Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

বাঁদরছানা আর তার বন্ধুরা

ঐশিক মণ্ডল

সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২১

Monkey and his friends
Bookmark (0)
Please login to bookmark Close

একটা জঙ্গলে গাছের ডালে থাকত ছোট্ট একটা বাঁদরছানা। নাম তার মাইলার। সারাদিন এই গাছ ওই গাছ, ওই ডাল সেই ডাল লাফিয়ে বেড়ায়। আর লাফিয়ে লাফিয়ে হাঁপিয়ে গেলে কপ কপ করে কলা খায়। কলা খেতে মাইলার বেজায় ভালোবাসে। একদিন হয়েছে কি, মাইলার পথের ধারে বেশ কতকগুলো কলার বীজ কুড়িয়ে পেল। মনের আনন্দে এক পাক নেচে নিয়ে ভাবল, এবার ঢের ঢের কলার গাছ লাগাবে আর কাঁদি কাঁদি কলা খাবে।

কিন্তু সব সময় যেমন ভাবা তেমন কাজ কি হয়! মাইলার পড়ল একটা মস্ত বড় মুশকিলে! সে তো জানেই না কীভাবে বীজ থেকে গাছ করতে হয়। এবার কী উপায়! মাইলার মাথা চুলকে, ভুরু কুঁচকে ভেবেটেবে একশা। শেষমেষ ডিগবাজি খেয়ে আর গাছের ডালে লেজ পাকিয়ে উল্টোবাগে খানিকক্ষণ ঝুলে থাকার পর মগজের ঘিলু নড়ে বুদ্ধি খুলল।

জঙ্গলের সবচেয়ে বুদ্ধিমান প্রাণী কে? গম্ভীর বুড়ো প্যাঁচা। সেই প্যাঁচাকে গিয়ে শুধোলে কেমন হয়! কিন্তু এখানেও মহা সমস্যা! প্যাঁচা নাকি দিনের বেলায় সারাক্ষণই ঢুলতে থাকে, ঝিমোতে থাকে, ঘুমোতে থাকে। তখন তাকে কিছু শুধনো আর দেওয়ালকে শুধনো একই ব্যাপার। কোনও জবাব মিলবে না। কাজেই প্যাঁচার থেকে মতলব নিতে গেলে যেতে হবে রাতের ঘুটঘুটে আঁধারে। তখন প্যাঁচা তার কোটরে বসে হুট হুট হুটুর হুট করে ডাকে আর শিকার খোঁজে।

এদিকে রাতের আঁধারে কোথাও যাওয়ার নামে ডাকাবুকো মাইলার বাঁদরছানারও বুক কাঁপে। ফের গালে হাত দিয়ে গাছের ডালে ভাবতে বসল মাইলার। এমন সময় পাশের ডালেই পাতা চিবিয়ে দুপুরের খাওয়া সারতে এসেছিল এক শুঁয়োপোকা, নাম তার বেনি। বেনিকে দেখে মাইলার হেঁকে শুধলো,
– ও ভাই বেনি, তুমি কি জানো বুড়ো প্যাঁচার গাছকোটর বাড়িটা কোথায়? কেমন করে যাওয়া যায় সেখানে? রাতের বেলায় পথ খুঁজে পাব কীভাবে?

Oishik Handwriting

বেনি সব শুনেটুনে বললে,
– হুমম্! আমি তোমায় বিশেষ সাহায্য করতে পারবনাকো ভাই মাইলার। আমি তো কক্ষনও বুড়ো প্যাঁচার বাড়ি যাইনিকো। তবে আমার প্রজাপতিদিদি তার রঙিন ডানা মেলে হেথাহোথা উড়ে যায়। সে জানলেও জানতে পারে।
মাইলারের বেশ পছন্দ হল বেনির বুদ্ধিটা। দু’জন মিলে চলল বেনির প্রজাপতিদিদির সঙ্গে দেখা করতে হলুদ ফুলের বাগানের দিকে। ফুলবাগানে পৌঁছতেই রঙবেরঙা প্রজাপতি উড়ে এল ডানা মেলে। ইসাবেলা, বেনি শুঁয়োপোকার প্রজাপতিদিদি। মাইলারের সমস্যা শুনে বলল,
– এ আর বড় কথা কী! আমি নিশ্চয়ই তোমায় সাহায্য করব। চলো তোমায় বুড়ো প্যাঁচার বাড়ি নিয়ে যাব আজ রাতে। আমার এক জোনাকি বন্ধু আছে, নাম তার জেন। সে আমাদের আলো জ্বেলে পথ দেখাবে।

মাইলার বাঁদরছানা, বেনি শুঁয়োপোকা আর ইসাবেলা প্রজাপতি গেল জেন জোনাকির কাছে। জেন তো ছয় পায়ে খাড়া। সে বললে,
– আমি অবশ্যই তোমাদের পথ দেখাতে সাহায্য করব।
তারপর চার বন্ধু মিলে গেল সোওওজা বুড়ো প্যাঁচার আস্তানায়। বুড়ো প্যাঁচা তো সবে তখন আড়মোড়া ভেঙে জেগে উঠে কোটরে বসে মাথা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ঘাড়ের ব্যায়াম করছিল। ব্যায়াম করলে শরীর ভালো থাকে, তা জানো তো! মাইলারের প্রশ্ন শুনে বুড়ো প্যাঁচা গলা ঝেড়ে নিয়ে বললে,
– কলার বীজ থেকে গাছ ফলানো তো ভারি সহজ কাজ বাপু। বীজটাকে নিয়ে মাটিতে গর্ত করে পুঁতে দাও, তারপর তার ওপর মাটি চাপা দিয়ে দাও। রোজ অল্প করে জল দাও তাহলেই ক’দিন পর লকলকিয়ে কলাগাছ বেরোবে। ব্যাস হয়ে গেল!
মাইলার তো সেই শুনে আনন্দে ডিগবাজিই খেয়ে নিল। কী সহজ কী সহজ। বেনি শুঁয়োপোকাকে আর একটু হলেই জড়িয়ে ধরছিল, নেহাতই কাঁটা ফোঁটার ভয়ে থেমে গেল। সকলে মিলে বুড়ো প্যাঁচাকে ধন্যবাদ জানিয়ে ফিরে এল। মাইলার আর তার নতুন তিন বন্ধু বেনি, ইসাবেলা আর জেনকেও ধন্যবাদ জানাতে ভুলল না।

