আগের পর্ব [১] [২] [৩] [৪] [৫] [৬] [৭] [৮] [৯] [১০] [১১]
সীতা এলিয়ার পথ ধরেই এল্লা যেতে হবে। সীতা আম্মান মন্দিরের কাছে এসে তামিলিয়ান এক পাইস হোটেলে ঢুকলাম। এখানেই আলাপ হল মিঃ জয়শেখরের সঙ্গে। একমনে মশলা ধোসা আর বিউলির ডালের বড়া খাচ্ছিলেন। ভালো হিন্দি বলেন। “ইন্ডিয়ান? কোথায় যাচ্ছেন?”এল্লা যাচ্ছি শুনে গাড়িতে লিফ্ট পাওয়ার অনুরোধ জানালেন। ওঁর সঙ্গে কথা বলতে বলতে শ্রীলঙ্কার আরও দু-একটা রামায়াণ স্পটের কথাও জানতে পারলাম। তার মধ্যে একটি আছে এল্লা যাওয়ার পথেই, দিভুরামপোলা। ‘সীথা দেভী অগ্নি প্রভেশা অ্যানসিয়েন্ট টেম্পল’, যার তত্ত্বাবধায়ক উনি স্বয়ং। জয়শেখর কেপেতিপোলা পর্যন্ত লিফ্ট চেয়েছিলেন। আমরা তাঁর সঙ্গে মন্দির পর্যন্তই যাবো বলে ঠিক করলাম।
হাক্গালা বোটানিক্যাল গার্ডেনকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সময়ে জয়শেখর বললেন, “এই বাগানের শেষে জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে ৭ কিলোমিটার চড়াই পথ চলে গেছে পাহাড়ের মাথায়। পায়ে হেঁটে যেতে হয়। সেখানে একটা জলের কুণ্ড আছে। বলা হয়, সীতার চোখের জলে সৃষ্ট হয়েছে সেই জলাশয়, নাম সীতা পকুনা। আগে যেতে দেওয়া হত। আমি নিজে গেছি। তবে বন্যজন্তুর আক্রমণের সম্ভাবনা থাকায় এখন আর অনুমতি দেওয়া হয় না।”
এ অঞ্চলকে ঘিরে রামায়ণের নানান কল্পকাহিনী। শুনতে ভালোই লাগছিল। কিছুটা এগোতেই অরণ্যঘেরা নির্জন পথ। দূরে ঢেউ খেলানো পাহাড়ের সারি আর সুবিস্তৃত ভ্যালি। মনোমুগ্ধকর পথশোভা। দেশের মধ্যভাগ থেকে এখন দক্ষিণ অভিমুখে এগিয়ে চলেছি। শ্রীলঙ্কার রাস্তাঘাট সাধারণভাবে বেশ উন্নত। তবে এ পথটি তার ব্যতিক্রম, খানাখন্দে ভরা। গাড়ি খুব ধীর গতিতে চলেছে।
কেপেতিপোলা পৌঁছে মূল রাস্তা ছেড়ে বাঁদিকে সামান্য এগোতেই মন্দির। ভিতরে দেওয়ালগাত্রে একদিকে চিত্রিত আছে রামায়ণ কথা, অপরদিকে আবার বুদ্ধের জাতক কথা। একই চত্বরে রাম, সীতা, হনুমানের মূর্তির পাশাপাশি রয়েছে বুদ্ধমূর্তি, বৌদ্ধস্তূপ। দশাননের মূর্তির একটা ফটো ঝোলানো আছে দেওয়ালে। জয়শেখর জানালেন, স্থানীয় পাহাড়ের আদিবাসীরা এই মূর্তির পুজো করত। ব্রিটিশরা পরবর্তীকালে কষ্টিপাথরের সেই মূর্তিটা নিয়ে চলে যায়। বর্তমানে এটির জায়গা হয়েছে লন্ডন মিউজিয়ামে। ছবিটা লন্ডন মিউজিয়ামেই তোলা।
