ই সন্তোষ কুমারের গল্পের অনুবাদ করেছেন এই সময়ের বাংলা সাহিত্যের একনিষ্ঠ কবি ও কথাকার তৃষ্ণা বসাক। মৈথিলী, হিন্দি ও মালয়ালম অনুবাদকর্মে তিনি প্রতিমুহূর্তে পাঠকের সামনে খুলে দিচ্ছেন অনাস্বাদিত জগৎ। সরকারি মুদ্রণ সংস্থায় প্রশাসনিক পদ, উপদেষ্টা বৃত্তি, বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিথি অধ্যাপনা, সাহিত্য অকাদেমিতে আঞ্চলিক ভাষায় অভিধান প্রকল্পের দায়িত্বভার- প্রভৃতি বিচিত্র অভিজ্ঞতা তাঁর লেখনীকে এক বিশেষ স্বাতন্ত্র্য দিয়েছে। বর্তমানে তিনি কলকাতা ট্রান্সলেটরর্স ফোরামের সচিব।
আগের পর্বের লিঙ্ক অনুবাদ গল্প: আলোকবর্ষ: প্রথম পর্ব
রাতের জন্যে ওরা একটা হোমস্টেতে গেল। জেমস আগের রাতে ইন্টারনেটে এটা খুঁজে বার করেছিল। দোতলা একটা বাড়ি। অতিথিরা ওপরতলায় আর বয়স্ক দম্পতি নীচতলায়। তাদের ছেলেমেয়ে বাইরে আর তারা অন্য কিছু না, মূলত সঙ্গ পাবার জন্যেই অতিথিদের রাখত। ভাড়াও তুলনামূলকভাবে সস্তা, যেহেতু এটা টুরিস্ট সিজন নয়।
‘ওরা ভেবেছে আমরা কাপল’ সিঁড়ি দিয়ে ওপরে উঠতে উঠতে বলল জেমস।
‘তুমি ওদের শুধরে দিতে পারতে’
‘যদি আমাদের চলে যেতে বলে তখন? এই রাতে আমরা কোথায় যাব? উনি আমাকে বললেন মিসেসের খেয়াল রাখতে। এও বললেন ব্যালকনির রেলিংগুলো নিচু, তোমাকে যেন একা যেতে না দিই’
‘চিন্তা কোরও না। আমি ঘরের বাইরে বেরব না’
‘আমি ওদের কাছে এখন হিরো’
‘হ্যাঁ, তুমি এক বেচারি অন্ধকে নতুন জীবন দিয়েছ?’ কমলা হাসল
বিছানায় যাবার আগে জেমসের আবার একটা ফোন এল। কে ফোন করছে না দেখেই সে ফোনটা কেটে সাইলেন্ট মোডে করে দিল।
কমলা তখনও বৌদ্ধ মন্দিরের কথা ভাবছিল। গতবার তারা দিনের বেশির ভাগ সময়টাই ওখানে কাটিয়েছিল। মন্দিরের চারপাশে ঘুরে বেড়িয়েছিল। হলে তিব্বতি কারুকাজ, দেওয়ালে পবিত্র মন্ত্রের ক্যালিগ্রাফি… নন্দন তাকে সবকিছু বুঝিয়ে দিয়েছিল। মাঝে মাঝেই লামাদের ধর্মচক্রের শব্দ। একটা বোর্ড থেকে নন্দন লামাদের পরম্পরার কথা পড়ে শুনিয়েছিল। তারপর তারা প্রার্থনা ঘরে চুপ করে বসেছিল। কমলা স্মৃতির মধ্যে ডুবে যাচ্ছিল। আস্তে আস্তে সে তার চোখ বুজল।
‘এই ঘুমিয়ে পড়লে নাকি?’ কপালে ওর হাতের স্পর্শে চোখ খুলল কমলা। ছোট খসখসে হাত।
‘তুমি ড্রিংক করেছ, তাই না জেমস?’
