Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

চায়ে আর চাটনিতে দিলখুশ হয়ে যেত বিশ্ববরেণ্য বিজ্ঞানীর (স্মৃতিতর্পণ)

রঞ্জিতা চট্টোপাধ্যায়

জুলাই ২৭, ২০২০

Anandamohan Chakraborty
Bookmark (0)
Please login to bookmark Close

“All the world’s is a stage,
And all the men and women merely players;
They have their exits and their entrances,”

As You Like It /William Shakespeare

প্রেক্ষাগৃহে আলো জ্বলে উঠল। নাটক শেষ হয়েছে। মঞ্চ থেকে নেমে আসছেন অভিনেতা অভিনেত্রীরা।
শিকাগোর স্থানীয় প্রেক্ষাগৃহ। নাটকের কুশীলবেরা শিকাগোরই অধিবাসী। দর্শকও বেশিরভাগই তাই।
সময়টা ২০১২ সাল। সেপ্টেম্বর মাস। আমি অন্যান্য কুশীলবদের সঙ্গে নেমে এলাম মঞ্চ থেকে। এরই মধ্যে দর্শকদের মধ্যে থেকে উঠে এসেছেন ছিমছাম চেহারার এক ভদ্রলোক। তাঁর সঙ্গে এর আগেও দেখা হয়েছে নানা সামাজিক অনুষ্ঠানে। শিকাগোতে তখন আমরা বছর পাঁচেক হল এসেছি। বৃহত্তর শিকাগোর বাঙালি গোষ্ঠী আয়োজিত দুর্গাপুজোতে অন্যান্য অভিবাসী বাঙালিদের মধ্যে ওঁকে দেখতে পাই। আলাপচারিতাও হয় কিছুকিছু। অন্যান্য অনেকের মতো আমিও মানুষটিকে আনন্দদা বলে সম্বোধন করি। তেমন ভারিক্কি চাল কোনওদিন দেখেছি বলে মনে পড়ে না। হাসিমুখে অভিনন্দন জানালেন।
এই হাসিমুখটি ছিল ওঁর বিশেষত্ব। বললেন, “খুব ভালো অভিনয় করেছ রঞ্জিতা। তবে একটা ব্যাপার কী জানও ? নাটক বিয়োগান্ত হলে আমার কেমন যেন লাগে। থিয়েটার হল থেকে ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বেরতে ভালো লাগে না।”
বলাই বাহুল্য সে নাটকটি বিয়োগান্ত ছিল। বুঝলাম নাটকে বা সিনেমায় ‘ট্র্যাজেডি’ পছন্দ নয় আনন্দদার। কিন্তু জীবনের নাটক তো সবসময়ই বিয়োগান্ত। শেষ অঙ্কে প্রস্থানের পর কার্টেন কলেও হাজির থাকার উপায় নেই। জন্ম আর মৃত্যুর মাঝখানের সময়টুকুই কোনও কোনও মানুষকে একটা ‘চরিত্র’ করে তোলে। শিকাগোর বাঙালি সমাজে আনন্দদা নামের মানুষটি নিজের স্বভাব আর কাজের সুবাদে হয়ে উঠতে পেরেছিলেন এমন একজন ‘চরিত্র’ যাঁকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি আজ।

Anandamohan Chakraborty
চলছে জীবন বিজ্ঞানের জটিল তত্ত্বের রহস্য সমাধান। ছবি সৌজন্য – historic.images.outlet.com

