Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

নভেলা: অবন্তীনগরের বাস: পর্ব ৬

তৃষ্ণা বসাক

আগস্ট ১৬, ২০২২

The Bus to Abantinagar
Bookmark (0)
Please login to bookmark Close

আগের পর্ব পড়তে: [] [] [] [] []

বর্ষা এল। যে বর্ষার জন্যে এতদিন অপেক্ষায় ছিল মিথিলেশ। যে বর্ষা টিচার্স রুমের গজল্লার কেন্দ্রবিন্দু ছিল এতদিন। সেদিন প্রবল গরমে হাঁসফাঁস করতে করতে ক্লাস সিক্সে বাংলা পড়াচ্ছিল মিথিলেশ। কবি মানকুমারী বসুর ‘বর্ষা রানি’ পড়াতে শুরু করেছে আজ। ‘রাতদিন ঝমঝম রাতদিন টুপটুপ’ বলতে বলতে সে মাঝে মাঝেই জানলা দিয়ে চোখ ঝলসানো রোদের দিকে হতাশভাবে দেখছিল। কবিতা যত এগোতে লাগল, তার হতাশাও তত বাড়ছিল।
‘শিখী নাচে ভেক গায় মেঘে গুরু গরজন…’
হায় কোথায় সে সব?
‘শরত বসন্ত শীত জানে শুধু হাসাহাসি’
তাই কি? এইসব ঋতুর মধ্যে কি সত্যিই কোনওও গভীরতা নেই? মিথিলেশ পড়াতে পড়াতে অন্যমনস্ক হয়ে গেল। বসন্ত! বসন্ত! তাহলে বসন্তে মানুষ প্রেমে পড়ে কী করে?

‘বরিষ তোমারি বুকে অনন্ত প্রেমের রাশি।’
পড়াতে পড়াতে শেষ পঙক্তিতে চলে এল মিথিলেশ।
‘সাধে কি বেসেছি ভালো সাধে কি আপনা ভুলে?’
‘ভুলে’ শব্দটির গায়ে সহসা ভিজে হাওয়া এসে লাগলমিথিলেশ চমকে দেখল, স্কুলের সামনের মাঠে একটা শিরীষ গাছের মাথায় কার অভিমানী চোখের মতো একখণ্ড স্লেটকালো মেঘ এসে দাঁড়িয়েছে। এ চোখ তো পৃথিবীতে একজনেরই হতে পারে। তার বাড়ির মাথায়ও কি এই মুহূর্তে এইরকম ঘন মেঘ এসে দাঁড়িয়েছে? ছেলেকে স্কুলে দিয়ে ফিরতে ফিরতে কিংবা কাজের ফাঁকে জানলায় দাঁড়িয়ে সেও কি এই মেঘ দেখছে না? ওগো মেঘ, তুমি কি কলকাতা হয়ে এলে? কেমন দেখে এলে তাকে? মিথিলেশ প্রায় নিরুচ্চারে বলল:
‘দিয়েছি হৃদয়খানি তোমারই চরণমূলে।’ সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টি নামল। এই ক্লাসে কত কবিতার ব্যাখ্যা, শব্দার্থ, মূলভাব পড়িয়েও কারও চোখে যে আলো জ্বলতে দেখেনি, বৃষ্টির কয়েক ফোঁটায় সেই আলো জ্বলে উঠল। সারা ঘরে ছড়িয়ে গেল ‘বৃষ্টি বৃষ্টি বৃষ্টি!’ উল্লসিত ফিসফাস। মিথিলেশ বই বন্ধ করে জানলায় গিয়ে দাঁড়াল। বৃষ্টির ছাঁটে ভিজে যেতে যেতে সে ভাবছিল বৃষ্টির মধ্যে মাঠে গিয়ে ভেজা যায়, কিন্তু ফোন করা যায় না। ভিজে তো যাচ্ছিলই বুক পকেটে রাখা মোবাইল, বৃষ্টির ছাঁটে। সে জানলা থেকে সরে এল। গম্ভীর মুখে বলল  ‘শব্দার্থ লেখো, শিখী মানে ময়ূর। ময়ূর দেখেছ তোমরা? কে দেখেছ হাত তোলো।’

