প্লাস্টিকের বিপদ নিয়ে দুনিয়া জুড়ে সচেতনতা বাড়ছে। এমনকি এ দেশেও প্লাস্টিক বর্জনের কথা শোনা যাচ্ছে আগের চেয়ে অনেক বেশি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই নিয়ে কথা বলতে শুরু করেছেন, সেটা ভাল। কিন্তু সমস্যা যেখানে পৌঁছেছে, তার তুলনায় প্লাস্টিক বর্জনের উদ্যোগ এখনও অনেক কম। বিশেষ করে দেশের অনেক রাজ্যেই এখনও এ ব্যাপারে ঔদাসীন্যই প্রবল, প্লাস্টিক যথেচ্ছ ব্যবহার করা চলছেই। দুর্ভাগ্যবশত, পশ্চিমবঙ্গও সেই পিছিয়ে-থাকাদের দলে। কিছু কিছু শহরে প্লাস্টিক বর্জনের চেষ্টা হয়েছে, কোথাও কোথাও তা সফলও হয়েছে, কিন্তু তারা ব্যতিক্রম। খাস কলকাতাতেও শহরের মানুষ সারা দিন দেশ এবং দুনিয়ার হাল নিয়ে বড় বড় কথা বলে সন্ধেবেলা রাস্তার ধারের ফলওয়ালার কাছে একখানা আপেল কিনে সেটি পাতলা একটা প্লাস্টিকের ব্যাগে নিয়ে বেমালুম বাড়ি ফিরছেন, এ দৃশ্য অতি পরিচিত।
সেই তুলনায় দক্ষিণ এবং পশ্চিম ভারত অনেকটা এগিয়ে। সেখানে অনেক জায়গাতেই প্লাস্টিকের ব্যাগ একেবারে বন্ধ হয়েছে। গোয়ায়, চেন্নাইতে, বেঙ্গালুরুতে কিছু কিছু দোকানে প্লাস্টিক সম্পূর্ণ বাদ। এমনকি চাল ডাল তেল নুন আচারের মতো জিনিসও কাগজ বা কাপড় গোছের প্যাকেটে বা পাত্রে দেওয়া হচ্ছে। সত্তর বা আশির দশক পর্যন্ত এটাই আমাদের সকলের জীবনেই স্বাভাবিক ছিল, কাগজের ঠোঙা থেকে টিনের কৌটোই তখন ছিল জীবনের আধার। বয়স্ক মানুষেরাও আজ সে দিনের কথা ভাবলে নিজেরাই অবাক হয়ে যান। অথচ একটু মনের জোর করে কাজটা শুরু করলে দিব্বি অভ্যেস পাল্টানো যায়।যেমন হায়দরাবাদের সেকেন্দ্রাবাদে সম্প্রতি শুরু করেছেন ‘জিরো ওয়েস্ট ইকো স্টোর’-এর উদ্যোগীরা। সেখানে দৈনন্দিন ব্যবহারের প্রায় দেড়শো সামগ্রী পাওয়া যায়, কিন্তু প্লাস্টিকের চিহ্নমাত্র নেই। ক্রেতাদের বলা হয় নিজের ব্যাগ বা পাত্র নিয়ে আসতে, একান্ত দরকার হলে দোকান থেকেই সে-সব দেওয়া হবে কিছু দাম নিয়ে। চেন্নাইয়ে এ ধরনের স্টোর দেখে ওঁরা উৎসাহী হয়ে এই দোকান চালু করেছেন। ক্রমশ উৎসাহী ক্রেতার ভিড় বাড়ছে। প্লাস্টিক ছাড়া পণ্য সংগ্রহ করার কিছু সমস্যা আছেই, তবে তার সমাধানও আছে। পাইকারি ব্যবসায়ীরাও ক্রমশ প্লাস্টিকের বিপদ সম্পর্কে সচেতন হচ্ছেন, তাঁরা পরিবেশবান্ধব এই দোকানে জিনিস সরবরাহ করছেন যথাযথ উপায়ে।এই ধরনের উদ্যোগের কথা জেনে পশ্চিমবঙ্গের সচেতন নাগরিকের একটা কথাই মনে হওয়া স্বাভাবিক। ওরা পারে, আমরা কেন পারি না?
বাংলালাইভ একটি সুপরিচিত ও জনপ্রিয় ওয়েবপত্রিকা। তবে পত্রিকা প্রকাশনা ছাড়াও আরও নানাবিধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে থাকে বাংলালাইভ। বহু অনুষ্ঠানে ওয়েব পার্টনার হিসেবে কাজ করে। সেই ভিডিও পাঠক-দর্শকরা দেখতে পান বাংলালাইভের পোর্টালে,ফেসবুক পাতায় বা বাংলালাইভ ইউটিউব চ্যানেলে।