বিশেষত যেখানে সরকারি বিদ্যালয়গুলির শোচনীয় অবস্থা। ২০০৯ সালে শিক্ষার অধিকার সংক্রান্ত বিলটি সংসদে পাস হওয়ার পরে বহু রাজ্য সরকার প্রান্তিক মানুষগুলিকে আর্থিক সহায়তা দিতে শুরু করেন, যাতে তাঁদের ছেলেমেয়েরা বেসরকারি স্কুলে গিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে। কিন্তু স্কুলের পড়া শেষ হওয়ার পর কী হবে? শিক্ষিত ছেলেমেয়েগুলির জন্য ঠিক কী ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে ভারতের গ্রামগুলিতে? খুব আশাপ্রদ কোনও ভবিষ্যৎ নয়, ছেলেদের জন্য রইল কৃষিকাজ, বড়জোর সেনাবাহিনীর চাকরি। মেয়েদের জন্য তাও নেই। কিন্তু নতুন ভারতকে এই ছেলেমেয়েগুলিও চিনেছে বই কী, নিজের মতন করে জীবন নিয়ে উচ্চাশা তাঁদেরও কম নেই। উচ্চবিত্ত বা মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মতন ভোগের বাসনা তাঁদেরও আছে যথেষ্টই। ফল হয়েছে এই যে, ভারতের গ্রামগুলি থেকে ক্রমেই তরুণ প্রজন্ম শহরমুখী হয়েছেন। কোভিড অতিমারী শুরু হওয়ার আগে অবধি গ্রামগুলি থেকে এত মানুষ বেরিয়ে এসেছিলেন যে হিসেব কষে দেখা গেছিল ২০২৫ থেকে ভারতের গ্রামীন জনসংখ্যা ক্রমেই পড়তে থাকবে। কোভিড চলাকালীন যদিও দেখা গেছে শহরাঞ্চল এই মানুষগুলিকে বিশেষ স্বাচ্ছন্দ্য দিতে পারেনি, কিন্তু এই মানুষগুলিকে পরিষেবা দিতে বিশ্বায়িত বাজার আদপেই মুখ ফিরিয়ে থাকেনি। হাজার পাঁচেক টাকায় এখন সস্তার স্মার্টফোন ভারতবর্ষের ঘরে ঘরে। চিনা  কোম্পানিগুলি বিশেষত এই আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা মানুষদের হাতে ঢালাও ইলেকট্রনিক গ্যাজেট তুলে দিচ্ছে নামমাত্র মুনাফা রেখে। এ কথা অনস্বীকার্য যে স্মার্টফোন এখন বহু মানুষের জন্যই একটি নিতান্ত প্রয়োজনীয় দ্রব্য, কিন্তু বিশ্বায়ন-পরবর্তী ভোগবাদ যে সমাজের সব শ্রেণীকেই ছুঁয়ে গেছে সে কথাও অনেকাংশেই সত্যি। অভিজিৎ এবং এস্থার তাঁদের বইতে লিখেছেন দরিদ্র মানুষদের আয় বাড়লেও তাঁরা খাবারের পেছনে বেশি খরচ করছেন না।  ‘Indian consumer economy’ নিয়ে সমীক্ষা দেখাচ্ছে গ্রাম এবং ছোট শহরের উপভোক্তারা consumer durables এর থেকেও বেশি খরচ করছেন consumer services-এ বেসরকারি শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে খরচ যেমন বাড়ছে, তেমনই খরচ বাড়ছে বিনোদন এবং ভ্রমণ-খাতে। বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অ্যাঙ্গাস ডিটন এবং জঁ দ্রেজ দেখিয়েছেন প্রান্তিক শ্রেণীর মানুষদের মধ্যেও কায়িক পরিশ্রম আগের তুলনায় কমেছে, ফলে তুলনামূলকভাবে অল্প ক্যালরিসম্পন্ন খাবার তাঁদের পৌষ্টিক চাহিদা মেটাচ্ছে। এবং অল্প হলেও যে উদ্বৃত্ত টাকা হাতে থাকছে সেই টাকা মানুষগুলি খরচ করছেন অন্যান্য খাতে। তবে বিশ্বব্যাঙ্কের গবেষণা দেখিয়েছে অর্থসম্পদের হিসাবে সবথেকে পিছিয়ে থাকা মানুষগুলির শেষ ৫% বিশ্বায়নের ছিটেফোঁটা সুফলও পাননি। মনমোহন সিং-এর আর্থিক সংস্কার তাঁদের জীবনে সামান্যতম আয়বৃদ্ধিও ঘটাতে পারেনি। সরকারি সাহায্য ছাড়া এখনও তাঁদের জীবনযাপন দুঃসাধ্য। 

Village School
শিক্ষিত ছেলেমেয়েগুলির জন্য ঠিক কী ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে ভারতের গ্রামগুলিতে?