আরেকটা ছোট মন্দির, বিশাল এক তালা দিয়ে আটকানো। জয়শেখর এক হাত লম্বা একটা চাবি এনে বললেন, সীতা মায়ের সম্মানার্থে একমাত্র মহিলারাই এই তালা খুলতে পারবে।তার যা ওজন, তালা খোলা তো দূরের ব্যাপার, হাতে ধরে রাখাই মুশকিল। ভিতরে সীতার একটা মূর্তি আর দেওয়ালে অগ্নিপরীক্ষার ছবি আঁকা আছে। মন্দির থেকে বেরিয়ে এরপর গেলাম সেই স্থানে, প্রচলিত বিশ্বাসে যেখানে নাকি সীতার অগ্নিপরীক্ষা হয়েছিল। উঠোনের মাঝখানে উঁচু পাঁচিল দিয়ে ঘেরা সুবিশাল এক পিপুল গাছ। জয়শেখর একটা টুল এনে দিলেন। তার ওপর দাঁড়িয়ে পাঁচিলের ওপারে ঝুঁকে গাছের গোড়ার দিকটা দেখতে পেলাম। মনে হচ্ছে যেন আগুনে পোড়া। এ প্রসঙ্গে একটা গল্প আছে। সীতা আগুনে প্রবেশ করার পর তাঁর সতীত্বের কারণে আগুন নিভে যায়। কিন্তু, আগুনে পোড়া গাছের কাঠ সীতার স্পর্শে সোনা হয়ে যায়। সেইসব সোনাদানা এখনও নাকি গাছের তলায় আছে। তাই এই স্থান উঁচু পাঁচিল দিয়ে ঘেরা। পাশেই একটা অশোক গাছের দেখা পেলাম।

জয়শেখরকে ধন্যবাদ জানিয়ে এগিয়ে চললাম এল্লার পথে। পথের দুধারে ঘন সবুজের বিস্তার। মাঝে মাঝে চা বাগান। বিকেল প্রায় পাঁচটা নাগাদ এল্লা পৌঁছলাম। পর্যটকদের ভিড় প্রায় নেই বললেই চলে। খাদের ধার ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে কিছু রেস্তোরাঁ, ক্যাফেটেরিয়া, পানশালা। সুবিশাল এক ঝরনার সামনে এসে গাড়ি থামল। শ্রীলঙ্কার নামজাদা ঝরনাগুলোর মধ্যে এটি একটি, নাম রাবণ ফল্স। প্রায় ৮২ ফুট উঁচু থেকে পাহাড়ের ঢাল বেয়ে ধাপে ধাপে নেমে এসে শেষমেশ লাফিয়ে পড়েছে। ওপরের দিকটা ঘন অরণ্যে আবৃত। রামায়ণ কথা অনুযায়ী, এই ঝরনায় নাকি রাবণ প্রতিদিন স্নান করতেন। যদিও এখন পর্যটক আর স্থানীয় মানুষ জলকেলিতে মত্ত।
দিনের আলো ফুরানোর আগে রাতের আস্তানাটা খুঁজে বের করতে হবে। ফিরতি পথেই এগিয়ে চললাম। ঝরনার পিছনে পাহাড়ের আরও ওপরে আছে রাবণ কেভ। সীতাহরণের পর সীতার প্রথম থাকার জায়গা ছিল এই গুহা। পরে তাঁকে সীতা এলিয়ার অশোক বনে স্থানান্তরিত করা হয়। গুহায় যাওয়ার সেই পাহাড়ি পথটা সাহান দেখিয়ে দিল। পায়ে হেঁটে গুহায় পৌঁছতে প্রায় ঘণ্টাখানেক সময় লাগে। দিনান্তের আধো আলোয় বনানীর ছায়াঘেরা পথটাকে আরও রোমাঞ্চকর দেখাচ্ছিল।

গুগল ম্যাপই ভরসা। এল্লা বাজার এলাকা ছাড়িয়ে ছোট্ট টানেল। সেটা পেরিয়ে বড় রাস্তা ছেড়ে গাড়ি ডানদিকে গ্রামের কাঁচা পথ ধরেছে। এবড়ো খেবড়ো রাস্তা। ঝাঁকুনি খেতে খেতে চা বাগানের ধার ঘেঁসে চলেছি। আঁকাবাঁকা ৩ কিলোমিটার গ্রাম্য পথটা শেষ হয়ে মিশে গেল পাহাড়ের ঢালে। গাড়ি এ পর্যন্তই। কয়েক ধাপ সিঁড়ি বেয়ে খানিকটা নেমে পৌঁছে গেলাম এল্লা হোম-স্টের দোরগোড়ায়।