‘জাস্ট একটা’ জেমস বলল ‘ফর আ বুস্ট’
‘আমার ভাল লাগে না’ কমলা বলল ‘তুমি ড্রিংক করলে কিছুই ঠিকঠাক থাকে না’
‘জাস্ট ফর দা হেক অফ ইট। এলিজাবেথ কিন্তু এরকম ছিল না। মাঝে মাঝে আমরা একসঙ্গেও ড্রিংক করতাম’
‘ঠিক ড্রিংক নিয়ে কথা না। তুমি ড্রিংক করলে মনে হয় আমি অ্যালকোহলের সঙ্গে শুয়ে আছি। যেন ঘরে অন্য একটা লোক রয়েছে’
‘কিছু এসে যায় না’ জেমস ওকে কাছে টানল
‘এত জোরে ধরো না আমাকে জেমস। আমার লাগে’
সে উন্মত্ত হয়ে উঠেছিল। যখন সে তার ঘাড় চাপল, কমলা কাশছিল, যেন নিঃশ্বাস নিতে পারছে না। জেমসের ভাল লাগল না।
সে কল্পনা করছিল সে কমলার শরীরে পর্যটন করছে। ঝর্না, সরোবর উঁচু নিচু। ও কমলার গালে চুমু খেতে চাইলে, ও মুখ ঘুরিয়ে নিল।
‘তোমার মুখে মদের গন্ধ’ কমলা বলল। জেমস হঠাৎ মুখ সরিয়ে নিল।
‘তুমি সঙ্গত দিচ্ছ না, কমলা’ ও বলল ‘এই জন্যেই কি আমরা এতটা দূরে এলাম?’
যেন সান্ত্বনা দিচ্ছে এমনভাবে ওকে জড়িয়ে ধরল কমলা। এই আলিঙ্গন ওকে মনে পড়িয়ে দিল যখন বিকেলে ঝার্নার ধারে কমলার হাত ওকে ছুঁয়েছিল, সেই শীতল স্পর্শের কথা।
‘এলিজাবেথ আবার ফোন করেছিল, তাই না?’ কমলা জিগ্যেস করল
‘পাগল একটা’
‘এসব ভুলে যাও জেমস। তুমি এত অ্যাডামেন্ট কেন? আফটার অল, সে তোমার সঙ্গে তো অনেকদিন ছিল, তাই না?’
‘শিট!’ জেমস নিজের আলিঙ্গন থেকে কমলাকে সরিয়ে দিল।
‘আমি জানি, ও তোমাকে পছন্দ করত। সেটাই কি যথেষ্ট নয়? এটা কি বাধ্যতামূলক যে সারাজীবন একজনকেই পছন্দ করবে?’
‘ওহ, আমি কক্ষনো ওকে সেভাবে পছন্দ করিনি। ও এমন একটা কুত্তি’
জেমস একটা সিগারেট ধরাল। অর্ধেক খেয়ে সে নিভিয়ে কমলার হাত মাসাজ করতে শুরু করল, হয়তো আরেকবার চেষ্টা করতেই।
সে অনুভব করল তার ডান বাহুতে কিছু একটা বেরিয়ে আছে, কাঁধের নীচে।
‘এটা কী?’
‘’ওহ ওটা’ কমলা বলল ‘একটা স্টিলের রড’
‘কী করে?’
‘একটা অ্যাক্সিডেন্ট। ঠিক আছে।’ কমলা তার বাঁ হাত দিয়ে ডান হাত ছুঁল। ‘এই জন্যে তোমাকে বলেছিলাম আস্তে করে জড়াতে। এখনও লাগে এখানে। যদিও অনেক বছর হয়ে গেল’
‘কীভাবে হল?’
‘বেশ অনেকদিন আগে’ কমলা ক্যাজুয়ালি বলল
‘এটা বের করে দেবার সময় হয়নি?’
‘হ্যাঁ, আমার মনে হয়। কিন্তু না, এটা একটা স্মৃতি, তাই না জেমস? ওটা এখানেই থাকতে দাও’
জেমস কমলার রাতপোশাক খুলছিল।আলো জ্বালা রেখেই তারা নগ্ন হল। কমলা ওর কপালে নরম চুমু খেল। তারপর সে বিছানায় উঠে বসল।
‘আমার বুকটা দেখো’ যেন আমন্ত্রণ জানাচ্ছে, এমনভাবে বলল কমলা ‘এখানে একটা ফিকে লাল আঁচিল আছে না?’