ডঃ আনন্দমোহন চক্রবর্তী মাইক্রোবায়োলজির জগতে এক বিশ্ববিখ্যাত ব্যক্তিত্ব।
১৯৭১ সাল। ডঃ চক্রবর্তী তখন নিউইয়র্কের Schenectady-তে General Electrics-এর গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগে কর্মরত। এক নতুন প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া তিনি আবিষ্কার করেন। নাম Pseudomonas Putida.
কী বিশেষত্ব এই অতি ক্ষুদ্র জীবাণুটির ?
এটি খনিজ তেল থেকে পুষ্টি আহরণ করতে সক্ষম। ফলে সমুদ্রে ভাসমান ক্ষতিকারক তেল উদরস্থ করার কাজে লাগানো যায় এই ব্যাকটেরিয়া। শুধু সমুদ্র কেন ? যে কোনও জায়গায় তেল ছড়িয়ে পড়লেই তা পরিষ্কার করতে কাজে লাগান যাবে genetic cross linking পদ্ধতিতে তৈরি এই ব্যাকটেরিয়া।
এই বিশেষ ব্যাকটেরিয়াটির পেটেন্টের জন্য আবেদন জানালেন ডঃ চক্রবর্তী। আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানী মহলে সাড়া পড়ে গেল। জীবিত কোনও অস্তিত্বের পেটেন্ট হয় না, এই যুক্তিতে আমেরিকা প্রথমে খারিজ করে দিল তাঁর আবেদন। কিন্তু তিনি হাল ছাড়লেন না। দীর্ঘদিন ধরে চলল আইনি লড়াই। তার ইতিবৃত্ত নথিবদ্ধ আছে Diamond vs Chakrabarty কেসের রেকর্ডে।
শেষপর্যন্ত ১৯৮০ সালের ১৬ জুন আমেরিকার সুপ্রিম কোর্ট রায় দেন মামলার। ডঃ চক্রবর্তী ‘সিউডোমোনাস পুটিডা’র পেটেন্টের অধিকারী হন। জীবনবিজ্ঞানের ইতিহাসে তিনিই এ ব্যাপারে পথিকৃৎ। এই ঘটনা সংশ্লেষিত জীববিজ্ঞান (Synthetic Biology )ও জীববিজ্ঞান প্রযুক্তির (Biotechnology) ধারাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে।
১৯৮০ সালের জুন মাসের পর জীবনবিজ্ঞানের এই দু’টি শাখায় যেসব গবেষণা হয়েছে, তা ওঁর এই কাজের উপর বিশেষ ভাবে নির্ভরশীল। সিউডোমোনাস আবিষ্কারের পরবর্তী পঞ্চাশ বছর ডঃ চক্রবর্তী এই ব্যাকটেরিয়া সংক্রান্ত গবেষণায় তাঁর জীবন নিয়োজিত করেন। সেই সময়ে ওঁর অসংখ্য কাজের মধ্যে একটি বিশেষ উল্লেখযোগ্য কাজ হল, ব্যাকটেরিয়ার শরীর থেকে আজ়ুরিন (Azurin) নামক প্রোটিনকে আলাদা করা এবং তাকে কোষের দ্রুত বৃদ্ধি রোধে ব্যবহার করা। ভবিষ্যতে ক্যান্সার প্রতিষেধক হিসেবে এই আবিষ্কারের বিশেষ সম্ভাবনার কথা অনস্বীকার্য।

Anandamohan Chakraborty
তাঁর আবিষ্কৃত জীবাণুর পেটেন্ট নিয়ে দীর্ঘকালের আইনি লড়াইয়ে সাফল্য পান ১৯৮০ সালে। মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের সামনে সেই ঐতিহাসিক জয়ের মুহূর্ত! ছবি সৌজন্য – medium.com

দীর্ঘ কর্মজীবনে বিজ্ঞানের যে নিরলস সাধনা উনি চালিয়ে গিয়েছেন, তার জন্য বিশ্বের জীববিজ্ঞানী সমাজে উনি সম্মানিত। ইউনিভার্সিটি অফ ইলিনয়, শিকাগোর ইমিউনোলজি আর মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে তিনি অধ্যাপনা করেছেন বহু বছর (১৯৭৯-২০১৮)। এই দীর্ঘ অধ্যাপনা জীবনে বহু ছাত্রছাত্রীর গবেষণা সংক্রান্ত কাজে দিশারীর ভূমিকা পালন করেছেন তিনি। কাজ করেছেন বহুবিধ। দেশ বিদেশের নানা বিজ্ঞান সংস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ছিলেন দু’টি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা ও কর্ণধার। এর পাশাপাশি পেটেন্ট ও জীববিজ্ঞান বিষয়ক মেধা সম্পত্তি সংরক্ষণ (Intellectual Property Rights) আইন নিরূপণের নানা সমিতিতে তিনি অগ্রণী ভূমিকা নিতেন। প্রশিক্ষণ দিতেন এইসব মামলার বিচারকদের। বৈজ্ঞানিক গবেষণার জগতে তাঁর অবদানের জন্য ভারত সরকার তাঁকে পদ্মশ্রী উপাধিতে ভূষিত করেন ২০০৭ সালে। বিজ্ঞানীদের ধর্ম নিয়ত অধিকতর জ্ঞানার্জনের চেষ্টা করা। জ্ঞানের কোনও শেষ নেই জেনেও গবেষণায় ক্ষান্তি না দেওয়া। ডঃ আনন্দমোহন চক্রবর্তী আজীবন তাঁর বৈজ্ঞানিকের ধর্মে ছিলেন নিষ্ঠাবান। মেঘনাদ সাহা, সত্যেন্দ্রনাথ বোস, আচার্য জগদীশচন্দ্র বোস, আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় প্রমুখের হাত ধরে বিজ্ঞান সাধনার জগতে বাঙালির ঐতিহ্যের যে অবদান, ডঃ আনন্দমোহন চক্রবর্তী সে ধারাকে সমৃদ্ধতর করেছেন, এ বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই।

