কফিকাপে একা ঠোঁট ছোঁয়ানো দিন
চুপিচুপি কেঁদে রোদপোহানো দিন…
হৈমন্তী প্রবাসী দিনের মনকেমন সম্বল কিছু কথা পাঠাতে ইচ্ছে হল আজকের ডাকে। শরৎ এখানে আসে না, বর্ষাও না। বর্ষা নেই বলেই বোধহয় শরৎও নেই। গ্রীষ্মেরই কোনও কোনওদিন তুলকালাম বর্ষামুখর হয়ে ওঠে, এলোমেলো ক’রে দিয়ে যায় সব দিনগত পাপক্ষয়ের হিসেব। চারটি অসামান্য সুন্দর ঋতু এখানে– শীত, বসন্ত, গ্রীষ্ম আর হেমন্ত। না-ই বা থাকুক শরৎ, তবু গ্রীষ্ম না ফুরাতেই শিশিরের আল্পনা আঁকা শুরু হয় ঘাসের আগায়, বাতাসে হিমের পরশ লাগে, পাতা ঝরার খবর একা আমলকী বনের কানে নয়, অ্যাসপেন, পপলার, উইলো, চেরি, বাৰ্চ, ওক, মেপল, সব্বার কানে কানে ফিসফিসিয়ে বলে যায় হৈমন্তী সমীরণ। শরৎ এখানে হেমন্তরূপে সংস্থিতা।
রামধনুর শেষ তিনটি রঙ হল হলুদ-কমলা-লাল। আর ঠিক এই তিনটে রঙেই প্রকৃতি দোলখেলায় মাতে হেমন্তে, এই মুল্লুকে, পাহাড়ে-জঙ্গলে, শহরে-প্রান্তরে। এ এক রঙ্গিলা সময়, দিকে দিগন্তরে শুধু হলুদ আর কমলার রকমারি বর্ণচ্ছটা, মাঝে মাঝে কড়া লাল দিয়ে নকশা বোনা, ঠিক যেন সাবেক দুগ্গাপিতিমের মতো… আক্ষরিক অর্থেই “প্রকৃতির অন্তরাকাশে জাগরিত জ্যোতির্ময়ী জগন্মাতার আগমন বার্তা।”
আলোর অমল কমলখানি কে ফুটালে
রোদ্দুরটাও বিফল প্রেমের মতোই মায়াময় নরম হলুদাভ কমলা, পশ্চিমেতে আগুন জ্বেলে দিনের পিদিম নেভে যখন, সন্ধ্যেগুলো কেমন সিঁদুররাঙা হয়ে একাকার হয়ে যেতে থাকে ঝরা পাতাদের সঙ্গে। পায়ের তলায় সোনালি হলুদ গালচে, পাতা ঝরে, ঝরে পড়ে, শেষবারের মতো, মুঠো মুঠো রঙে ভরিয়ে দিয়ে হেমন্তের এই বিধুর বেলা। আহরণের সময় এখন, এই হেমন্ত…। আমার সবচেয়ে প্রিয় ঋতু, পূর্ণতার সংক্রান্তিতে এসে মেশা রিক্ততার মহালগ্ন। নিজের সবটুকু নিংড়ে বিলিয়ে দিয়ে শুধু শূন্যতা আঁচলে ভ’রে ফেরার পথ ধরা… বাতাসে কার চরণের ধ্বনি! দিনের আয়ুও ছোট হতে শুরু করে একটু করে— উস্তম খুস্তম দিনগুলোর গায়ে কেমন কবিতা কবিতা গন্ধ।
বোধন থেকে বিসর্জন- মাত্রই তো পাঁচটা দিনের দূরত্ব। তার মধ্যেই সেরে ফেলতে হয় যাবতীয় পূজার্চনা। তা আমার দুগ্গাপূজাও তাই, স্বল্প সময়সীমার মধ্যেই প্রতিমা দর্শন করতে না পারলে আবার একটা গোটা বচ্ছরের প্রতীক্ষায় থাকতে হবে। তাই অনেক দিন পরে একটা সোলো হাইক। দুই বন্ধুই আটকে পড়ল আগের উইকএন্ডে। কিন্তু আমাকে তো যেতেই হবে। নইলে যে প্রতিমা দর্শন হবে না আমার এবছর আর! অগত্যা একলা চলো রে, গন্তব্য লর্চ ভ্যালি।