‘কোথায়?’
‘এখানে… বাম বুকের নিচে, হার্টের খুব কাছে’
‘আমি আর বিশ্বাস করব না কমলা যে তুমি দেখতে পাও না’ জেমস আঁচিলটায় ঠোঁট চেপে বলল।
‘আমি জানতাম না’ কমলা হাসল
‘তাহলে? ওহ, নিশ্চয় নন্দন বলেছে, তাই না?’ জেমস বিদ্রূপ করে বলল।
‘আবার একবার তুমি ঠিকই ধরেছ’
যেকোনও কারণেই হোক, এই প্রথমবার জেমস তার খুব কাছে নন্দনের উপস্থিতি টের পেল। ও শীতল হয়ে গেল।
‘শুধু তাই নয়, সে এমনকি আমার শরীরের জলবায়ুও জানত। বৃষ্টি, কুয়াশা, উষ্ণতা, একদম সত্যিকারের।
একবার আমার নিপলের দিকে তাকাও জেমস। এখন নিশ্চয় ওগুলো কালো, তাই না?’
‘তো?’
‘এর মানে আমার এখন মুড নেই। আমি বললাম না তোমায়? মুড থাকলে নিপলগুলো লাল হয়ে যেত’ কমলা হাসল।
কমলা তখনও বৌদ্ধ মন্দিরের কথা ভাবছিল। গতবার তারা দিনের বেশির ভাগ সময়টাই ওখানে কাটিয়েছিল। মন্দিরের চারপাশে ঘুরে বেড়িয়েছিল। হলে তিব্বতি কারুকাজ, দেওয়ালে পবিত্র মন্ত্রের ক্যালিগ্রাফি… নন্দন তাকে সবকিছু বুঝিয়ে দিয়েছিল।
জেমসের আবার সন্দেহ হল নন্দন কাছেই আছে। তার মনে হল, যদিও নন্দন অদৃশ্য তবু ও তার কাছে হেরে যাচ্ছে। সে জোর করে ওকে কাছে টানল। প্রায় আক্রমণ। কমলা নিঃশব্দে ওর জোর মেনে নিল। তার মনে হল তার মাথায় মৌমাছি গুনগুন করছে। জেমসের ভয়ঙ্কর খিদে থিতিয়ে গেল, কমলা অনুভব করল জেমস পাশে অবসন্ন হয়ে পড়ে আছে। গর্জমান নৈঃশব্দ্য ওকে ফুঁড়ে চলে যাচ্ছিল, সে ঘুমে তলিয়ে গেল।
ঘুম ভাঙতে কমলা সচেতন হল যে সে নগ্ন, হাতড়ে হাতড়ে সে তার রাতপোষাক পরে নিল। দূর থেকে, বোধহয় ব্যালকনি থেকে জেমসের গলা শোনা গেল। সে ফোনে তর্ক করছিল। তারপর কমলা শুনতে পেল সে ব্যস্ত পায়ে সিঁড়ি দিয়ে নেমে যাচ্ছে।
দুপুর অবধি সে ঘর থেকে বেরোল না। একটি মেয়ে তার ব্রেকফাস্ট নিয়ে এসে টেবিলে রাখল, কিন্তু সে ছুঁয়েও দেখল না।
দুপুরে জেমস এল
‘তুমি ব্রেকফাস্ট খাওনি?’ জেমস জিজ্ঞেস করল।
‘আমার খিদে নেই’
‘স্নান করে নাও। লাঞ্চ করে আমরা বেরিয়ে যাব।’
‘কোথায়?’
‘থালাকাভেরি’ সে বলল ‘ ক্যাব আসবে’
‘না’ কমলা বলল ‘আমার শরীর ভাল লাগছে না’
‘ঠিক আছে, তাহলে গিয়ে কাজ নেই। কিন্তু এসো কিছু খেয়ে নাও’
‘খিদে নেই’ কমলা বলল
‘জ্বর জ্বর?’
‘না’
‘তাহলে?’