একটা হাতও উঠল না। ‘ময়ূর দেখনি! চিড়িয়াখানায় যাওনি কেউ?’ কেউ যায়নি। একটা ছেলে উঠে দাঁড়িয়ে বলল তাদের বাড়িতে একটা ক্যালেন্ডারে ময়ূর আছে। কৃষ্ণ আর রাধা ময়ূর নিয়ে খেলছে। ওদের পেছনে আরও অনেক পাখি আছে। কিন্তু সেই পাখিগুলো যে কী সে জানে না। এটা বিন্দু খাটুয়ার খাটুয়া অয়েল মিলের ক্যালেন্ডার। আস্তে আস্তে আরও দু’একজন উঠে দাঁড়াল। তারা বলল টিভিতে ময়ূর দেখেছে। মিথিলেশের মনে হচ্ছিল একটা ময়ূরের পালকও অন্তত যদি ওদের এনে দেখাতে পারত। সে ভারী মনে আবার পড়ায় ঢুকল ‘ভেক মানে লেখো ব্যাঙ।’

Peocock
একটা ছেলে বলল তাদের বাড়িতে ক্যালেন্ডারে ময়ূর আছে

বৃষ্টি প্রথম যেদিন নামে, সেদিন যে খুশির হিল্লোল ছড়িয়ে যায়, পরে তা স্বাভাবিকভাবেই থাকে না। তারপর বৃষ্টি যখন প্রবলভাবে নামল, শোচনীয় অবস্থা করে ছাড়ল মিথিলেশের। খেয়াঘাটে প্রচণ্ড কাদা, স্কুলে আসতে গেলে ওই কাদা পাড়িয়েই আসতে হবে। স্কুলের কলে পা ধুতে গেলে লাইনে দাঁড়াতে হয়। একটাই কল, ছেলেরাও কাদা পাড়িয়ে এসেছে। কয়েকদিন এরকম চলার পর কলটা লাগাতার পাম্প করার চোটে গেল খারাপ হয়ে। সেক্রেটারি মেয়ের বিয়ে নিয়ে ব্যস্ত, হেডমাস্টারমশাই তাঁকে ছাড়া এক বাক্স পিনও কাউকে দিতে চান না, তো কল সারানো। কাদা শুকিয়ে যাওয়া পায়ে ফেরার পথে আবার নতুন কাদার প্রলেপ মেখে বাড়ি ফিরতে ফিরতে কবি মানকুমারী বসুর ওপর ভয়ানক চটে যাচ্ছিল মিথিলেশ। মহিলা আবার শেষে লিখেছেন ‘সাধে কি বেসেছি ভাল, সাধে কি সকলই ভুলে/ দিয়েছি হৃদয়খানি তোমার চরণমূলে।’ বর্ষাকে কিছুতেই হৃদয় দেওয়া যায় না। অন্তত গ্রামের ইস্কুলের মাস্টাররা তা দিতে অপারগ।

মনের এইরকম অবস্থায় মিথিলেশ খেয়ালই করেনি প্রথম বৃষ্টির ফোঁটা পড়া থেকে এই ঘোর বর্ষা নামা পর্যন্ত ঝিল্লি তাকে একটাও ফোন করেনি। সে দু’একবার চেষ্টা করে পায়নি ওকে, ঘড়ঘড়ে গলায় এক পুরুষ প্রতিবারই বলেছে ‘আপকো কিতনে নাম্বার চাহিয়ে? নাম্বার মিলাইয়ে তো।’ ঝিল্লির কি সিম বদলে গেছে? এরকম একটা ভয় নিয়ে একদিন মাঝরাতে ঘুম থেকে উঠল মিথিলেশ। আর একবার ফোন করবে ওই নম্বরে? মেসেজ করতে পারলে ভালো হত। কিন্তু সে তো এখনও মেসেজ পাঠাতে শেখেনি। ঠিক করল, পরের দিন স্কুলে গিয়ে ভূগোলের পুলক জানার কাছ থেকে এসএমএস পাঠানো শিখবে। অবশ্য যদি সিম পালটে গিয়ে থাকে, তবে সেটা গিয়ে পড়বে সেই ঘড়ঘড়ে গলার খিটকেল লোকটার হাতে।