এই মানুষটি, আমাদের সকলের প্রিয় আনন্দদা, চলে গেলেন গত ১০ জুলাই। বয়স হয়েছিল ৮২। গত দশ বছর ধরে শিকাগো শহরে থাকার সুবাদে আনন্দদাকে কাছ থেকে জানার সৌভাগ্য হয়েছিল আমার। সুযোগ হয়েছিল বিশ্ববরেণ্য এই বাঙালি বৈজ্ঞানিকের চরিত্রের অন্য দিকগুলোকে কিছুটা চেনার। মানুষ আনন্দদাকে চেনার।
মানুষ হিসেবে উনি কেমন ছিলেন, বলতে গেলে প্রথমেই ওঁর ব্যক্তিত্বের যে দিকটির কথা মনে হয় তা হল, বিন্দুমাত্র অহংবোধ না-থাকা। শিকাগোর সামাজিক অনুষ্ঠানগুলিতে নিয়মিতই দেখা হত। চেনা মানুষকে উপেক্ষা করেছেন, এমন হয়নি কখনও। অন্য কারও সঙ্গে কথা বলছেন হয়তো। তাও চোখে চোখ পড়লে মাথাটি হেলাতেন। সৌজন্যবোধ ছিল ওঁর চরিত্রের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য।
বেশ কয়েকবার অতিথি হিসেবে আমাদের বাড়ি এসেছেন। চা আর চাটনী – এ দু’টি ছিল ওঁর খুব প্রিয়। দুধ অল্প ,যাতে লিকার পাতলা না হয়ে যায়। আর নিজে বানালে সেই চায়ে যোগ করতেন এক চামচ চিনিও। চায়ের কাপটি হাতে নিয়ে মুখে একটা তৃপ্তির হাসি ফুটে উঠত। চাটনি খেতে ভারি ভালোবাসতেন। বলতেন, “রঞ্জিতা, আরও আছে তো? কারণ এই যে বড়ো বাটিটা তুমি আমার সামনে রেখেছ, সেটা তো আমি একাই শেষ করে ফেলব।”
খাবার নেওয়ার সময় শুক্তোর পালা যেই আসত, সহজভঙ্গিতে নিমন্ত্রণকর্তাকে বলতেন, “এই শুক্তো তুমি বরং শান্তির (ওঁর বহুকালের বন্ধু) জন্য রেখে দাও।” সহজ, নির্মল রসিকতা ছিল সহজাত। কথাবার্তায় কোনওদিন বুঝতে পারা যেত না, উনি কত বড় মাপের একজন মানুষ। অমায়িক, পরিহাসপ্রিয় এই মানুষটি নিজের স্বভাবের গুণে সকলের মনে একটা জায়গা করে নিয়েছিলেন। বিদ্যা বিনয় দান করে। এই আপ্তবাক্যটি তাঁর জীবনযাপনের মধ্যে দিয়ে মূর্ত হয়ে উঠেছিল।

Anandamohan Chakraborty
মেঘনাদ সাহা, আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু, সত্যেন্দ্রনাথ বসুদের যোগ্য উত্তরসূরী ছিলেন আনন্দদা। ছবি সৌজন্য – alchetron.com

