হাউজ়িং সোসাইটির পাঁচ নম্বর ব্লকের চৌধুরী ম্যাডাম অষ্টমীর পুণ্য প্রভাতে মেজাজ হারালেন। কোভিডের তাড়নায় অনলাইনে পুজো দেখানোর ব্যবস্থা করেছে ফেস্টিভাল কমিটি। মণ্ডপে একটি টেবিলের ওপর বসানো ল্যাপটপ। কাছাকাছি একটি অ্যাপার্টমেন্টের জানলার ফাঁক দিয়ে টেনে আনা ইন্টারনেট কানেকশন। হোয়াটস্যাপে বাসিন্দাদের প্রাইভেট গ্রুপ-এ লিঙ্ক চলে এসেছে আগের রাতেই। ভারচুয়াল অঞ্জলি দেওয়ার ব্যবস্থা পাকা। কিন্তু ফোনে লিঙ্ক খুললেই প্রেসিডেন্ট সাহেবের মুখ দেখা যাচ্ছে। উনি একটি ল্যাপটপের সামনে একটি চেয়ারে স্থাণু। পিছনে পুরোহিত মহাশয় এবং তাঁর জোগাড়ে। আবছা নড়াচড়া। দেবী দুর্গা, পরিবার, বাহন আউট অফ ফোকাস। শুধু অসুরটি নজরে আসছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই মন্ত্রপাঠ শুরু হবে। ম্যাডাম চিৎকার করে উঠলেন, ওরে তোরা এই প্রেসিডেন্ট-কে সরতে বল। কিন্তু উনি ফোন ধরছেন না। এদিকে কেউ মণ্ডপে গিয়ে ওঁকে সরতে বললে অনলাইন অঞ্জলি অর্থহীন হয়ে পড়ে। ম্যাডাম জনান্তিকে বললেন আর কোনও দিন এই মূর্খকে ভোট দেবেন না। তারপর জোড়হাত। চোখ বুজলেন, কারণ নমঃ বিষ্ণু।
[the_ad id=”266918″]
লকডাউনের ধাক্কায় পাড়ার রক ঝিমিয়ে পড়েছে। সাধারণত সন্ধে থেকে রাত এগারোটা পর্যন্ত হইচই হত। ক্রিকেট, রাজনীতি, ফুটবল, প্রেম, পরকীয়া। মোড়ের দোকান থেকে চা আর ঘুগনি, হাতে হাতে ঘোরা বাসি খবরের কাগজ। কোভিডের প্রথম সপ্তাহেই সব সাপ্লাই বন্ধ। আনলকডাউনে কালীদা নতুন উদ্যমে হাতা গুটিয়ে নেমেছিলেন। কিন্তু বোঝা গেল সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং-এর নিয়ম মানতে গেলে সমস্যা আছে। রক-এর যা দৈর্ঘ্য তাতে তৃতীয় ব্যক্তি বসতে গেলে পতন অনিবার্য। অগত্যা নতুন প্রজন্মের স্মরণাপন্ন হতে হল। মোবাইল ফোনে ভিডিওকল। অনলাইন লাইভ আড্ডা। পরিবারের চাপে চা-সিগারেটে একটু টান পড়ল, এই যা। একলা নেড়ি কুকুর এখন পাড়ার রকস্টার।
প্রতি সপ্তাহেই মাল্টিপ্লেক্সে সিনেমা দেখার নিয়ম রঙিন পালক, হালকা হাওয়ার প্রেমিকা-প্রেমিক সুনেত্রা ও নীলাঞ্জনের। সিনেমা শেষ হলে রেস্তোরাঁয় মোগলাই অথবা চাইনিজ়। তারপর মোটরবাইক। একজন নিজের বাড়িতে চুপিসাড়ে, অন্যজন পেয়িং গেস্ট। সিনেমা হলে দু’জনের সিটের মাঝখানে কখন নিঃশব্দে বসে পড়েছে কোভিড, ওদের জানা নেই। নীলাঞ্জনের সেলস-এর চাকরি। সারা পৃথিবী যেখানে ওয়ার্ক ফ্রম হোম, সেখানে তাদের