তাহলে? ঝমঝম বৃষ্টির শব্দ শুনতে শুনতে মিথিলেশ আবার ঘুমিয়ে পড়ে। পরের দিন বউয়ের হাতের খিচুড়ি আর ডিমভাজা খেয়ে, আবার ওই খিচুড়িই খানিকটা টিফিনবাক্সে ভরে বাসস্ট্যান্ডে যখন সে গিয়ে দাঁড়ায়, তখন তার মনে ঝিল্লির নম্বর বদলের সমস্যা এবং গত রাতের শুভ সঙ্কল্পের কথা কিছুই থাকে না। খিচুড়ির স্বাদ তার হৃদয়ে খেলা করে রাজহংসের মতো। এই স্বাদে ডুবে থেকে সে খেয়ালই করে না, বাস আসতে দেরি করছে। সকালে বৃষ্টিটা একটু ধরেছিল। আবার হুড়মুড়িয়ে নামতেই মিথিলেশ তাড়াতাড়ি শেডের নিচে গিয়ে দাঁড়ায়। সম্প্রতি কানাইলাল মিদ্দা তাঁর বাপ-মায়ের স্মৃতিতে এই শেডটা করে দিয়েছেন। মূর্তি করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু পঞ্চায়েত অনুমতি দেয়নি। বলেছে, রাতবিরেতে অন্ধকারে মূর্তিতে ধাক্কা খেয়ে বিপদ হতে পারে। পঞ্চায়েত প্রধান যে মাতালদের বিপদের দিকেই ইঙ্গিত করেছেন, তা স্পষ্ট। কারণ দুটো ফিটফিটে সাদা মূর্তি অন্ধকারেও দিব্যি বোঝা যায়। একমাত্র মাতালরাই তাতে ধাক্কা খেতে পারে। কানাইলাল মিদ্দা এতে খানিকটা অপমানিত হলেও পঞ্চায়েত প্রধানের কথা মেনে শেড করে দিয়েছে, এতে লোকের উপকার হবে। শেডের মাথায় জ্বলজ্বল করছে: শ্রীযুক্ত অধীরলাল মিদ্যা এবং শ্রীমতী অনিমা মিদ্যার পুণ্য স্মৃতিতে এই যাত্রী প্রতীক্ষালয়টি নির্মাণ করিলেন তাঁদের সুযোগ্য পুত্র কানাইলাল মিদ্যা। শেডের নিচে একটা সিমেন্টের বেঞ্চিও আছে। বেশিরভাগ সময় একটা পাগল সেখানে শুয়ে থাকে বলে কেউই সেখানে খুব একটা বসে না। আজ মিথিলেশ দেখল পাগলটা বেঞ্চের এক কোণে গুটিসুটি মেরে বসে ফ্যালফ্যালে চোখে বৃষ্টি দেখছে। মিথিলেশ ওর দূরতম প্রান্তে গিয়ে বসে পড়ল। বসার পরেই তার খেয়াল হল সে প্রায় ২৫ মিনিট স্ট্যান্ডে এসেছে। বাস তো আসেইনি, এমনকী যে কয়েকটি নিত্যযাত্রী তার সঙ্গে এই সময়ে যায়, সেই পরিচিত মুখগুলো একটাও নেই। বাস কি তার আসার আগেই বেরিয়ে গেল? সে কি আজ আসতে দেরি করেছে? 