‘তাহলে তাহলে তাহলে কিচ্ছু না। জাস্ট আমাকে একা থাকতে দাও’
‘আশ্চর্য নয় যে ও তোমাকে ডিভোর্স করেছিল’ জেমস ফেটে পড়ল
কমলা চিৎকার করে উঠল।
‘কে?’ কমলা কাঁপছিল। ‘কে আমাকে ডিভোর্স করেছে জেমস? কে তোমাকে এইসব ফালতু কথা বলেছে?’
‘ওহ, বলব সেটা তোমায়? তুমি কি ওই নামটা সবসময় মন্ত্রের মতো জপছিলে না?’
কমলা কান্নায় ভেঙে পড়ল। দুজনের কেউই কিছুক্ষণ কথা বলল না।
‘জেমস চলো লাঞ্চ করে আসি’ কমলা একটা তোয়ালে দিয়ে নিজের মুখ মুছে বলল। তারা চুপচাপ লাঞ্চ খেল।
বিকেলে তারা ট্যাক্সিতে ম্যাঙ্গালোরের দিকে রওনা দিল। ট্যাক্সি অবিরাম শুষ্ক সব গ্রামের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল।
‘জেমস’ কমলা ডাকল ‘সরি। আমি কি তোমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছি?’
‘ওহ না’ জেমস বলল
‘হ্যাঁ জানি কিন্তু… কিন্তু কিছু জিনিস বদলানো যায় না। এই স্টিল রডের মতো, সবসময় আমার মধ্যে থেকে যায়’
‘আমাদের সম্পর্কটা ছিল অনন্য, জেমস, মেড ফর ইচ আদার বলেছিলে তুমি। একদম তাই। আমাদের একটা গোপন চুক্তি হয়েছিল যে যদি আমাদের সম্পর্ক ভেঙেও যায়, কোনও আফসোস করব না। সেই কারণেই আমি তোমার সঙ্গে এলাম। এই ট্যুরটা করলাম। কিন্তু আমার মনে হয় আমি এই ভূমিকাটা জাস্ট হ্যান্ডল করতে পারছি না’
‘ছাড়ো’ জেমস বলল
‘না, এটা অন্য কিছু। তুমি জিজ্ঞেস করছিলে ও কেন আমাকে ছেড়ে গেল। এতক্ষণ পর্যন্ত সেটা একটা গোপন কথা ছিল। আমি কাউকে বলিনি। এমনকি ম্যাঙ্গালোরের বন্ধুদেরও না। আমি কখনও কারও সহানুভূতি চাইনি। এমনিতেই আমার অন্ধত্বই আছে লোকের আহা উহুর জন্যে। এ নিয়ে আমি ফেড আপ। এর ওপর বিধবা যোগ হলে… না, আমি নিতে পারব না।’
‘কী বললে কমলা? বিধবা?’
‘সেটাই সত্যি কথা। নন্দন আর বেঁচে নেই। আমি একজন বিধবা।’
জেমস ওর হাত ধরল। হাতের শীতলতায় সে আবার বিস্মিত হল।
টিলা আর উপত্যকার মধ্যে দিয়ে গাড়িটা মোটামুটি একই গতিতে চলছিল।
‘কাবেরীর জন্ম একটা ছোট ঝর্না থেকে, তাই না?’ কমলা নিচু গলায় বলল ‘আর তারপর সে কত গ্রাম শহরে জল নিয়ে যায়, কত ক্ষেতে সেচ দ্যায়। সত্যিই আশ্চর্য জেমস। আমার বোকার মতো গোঁ! আমাদের থলকাবেরি যাওয়া উচিত ছিল’
‘কিছু এসে যায় না। আমরা আবার আসতে পারি’ জেমস বলল
‘গতবার যখন এসেছিলাম, তখন নীচের ঢিপিমতো জায়গাটায় অনেকক্ষণ বসেছিলাম’ কমলা মনে করছিল ‘ঠান্ডা হাওয়া দিচ্ছিল। একটা ছোট্ট মেয়ে এসে আমাদের পাশে বসল। নন্দন ওর ছবি তুলেছিল। আমি ছবিটা বাঁধিয়ে আমার ঘরে রেখেছি। এখনও ওখানেই আছে। তুমি খেয়াল করোনি?’
