নবনীতা দেবসেন। আন্তর্জাতিক খ্যাতি, তাঁর। সংস্কৃতির কোন শাখায় যে অবাধ যাতায়াত ছিল না, বলা কঠিন। আজ, ১৩ জানুয়ারি তাঁর জন্মদিন। আমি ওঁর কাছে অগাধ প্রশ্রয় পেয়েছিলাম। এই লেখা, সেই প্রাপ্তিস্বীকারের চেষ্টামাত্র।
১
বিদ্যাবতী তুমি ডানায় মেধা ভর দু’চোখে কৌতূক যাও উড়ে
যেখানে মেঘে-মেঘে বয়স বাড়ছে না একটি সুরোনদী ভবঘুরে
ভালোবাসায় আঁকা পথে যে কাচ পাতা টপকে পার হতে শিখিয়েছ
পেরতে পারলেই আবার ঘন রোদ আবার রূপকথা বানিয়েছ
আকাশে পশুপাখি চায়ের কাপে ঝড় নয়নে বিদ্যুৎ আগাগোড়া
তোমার রুগ্নতা তোমার মলিনতা, এসব মিছে কথা, মনে গড়া
২
–এবার একটু, ঘরের কথায় ফিরি?
–মা চলে যাওয়ার পর, লিখেছিলাম তো,
‘এবার নিজেই তুমি নিজের জননী।’
… কিন্তু তা কি হয়?
–আর, ফার্স্ট রিডার এখন?
–কেন, তিন মেয়ে, পরপর।
–কী বলবে, নতুন কবিকে?
–কবিতায় আমরা তো লীলাখেলা, আহ্লাদ করেছি। নেশায় মাতাল হয়ে গেছি। এখন ততটা নেশা বোধহয় জমে না। এরা জানে, কবিতা, সে যাই হোক,কেরিয়ার নয় মোটেই!
–আর, ভাষা?
– মাঝেমাঝে এলিয়েন মনে হয়। খুব স্মার্ট।
রাজনৈতিক। উঁহু, আমার ছুঁৎমার্গ নেই কোনও শব্দপ্রয়োগে, তবু…
–কবির গদ্য? সে কি অন্যকিছু?
–গদ্যের মধ্যে পদ্য ঢুকে আসে। পদ্যের মধ্যেও।
অবশ্য, মানুষের মধ্যেও তো তাই-ই হয়।
–দিদি, রাপিড ফায়ার!
বল, কবিতার ভবিষ্যৎ কী?
–উজ্জ্বল! না হলে পৃথিবী
অন্ধকার হয়ে যাবে না?
(নবনীতাদির সঙ্গে স্বপ্নে এ সংলাপ চলেছিল আমার)
*ছবি সৌজন্য: নবনীতা দেব সেন ফেসবুক গ্রুপ
পদার্থবিদ্যার স্নাতক চৈতালির প্রথম প্রেম সাহিত্য। আশির দশক থেকেই বাংলা কবিতার জগতে পরিচিত নাম। তাঁর প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের মধ্যে অন্যতম বিজ্ঞাপনের মেয়ে, বিষাক্ত রেস্তোরাঁ, দেবীপক্ষে লেখা কবিতা ইত্যাদি। পেয়েছেন বিষ্ণু দে পুরস্কার, শক্তি চট্টোপাধ্যায় পুরস্কার, মীরাবাই পুরস্কার-সহ একাধিক সম্মান।