Monsoon
প্যান্ট তুলে ছাতা খুলে বৃষ্টির মধ্যে বেরিয়ে পড়ল ছপাত ছপাত করে

মোবাইল কেনার পর থেকে মিথিলেশ ঘড়ি ব্যবহার করে না। ঘড়িটা এমনিতে বহুদিন খারাপ হয়ে পড়ে আছে, সারাতে দেওয়া হয়নি। প্রথমেই মিথিলেশ ভাবল তার মোবাইলের টাইমার নিশ্চয় গন্ডগোল করছে। প্রচণ্ড বৃষ্টিতে চারপাশ মুছে গেছে। এই পাগলটা ছাড়া দ্বিতীয় কোনও ব্যক্তি নেই যাকে ডেকে সে জিজ্ঞেস করবে ‘কটা বাজে?’ পায়ের কাছে ছড়িয়ে থাকা অজস্র ছাগলের নাদির দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে সে ভাবল বউকে ফোন করে জিজ্ঞেস করে কটা বাজে। ফোন বেজে গেল, বেজে গেলআজ ছেলেকে নিয়ে ইস্কুলে যাবার প্রশ্নই নেই। হয়তো গরম গরম খিচুড়ি খেয়ে মা ছেলে আরামে ঘুমোচ্ছে। কলটা নো আনসার হয়ে ওর কাছে ফিরে এল। এবার সত্যি সত্যি মিথিলেশের নিজেকে বিপন্ন মনে হল। ও যেন একটা জনমানবশূন্য দ্বীপে আটকা পড়েছে। একটা জাহাজের ভগ্নাংশ দেখলেই ও গায়ের জামা খুলে প্রাণপণ নাড়াবে। কিচ কিচ কিচ। পাখির ডাকে চমকে উঠল মিথিলেশ। পাখি কি তবে অলিভের ডাল মুখে নিয়ে উড়ে আসছে? সামনেই সবুজ তীর? একটা মেসেজ ঢুকছে। অচেনা একটা নম্বর। খুলতে যাবার আগেই ওর ফোনে বেজে উঠল ‘হও ধরমেতে ধীর হও করমেতে বীর হও উন্নত শির নাহি ভয়’। বৌ ফোন করছে। ঘুম জড়ানো গলায় সীমা বলল
– ফোন করেছিলে কেন?
– এখন কটা বাজে বল তো?
– আটটা চুয়াল্লিশ! মাথা খারাপ হল নাকি তোমার?
বিস্ময়ে ঘুম কেটে যায় সীমার।
– আরে বল না আমি কটায় বেরিয়েছি?
এটা স্পষ্ট মনে আছে সীমার। যেহেতু মিথিলেশ বেরনোর সময়েই জল ফুরিয়ে গেছে দেখে সে পাম্প চালিয়েছিল, তাই সময়টা দেখতে হয়েছিল। ঘড়ি ধরে ঠিক কুড়ি মিনিট পাম্প চালানো হয়। সীমা তাই বলতে পারল
– আটটা বাজতে পাঁচ, কিন্তু তুমি এখন কোথায়? এখনও বাস পাওনি?
মিথিলেশ মোবাইলে সময় দেখে। নাহ, ঠিকই তো আছে, তাহলে…
– না বাস আসেনি এখনও, আমি ভাবছিলাম বেরিয়ে গেল না কি…
– ওহ বাস!

মনের এইরকম অবস্থায় মিথিলেশ খেয়ালই করেনি প্রথম বৃষ্টির ফোঁটা পড়া থেকে এই ঘোর বর্ষা নামা পর্যন্ত ঝিল্লি তাকে একটাও ফোন করেনি। সে দু’একবার চেষ্টা করে পায়নি ওকে, ঘড়ঘড়ে গলায় এক পুরুষ প্রতিবারই বলেছে ‘আপকো কিতনে নাম্বার চাহিয়ে? নাম্বার মিলাইয়ে তো।’ ঝিল্লির কি সিম বদলে গেছে?

কী যেন ভাবে সীমা, তারপর বলে,
– দাঁড়াও দাঁড়াও, বাসরুট তো বন্ধ থাকবে কিছুদিন। কাল রাতে ঝরনার বর ফোন করেছিল, তুমি তখন ছিলে না।
– মানে! সেটা তুমি আমাকে বলবে না!
– আমি তো জানি তুমি জানো। তোমার রুট অবন্তীনগর, সেই রুটের বাস বন্ধ থাকবে, তুমি জানো না?
সীমার গলা চড়ছে। চল্লিশ পার করে চাকরি পেয়েছে যে স্বামী, যার জন্যে এত বছর ধরে শাড়ির ফল লাগানো থেকে শুরু করে নেটওয়ার্কিং ব্যবসা– নানান উঞ্ছবৃত্তি করে যেতে হয়েছে বউকে, সে এবার বলে বসতে পারে
– কেমন অপদার্থ লোক তুমি, নিজের রুটের খবরটাও ঠিকমতো রাখ না?

খিচুড়ির স্বাদ ফিকে হয়ে যায়। মিথিলেশ ফোন কেটে দেয়। বৃষ্টি কি ধরেছে একটু? এখন ট্রেকার বা অটো পেলেও তার লেট হবে। কিন্তু যেতে তাকে হবেই। সীমার রুক্ষ গলা তাকে একটা পুরনো গল্প মনে পড়ায়। দস্যু রত্নাকরের গল্প। সে তো জনে জনে জিজ্ঞেস করেছিল তার পাপের ভাগ কেউ নিতে রাজি কিনা। কেউ রাজি হয়নি। না স্ত্রী পুত্র, না বাবা মা। মিথিলেশ তো অত চায়নি। সে ভেবেছিল যে সংসারের মুখ চেয়ে এত জলকাদা ভেঙে সে স্কুলে যাচ্ছে, সেই সংসার তার উপার্জনের যাত্রাপথের একমাত্র বাসটির খবর জানলে, তাকে দেবে। বাস বন্ধ থাকবে, অনির্দিষ্টকাল হয়তো, এত বড় খবরটা পেয়েও সীমা জানাতে ভুলে গেল। আর তার চেয়েও বড় ধাক্কা, এর জন্যে তার কোনও অনুতাপ নেই! সীমার এই ক্যালাসনেস (অসাড়তা দিয়ে ব্যাপারটা বোঝানো যায় না ঠিক) মিথিলেশকে স্তব্ধ করে দিতে পারত অন্য সময়। কিন্তু আজ তাকে স্কুলে যেতেই হবে। এই একটা বছর খুব সাবধানে থাকতে হবে তাকে। 

