banglalive logo
Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

শোণিতমন্ত্র (পর্ব ১৩)

Bookmark (0)
ClosePlease login

No account yet? Register

illustration by Chiranjit Samanta
ছবি চিরঞ্জিত সামন্ত

প্রবল স্রোতের মাঝনদী থেকে নৌকোটাকে একটু একটু করে পাড়ের দিকে টেনে আনছিল মাঝিরা। প্রাণপাত পরিশ্রমে গলদঘর্ম সবাই। চোখ দাঁড় আর পাড়ের দিকে। কেউ খেয়ালই করলো না বেঁশেল কুমীরের মত বেশ খানিকটা দূর থেকে ওদের অনুসরণ করে চলেছে চার চারখানা ছিপ নৌকো। অনেকক্ষণ দাঁড় টেনে টেনে অবশেষে ঘাটে এসে ভিড়ল নাওখানা। লাফ দিয়ে ঘাটে নেমে কাঠের খোঁটায় নৌকোটা বেঁধে দিলো বদন মাঝি।
— বেরিয়ে আসেন মাঠান।
ভোগলের মাকে সঙ্গে নিয়ে ছইয়ের বাইরে বেরিয়ে এলো বিজয়া। পিছনে বাকি দুই মাল্লা। মাথায় বাক্সপ্যাঁটরা আর তোরঙ্গ। ততক্ষণে পাটাতন পেতে দিয়েছে বদন।
— সাবধানে নামেন মাঠান।
এক এক করে নৌকো থেকে নেমে এল সবাই। ঠিক তখনই নৌকোর গায়ে ঠকঠক করে কয়েকটা শব্দ। হাল্কা দুলে উঠল নৌকো। চকিতে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাল বদন। চার চারখানা ছিপ নৌকো নিঃশব্দে এসে ভিড়ে গেছে নৌকোর গায়ে। এক একটা ছিপে তিনজন করে মোট বারোজন। সবার প্রথমে ছিপ থেকে লাফ দিয়ে নেমে এলো বোদে।
— মালপত্তর সব মাটিতে নামিয়ে রাখ। গরগর করে উঠলো মাল্লাদের দিকে তাকিয়ে।
— খবর্দার! হুঙ্কার দিয়ে উঠলো বদন মাঝি।
— প্রাণ থাকতি মা জননীর কোনও ক্ষেতি হতি দেব না আমি। বলতে বলতে হাতের দাঁড়টাকে লাঠির মত উঁচিয়ে সামনে এসে দাঁড়াল। একটু একটু করে বদনদের ঘিরে সামনে এগিয়ে আসছে দলটা। হাতে উদ্যত লাঠি, সড়কি, তলোয়ার আর বল্লম। একটু আগে মেঘ কেটে আকাশে উঁকি দিয়েছে একফালি চাঁদ। অস্ত্রের ফলাগুলো ঝকঝক করছে চাঁদের আলোয়।