অন্য কোনও জায়গা হলে পরের সপ্তাহ, কি তার পরের সপ্তাহেও পিছিয়ে দেওয়াই যেত। কিন্তু লর্চ ভ্যালি? নাহ, একেই দেরি হয়ে গেছে, আরও এক সপ্তাহ আগে যেতে পারলে একদম ঠিকঠাক হত। লর্চেরা বিসর্জনের কিনারায়। এই লর্চ হল দুনিয়ার একমাত্র পর্ণমোচী কনিফার। কনিফার বলতেই আমাদের মনে পড়ে পাইন, ফার, স্প্রুস, সেডার ইত্যাদি ইত্যাদি। মানে যারা চিরসবুজ। শীত, বসন্ত, গ্রীষ্ম, হেমন্ত, ঋতুনির্বিশেষে যারা সদাসর্বদা সবুজ আর সবুজ, যাদের পাতা ঝরে না হেমন্তের হিমেল বায়ে, শীতের তুষার মেখেও যারা দিব্যি পরিপাটি সবুজ হয়ে থাকতে পারে। একমাত্র ব্যতিক্রম এই লর্চ।
এখানে গাছগুলো বসন্তে নরম সবুজ নতুন পাতায় সেজে ওঠে, অন্য কনিফেরাস গাছের মতোই সূচাকৃতি সরু সরু পাতা, ইংরেজিতে যাকে বলে নিডলস। তবে লর্চের নিডলসগুলো খুব মোলায়েম, নরম। হেমন্তে সেই নিডলগুলো সব তুমুল সোনালি রঙে পাল্টে যায় ঝরে যাওয়ার আগে। মাত্র দু’ থেকে তিন সপ্তাহ হেমন্তের শুরুতে, তার মধ্যেই সবুজ থেকে হলুদ, তারপর গাঢ় সোনালি হয়ে ঝরে যায় শেষতম নিডলটাও। গরম তাদের মোট্টে সয় না, তাই পাহাড়ের অনেকটা উপরে (subalpine উচ্চতায়) ট্রিলাইনের শেষ সীমানায় তাপমান যেখানে চিরকালীন অনুষ্ণ, সেইখানে তাদের সুখের বসত। কানাডা আর সাইবেরিয়াই মূলত এদের দেশগাঁ, বাকি খবর গুগল জ্যেঠুর কাছে শুধিয়ে জেনে নিন।
সাতটি যে পৃথিবীর বিস্ময়,
তুমি তারও চেয়ে বেশি মনে হয়…
পাহাড়ের মাথায় সোনালি শরীরে হৈমন্তী রোদ্দুর মেখে দাঁড়িয়ে থাকা সারি সারি লর্চ, সত্যিই অনন্য, অনুপম। কোনও ভাষা, কোনও ছবিই যথেষ্ট নয় সেই রূপ বোঝাতে। আর কোন পুণ্যের ফলে যে আমি এই বিরল সৌভাগ্যের ভাগী জানি না। তবে কানাডার লর্চ সেন্ট্রাল আমার ভদ্রাসন থেকে মাত্রই দু’ঘণ্টার ড্রাইভ। সারা পৃথিবী থেকে দর্শনার্থীরা ছুটে আসে লর্চের এই পীঠস্থানে, এই দুর্লভ দৃশ্যের সাক্ষী থাকতে, এই অসাধারণ অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ হতে। কাছে যেতে হলে, ভালোবেসে স্পর্শ করতে হলে খাড়াই পাহাড় ভাঙতে হবে ঠিক এই সময়টুকুর মধ্যেই, না হলে দেখা হবে না।

পাহাড় সুন্দর, জঙ্গল সুন্দর, সারা বছরই সুন্দর। ভিন্ন ভিন্ন ঋতুতে তার ভিন্ন ভিন্ন সাজ। কিন্তু হেমন্তের শুরুতে এই দু’তিনটে সপ্তাহ, বিশেষ করে ঝ’রে যাওয়ার আগে যখন পুরোপুরি রং পাল্টে আগুনের মতো হয়ে যায় সব লর্চ, দূর থেকে মনে হয় যেন সোনালি জরির মিহিন কাজ করা ঘন সবুজ জারদৌসিতে সেজেছে পাহাড়। মাথায় হাল্কা বরফের তাজ, উপরে সুনীল আকাশের অসীম বিস্তার, আর এমন নয়নাভিরাম সাজ, সেই ব্যাপ্তি, সেই সৌন্দর্যের সামনে দাঁড়ালে মাথা আপনি নত হয়ে আসে।