সে মুহূর্তের মধ্যে গা ঝেড়ে উঠে পড়ল। প্যান্ট তুলে ছাতা খুলে বৃষ্টির মধ্যে বেরিয়ে পড়ল ছপাত ছপাত করে। বৃষ্টির জোর একটু কমে এসেছে। দৃশ্যপট থেকে যা যা মুছে গিয়েছিল, কাগজের জলছাপের মতো একটু একটু  করে ফুটে উঠছে মেঘের ফাঁক দিয়ে চুঁইয়ে আসা আলোয়। পুনরুদ্ধার হওয়া দৃশ্যপটে সে দেখল একটা অটো তিন যাত্রী নিয়ে আরও জনা তিন যাত্রীর অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছে। অটো অবশ্য গদখালি পর্যন্ত যাবে না। জমিরপুরে নেমে তাকে আবার অটো ধরতে হবে। তবু যতখানি এগিয়ে থাকা যায়। মিথিলেশ অটোওলার বাঁ পাশে বসে ছাতা বন্ধ করল। ছাতা থেকে কয়েক ফোঁটা জল ঝরে পড়ল অমনি। আকাশ থেকেও ওইরকমই বৃষ্টি পড়ছে। মিথিলেশ একটা বড় করে শ্বাস ফেলল। তারপর তার মনে হল খুচরোটা গুছিয়ে রাখে। খুচরোর সঙ্গে মোবাইলও উঠে এল হাতে। স্ক্রিনে মেসেজ আসার চিহ্ন। ভুলেই গিয়েছিল একটা অচেনা নাম্বার থেকে মেসেজ এসেছে। অটোওলা আরও দুজন প্যাসেঞ্জারের জন্যে আরও কতক্ষণ বসে থাকবে কে জানে। এই ফাঁকে সে মেসেজটা পড়ে ফেলে। 
‘এখন আমি নিউ গড়িয়া স্টেশনের ধারে একটা খুব উঁচু ফ্ল্যাটে থাকি। রাতে ট্রেন মিস করলে বা ট্রেন গণ্ডগোল থাকলে রাতটা আমার সঙ্গে থেকে যাস।’ 
গায়ে কাঁটা দিল মিথিলেশের। নম্বরটা অচেনা, কিন্তু তবু সে নিশ্চিত এটা ঝিল্লিই পাঠিয়েছে। কিন্তু কাকে? এই ট্রেনের রুট তো তার নয়। সে তো যায় অবন্তীনগর বাস রুটে, সে বাস আবার আজ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্যে বন্ধ। কাকে তাহলে ঝিল্লি তার সঙ্গে রাত্রিবাসের ডাক পাঠাচ্ছে? ঈর্ষায় নীল হয়ে গেল মিথিলেশ।    (চলবে)

 

*পরবর্তী পর্ব প্রকাশিত হবে ২২ অগস্ট ২০২২
*ভিতরের ছবি সৌজন্য: শৈলজ তরফদার Athenaartschool. Saatchi Art

যাদবপুর বিশববিদ্যালয় থেকে বি.ই‚ এম.টেক । সরকারি মুদ্রণসংস্থায় প্রশাসনিক পদ‚ বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিদর্শী অধ্যাপনা তাঁর লেখনীকে বিশেষ স্বাতন্ত্র্য দিয়েছে।গল্প‚ উপন্যাস, কবিতার পাশাপাশি ছোটদের জন্য কল্পবিজ্ঞান লিখে থাকেন নিয়মিত। প্রকাশিত হয়েছে বহু বই। নামজাদা পত্রপত্রিকায় নিয়মিত লেখেন উত্তর-সম্পাদকীয়। সাম্প্রতিকতম কাব্যগ্রন্থ: 'লাইব্রেরি শার্ট খোলো'।