হঠাৎই নদী আর দু’পাশের জঙ্গল কাঁপিয়ে ভয়ঙ্কর গর্জন- “হা রে রে রে!” এক নিমেষে ছাইয়ের মত ফ্যাকাশে হয়ে গেল বোদের মুখটা। কী ঘটতে চলেছে বুঝে ফেলতে সময় লাগল না এক মুহূর্তও।
— জাল গোটা (পালা)! বিশে আসছে!!
তখনই নদীর মাঝখান থেকে হা হা অট্টহাসির আওয়াজ।
— ঘিরতে এসে নিজেই ঘেরা পড়ে গেলি রে বোদে।
হাতের তলোয়ারখানা ঠকাস করে মাটিতে পড়ে গেল বোদের। নদীর প্রায় মাঝ বরাবর এক সারিতে দাঁড়ানো পাঁচখানা ছিপ নৌকো। ছিপের গলুইয়ে দাঁড়িয়ে হাত নেড়ে হাসছে নলে। এর মধ্যে জঙ্গলের মধ্যে রণপার শব্দ, ঘটঘট। রণপা দাপিয়ে ঝড়ের গতিতে ঘাটে এসে দাঁড়াল বিশ্বনাথ। পিছনে ভগবান, পীতাম্বর, মেঘা, সন্ন্যাসী মণ্ডল আর প্রেমচাঁদ ডোম। রণপা থেকে নেমে ধীরেসুস্থে রণপাজোড়া শুইয়ে রাখল গাছের গায়ে। তারপর এগিয়ে এল সামনে। মাথা নিচু বোদের দলের সবার। থরথর করে বলির পাঁঠার মত কাঁপছে সবাই। একচক্কর সবাইকে দেখে নিয়ে বোদের সামনে গিয়ে দাঁড়াল বিশ্বনাথ। চুলের মুঠি ধরে টেনে তুলল মুখখানা। চোখে পিশাচ পাওয়া দৃষ্টি একটা। গলার আওয়াজ বরফের মত ঠান্ডা।
— আমরা মা কালীর সন্তান বোদে। মেয়েরা মায়ের জাত আমাদের কাছে। তাদের ওপর কোনওরকম জুলুম মহাপাপের সমান। সেই পাপ আগেও একবার করেছিস তুই, আজ আবার করতে চলেছিলি। বল, বল শুয়ারের বাচ্চা, আমার বারণ সত্বেও কেন এই কাজ করলি তুই? বল রাঁঢ়ের ব্যাটা…বলতে তোকে হবেই।
বলতে বলতে পাগলের মত ঝাঁকাতে লাগলো বোদের চুলের মুঠি ধরে। পর মুহূর্তেই কিল চড় লাথি ঘুঁসি ঝড়ের মতো আছড়ে পড়তে লাগল বোদের শরীরে। বোদেকে মারতে মারতে বেদম হাঁপাচ্ছিল বিশ্বনাথ। ফেনা কাটছিল ঠোঁটের কষে। একসময় মার বন্ধ করে ছুটে গিয়ে মেঘার কোমর থেকে খুলে নিয়ে এলো শঙ্কর মাছের ল্যাজের চাবুকখানা। সপাসপ সপাসপ… চাবুকের মার পড়ছে তো পড়ছেই। প্রতিবার মারের সঙ্গে সঙ্গে গায়ের চামড়া কেটে উঠে আসছে চাবুকের গায়ে। মাটিতে লুটিয়ে পড়লো বোদে। সারা শরীর রক্তে ভেসে যাচ্ছে।
— এবারটির মত আমাকে মাপ করে দে বিশে…পায়ে পড়ি তোর।
করুণ আর্তনাদে কাতরে উঠছে বারবার। কিন্তু প্রতিরোধের চেষ্টা করছে না এতটুকুও। আর সেটাই বোধহয় এ যাত্রা বাঁচিয়ে দিল বোদেকে।