সংস্থা-ই বা কী করবে। অথচ বাড়ি বসে সেলস হয়? টার্গেট বেড়ে চলে আর তালে তালে টেনশন, চাকরি যাওয়ার। সুনেত্রা স্কুলে পড়ায়। এখনও পার্মানেন্ট হয়নি। এর ওপর অনলাইনের ধাক্কা। সেদিন পরীক্ষা নিচ্ছিল ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে। কম্পিউটার স্ক্রিনে সারি সারি বাচ্চার শুকনো মুখ। স্কুলের নিয়ম অনুযায়ী ক্যামেরায় ধরা পড়ছে বাচ্চাপিছু এক-এক অভিভাবকের চেহারা। কেউ চেয়ারে বসে ঢুলছেন, কেউ টেবিলে সবজি কুটছেন। সুনেত্রার চোখ এমুখ থেকে সেমুখ লাফিয়ে বেড়াচ্ছে। এই অদ্ভুত পরীক্ষার নজরদারি করতে করতে তার মনে হল, সে স্বয়ং কোভিডের প্রতিভূ। মনও খারাপ। তাই রাতে নীলাঞ্জনের সঙ্গে ভিডিওকল চলাকালীন সে আবার মাল্টিপ্লেক্সে সিনেমা দেখার কথা পাড়ল। নীলাঞ্জন রাজি নয়। ইদানীং হল চালু হলেও মাঝের সিট ফাঁকা রাখার যন্ত্রণা। কী রাখবে ওখানে? পপকর্নের বাক্স? নাকি আঙুলে আঙুল পাকিয়ে শিকল বানিয়ে রাখবে, যাতে কোন অর্বাচীন বসে না পড়ে? মনখারাপ কাটানোর জন্য তাই প্রেমিকা ছাদের ঘরে, প্রেমিক দশ-বাই-দশে। ওটিটি প্ল্যাটফর্মে একসঙ্গে দেখছে নতুন সিরিজ। পাশে, খোলা উইন্ডোতে চ্যাট। হার্ট সাইন, ডিজিটাল স্পর্শ।
সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং-এর নিয়ম মানতে গেলে সমস্যা আছে। রক-এর যা দৈর্ঘ্য তাতে তৃতীয় ব্যক্তি বসতে গেলে পতন অনিবার্য। অগত্যা নতুন প্রজন্মের স্মরণাপন্ন হতে হল। মোবাইল ফোনে ভিডিওকল। অনলাইন লাইভ আড্ডা।
কোভিড এই কয়েকমাসে আমাদের ঘরকুনো করেছে একটু বেশি মাত্রায়। কিন্তু আমাদের দৈনন্দিন যাপনে ডিজিটাল মাধ্যমের থাবা পড়ার জন্য তাকে দোষ দেওয়া যায় না। নতুন এসে পুরনোকে চাপে ফেলবে এই ফরমান স্বতঃসিদ্ধ। টেলিভিশন সম্প্রসারণ চালু হওয়ার পর লোকে ভুলে গিয়েছিল রেডিও-কে। অশীতিপর বৃদ্ধ-বৃদ্ধার মতো তার ঠাঁই হয়েছিল বারান্দার কোণে, ছেঁড়া চাদরের নীচে। ধুলো ছাড়া কিছু জোটেনি কপালে বহুকাল। মাল্টিপ্লেক্সের চাপে অনেকদিন থেকেই ধুঁকছে সিঙ্গল স্ক্রিন। একটার পর একটা সিনেমা হল বন্ধ হয়ে কাপড়ের দোকান, মল বা রেস্তোরাঁ। তখন কোভিড ছিল না। ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গি, আমাশা ছিল। এবং থাকবে। মাল্টিপ্লেক্সকে চাপে ফেলার জন্য তৈরি হচ্ছিল ওটিটি। বিনোদনের নতুন আঙ্গিক। নতুনদের জন্য বিনোদন। লকডাউন কাজটা সহজ করে দিল। যে মা-বাবা তাঁদের ছেলে-মেয়েদের সকাল সন্ধ্যা বকাঝকা করতেন মোবাইল ফোন আঁকড়ে পড়ে থাকার জন্য, তাঁরা আজ অনলাইনে অর্ডার দিচ্ছেন আরও উন্নতমানের যন্ত্রের। ছেলেমেয়েদের জন্যই। অনেক সংস্থা, যারা অফিসে না এলে মাইনে কেটে নিত কর্মচারীদের, আনলকডাউনে অফিস খোলার পরেও তাদের একান্ত অনুরোধ জানাচ্ছে বাড়ি থেকে কাজ করার জন্য। যে সংস্থার বাড়ি বসে কাজ করলেও ব্যবসায় কোনও চাপ পড়ে না, তারা ভবিষ্যতে আকাশছোঁয়া কাচঘরের পিছনে আর একটি পয়সাও খরচা করবে বলে মনে হয় না। তাহলে যাদের রুজি-রুটি সিকিউরিটি-র আকাশি নীল জামা অথবা লম্বা ঝাড়ু-সুগন্ধি ফিনাইল বা ক্যান্টিনের কোণে স্যান্ডউইচ-ফ্রুট জুসের কাউন্টার, তাদের ভবিষ্যৎ? ডিজিটাল এই জীবন সংগ্রাম নিয়ে মাথা ঘামায়নি কোনও দিন। এই পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী ছিল। কোভিড তার আগমন ত্বরান্বিত করেছে মাত্র। যেভাবে রাজনৈতিক আন্দোলনের ফাঁকে ব্যক্তিগত আক্রোশ গুঁজে দেয় মানুষ, ঠিক সেইভাবে এই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম যেন সুপারি দিল কোভিডকে।
[the_ad id=”266919″]
কোভিড ও ডিজিটাল হাতে হাত মিলিয়ে আর্থসামজিক পরিকাঠামোর ভিত নাড়িয়ে দিয়েছে সারা বিশ্বে। যেমন, আমাদের দেশের অর্থনীতির অন্যতম স্তম্ভ মিডিয়া ও এন্টারটেইনমেন্ট শিল্প। সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি আর্থিক বছরে ষোলো শতাংশেরও বেশি রাজস্ব কমে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা। এর ধাক্কা সরাসরি পড়বে এক কোটিরও বেশি মানুষের রুজিতে। আরও পাঁচ কোটি কোনও না কোনও ভাবে প্রভাবিত হবেন। এর ওপর যদি নাগরিকদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতির হিসেব নেওয়া যায়, তাহলে কোভিডের ধ্বংসাত্মক ক্ষমতার প্রকৃত মূল্যায়ন হয়তো সম্ভব। এবং এই অসুখের বয়স মাত্র বছরখানেক। যতদিন না ওষুধ আসছে বাজারে, সে ওষুধ প্রয়োগ হচ্ছে আমজনতার শরীরে এবং কাজ করছে পরিকল্পনামাফিক, ততদিন আমাদের ভয়। অসুখের। মৃত্যুর। যে দেশে জনসাধারণ, আর্থসামাজিক অবস্থান নির্বিশেষে, স্ত্রী-পুত্র-কন্যা-স্বামী-মা-বাবা-ভাই-বোন এমনকী পাড়ার মাস্তানের জন্য মানত চড়ায় মন্দিরে, মসজিদে, হত্যে দিয়ে পড়ে থাকে চার্চে, সে জনগণই লকডাউনে ঈশ্বরচিন্তা করেছে ঘরের কোণে, ধূপ-ধুনো চড়িয়েছে অনলাইনে। এই কনট্রাডিকশনকে চোখের সামনে সিনেমার মতো তুলে ধরা কোভিডের কৃতিত্ববিশেষ।
