(Poetry)
সেলুন
উন্নতবক্ষা রমণীর কাছে সঁপে
দিলাম মাথা।
প্রাকৃতিক কোনও কাটা-ছেঁড়ার মাঝে,
আমার চুলের মুঠি খামচে ধরেছিল সে।
জীবন রগড়ে বার করে নিয়েছিল,
ময়লা রক্ত যত!
পৃথিবী তখন পদ্মরাগ মণির মতো জ্বলছে।
যেন শতবর্ষের অনিদ্রা শেষে, অতৃপ্ত দেবতার
কাঙ্খিত ঘুম এনে দেবে,
এমন একটা নিজস্ব সেলুন!
জোনাকির আত্মার মতো টিমটিমে আটপৌরে আলোয়
আয়নার গায়ে সীমাহীন অগোচর।
বাল্বের রং ফ্লুরোসেন্ট ব্লু।
ঠিক তখনই অন্ধ আর মহাকালের মাঝে
জন্ম নেয় এক স্বর!
যেন বিক্ষুব্ধ একটা হরিণ!
ছুটে বেড়ায় সেলুনের বিপণনকেন্দ্রটি জুড়ে।
শিং দুটিতে তার গিজগিজে পোকা
আর অনেকখানি রক্ত লেগে আছে। (Poetry)


দেওয়াল
দেওয়াল মানে তো নিরেট
আড়াল নয় শুধু…
খরস্রোতা নদী যখন ক্ষয়ক্ষতি সংসারের
রোদ-হাওয়া-জল মেখে, ঝরে যাওয়া
ফসলের ক্ষেত্র হয়ে, ধূপকাঠির মতো ভঙ্গুর হাওয়ায়
বিষণ্ণ বন্দুকের শরীর বেয়ে,
বাসা বাঁধে শিল্পীর ক্যানভাসে,
তুলির আঁচড়ে লেখা হয়,
নিখিল জ্যোৎস্নায় ভিজে যাওয়া কিশোরীর
স্তন বর্তুল আর পুরুষ জীবনের গোপন ইস্তেহার,
বৃষ্টিতে মরে যায় অনভিজ্ঞ সাদা মাছির দল।
তখন উল্লসিত কোনও পানশালায় উৎফুল্ল শ্রমিকের দল
নিজেদের ওই আয়নায় আলাদা করে।
নির্বাণে দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া,
সেই আয়নাই তখন প্রোপালসিভ
আইডেন্টিফায়িং মিডিয়াম!
হয়তো এরপরেই লেগে যাবে ঘোর বাক-বিতন্ডা!
জীর্ণ দেওয়ালের মাঝে কাজল লেপ্টে গেলে
আয়না খুঁজবে কিছু মানুষ।
শব্দের গাঁথনিরা ভেঙে গেলে
একা হবে, কেঁদে যাবে সেই দেওয়াল। (Poetry)
অনূর্ধ্ব শূন্য পংক্তির কবিতা
জীর্ণ দেয়ালে কান পেতে থাকি।
যদি তোমার কলম চুঁয়ে পড়া
অভিমানে ভিজে যায় গোপন গুহার
অনূর্ধ্ব সতেরো। জলপাই রঙের কারুকাজওয়ালা
চাদর জুড়ে ছড়িয়ে থাকে ডোরাকাটা
অযুত কবিতা! ইটের ভাঁজে ভাঁজে,
লুকোনো কণ্ঠস্বরে, জীর্ণ হেলা বটবৃক্ষের
বন্ধনের অজুহাতে। জঙ্গলের দিকটায় তখন
অস্থির বৃষ্টি! বৃষ্টির জলে ভেসে
যাচ্ছে মাটি! মাটির বুক জুড়ে
লবণাক্ত ফাঙ্গাস জন্ম নিচ্ছে!
শুষে নিচ্ছে দেয়ালটার বুকে জমে থাকা
রক্ত! সেই রক্তের তোর বেয়ে
কোনওদিন নেমে এসেছিল ক্ষুধার বাস্তুতন্ত্র।
সোহাগের তপ্ত আলিঙ্গনে…
তোমার লেখা শেষ চব্বিশ পংক্তির জন্য! (Poetry)

মুদ্রিত ও ডিজিটাল মাধ্যমে সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
অলংকরণ- আকাশ গঙ্গোপাধ্যায়
লেখকের জন্ম ১৯৮৯ সালের জানুয়ারী মাসে পশ্চিমবঙ্গের হুগলী জেলার শ্রীরামপুর শহরে। ছোটবেলা থেকেই তিনি লেখালেখির সাথে যুক্ত। বিভিন্ন নামী পত্রিকা যেমন সন্দেশ, জোয়ার, কোরক, পথ ও পাঁচালি ইত্যাদি পরিবারের তিনি নিয়মিত সদস্য ছিলেন। বহু স্বনামধন্য লেখক-লেখিকাদের সাথে তিনি বিভিন্ন পত্রিকার শারদসংখ্যায় লেখালিখি করতেন।