পাহাড় আর আমি, আমি আর পাহাড় … জন্ম জন্মান্তরের গাঁটছড়ায় বাঁধা আমি পাহাড় আর জঙ্গলের সঙ্গে। প্রায় প্রত্যেক উইকএন্ডেই শহুরে খোলনলচে খুলে ছুড়ে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যাই পাহাড়ের কোলে। সেদিনও ব্রেকফাস্ট সেরে হাল্কা লাঞ্চ প্যাক করে রওনা দিলাম সেই ঊষসী লর্চকে নিবিড়ভাবে ছুঁয়ে দেখার বার্ষিক অভিযানে। ভালুকরাজার খাসতালুক এই জঙ্গল, সোলো হাইকের উপর নিষেধাজ্ঞা থাকে সামারে। তবে এই তিন-চার সপ্তাহ মানুষের ঢল নামে এই ট্রেইলে, ঠিক যেন দুগ্গাঠাকুর দেখার ভিড়। শতাব্দীপ্রাচীন স্প্রুস, ফার আর পাইনের ঠাসবুনোট জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে সরু পথ একটু একটু করে এঁকে বেঁকে খাড়া উঠে গেছে পাহাড়ের মাথায়।

হাঁসফাঁস করতে করতে একটু যাই, দম নিতে একটু জিরোই। কখনো ধবধবে কাচা নীল আকাশ, পুজো পুজো রোদ, কখনো মেঘ। এক আধ পশলা তুলো তুলো বরফও পড়ল থেকে থেকে। প্রতিটা বাঁকে বাঁকে বর্ণনার অতীত সব কোডাক মোমেন্ট, থামতেই হয় ছবি তুলতে। গাছের ফাঁক দিয়ে গলে আসা সোনা রোদ সুচারু আলপনা আঁকে পায়ের কাছে।
নমি নমি নমি নিখিল চিতচারিণী
খানিকটা উঠতেই দেখা হয়ে গেল প্রথম লর্চের সঙ্গে। সুবিশাল, বর্ষীয়ান এক গরিয়সী লর্চ। ঝুরু ঝুরু ঝরছে তার পাতা, পায়ের কাছে সোনালি হয়ে আছে জমি। হে-এ-এ-এ চিন্ময়ী-ঈ-ঈ.. থামতেই হয়। দাঁড়ালাম। ব্যাকপ্যাক নামিয়ে রেখে নিচু হয়ে কুড়িয়ে নিই সোনালি নিডলগুলো অঞ্জলি ভরে, ঠোঁটে ছোঁয়াই, গালে ছোঁয়াই, মাথায় ঠেকাই। লর্চ দুলে উঠে ঝুরিয়ে দিল আরেও কিছু সোনালি পাতা আমার মুখে মাথায়। যত উপরে উঠতে থাকলাম, লর্চের সংখ্যাও বাড়তে থাকল। পথ ছেয়ে আছে সোনালি নিডলে। সেই সোনালি গালচে পাতা পথে ছোট্ট ছোট্ট পায়ে চলতে চলতে পৌছে গেলাম একসময়। নাম তার লর্চ ভ্যালি, ভ্যালি অফ টেন পিকস। সার্থকনামা বটে! এক, দুই, তিন, চার ক’রে দশটি আকাশ ছুঁয়ে দাঁড়িয়ে থাকা পাহাড়চূড়া গুণে ফেললাম। আর সারা ভ্যালি জুড়ে, এপাশে, ওপাশে, ডাইনে, বাঁয়ে শুধু লর্চ আর লর্চ। হিমেল হাওয়া বইছে আর লর্চেরা দুলে দুলে মুঠো মুঠো সোনা উড়িয়ে দিচ্ছে সেই বাতাসে।