মারতে মারতে ক্লান্ত হয়ে হাতের চাবুকটা ছুঁড়ে ফেলে ঘাটলার সিঁড়িতে গিয়ে বসে পড়ল বিশ্বনাথ। মাথা নিচু করে গুম হয়ে বসে রইল কিছুক্ষণ। তারপর ফের ঝটকা মেরে উঠে এসে দাঁড়াল সামনে। ঘাটে সার দিয়ে দাঁড়ানো বোদের শাগরেদরা। রক্তচোখে ওদের দিকে তাকাল বিশ্বনাথ।
— তোরা বোদের শাকরেদ। সর্দারের হুকুম তামিল করেছিস শুধু। তাই এ যাত্রায় তোদের মাপ করে দিলাম আমি। তোদের মধ্যে যারা আমার দলে ছিলি, এই মুহূর্ত থেকে আমার হুকুম মেনে চলবি। আজ থেকে বোদের দল ভেঙে দিলাম আমি। আর যারা পরে দলে এসেছে, তারা আমার দলে আসতেও পারে আবার চাইলে নিজের মত করে গেরস্থ জীবনে ফিরেও যেতে পারে।
শোনামাত্র মিনমিন করে উঠলো বোদের পাশে দাঁড়ানো কাশেম আর শম্ভু।
— আমরা গাঁয়েই ফিরে যেতে চাই সর্দার। ডাকাতির শখ ঘুচে গেছে আমাদের।
— ঠিক আছে। ঠান্ডা গলার আওয়াজ আরও ঠান্ডা বিশ্বনাথের।
— কিন্তু আলাদা করে যদি কোনও প্যাঁচপয়জার এঁটেছিস, মনে রাখবি তাহলে সেটাই তোদের শেষ দিন। যা এবার।
— জো হুকুম সর্দার।
তীরবেগে পাশের জঙ্গলে মিলিয়ে গেল দু’জন। পাশে এগিয়ে এলো মেঘা। ঘাটলার সিঁড়িতে উপুড় হয়ে পড়ে থাকা রক্তাক্ত বোদে। অচৈতন্য।
— এটার কি ব্যবস্থা হবে? প্রশ্ন করলো মেঘা।
— পড়ে থাক ওখানেই। তাচ্ছিল্যের সুর বিশ্বনাথের গলায়।
— শুনেছি রক্তের গন্ধে কুমির আসে বর্ষাবাদলার সময়। ঘোড়েল আর বেঁশেল কুমিরে নদী ভর্তি। কপাল খারাপ থাকলে মকরের পেটে যাবে। আর ভাগ্য থাকলে…।
শোনামাত্র হাঁ হাঁ করে উঠলো মেঘা।
— ও ভুলটা করিসনে বিশে। বোদে হচ্ছে চাঁদবোড়া। বেঁচে গেলে ফের ঘুরে ফের ছোবল বসাবে।
মেঘার পাশে দাঁড়ানো প্রেমচাঁদ আর পীতাম্বর। ওরাও একবাক্যে সায় দিলো মেঘার কথায়। ওদের কথায় মুচকি হেসে হাতের লাঠিটা তুলে ধরল বিশ্বনাথ।
— আরে চাঁদবোড়া তো সাপ। হাত পা নেই। বুকে ভর দিয়ে হাঁটা জীব। ওকে মারতে এই লাঠিই যথেষ্ট।
জবাবে চুপ করে রইলো তিনজন। বোঝা যাচ্ছিল বিশ্বনাথের কথা মনঃপুত হয়নি কারও। সেটাকে আমল না দিয়ে এগিয়ে গেল বিশ্বনাথ।

ঘাটলার গায়ে একগলা ঘোমটায় মুখ ঢেকে অধোবদন হয়ে দাঁড়িয়েছিল বিজয়া। পাশে তিন মাল্লা। আতঙ্ক আর ত্রাস এঁটে রয়েছে সবার চোখে মুখে। এইমাত্র চোখের সামনে ঘটে যাওয়া ঘটনাক্রমের ধাক্কা এখনও সামলে উঠতে পারেনি কেউই।
— পেন্নাম হই মা ঠাকরুণ, অধমের নাম বিশ্বনাথ বাগদি।
মাথা নুইয়ে করজোড়ে নমস্কার করল বিশ্বনাথ।
— পথে আসতে আসতে একটু দেরি হয়ে গেল। তাই আপনাদের হেনস্থা হল খানিকটা। এরজন্য মাফ করবেন। তবে আর চিন্তা নেই। আপনাকে আপনার শ্বশুরের ভিটে অবধি ছেড়ে দেওয়ার দায়িত্ব আমার। অধমকে নিজের সন্তান বলে ভাববেন। কথা দিচ্ছি, আমি থাকতে আর আপনাদের দিকে চোখ তুলে তাকানোর সাহস পাবে না কেউ। এবার যদি দয়া করে অনুমতি দেন তাহলে আমরা রওয়ানা দিতে পারি।
পাশে দাঁড়ানো ভগবান। একটু দ্বিধা নিয়ে তাকাল বিশ্বনাথের দিকে।
— বিশে, মা জননী বামুনের মেয়ে। এই রাতবিরেতে ওঁকে স্বামীর ভিটেয় নিয়ে তোলাটা ঠিক হবে?
ভ্রু কুঁচকে ভগবানের দিকে তাকাল বিশ্বনাথ।
— তাহলে উপায়?
উত্তরে মৃদু হাসল ভগবান।
— উপায় তো হাতের সামনেই রয়েছে। একটু দূরেই অর্জুন সিংহের গড়। মাইলখানেকের পথও নয়। আজকের রাতটুকু ওখানে মাথা গুঁজে কাটিয়ে দিয়ে কাল ভোর ভোর না হয় মথুরাপুর রওয়ানা দেয়া যাবে।