চওড়া উঠোনের মাঝে ছবির মতো সুন্দর গ্রাম্য বাড়ি। ঠিক পিছনেই চা বাগান। সামনের দিকে বেশ গভীর খাদ। তার ওপারেই ঢেউ খেলানো নামুনুকুলা পাহাড়শ্রেণী আর গভীর জঙ্গল। সবুজ যেন চারদিক থেকে জড়িয়ে ধরেছে বাড়িটাকে। গ্রামের নাম গোটুওয়েলা। ৩০০ ঘর লোকের বাস। গ্রামে ছোট একটা বৌদ্ধমন্দির, স্কুলও আছে। গৃহস্বামীর নাম সামান প্রিয়দর্শন। ব্যবহারে গ্রাম্য সরলতা। কী খাওয়াবে! কোথায় বসাবে! একেবারে অস্থির অবস্থা। ইংরেজিতে সে তেমন স্বচ্ছন্দ নয়, সেক্ষেত্রে বাক্যালাপে আসুবিধা হলে তার ছেলেই দোভাষীর ভুমিকা পালন করছে।
কলম্বো থেকে এল্লা ট্রেন চলাচল করে। সারাদিনে মোট ৬টা ট্রেনের যাওয়া-আসা। খাদের ওপারে জঙ্গল থেকে ঠিকরে বেরোচ্ছে আলো, একই সঙ্গে হুইসেলের শব্দ। পাহাড়ের বুক চিরে দিনের শেষ ট্রেনটা চলে গেল। সন্ধ্যা নেমেছে। ১০৪১ মিটার উচ্চতায় আবহাওয়া বেশ আরামদায়ক। দুদিন পরেই পূর্ণিমা। তাই হয়তো আলোর বন্যায় নিকষ কালো অন্ধকার কিছুটা হলেও ঘুচেছে। কথায় কথায় প্রিয়দর্শনের কাছ থেকে জানতে পারলাম, রাবণ কেভের গুহায় পর্যটকদের এখন আর ঢুকতে দেওয়া হয় না। তার পরামর্শ অনুযায়ী গুহা দেখার পরিকল্পনা বাতিল। পরিবর্তে ঠিক হল এক কিলোমিটার দূরে নাইন আর্চ ব্রিজ দেখতে যাবো।

রাতের ডিনারে একেবারে ঘরোয়া স্বাদ। প্রিয়দর্শনের বৃদ্ধা কাকিমা খাঁটি সিংহলি পদ রেঁধেছেন। ব্রাউন রাইস, ডাল, নারকেল দিয়ে রসুন শাকের তরকারি আর চিকেন কারি… চমৎকার রান্না।
খুব সকালে ময়ূরের ডাকে ঘুম ভাঙল। উঠোনে দাঁড়িয়ে অনেক দূরে জঙ্গল ভেদ করে দিনের প্রথম ট্রেনের চলে যাওয়া দেখতে পেলাম। পরবর্তী ট্রেন যাওয়ার সময় সকাল নটা কুড়ি। তার আগেই যদি নাইন আর্চ ব্রিজের কাছে পৌঁছতে পারি, তাহলে ব্রিজের ওপর দিয়ে ট্রেন চলার দৃশ্যটা দেখতে পাব। পর্যটকদের কাছে খুবই জনপ্রিয় সে দৃশ্য।
টোস্ট, ডিমসেদ্ধ, স্ট্রিং হুপারস্ প্যান কেক (স্ট্রিং হুপারস্-এর মধ্যে নারকেলের পুর দিয়ে পাটিসাপটা ধরনের), আনারস, তরমুজ ও কলা দিয়ে প্রাতরাশ সেরে তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে নিলাম। প্রিয়দর্শনের ছোট ছেলেটা সঙ্গ নিল, পথ দেখিয়ে নিয়ে যাবে। চড়াই পথ ধরে রেললাইনের কাছে এলাম। পাহাড়-জঙ্গল ঘেরা রেললাইন ধরে হাঁটতে হাঁটতে নামুনুকুলা পাহাড়ের কোলে নাইন আর্চ ব্রিজের কাছে পৌঁছলাম।
পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে। একধারে অস্থায়ী ছাউনিগুলোতে চা-কফি, স্ন্যাক্স, কিং কোকোনাট বিক্রি হচ্ছে। ট্রেন লেট করছে। অপেক্ষমান পর্যটকেরা অধৈর্য্য হয়ে পড়েছে। প্রায় আধঘণ্টা পর জঙ্গল থেকে ভেসে এল ট্রেনের হুইসেল। সঙ্গে সঙ্গে সবাই ক্যামেরার শাটারে হাত রেখে প্রস্তুত। নটা আর্চের ওপর দিয়ে ট্রেনের দ্রুত চলে যাওয়া, ভিতরে বসে থাকা যাত্রীদের হাত নাড়া, পর্যটকদের হৈ হৈ রব, সব মিলিয়ে একটা আনন্দমুখর পরিবেশ।
লজে ফিরলাম। ব্যাগপত্তর গুছিয়ে এল্লাকে বিদায় জানাতে প্রস্তুত, একইসঙ্গে শ্রীলঙ্কার পাহাড়ি পথকেও। রাবণ ফল্সকে পিছনে ফেলে এগিয়ে চললাম সৈকত অভিমুখে, শ্রীলঙ্কার দক্ষিণতম বিন্দু মিরিশ্যার উদ্দেশে।

পিচপালিশ রাজপথের দুপাশে অরণ্যের ঠাসবুনট। শ্রীলঙ্কার বিখ্যাত ইয়ালা ন্যাশনাল পার্ককে বাইপাস করে তিস্সা লেকের ধারে এসে থামলাম। ভরদুপুর, লেকের জলে বহু মানুষের দাপাদাপি। অনেকক্ষণ রাস্তায় কোনও খাবার জায়গা চোখে পড়েনি। খিদে পেয়েছে খুব। সঙ্গে কিছু শুকনো খাবার ছিল। এছাড়া সকালে ব্রেকফাস্টে খেতে না পারা খাবারগুলো প্রিয়দর্শন ছাদা বেঁধে দিয়েছিল। নীলরঙা তিস্সা লেকের ধারে গাছের ছায়ায় বসে এখন সেগুলিরই সদ্ব্যবহার করার আদর্শ সময়।
এরপর একে একে পেরিয়ে গেলাম বুন্দালা ন্যাশনাল পার্ক, হ্যামবেনটোটা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট। নোনাগামা পৌঁছে বাঁদিকের রাস্তা ধরলাম। দুপাশে ধানখেত, কলাবাগান। খানিক গিয়ে ডান দিকে কাঁচা পথ। আমাদের এখনকার গন্তব্য উস্সানগোডা সম্পর্কে স্থানীয় লোকজন বিশেষ ওয়াকিবহাল নয়। পথ বাতলে দিতে পারছে না কেউ। এই জায়গাটা খুঁজে পেতে বেশ সমস্যাই হয়েছে। বেশ কিছুটা ঘুরপাক খেয়ে অবশেষে উস্সানগোডা বৌদ্ধমন্দিরের কাছে এসে থামলাম।
মিঃ জয়শেখরের কাছ থেকেই জেনেছিলাম এ জায়গার কথা। এত খুঁজে খুঁজে এ জায়গায় আসার একটা বিশেষ কারণ হল, জায়গাটার সঙ্গে জড়িয়ে আছে রামায়ণের আরেকটি কল্পকাহিনি। লঙ্কাপুরীতে প্রবেশ করে সীতার সঙ্গে দেখা করার পর হনুমান রাবণ সেনার হাতে বন্দি হয়। তখন হনুমানের লেজে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। লেজের সেই আগুন দিয়ে হনুমান দশাননের সাধের লঙ্কাপুরী ছারখার করে দিয়েছিল। শুধুমাত্র লঙ্কাপুরী নয়, গোটা স্বর্ণলঙ্কার বিভিন্ন জায়গাকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় হনুমান। এটা সেরকমই একটি জায়গা।