ছবি তুলতে তুলতে আঙুল অবশ হয়ে যায়, তবু কিছুতেই গোটা চালচিত্রটাকে ক্যামেরাবন্দি করতে পারি না। অবশেষে হাল ছেড়ে দিয়ে একটা বড়সড় পাথর দেখে লাঞ্চ করতে বসলাম। আআআহ, পাহাড়ের মাথায় থেবড়ে বসে আঙুল অবশ করা ঠান্ডার মধ্যে গরম আদা-চায়ে চুমুক দিতে দিতে আবার নিজেকেই শুধাই আমার সেই বহু জিজ্ঞাসিত প্রশ্নটা, “স্বর্গ কি এর চেয়েও সুন্দর?” এই যে লর্চের শাখায় ভালোবেসে এঁকে দেওয়া ঠোঁটের স্পর্শ, চমকে যাওয়া কাঠবিড়ালি, থমকে যাওয়া হরিণছানা, ধীরে ধীরে পৌঁছে যাওয়া, তুষারিত পাহাড়চূড়ার উজ্জ্বল সাদা প্রেক্ষাপটে ছবির মতো লর্চের সোনালি প্রান্তর, পাহাড়ের মুখোমুখি বসে লাঞ্চ। সে যে কী অপার্থিব শান্তি চরাচর জুড়ে! চারপাশ ঘিরে পাহাড়ের মাথায় পড়ন্ত বিকেলের কমলালেবু রঙের নরম আলো, সোনালি মেখলা পরে আহ্লাদী লর্চ পরিরা সার দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে পাহাড়ের কোলের কাছটি ঘেঁষে, কুলুকুল আওয়াজ করে বয়ে যাচ্ছে ক্ষীণতোয়া ঝোরা।
আমার আদি ও অন্ত জুড়ালো-
আমি কেমন করিয়া জানাব আমার জুড়ালো হৃদয় জুড়ালো
কখনও কখনও পুব আর পশ্চিমে মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়, ঐ স্বর্ণালী লর্চের ক্যানভাসে ফুটে উঠতে থাকে সোনারবরণী গৌরীর মুখচ্ছবিটি।
“আজ চিৎ শক্তিরূপিনী বিশ্বজননীর শারদ-স্মৃতিমণ্ডিতা প্রতিমা মন্দিরে মন্দিরে ধ্যানবোধিতা…!”
রাত পোহালেই মহালয়া পৃথিবীর অন্যপ্রান্তে, এই ক্ষণিকের মরজীবনের জন্য যাদের কাছে ঋণী, তাদের স্মরণ, মননে পুণ্য সেই তিথি। এক গন্ডুষ ভাগীরথীর আয়নায় চলে যাওয়া প্রিয়জনেদের ছবি থমকে থাকে, অতীত আর বর্তমানের সেই চিরমোহনার নামই তো তর্পণ। খরতোয়া ঝোরাটিতে নেমে আঁজলা ভ’রে তুলে নিই হিমশীতল জল, আঙুলগুলো অসাড় হয়ে যেতে থাকে মুহূর্তের মধ্যেই, আমি চোখ বন্ধ করে বলতে থাকি…
“ওঁ আব্রহ্মভুবনাল্লোকা দেবর্ষি পিতৃমানবাঃ।
তৃপ্যন্তু পিতরঃ সর্বে মাতৃমাতমহোদয়ঃ।
অতীত কুলকোটীনাং সপ্তদ্বীপনিবাসিনাম।
ময়া দত্তেন তোয়েন তৃপ্যন্তু ভুবনত্রয়ম।।”
এই আমার মহালয়া, এই আমার তর্পণ।
বাজাও আলোর কণ্ঠবীণা ওগো পরম ভালো,
ওগো আমার আগমনী আলো…