কম্পিউটার স্ক্রিনে সারি সারি বাচ্চার শুকনো মুখ। স্কুলের নিয়ম অনুযায়ী ক্যামেরায় ধরা পড়ছে বাচ্চাপিছু এক-এক অভিভাবকের চেহারা। কেউ চেয়ারে বসে ঢুলছেন, কেউ টেবিলে সবজি কুটছেন। সুনেত্রার চোখ এমুখ থেকে সেমুখ লাফিয়ে বেড়াচ্ছে।
ধর্মপালন যেমন থেমে থাকে না, মানুষ উপায় এবং রাস্তা খুঁজে নেয়, তেমনি এন্টারটেইনমেন্ট। বেঁচে থাকার রসদ। রেডিও থেকে সিনেমা, সিনেমা থেকে টেলিভিশন, টিভি থেকে মাল্টিপ্লেক্স, আর এখন ইন্টারনেট, ওভার দি টপ। বিনোদনের জগতে আমাদের বিচরণ অনেকটা পরিযায়ী পাখিদের মতো। সুদূর সাইবেরিয়া থেকে উড়ে এসে দেখলাম, যে জলাশয়ে গত বিশ বছর ধরে ডেরা বাঁধছি এবং কয়েকমাস কাটিয়ে থাকি আমোদে, সেটি পলিউশনের ভারে ন্যুব্জ। অতএব বাই বাই। অন্য জলাশয়। অন্য শহর বা রাজ্য। প্রয়োজনে অন্য দেশ। ঠিক তেমনই আমরাও এক হল থেকে অন্য হল, এক চ্যানেল থেকে অন্য চ্যানেল। সাম্প্রতিককালে চোখের নিমেষে মোবাইলে আঙুল ছুঁইয়ে পাল্টে নিচ্ছি ওটিটি প্ল্যাটফর্ম। পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, যেখানে বিনোদন শিল্পে অভাবনীয় মন্দা, সেখানে ওটিটি এমনকী টিভি চ্যানেলগুলোর রমরমা। বৃদ্ধি গত বছরের চেয়ে দ্বিগুণ। কিন্তু এর মানে ইন্টারনেটই ভবিষ্যতে কর্ম, শিক্ষা, বিনোদনের একমাত্র মাধ্যম হতে চলেছে, তা ঠিক নয়। কী হবে, তা আমাদের জানা নেই। যেমন কোভিড এত মাস ধরে আমাদের সঙ্গে পাত পেড়ে খাবে বা পাশবালিশ নিয়ে টানা হ্যাঁচড়া করবে সেটাও জানা ছিল না।
তাহলে যাদের রুজি-রুটি সিকিউরিটি-র আকাশি নীল জামা অথবা লম্বা ঝাড়ু-সুগন্ধি ফিনাইল বা ক্যান্টিনের কোণে স্যান্ডউইচ-ফ্রুট জুসের কাউন্টার, তাদের ভবিষ্যৎ? ডিজিটাল এই জীবন সংগ্রাম নিয়ে মাথা ঘামায়নি কোনও দিন। এই পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী ছিল। কোভিড তার আগমন ত্বরান্বিত করেছে মাত্র।
শোনা গেল লকডাউনে দূষণ কমে যাওয়ায় কিছু জলাশয়ে পরিযায়ী পাখিরা ফিরে আসছে। অর্থাৎ পরিবেশ পাল্টালে ফল পাওয়ার সম্ভাবনা। ঠিক যেমন এফএম ফিরিয়ে এনেছে রেডিও শোনার অভ্যাস। শিক্ষাক্ষেত্রে এই একবছরেই ছাত্রছাত্রীরা বুঝেছে ক্যাম্পাসের মাহাত্ম্য, অনলাইন ক্লাসের সীমাবদ্ধতা। ল্যাপটপে ক্যান্টিনের ভাঁড়ের চা আর ডিম-পাউরুটি ডাউনলোড করা যায় না। তা ছাড়া পকেটের সামর্থ না থাকায় যাদের আঙুল এখনও স্মার্টফোন ছোঁয়নি, যাদের কাছে ল্যাপটপ এখনও কল্পবিজ্ঞান, তাদের জন্য অন্তত হাট করে খুলে দিতে হবে ক্লাসরুমের দরজা-জানলা।