জেমস উত্তর দিল না।
‘জেমস, তুমি আমাদের বেড়ানোর ছবি তুলেছ তো, না?’ কমলা জানতে চাইল ‘কার্ডটা কোথায়?’
‘ক্যামেরার মধ্যে’ জেমস বলল ‘ম্যাঙ্গালোরে গিয়ে প্রিন্ট করাব’
‘প্রিন্ট দিয়ে আমি কী করব? তুমি আমাকে কার্ডটা দেখাও। আমি একটু ছুঁই, অনুভব করি’
সে ক্যামেরা থেকে কার্ডটা বার করে ওর মুঠোয় রাখল।
ওকে হতবাক করে কমলা ওটা মুখে পুরে চিবোতে লাগল। তারপর গাড়ির দরজা খুলে থু থু করে ফেলে দিল।
‘তুমি কি পাগল হয়ে গেলে নাকি কমলা? সমস্ত ছবি গুলো নষ্ট হয়ে গেল, বুঝেছ?’ জেমস চিৎকার করে বলল
‘যেতে দাও’ ক্যাজুয়ালি বলল কমলা
জেমস বাইরে তাকাল। গাড়ি একটা ছোট শহরে ঢুকছে। ট্রাফিকের ভিড় বাড়ছে।
‘বেজন্মা কোথাকার! আমি যখন ঘুমোচ্ছিলাম, আমার ছবি তুলেছ না?’ কমলা জিজ্ঞেস করল। ‘আমার নগ্ন অবস্থায় তুলেছ। আমি সেটা আন্দাজ করেছিলাম’
জেমস ওর দিকে সতর্কভাবে তাকাল। ওই সাদা চোখের তারা… তার মধ্যে থেকে বিচ্ছুরিত আলো… যেন তাকে আঘাত করবে, সে ভয় পেল।
কমলা জোরে হাসল তুমি একজন অন্ধকে ব্ল্যাকমেল করতে পারবে না। কক্ষনো না! অন্ধের নগ্নতা থাকে তার মনে। তবু, আমি চাই না ওই ছবিগুলো তোমার জিম্মায় থাকুক। তুমি এগুলো রাখার যোগ্য নও। তুমি জাস্ট একটা বিশাল… বিশাল বেজন্মা’
জেমস হাত দিয়ে মুখ মুছল। তারপর সে বাইরের দিকে তাকাল।
এখন গাড়ি ওয়ান-ওয়ে ট্রাফিক দিয়ে যাচ্ছে। ওদের সামনে গাড়ির দীর্ঘ সারি, হর্ন আর ভিড়ের আওয়াজ। গাড়িটা থেমে থেমে চলেছে। আরও কিছুক্ষণ এমন গুটিগুটি চলার পর শেষ পর্যন্ত একটা সিগন্যালে দাঁড়াল।
‘জেমস সিগন্যালটা দেখো’ কমলা বলল
জেমস দেখল
‘ডিজিটগুলো দেখতে পাচ্ছ? পড়ো। আমরা এই সিগন্যালে আর কতক্ষণ দাঁড়াব?’
‘আরও চুরাশি সেকেন্ড’ জেমস লাল সংখ্যাগুলো পড়ে আস্তে আস্তে বলল।
সমাপ্ত
ই সন্তোষ কুমার মালয়ালম ভাষার এই প্রজন্মের অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য লেখক। তাঁর গ্রন্থের সংখ্যা পনেরোর বেশি। সেরা গল্প সংগ্রহের জন্যে এবং উপন্যাস 'অন্ধাকরানঝি' –র জন্যে দু'বার পেয়েছেন কেরালা সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার যথাক্রমে ২০০৬ আর ২০১২ সালে। এই উপন্যাসটির ইংরেজি অনুবাদ- আইল্যান্ড অফ লস্ট শ্যাডোজ ২০১৫ সালের ক্রসওয়ার্ড পুস্কারের জন্য বাছাই হয়েছিল। তাঁর দুটি গল্প থেকে মালয়ালম সিনেমা হয়েছে। তাঁর লেখা অনুবাদ হয়েছে ইংরেজি, তামিল, হিন্দি এবং জার্মান ভাষায়। বাংলায় অনুবাদ এই প্রথম।