বুড়ো প্যাঁচার কথামতো কলাগাছ লাগানোর কিছুদিন পর একটা কলাগাছ বেরলো মাটি ফুঁড়ে। দিনে দিনে সে গাছ বড় হয়ে অনেক কলা ধরল। মাইলারের মাথায় তখন একটা দারুণ বুদ্ধি খেলল। একা একা সব কলা না খেয়ে কলাগুলো দিয়ে বানিয়ে ফেলল সুস্বাদু ব্যানানা ব্রেড। তারপর তার সব বন্ধুদের ডাকল একটা জমকালো পার্টিতে। সব্বাই এসে চেটেপুটে খেল ব্যানানা ব্রেড, এমনকি বুড়ো প্যাঁচাও হাই তুলতে তুলতে এসে হাজির হল। তারপর সে কী নাচাগানা হল, কী বলব তোমাদের! 

মাইলার তো একবার লাফাতে গিয়ে কলার খোসায় আছাড় খেয়ে ধুপ করে পড়েই গেল। আর তাই দেখে হাসতে হাসতে বাকিরাও গড়িয়ে পড়ল। মোট কথা বেজায় হইহুল্লোড় হল মাইলার বাঁদরছানার পার্টিতে। তোমরাও কোনওদিন ঘুরে আসতে পারো মাইলারের বাড়ি থেকে। ব্যানানা ব্রেডখানা মাইলার জব্বর বানায় কিন্তু!

 

*মূল গল্পটি ঐশিক ইংরেজিতে লিখেছিল। বাংলায় অনুবাদ করে দিয়েছেন লেখকের মা শ্রীমতী সুস্মিতা কুণ্ডু।

শ্রীমান ঐশিক ওরফে ক্যাপ্টেন নিমো মাসকয়েক আগেই ছয়ের গণ্ডি পেরিয়েছেন। এখন তিনি উইসকনসিনের ‘পিওয়াকি লেক এলিমেন্টরি স্কুল’-এর ফার্স্ট গ্রেডার। যে কাজটি তিনি সবচেয়ে বেশি ভালোবাসেন সেটি হল অবিরাম বকমবকম করা। তিনি একজন সাচ্চা ডাইনোসরপ্রেমী, তাই বড় হয়ে প্যালিওন্টোলজিস্ট হতে চান। কিন্তু আপাতত চিন্তায় আছেন যে যতদিনে তিনি বড় হবেন, ততদিনে অন্যরা যদি ডাইনোসরদের সমস্ত ফসিল খুঁড়ে বার করে ফেলে, তাহলে কী হবে!

Picture of ঐশিক মণ্ডল

ঐশিক মণ্ডল

শ্রীমান ঐশিক ওরফে ক্যাপ্টেন নিমো মাসকয়েক আগেই ছয়ের গণ্ডি পেরিয়েছেন। এখন তিনি উইসকনসিনের ‘পিওয়াকি লেক এলিমেন্টরি স্কুল’-এর ফার্স্ট গ্রেডার। যে কাজটি তিনি সবচেয়ে বেশি ভালোবাসেন সেটি হল অবিরাম বকমবকম করা। তিনি একজন সাচ্চা ডাইনোসরপ্রেমী, তাই বড় হয়ে প্যালিওন্টোলজিস্ট হতে চান। কিন্তু আপাতত চিন্তায় আছেন যে যতদিনে তিনি বড় হবেন, ততদিনে অন্যরা যদি ডাইনোসরদের সমস্ত ফসিল খুঁড়ে বার করে ফেলে, তাহলে কী হবে!
Picture of ঐশিক মণ্ডল

ঐশিক মণ্ডল

শ্রীমান ঐশিক ওরফে ক্যাপ্টেন নিমো মাসকয়েক আগেই ছয়ের গণ্ডি পেরিয়েছেন। এখন তিনি উইসকনসিনের ‘পিওয়াকি লেক এলিমেন্টরি স্কুল’-এর ফার্স্ট গ্রেডার। যে কাজটি তিনি সবচেয়ে বেশি ভালোবাসেন সেটি হল অবিরাম বকমবকম করা। তিনি একজন সাচ্চা ডাইনোসরপ্রেমী, তাই বড় হয়ে প্যালিওন্টোলজিস্ট হতে চান। কিন্তু আপাতত চিন্তায় আছেন যে যতদিনে তিনি বড় হবেন, ততদিনে অন্যরা যদি ডাইনোসরদের সমস্ত ফসিল খুঁড়ে বার করে ফেলে, তাহলে কী হবে!

2 Responses

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Subscribe To Newsletter

কথাসাহিত্য

সংস্কৃতি

আহার

বিহার

কলমকারী

ফোটো স্টোরি

উপন্যাস