আজ বাদে কাল এখানে আমাদের থ্যাঙ্কসগিভিং, কৃতজ্ঞতা জানানোর পরম লগ্ন, ভগবানের উদ্দেশে। Thank you God for everything… হে দুনিয়ার মালিক তোমায় প্রণাম— ক্ষুধার অন্ন, তৃষ্ণার জল, সব কিছুর জন্য। এই জীবনের জন্য, প্রতিটি দিনের জন্য। ভগবান সত্যিই আছেন কিনা জানা নেই, প্রাণভরে ধন্যবাদ জানালাম আমার পাহাড়কে, ধন্যবাদ জানালাম লর্চসুন্দরীদের আজকের এই অসাধারণ দিনটার জন্য। ধন্যবাদ জানালাম কানাডাকে, ধন্যবাদ জানালাম আমার জন্মভূমিকে। ধন্যবাদ জানালাম আমার গাণুশকে, Thank you baby for always being there for me. মনে মনে আভূমি প্রণতি জানালাম আমার বাবাকে, আমার মাকে। প্রণাম করলাম আমার ধরিত্রী জননীকে, মাপ চেয়ে নিলাম সব অপকর্মের জন্য,
“ক্ষমা করে দিও গো মা আমাদের যত ভ্রষ্টাচার, সব অত্যাচার।”
আর আমার সুজন সখাকে, “মোর অন্ধকারের অন্তরে তুমি হেসেছ, তোমায় করি গো নমস্কার” …

এবার ফেরার পালা। নিঃশব্দে ঝরে পড়ে বরফ, নিরুচ্চারে ঝরতে থাকে লর্চের সোনালি পল্লব। আচ্ছা লর্চের বাংলা কি? নাহ, লর্চের বাংলা নেই। মহালয়ার যেমন ইংরেজি হয় না, লর্চেরও তেমনি বাংলা হয় না। সারাটা পথ সবাইকে বলতে বলতে চলতে থাকি, “ভালো থেকো, ভালো থেকো, আবার আসব, আবার দেখা হবে সামনের বছর।” যেতে পা সরে না, তবু যেতে তো হবেই। ফিরে ফিরে দেখতে থাকি বারবার। সামনের সপ্তাহেই যদি ফিরে আসি, এই রঙ, এই ছবি পুরোটাই বদলে যাবে, ঝরে যাবে সব সোনা, ঘুমিয়ে পড়বে লর্চেরা সবাই, রিক্ত প্রান্তরের সব লজ্জা ঢেকে দেবে তুষারের পবিত্র শুভ্রতা। ঠিক যেন দশমীর প্রতিমা বিসর্জনের পর শূন্য বেদিটি। তাই একটু যাই, আবার ফিরে চাই, একবার এদিক, একবার ওদিক। শেষবারের মতো আর একবার। পাহাড়কে ডেকে বলি “Thanks again” …
“এই নম্র নীরব সৌম্য গভীর আকাশে তোমায় করি গো নমস্কার”…
এই তো আমার পুজো, আমার বোধন, আমার অধিবাস, আমার সন্ধিপূজা।
এইভাবেই আমার দশমী …
ছবি সৌজন্য: লেখক
কলকাতায় জন্ম, পড়াশোনা, বড় হয়ে ওঠা। কর্মসূত্রে কানাডায়। ফিজিওলজিতে মাস্টার্স, পেশায় কানাডা সরকারের কর্মচারী, আদ্যন্ত প্রকৃতিবিলাসিনী স্বাতীর প্রথম প্রেম বাংলা ভাষা আর কবিতা। রকি পাহাড়ের সানুদেশে স্বাতীর ঘর, পাহাড়ের সঙ্গে তাঁর নিত্য পরকীয়া। নেশা বাগান করার আর মাঝে মাঝে দু'চার লাইন বাংলা কলমচারিতার। বই পড়তে, গান শুনতে, আড্ডা দিতে আর হাসতে বড্ড ভালোবাসেন স্বাতী।
2 Responses
হেমন্তে লর্চএর অপরূপ কাহিনী চোখের সামনে যেন দেখতে পেলাম। কানাডার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য সত্যি অতুলনীয় ।তবে যা দেখেছি তা ভরা গ্রীষ্মে। যাবার বেলায় এই প্রকৃতির এই রঙ উজাড় করে দেওয়া দেখে মনেহয় এরপর সেই শান্ত সমাহিত হওয়ার পালা। নিজের যা কিছু নিঃশেষ করে আত্মসমর্পণ।
বড় সুন্দৰ লেখা।
মন কেমন করা পংতিমালা!