Picture of তৃষ্ণা বসাক

তৃষ্ণা বসাক

যাদবপুর বিশববিদ্যালয় থেকে বি.ই‚ এম.টেক । সরকারি মুদ্রণসংস্থায় প্রশাসনিক পদ‚ বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিদর্শী অধ্যাপনা তাঁর লেখনীকে বিশেষ স্বাতন্ত্র্য দিয়েছে।গল্প‚ উপন্যাস, কবিতার পাশাপাশি ছোটদের জন্য কল্পবিজ্ঞান লিখে থাকেন নিয়মিত। প্রকাশিত হয়েছে বহু বই। নামজাদা পত্রপত্রিকায় নিয়মিত লেখেন উত্তর-সম্পাদকীয়। সাম্প্রতিকতম কাব্যগ্রন্থ: 'লাইব্রেরি শার্ট খোলো'।
Picture of তৃষ্ণা বসাক

তৃষ্ণা বসাক

যাদবপুর বিশববিদ্যালয় থেকে বি.ই‚ এম.টেক । সরকারি মুদ্রণসংস্থায় প্রশাসনিক পদ‚ বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিদর্শী অধ্যাপনা তাঁর লেখনীকে বিশেষ স্বাতন্ত্র্য দিয়েছে।গল্প‚ উপন্যাস, কবিতার পাশাপাশি ছোটদের জন্য কল্পবিজ্ঞান লিখে থাকেন নিয়মিত। প্রকাশিত হয়েছে বহু বই। নামজাদা পত্রপত্রিকায় নিয়মিত লেখেন উত্তর-সম্পাদকীয়। সাম্প্রতিকতম কাব্যগ্রন্থ: 'লাইব্রেরি শার্ট খোলো'।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Subscribe To Newsletter

কথাসাহিত্য

সংস্কৃতি

আহার

বিহার

কলমকারী

ফোটো স্টোরি

উপন্যাস

Banglalive.com/TheSpace.ink Guidelines

Established: 1999

Website URL: https://banglalive.com and https://thespace.ink

Social media handles

Facebook: https://www.facebook.com/banglaliveofficial

Instagram: https://www.instagram.com/banglalivedotcom

Twitter: @banglalive

Needs: Banglalive.com/thespace.ink are looking for fiction and poetry. They are also seeking travelogues, videos, and audios for their various sections. The magazine also publishes and encourages artworks, photography. We however do not accept unsolicited nonfiction. For Non-fictions contact directly at editor@banglalive.com / editor@thespace.ink

Time: It may take 2-3 months for the decision and subsequent publication. You will be notified. so please do not forget to add your email address/WhatsApp number.

Tips: Banglalive editor/s and everyone in the fiction department writes an opinion and rates the fiction or poetry about a story being considered for publication. We may even send it out to external editors/readers for a blind read from time to time to seek opinion. A published story may not be liked by everyone. There is no one thing or any particular feature or trademark to get published in the magazine. A story must grow on its own terms.

How to Submit: Upload your fiction and poetry submissions directly on this portal or submit via email (see the guidelines below).

Guidelines:

  1. Please submit original, well-written articles on appropriate topics/interviews only. Properly typed and formatted word document (NO PDFs please) using Unicode fonts. For videos and photos, there is a limitation on size, so email directly for bigger files. Along with the article, please send author profile information (in 100-150 words maximum) and a photograph of the author. You can check in the portal for author profile references.
  2. No nudity/obscenity/profanity/personal attacks based on caste, creed or region will be accepted. Politically biased/charged articles, that can incite social unrest will NOT be accepted. Avoid biased or derogatory language. Avoid slang. All content must be created from a neutral point of view.
  3. Limit articles to about 1000-1200 words. Use single spacing after punctuation.
  4. Article title and author information: Include an appropriate and informative title for the article. Specify any particular spelling you use for your name (if any).
  5. Submitting an article gives Banglalive.com/TheSpace.ink the rights to publish and edit, if needed. The editor will review all articles and make required changes for readability and organization style, prior to publication. If significant edits are needed, the editor will send the revised article back to the author for approval. The editorial board will then review and must approve the article before publication. The date an article is published will be determined by the editor.

 

Submit Content

For art, pics, video, audio etc. Contact editor@banglalive.com