অর্জুন সিংহ। নামটা শোনামাত্র বিদ্যুতের মত শিহরণ খেলে গেল বিশ্বনাথের শরীরে। মরদের মত মরদ বটে একটা। যৌবনে বকুলগঞ্জের জমিদার নন্দীবাবুদের পাইক বরকন্দাজ বাহিনীর প্রধান ছিলেন অর্জুন। বহুবছর আগে সুদূর রাজপুতানা থেকে ভাগ্যান্বেষণে চলে এসেছিলেন অর্জুনের পূর্বপুরুষেরা। সে সময় বাংলা জুড়ে ছড়িয়ে থাকা ডাকাতদলদের সবাইকে পরাস্ত করে সদ্য সদ্য নিজের ক্ষমতা কায়েম করেছে বিশ্বনাথ। নিজের দাপট দেখাতে ডাকাতির অগ্রিম চিঠি পাঠিয়েছিল নদে জেলার সবচেয়ে ক্ষমতাশালী জমিদারদের অন্যতম নন্দীবাবুদের কাছে। টাকার থলি নিয়ে মশানতলার মাঠে একা এসেছিলেন অর্জুন সিং। কাঁধে তিরধনুক, হাতে লাঠি, সঙ্গে লোকলস্কর কিচ্ছু নেই। সরাসরি যুদ্ধে আহ্বান জানিয়েছিলেন বিশ্বনাথকে। ক্ষমতা থাকলে লাঠি অথবা তিরধনুক যেটা খুশি নিয়ে তার সঙ্গে লড়াই করুক বিশু। যে জিতবে টাকা তার। লোকটার সাহস দেখে চূড়ান্ত অবাক হয়েও হেসে ফেলেছিল বিশ্বনাথ। বলেছিল যার তার সঙ্গে লড়াই করে না সে। বিশ্বনাথবাবুর সঙ্গে লড়াই করতে গেলে আগে পরীক্ষা দিতে হয়। বলে এগিয়ে গিয়ে নিজের ধনুক আর একটিমাত্র তির তুলে দিয়েছিল অর্জুন সিংহের হাতে। রাতের আকাশে সেইসময় উড়ে যাচ্ছিল একঝাঁক রাতচরা চখাচখি। আঙুল তুলে ঝাঁকটার দিকে দেখিয়েছিল বিশ্বনাথ। ক্ষমতা থাকলে এক তিরে আকাশে উড়ন্ত পাখিকে মাটিতে নামিয়ে আনুক অর্জুন। মুখের কথা খসার আগেই বিদ্যুৎঝলকের মত জ্যামুক্ত তির ছুটে গিয়েছিল আকাশে। পর মুহূর্তেই ঝাঁকের মধ্যে একটা পাখি আকাশ থেকে আছড়ে এসে পড়েছিল বিশ্বনাথের পায়ের কাছে। বিস্ময়মুগ্ধ বিশ্বনাথ ছুটে গিয়ে সপাটে আলিঙ্গন করেছিল অর্জুন সিংহকে। বলেছিল, “আপনার মত সাচ্চা মরদের থেকে ডাকাতির টাকা নিলে সেটা অধর্ম হবে। ও টাকা ফেরত নিয়ে যান আপনি।”