আনন্দদার সঙ্গে গত দশ বছরে দু’টি বইতে কাজ করেছি আমি। সেটা একটা বিরল অভিজ্ঞতা। দু’টিই ওঁর জিন সংক্রান্ত গবেষিণা কী ভাবে ক্যান্সার চিকিৎসায় সাহায্য করতে পারে, সে বিষয়ক কাহিনি। প্রথম বইটির নাম ‘ Bugging Cancer ‘ আর দ্বিতীয় বই ,”Three Daughters, Three Journeys: Quest For Cancer Cure.”
বই নিয়ে কাজ করার সময় বিজ্ঞান বিষয়ক নানা তথ্য ওঁর মুখে শুনেছি। কিন্তু একজন বিশ্ববিখ্যাত বাঙালি বৈজ্ঞানিকের সঙ্গে কথা বলছি, এমন মনে হয়নি কখনও। আমরা, যারা জেনেটিক্স বিষয়টা অতটাও গভীর ভাবে জানি না, ওঁর সহজ কথায় আমাদের কাছেও ছবির মতো ফুটে উঠতো সেই বিষয়ের জটিল তথ্যাদি। আমার কাজের লাঞ্চব্রেকের সময় জেনে নিয়ে নিজে দেখা করতে এসেছিলেন আমার সঙ্গে। সেই স্বভাবসুলভ হাসি মুখে। “আমি ভাই তথ্য তোমাদের দেব। কিন্তু আমি তো লিখতে পারি না। গল্প তৈরি করতে তোমাদের সাহায্য চাই।” ফিকশনের মাধ্যমে আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছনোর ইচ্ছে থেকেই এই ভাবনা। স্বপ্ন দেখতেন একদিন ক্যান্সারমুক্ত হবে পৃথিবী।
কাজ মনমতো না হলেও কখনও বিরক্তি বা নিরুৎসাহ দেখিনি। যতবার না বুঝে প্রশ্ন করেছি, ততবার ধৈর্য ধরে তার উত্তর দিয়েছেন। সুন্দর করে ব্যাখ্যা করেছেন বৈজ্ঞানিক বিষয়। নিজের গবেষণা সংক্রান্ত বিষয়বস্তু নিয়ে তাঁর বলার ভঙ্গিটি ছিল ভারি চিত্তাকর্ষক। হাসিঠাট্টার মধ্যে দিয়ে গম্ভীর বিষয়ের অবতারণা করতে পারতেন। শ্রোতাদের মনোযোগ ধরে রাখাটা কোনও সমস্যাই ছিল না তাঁর কাছে।

আনন্দদা বাংলা সাহিত্যের জগৎটি বড়ো ভালবাসতেন। অনেক ছোটবেলায় পড়া কবিতা আগাগোড়া মুখস্থ বলতে পারতেন এই সেদিন পর্যন্ত। শিকাগোর স্থানীয় সাহিত্যগোষ্ঠী ‘উন্মেষ’-এর সভায় প্রায়ই চোখে পড়ত ওঁর স্বভাবমধুর উপস্থিতি। আমি ‘বাতায়ন’ নামে একটি আন্তর্জাতিক পত্রিকা সম্পাদনার সঙ্গে যুক্ত। পত্রিকার ছাপা সংখ্যাটি হাতে নিয়ে উল্টেপাল্টে দেখতেন প্রতিবার। বলতেন, “চালিয়ে যাও।” উদ্যমী ছিলেন। আক্ষরিক অর্থেই জীবনের প্রায় শেষ দিন পর্যন্ত নতুন কাজের কথা ভাবতেন। ওঁর মধ্যে কোনওদিন নেতিবাচক কিছু দেখিনি।

Anandamohan Chakraborty
বিদ্যা বিনয় দান করে, এই আপ্তবাক্যটির সার্থক উদাহরণ ছিলেন মানুষ আনন্দমোহন। ছবি সৌজন্য – alchetron.com