জাত গেল, মান গেল এই হাহুতাশ আমাদের মজ্জাগত। যখন প্রথম ইলেকট্রিক বাল্ব জ্বলল তখন নিশ্চয় পিদিমের জন্য চোখের জল ফেলেছিল কেউ। অথচ এবছরও ভূত চতুর্দশীতে আমরা জ্বালিয়েছি চোদ্দো প্রদীপ, মোমবাতি। তাহলে? এটা সত্যি, যে কোভিড আমাদের ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়েছে। আমাদের বাধ্য করেছে যাপন নিয়ে নতুন করে ভাবতে, ঘরে বসে কাজ, শিক্ষা, বিনোদনের হরেক উপায় হাতড়ে বের করতে। কিন্তু সেই ডিস্টোপিয়ার জালে আমরা এখনও আটকে পড়িনি, যেখানে বেড়াতে যাওয়া মানে বেডরুম থেকে লিভিং রুমে হামাগুড়ি। ফুটবল খেলতে যাওয়া মানে সোফায় বসে ভিডিও গেমস আর ডিনার মানে ভিটামিন ট্যাবলেট। ভাত-ডাল-শাকসবজি খেয়ে বাঁচতে হলেও চাষ করতে হবে, যেখানে ওয়ার্ক ফ্রম হোম কাজ করে না। মানুষ যখন প্রথম মন্বন্তর হতে দেখেছিল, নিশ্চিত বেজায় ঘাবড়ে গিয়েছিল। কিন্তু তারপর তারাই শস্য ফলিয়েছে সেই একই জমিতে। পরমাণু বোমায় বন্ধ্যা মাঠ হয়ে যাওয়া শহরকে আরও বড়, আরও ঝকঝকে চেহারায় গড়ে তুলেছে। সুতরাং ভরসা আছে।
[the_ad id=”270084″]
যে যাই বলুক, লোকাল ট্রেন চালু হওয়ার পর পাগলের মতো ঝাঁপিয়ে পড়া তো রোজগারের জন্য, মৃত্যুর ভ্রূকুটি সামলে বাঁচার জন্য। মনে হয় না কেউ ‘একটু হাওয়া খেয়ে আসি’ বলে ভিড় ঠাসা লোকাল ট্রেনে চেপে বসেন। আসলে কোভিড আমাদের সামনে অনেকগুলো রাস্তাও খুলে দিয়েছে। অনেকটা ব্যুফে লাঞ্চের মতো। কিছুদিন বাদে, আমরা যখন ভ্যাকসিন নিয়ে কলার তুলে হাঁটব, পুজোর প্যান্ডেলে অঞ্জলি দেওয়ার বিধিনিষেধ থাকবে না, তখনও কিন্তু অনলাইনে পুজো দেখানো হবে। অশীতিপর, চলচ্ছক্তিহীন বৃদ্ধ-বৃদ্ধার জন্য। ফুটবল খেলতে মাঠে নামার আগে উঠতি তারকা তার পায়ের কাজ ঝালিয়ে নেবে ভিডিও গেমের কনসোলে। আগের রাতে যে সিনেমাটি দু’জনে দেখেছিল যে যার বাড়িতে বসে, ওটিটি প্ল্যাটফর্মে, সেই সিনেমাটিই মাল্টিপ্লেক্সে দেখবে বলে ইভনিং শোয়ের দুটো টিকিট কেটে অপেক্ষা করছে তাদের একজন। হলে পপকর্ন খেতে খেতে সিনেমা না দেখলে প্রেম পূর্ণতা পায় না।
অনুব্রত নামী বহুজাতিক সংস্থায় অতি উচ্চপদে আসীন ছিলেন। কিন্তু মনে মনে এখনও স্কটিশের সেই লেখা-পাগল ছাত্রটি। লেখালিখি তাঁর হাড়ে-মজ্জায়। নিয়মিত লেখেন পত্রপত্রিকায়। শখ, সারা পৃথিবী ঘুরে বেড়ানো আর ইতিহাস ঘাঁটাঘাঁটি।