বিশুর কথায় অভিভূত হয়ে গিয়েছিলেন অর্জুনও। দু’হাতে বিশ্বনাথের হাত চেপে ধরে বলেছিলেন “আজ থেকে তুমি শুধু আমার বন্ধু নয়। মেরা ছোটা ভাইয়া ভি, কখনও কোনও জরুরত পড়লে সিরফ একবার আমাকে ইয়াদ কোরও। আমার জান হাজির থাকবে তোমার জন্য।” সে কতকালের কথা। পরবর্তীতে আর যোগাযোগ হয়নি কোনওদিন। ভগবানের কাছেই শুনেছিল প্রৌঢ় বয়সে স্ত্রী গত হবার পর নন্দীবাবুদের ফৌজদারি থেকে অবসর নিয়ে পরিহারে ছোটখাটো একটা গড় বানিয়েছেন অর্জুন। অত্যন্ত বিশ্বস্ত কয়েকজন রাজপুত দেহরক্ষী আর একমাত্র বালবিধবা কন্যাকে নিয়ে সেখানেই থাকেন। নানান কাজের চাপে এসব কথা ভুলেই গিয়েছিল বেমালুম।
— চল তাহলে সিংজির গড়েই যাওয়া যাক।
হেসে ভগবানের কাঁধে একটা চাপড় মারল বিশ্বনাথ।
— স্বামীর ভিটেয় না পৌঁছে কোথাও জলস্পর্শ করব না আমি।
কথার মাঝখানেই শান্তস্বরে বলে উঠল বিজয়া। ঈষৎ সরে যাওয়া অবগুণ্ঠনের আড়ালে শান্ত অথচ দৃঢ় ব্যক্তিত্বপূর্ণ আয়ত একজোড়া চোখ। বিজয়ার দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাল বিশ্বনাথ।
— মা ঠাকরুণ, আমি মা বলে ডেকেছি আপনাকে। সন্তানের কথা একটিবারের জন্য বিশ্বাস করুন। সেখানে কোনও অসম্মান হবে না আপনার। আর যদি তাই হয় তাহলে আপনার কথা মানবার অধিকার আপনার রইল। আর আপত্তি করবেন না দয়া করে।
— ঠিক আছে। তবে ওই একটিমাত্র রাতের জন্য। কাল সূর্যের আলো ফোটার আগে শ্বশুরের ভিটেয় পৌঁছে দিতে হবে আমাকে। অবগুণ্ঠনের আড়াল থেকে বলল বিজয়া।
— তাই হবে মাঠান।
ঘাড় নেড়ে দলের লোকেদের দিকে ঘুরে হাঁকাড় দিলো বিশ্বনাথ।
— দঙ্গল ওঠা!
ঝপঝপ রণপায় চড়ে দাঁড়িয়ে পড়লো দস্যুদল। ইতিমধ্যেই নলের ছিপ নৌকো থেকে ধরাধরি করে নামিয়ে আনা হয়েছে ছোট একটা দু’বেহারার পাল্কি। ভোগলের মাকে সঙ্গে নিয়ে পাল্কিতে গিয়ে বসল বিজয়া। রওয়ানা হওয়ার আগের মুহূর্তে ফের একবার ঘাটের দিকে তাকালো মেঘা। রক্তাক্ত দেহে পড়ে থাকা বোদে। অল্প অল্প নড়ছে দেহটা।
— আবার বলছি বিশে। শত্তুরের শেষ রাখতে নেই। এমনধারা ভুল করিসনে।
চাপা হিসহিসে গলায় বিশ্বনাথের উদ্দেশ্যে কথাটা বলল মেঘা। উত্তরে হো হো করে হেসে উঠলো বিশ্বনাথ।
— তুই ওকে চাঁদবোড়া বলেছিলি না? আসলে ওটা জলঢোঁড়া। লাঠি চালানোর দরকার পড়বে না। পায়ের ধাপ (শব্দ) দিলেই গর্তে পালাবে। নে নে আর কথা না বাড়িয়ে চল এবার।

সামনে জ্বলন্ত মশালের আগুন, রণপায় ডাকাতদল, তোরঙ্গ প্যাঁটরা মাথায় মাল্লারা। পাল্কির দুপাশে বিশ্বনাথ আর মেঘা। দু’ধারে জঙ্গলের মাঝখানে রাস্তাটা ধরে অন্ধকারে মিলিয়ে গেল দস্যুদল।