মৃত্যুর সপ্তাহখানেক আগে ওঁর সঙ্গে আমার শেষ কথা হয়। ঝরঝরে গলায় নানা কথা বললেন। জানতে চাইলেন আমার পরিবারের বাকিদের কথা। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার দিন শেষ হলেই কোথাও লাঞ্চ খেতে যাওয়া হবে, এই পরিকল্পনাও হল। কিন্তু ওই পরিকল্পনাটুকুই। তা কাজে পরিণত করার সুযোগ এ জীবনে আর হল না। সেদিন একেবারেই বুঝতে পারিনি যে সে-ই আমার শেষ কথোপকথন আনন্দদার সঙ্গে। তাঁকে ঘিরে টুকরো টুকরো নানা কথা, নানা মুহূর্তের স্মৃতি সঞ্চিত হয়ে রইল মনে। অল্প যে ক’দিন তাঁকে কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়েছিল, সেই অভিজ্ঞতা আমার পাথেয় হয়ে থাকবে। এই অল্প সময়েই আমার জীবনে দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছিলেন তিনি। নিরলস বিজ্ঞানচর্চা তো ছিলই ,সেইসঙ্গে যোগ হয়েছিল তাঁর সৌজন্য, শিষ্টাচার, ভদ্রতা আর বিনয়ের আদর্শ।

আনন্দদার জীবনাবসানের সঙ্গে বাঙালির বিজ্ঞানচর্চার একটা যুগ শেষ হল। কিছুটা নীরবেই পতন হল তাঁর জীবনের শেষ অঙ্কের যবনিকা।
তার জন্য কি শুধু অতিমারীই দায়ী ? নাকি আমাদের উদাসীনতাও? এই আত্মজিজ্ঞাসার মুখোমুখি দাঁড়ানোর সময় হয়েছে বোধহয়।
নাটক শেষে নেমে আসা পর্দার সামনে কুশীলব আজ অনুপস্থিত। কিন্তু থেকে গেল প্রায় ষাট বছরের বেশি সময় ধরে করে যাওয়া তাঁর কাজ। মঞ্চ থেকে যে মানুষটি বিশেষ সমারোহ ছাড়াই প্রস্থান করলেন, পশ্চিমবঙ্গ তথা সারা পৃথিবীতে মাইক্রোবায়োলোজির জগতে তাঁর নাম সুবিদিত। তাঁর আবিষ্কার আক্ষরিক অর্থেই যুগান্তকারী।

ডঃ আনন্দমোহন চক্রবর্তীর জন্ম পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার সাঁইথিয়ায়। নিজের শিক্ষাজীবন কেটেছে সাঁইথিয়া ও কলকাতায়। বিদেশে বসবাসকালেও বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। শিকড়ের প্রতি ছিল একধরনের দায়বদ্ধতা। কিন্তু আমরা ক’জন আজ ওঁর বিজ্ঞানসাধনার বিষয়ে জানি বা জানতে আগ্রহী ? আমাদেরও কিছু দায় আছে ওঁর অবদানের কথা পৃথিবীর মানুষের কাছে তুলে ধরার। দায় আছে একনিষ্ঠভাবে বিজ্ঞানের চর্চা চালিয়ে যাওয়া ও বিজ্ঞানসাধনায় দেশবাসীকে উৎসাহ দেওয়ার। সারা বিশ্বে আজ ছড়িয়ে পড়েছে অদৃশ্য জীবাণুজাল। তার বিরুদ্ধে লড়াই করার হাতিয়ার বিজ্ঞান। তাই এখন সময় বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানীদের প্রতি মনোযোগ ও শ্রদ্ধা জানানোর, ভাবীকালের কাছে ডঃ আনন্দমোহন চক্রবর্তীর কাজ ও আদর্শ তুলে ধরার।

রঞ্জিতা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোর বাসিন্দা। পেশায় শিক্ষিকা। নেশা বই পড়া লেখালিখি।"বাতায়ন" নামের একটি আন্তর্জাতিক পত্রিকা সম্পাদনা করেন গত ছ বছর। এক দশকেরও বেশি সময় শিকাগোর "উন্মেষ সাহিত্য গোষ্ঠী"র সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। রঞ্জিতার বিশ্বাস, সাহিত্য ভৌগোলিক সীমানা পার হয়ে মানুষ, দেশ ও সংস্কৃতির মেলবন্ধন ঘটায়।

Picture of রঞ্জিতা চট্টোপাধ্যায়

রঞ্জিতা চট্টোপাধ্যায়

রঞ্জিতা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোর বাসিন্দা। পেশায় শিক্ষিকা। নেশা বই পড়া লেখালিখি।"বাতায়ন" নামের একটি আন্তর্জাতিক পত্রিকা সম্পাদনা করেন গত ছ বছর। এক দশকেরও বেশি সময় শিকাগোর "উন্মেষ সাহিত্য গোষ্ঠী"র সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। রঞ্জিতার বিশ্বাস, সাহিত্য ভৌগোলিক সীমানা পার হয়ে মানুষ, দেশ ও সংস্কৃতির মেলবন্ধন ঘটায়।
Picture of রঞ্জিতা চট্টোপাধ্যায়