বৌদ্ধমন্দির ছাড়িয়ে কিছুটা এগোতেই সুবিশাল মাঠ। আগ্নেয়শিলা অঞ্চল।এই জায়গাটাকে বলা হয় উস্সানগোডা রক। মাঠের অনেকটা জায়গা জুড়ে গাছপালাহীন ন্যাড়া প্রান্তর, কালচে লালরঙের বিস্তার। রামায়ণের কাহিনি অনুসারে, এখানে রাবণের বিমানঘাঁটি ছিল। এই কালচে লাল রং হল সেই পোড়া দাগ। এই বিস্তীর্ণ লাল শিলাপ্রান্তরকে চারপাশ দিয়ে ঘিরে রেখেছে সবুজ গাছপালার ঠাসবুনট। সেই বনানীর আড়াল থেকে ভেসে আসছে ঢেউয়ের আস্ফালনের শব্দ।

ফিরে এলাম নোনাগামা জংশনে। ক্রমেই দক্ষিণ উপকূলের দিকে এগিয়ে চলেছি। পুরনো এক লাইটহাউস, তারপরেই দেখা দিল টাঙ্গাল্লা বিচ। টাঙ্গাল্লার খ্যাতি মূলত এর বিশাল মৎস্যবন্দরের জন্য। ব্রিটিশ শাসনের পূর্বে এখানে ডাচদের আধিপত্য ছিল। পুরনো ডাচ-ফোর্টের ধ্বংসাবশেষ অতীতের সেই সাক্ষ্য বহন করছে। মনোমুগ্ধকর অর্ধচন্দ্রাকৃতি সৈকত। নানা রংয়ের পতাকা দিয়ে সাজানো। বাঁকা নারকেল গাছের সারি যেন সমুদ্রের বুকে হেলে পড়েছে। একটু দূরে সাগরের বুকে জেগে আছে ছোট্ট পাথুরে দ্বীপ। সেখানে পৌঁছে যাওয়ার জন্য প্রকৃতি তৈরি করেছে পাথরের পথ। দুপাশ থেকে জল এসে সে পথ ডুবিয়ে দিচ্ছে মাঝে মাঝে। আবার জল সরে গেলে পর্যটকরা সেই পাথুরে পথ ধরে পৌঁছে যাচ্ছে দ্বীপে। সমুদ্রের জল দ্বীপের গায়ে আছড়ে পড়ে উপর দিকে অনেক দূর পর্যন্ত উঠে যাচ্ছে আর সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষগুলোকে ভিজিয়ে দিচ্ছে। নারকেল গাছের তলায় কয়েকটা ডেকচেয়ার। সেখানে বসেই দিনান্তে সমুদ্রের রং বদলের খেলা দেখতে লাগলাম।
গোধূলি বেলায় যাত্রা শুরু হল। এখনও কিছুটা পথ বাকি। দেবীনুয়ারাতে এক বিশাল বুদ্ধমূর্তি পেরিয়ে দু কিলোমিটার এগোতেই মাতারা সৈকত। তারপরেই বাকি যাত্রাপথের সঙ্গী ছিল সমুদ্রের শোভা। শ্রীলঙ্কার দক্ষিণতম প্রান্তে মাতারা জেলার বন্দরশহর মিরিশ্যায় যখন পৌঁছলাম তখন ঘড়ির কাঁটা ৬টা পেরিয়েছে। আজ এখানেই রাত্রিবাস।
*ছবি সৌজন্য: লেখক
দীর্ঘদিন ধরে ভ্রমণ সংক্রান্ত লেখালিখির সঙ্গে যুক্ত। ভ্রমণ, আনন্দবাজার ই-পেপার, ভ্রমী পত্রিকার নিয়মিত লেখক। এছাড়া যারা-যাযাবর, তথ্যকেন্দ্র, লেটস্-গো, আজকাল, প্রতিদিন, গণশক্তি প্রভৃতি পত্র-পত্রিকায় ভ্রমণকাহিনি প্রকাশিত। ট্র্যাভেল রাইটার্স ফোরাম ইন্ডিয়ার সদস্য। প্রধান শখ ও নেশা বেড়ানো আর ট্র্যাভেল ফটোগ্রাফি।