তবে বাস্তব কি আর শুধুই ট্র্যাজেডি? সে এক বড় প্রহসনও বটে। ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ সাংবাদিক ও লেখক রানা দাশগুপ্ত তাঁর ‘ক্যাপিটাল’ বইতে জানিয়েছিলেন মনমোহন সিং প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন প্রায়শই তাঁর রাতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটত কারণ মাঝরাতের ‘লাচেন’স দিল্লি’ (Lutyens Delhi) দাপিয়ে বেড়াত ঝাঁক ঝাঁক ফেরারি-ল্যাম্বরগিনি-মার্সিডিজ-বিএমডবলিউ, যে সব গাড়ি দিল্লির ট্রাফিক জ্যামে দিনের বেলায় টয়োটা কী হোন্ডার সমতুল্য। নব্য বিলিয়নেয়ারদের শরীরে রোমাঞ্চ জাগানোর জন্য তাই মধ্যরাত্রির ফাঁকা রাস্তাই ভরসা। বিশ্বায়ন ও উদারীকরণ পরবর্তী ভারতবর্ষে কিছু মানুষের হাতে এত বেশি টাকা এত কম সময়ে এসে গেছে যে সে টাকা খরচ করাটাই একটা বড় মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই গুরুগ্রামের চাষিদের হাতে যখন ওয়াল স্ট্রিটের ব্যাঙ্কগুলির টাকা এসে পৌঁছতে শুরু করল তাঁরা কেউ বা ছেলের বিয়ে দিতে তাকে নিয়ে গেলেন হেলিকপ্টার চাপিয়ে, কেউ বা আবার হরিয়ানার গ্রামে বানাতে শুরু করলেন ইতালিয়ান ভিলা। নয়ডা, গুরুগ্রাম, গাজিয়াবাদে জমির দাম প্রতি দুই থেকে তিন বছরে দ্বিগুণ হয়েছে, আর সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বিলাসবহুল গাড়ির চাহিদা (যদিও ঐ একই সময়ে সাধারণ গাড়ির চাহিদায় বিশেষ হেরফের ঘটেনি) – এবং এ চাহিদা মূলত তৈরি হয়েছে হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশের গ্রামে। অথচ সেইসব গ্রামে শিক্ষা-স্বাস্থ্যের পরিকাঠামো বিনিয়োগে স্থানীয় মানুষরাও কোনও উৎসাহ দেখাননি। সে সব পরিষেবা নেওয়ার জন্য তাঁদের পরবর্তী প্রজন্ম দৌড়েছে রাজধানী দিল্লিতে। সমষ্টির থেকে ব্যক্তি প্রাধান্য পেতে শুরু করেছে। গ্রামীণ ভারতের প্রায় পাঁচ হাজার বছরের গোষ্ঠীবদ্ধতার যে ইতিহাস, তাকে অস্বীকার করতে চাওয়ার দুঃসাহসটিও তাই চোখে পড়ার মতন। আজ যখন বিশ্বায়ন পিছু হটে জাতীয়তাবাদকে জায়গা করে দিচ্ছে, আগের দশকের এই বিচ্যুতিকে আগামী প্রজন্ম বিশ্বাসঘাতকতা হিসাবে দেখবে কিনা সে প্রশ্নও মনে রয়ে যায় বই কী! জাতীয়তাবাদী রাজনীতি নিজেই এক অভিশাপ হিসাবে দেখা দিতে পারে, কিন্তু যেনতেনপ্রকারেণ ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধিকেই জীবনের মোক্ষ ধরে নিয়ে গোটা সমাজ যেভাবে গত তিন দশকে এগোতে চেয়েছে তার পুঙ্খানুপুঙ্খ সমালোচনার দাবিটিও যথাযথ।

তথ্যসূত্র:

1. https://www.livemint.com/news/india/less-than-a-third-of-indians-go-to-public-hospitals-for-treatment-11588578426388.html

2. https://www.business-standard.com/article/markets/4-8-of-10-7-trillion-indian-household-assets-are-in-equities-jefferies-122032400539_1.html

3. https://www.ft.com/content/50db7615-7106-458a-8887-59974ab80cb6

4. https://www.ceicdata.com/en/indicator/india/long-term-interest-rate

5. https://www.theguardian.com/cities/2014/sep/30/india-urban-migration-good-or-bad-health

6. https://www.livemint.com/Consumer/O0I6Mgk5VqBsrprjtDslOO/How-India-spends.html

7. https://www.worldbank.org/en/news/feature/2013/10/25/The-Winners-and-Losers-of-Globalization-Finding-a-Path-to-Shared-Prosperity