রঞ্জিতা চট্টোপাধ্যায়

রঞ্জিতা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোর বাসিন্দা। পেশায় শিক্ষিকা। নেশা বই পড়া লেখালিখি।"বাতায়ন" নামের একটি আন্তর্জাতিক পত্রিকা সম্পাদনা করেন গত ছ বছর। এক দশকেরও বেশি সময় শিকাগোর "উন্মেষ সাহিত্য গোষ্ঠী"র সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। রঞ্জিতার বিশ্বাস, সাহিত্য ভৌগোলিক সীমানা পার হয়ে মানুষ, দেশ ও সংস্কৃতির মেলবন্ধন ঘটায়।

9 Responses

  1. পরম যত্ন আর গভীর শ্রদ্ধায় ডঃ আনন্দমোহন চক্রবর্তীকে পাঠকের সামনে আনলেন রঞ্জিতা। এ লেখার বড় প্রয়োজন ছিল।

  2. বিশ্ববরেণ্য বিজ্ঞানীর সঙ্গে এভাবে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য রঞ্জিতা চট্টোপাধ্যায় ও bangla live দুজনকেই ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই🙏
    রঞ্জিতা এতবড় একটি কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, অথচ আমরা কখনো জানতে পারিনি, বোঝা যায় চারিত্রিক সারল্যের দিক দিয়ে উনি বিজ্ঞানী আনন্দমোহন চক্রবর্তীর যোগ্য শিষ্যা হয়ে উঠেছিলেন!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Subscribe To Newsletter

কথাসাহিত্য

সংস্কৃতি

আহার

বিহার

কলমকারী

ফোটো স্টোরি

উপন্যাস

Banglalive.com/TheSpace.ink Guidelines

Established: 1999

Website URL: https://banglalive.com and https://thespace.ink

Social media handles

Facebook: https://www.facebook.com/banglaliveofficial

Instagram: https://www.instagram.com/banglalivedotcom

Twitter: @banglalive

Needs: Banglalive.com/thespace.ink are looking for fiction and poetry. They are also seeking travelogues, videos, and audios for their various sections. The magazine also publishes and encourages artworks, photography. We however do not accept unsolicited nonfiction. For Non-fictions contact directly at editor@banglalive.com / editor@thespace.ink

Time: It may take 2-3 months for the decision and subsequent publication. You will be notified. so please do not forget to add your email address/WhatsApp number.

Tips: Banglalive editor/s and everyone in the fiction department writes an opinion and rates the fiction or poetry about a story being considered for publication. We may even send it out to external editors/readers for a blind read from time to time to seek opinion. A published story may not be liked by everyone. There is no one thing or any particular feature or trademark to get published in the magazine. A story must grow on its own terms.

How to Submit: Upload your fiction and poetry submissions directly on this portal or submit via email (see the guidelines below).

Guidelines:

  1. Please submit original, well-written articles on appropriate topics/interviews only. Properly typed and formatted word document (NO PDFs please) using Unicode fonts. For videos and photos, there is a limitation on size, so email directly for bigger files. Along with the article, please send author profile information (in 100-150 words maximum) and a photograph of the author. You can check in the portal for author profile references.
  2. No nudity/obscenity/profanity/personal attacks based on caste, creed or region will be accepted. Politically biased/charged articles, that can incite social unrest will NOT be accepted. Avoid biased or derogatory language. Avoid slang. All content must be created from a neutral point of view.
  3. Limit articles to about 1000-1200 words. Use single spacing after punctuation.
  4. Article title and author information: Include an appropriate and informative title for the article. Specify any particular spelling you use for your name (if any).
  5. Submitting an article gives Banglalive.com/TheSpace.ink the rights to publish and edit, if needed. The editor will review all articles and make required changes for readability and organization style, prior to publication. If significant edits are needed, the editor will send the revised article back to the author for approval. The editorial board will then review and must approve the article before publication. The date an article is published will be determined by the editor.

 

Submit Content

For art, pics, video, audio etc. Contact editor@banglalive.com