জন্ম ও বেড়ে ওঠা উত্তর কলকাতার পুরোনো পাড়ায়। বহু অকাজের কাজী কিন্তু কলম ধরতে পারেন এটা নিজেরই জানা ছিল না বহুদিন। ফলে লেখালেখি শুরু করার আগেই ছাপ্পান্নটি বসন্ত পেরিয়ে গেছে। ১৪২১ সালে জীবনে প্রথম লেখা উপন্যাস 'দ্রোহজ' প্রকাশিত হয় শারদীয় 'দেশ' পত্রিকায় এবং পাঠকমহলে বিপুল সাড়া ফেলে। পরবর্তীতে আরও দুটি উপন্যাস 'জলভৈরব' (১৪২২) এবং 'বৃশ্চিককাল' (১৪২৩) প্রকাশিত হয়েছে যথাক্রমে পুজোসংখ্যা আনন্দবাজার এবং পত্রিকায়। এছাড়া বেশ কিছু প্রবন্ধ এবং দু চারটি ছোটগল্প লিখেছেন বিভিন্ন পত্রপত্রিকা আর লিটিল ম্যাগাজিনে। তার আংশিক একটি সংকলন বই আকারে প্রকাশিত হয়েছে 'ব্যবসা যখন নারীপাচার' শিরোনামে। ২০১৭ সালে পেয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি পুরস্কার।

One Response

  1. উফফ ! কি দুর্দান্ত রোমস্তব্ধ করা বিবরণ ! নিশ্বাস ফেলা যায় না ! কতদিন পর এরকম দৃপ্ত চরিত্র গুলো আবার যেন কথা বলে উঠলো বাংলা সাহিত্যে !!!!! তবে হ্যাঁ বন্ধু অগ্রজ – তোমার আমার সেই এক গুরুর কথা বারে বারে মনে পড়ছে , তুমিও এড়াতে পারো নি এবার — “শত্রুকে বাঁচিয়ে রাখার অর্থ মৃত্যু ” . ইয়াদ রাহেগা, ভুল মত্ !

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Subscribe To Newsletter

কথাসাহিত্য

সংস্কৃতি

আহার

বিহার

কলমকারী

ফোটো স্টোরি

উপন্যাস

Banglalive.com/TheSpace.ink Guidelines

Established: 1999

Website URL: https://banglalive.com and https://thespace.ink

Social media handles

Facebook: https://www.facebook.com/banglaliveofficial

Instagram: https://www.instagram.com/banglalivedotcom

Twitter: @banglalive

Needs: Banglalive.com/thespace.ink are looking for fiction and poetry. They are also seeking travelogues, videos, and audios for their various sections. The magazine also publishes and encourages artworks, photography. We however do not accept unsolicited nonfiction. For Non-fictions contact directly at editor@banglalive.com / editor@thespace.ink

Time: It may take 2-3 months for the decision and subsequent publication. You will be notified. so please do not forget to add your email address/WhatsApp number.

Tips: Banglalive editor/s and everyone in the fiction department writes an opinion and rates the fiction or poetry about a story being considered for publication. We may even send it out to external editors/readers for a blind read from time to time to seek opinion. A published story may not be liked by everyone. There is no one thing or any particular feature or trademark to get published in the magazine. A story must grow on its own terms.

How to Submit: Upload your fiction and poetry submissions directly on this portal or submit via email (see the guidelines below).

Guidelines:

  1. Please submit original, well-written articles on appropriate topics/interviews only. Properly typed and formatted word document (NO PDFs please) using Unicode fonts. For videos and photos, there is a limitation on size, so email directly for bigger files. Along with the article, please send author profile information (in 100-150 words maximum) and a photograph of the author. You can check in the portal for author profile references.
  2. No nudity/obscenity/profanity/personal attacks based on caste, creed or region will be accepted. Politically biased/charged articles, that can incite social unrest will NOT be accepted. Avoid biased or derogatory language. Avoid slang. All content must be created from a neutral point of view.
  3. Limit articles to about 1000-1200 words. Use single spacing after punctuation.
  4. Article title and author information: Include an appropriate and informative title for the article. Specify any particular spelling you use for your name (if any).
  5. Submitting an article gives Banglalive.com/TheSpace.ink the rights to publish and edit, if needed. The editor will review all articles and make required changes for readability and organization style, prior to publication. If significant edits are needed, the editor will send the revised article back to the author for approval. The editorial board will then review and must approve the article before publication. The date an article is published will be determined by the editor.

 

Submit Content

For art, pics, video, audio etc. Contact editor@banglalive.com