ছবি সৌজন্য: Peakpx, Wallpaperflare, Istock


Prabirendra-Chottopadhyaya

প্রবীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ব্রিটেনের কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ে ম্যানেজমেন্ট সায়েন্সের অধ্যাপক। অর্থনীতি ও রাজনীতি নিয়ে বিশেষ আগ্রহ। বাংলা ও ভারতের বিভিন্ন সংবাপত্রে অর্থনীতি, রাজনীতি ও বিজ্ঞান বিষয়ক একাধিক প্রবন্ধ লিখেছেন প্রবীরেন্দ্র। এছাড়াও লিখেছেন একাধিক কল্পবিজ্ঞান ও রহস্যকাহিনী। তাঁর প্রকাশিত বইগুলি হল 'বাইট বিলাস', 'ক্যুইজ্ঝটিকা', 'পরিচয়ের আড্ডায়', 'আবার ফেলুদা, আবার ব্যোমকেশ', এবং 'চার'।

Picture of প্রবীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

প্রবীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

প্রবীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ব্রিটেনের কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ে ম্যানেজমেন্ট সায়েন্সের অধ্যাপক। অর্থনীতি ও রাজনীতি নিয়ে বিশেষ আগ্রহ। বাংলা ও ভারতের বিভিন্ন সংবাপত্রে অর্থনীতি, রাজনীতি ও বিজ্ঞান বিষয়ক একাধিক প্রবন্ধ লিখেছেন প্রবীরেন্দ্র। এছাড়াও লিখেছেন একাধিক কল্পবিজ্ঞান ও রহস্যকাহিনী। তাঁর প্রকাশিত বইগুলি হল 'বাইট বিলাস', 'ক্যুইজ্ঝটিকা', 'পরিচয়ের আড্ডায়', 'আবার ফেলুদা, আবার ব্যোমকেশ', এবং 'চার'।
Picture of প্রবীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

প্রবীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

প্রবীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ব্রিটেনের কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ে ম্যানেজমেন্ট সায়েন্সের অধ্যাপক। অর্থনীতি ও রাজনীতি নিয়ে বিশেষ আগ্রহ। বাংলা ও ভারতের বিভিন্ন সংবাপত্রে অর্থনীতি, রাজনীতি ও বিজ্ঞান বিষয়ক একাধিক প্রবন্ধ লিখেছেন প্রবীরেন্দ্র। এছাড়াও লিখেছেন একাধিক কল্পবিজ্ঞান ও রহস্যকাহিনী। তাঁর প্রকাশিত বইগুলি হল 'বাইট বিলাস', 'ক্যুইজ্ঝটিকা', 'পরিচয়ের আড্ডায়', 'আবার ফেলুদা, আবার ব্যোমকেশ', এবং 'চার'।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Subscribe To Newsletter

কথাসাহিত্য

সংস্কৃতি

আহার

বিহার

কলমকারী

ফোটো স্টোরি

উপন্যাস

Banglalive.com/TheSpace.ink Guidelines

Established: 1999

Website URL: https://banglalive.com and https://thespace.ink

Social media handles

Facebook: https://www.facebook.com/banglaliveofficial

Instagram: https://www.instagram.com/banglalivedotcom

Twitter: @banglalive

Needs: Banglalive.com/thespace.ink are looking for fiction and poetry. They are also seeking travelogues, videos, and audios for their various sections. The magazine also publishes and encourages artworks, photography. We however do not accept unsolicited nonfiction. For Non-fictions contact directly at editor@banglalive.com / editor@thespace.ink

Time: It may take 2-3 months for the decision and subsequent publication. You will be notified. so please do not forget to add your email address/WhatsApp number.

Tips: Banglalive editor/s and everyone in the fiction department writes an opinion and rates the fiction or poetry about a story being considered for publication. We may even send it out to external editors/readers for a blind read from time to time to seek opinion. A published story may not be liked by everyone. There is no one thing or any particular feature or trademark to get published in the magazine. A story must grow on its own terms.

How to Submit: Upload your fiction and poetry submissions directly on this portal or submit via email (see the guidelines below).

Guidelines:

  1. Please submit original, well-written articles on appropriate topics/interviews only. Properly typed and formatted word document (NO PDFs please) using Unicode fonts. For videos and photos, there is a limitation on size, so email directly for bigger files. Along with the article, please send author profile information (in 100-150 words maximum) and a photograph of the author. You can check in the portal for author profile references.
  2. No nudity/obscenity/profanity/personal attacks based on caste, creed or region will be accepted. Politically biased/charged articles, that can incite social unrest will NOT be accepted. Avoid biased or derogatory language. Avoid slang. All content must be created from a neutral point of view.
  3. Limit articles to about 1000-1200 words. Use single spacing after punctuation.
  4. Article title and author information: Include an appropriate and informative title for the article. Specify any particular spelling you use for your name (if any).
  5. Submitting an article gives Banglalive.com/TheSpace.ink the rights to publish and edit, if needed. The editor will review all articles and make required changes for readability and organization style, prior to publication. If significant edits are needed, the editor will send the revised article back to the author for approval. The editorial board will then review and must approve the article before publication. The date an article is published will be determined by the editor.

 

Submit Content

For art, pics, video, audio etc. Contact editor@banglalive.com