(Translation)
নূট হ্যামসুন–
নূট হ্যামসুন নরওয়ে দেশের নাগরিক। তিনি ঔপন্যাসিক ছাড়াও, একজন গল্পকার, নাট্যকার এবং কবি। ১৯২০তে তিনি সাহিত্যের নোবেল পুরস্কার পান তার অবিষ্মরণীয় গ্রন্থ, গ্রোথ অফ দ্য সয়েল এর জন্য। তার অন্যান্য বইয়ের মধ্যে – হাঙ্গার– যেটি এক ক্ষুধার্ত লেখককে ঘিরে রচিত একটি গভীর এবং তীব্র গল্প, এখনও পাঠকমহলে সাড়া জাগায়, প্রকাশিত হওয়ার প্রায় এক শ ত্রিশ বছর পরেও। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এবং তার আগেও, লেখক নাৎজিদের স্বপক্ষে ছিলেন। এই জন্য লেখককে অন্যান্য লেখকগোষ্ঠি ও বুদ্ধিজীবিমহল যারা সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং স্টালিনের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন, তাদের থেকে সরে আসতে হয়। যুদ্ধের পরে, লেখককে বহিষ্কৃত করা হয়, বিশ্বাসঘাতক নাম দিয়ে।
অনুবাদ: হৈমন্তী দত্ত রায়

জীবনের ডাক
মূল গল্প: দ্য কল অফ্ লাইফ
নীচে, কোপেনহেগেন বন্দরের ভিতরে, একটি রাস্তা– নাম ভেস্টারভোল্ড– অপেক্ষাকৃত নতুন, কিন্তু জনশূন্য বুলেভার্ড। অল্পসংখ্যক বাড়িঘর দেখা যায় তাতে, কিছু গ্যাসবাতি, আর প্রায় মানুষজনহীন। এখনও, এই গ্রীষ্মে, লোকজন প্রমেনেড্ বা বন্দরে ঘুরছে– এই দৃশ্যটি দুর্লভ। (Translation)
গতকাল সন্ধ্যাবেলা, আমার জন্য এক চমক অপেক্ষারত ছিল ঠিক এইখানে।
আমি যখন কিছু পাশাপাশি রাস্তায় ঘুরপাক দিচ্ছিলাম, তখন এক ভদ্রমহিলা আমার দিকে এগিয়ে এলেন, উল্টোদিক থেকে। চারিদিকে আর কোনও লোক দেখা যাচ্ছিল না। গ্যাসবাতিগুলি জ্বলছিল, কিন্তু তা সত্ত্বেও, অন্ধকার বিরাজ করছিল– এত ঘন কালো আঁধার যে, ভদ্রমহিলার মুখ দেখা যাচ্ছিল না। এক সাধারণ রাত্রিপ্রাণী, আমি ভাবলাম, এবং পাশ দিয়ে গেলাম। (Translation)
আরও পড়ুন: দোলনার দিন, গল্পের রাত
বুলেভার্ডের শেষ প্রান্তে গিয়ে, ঘুরলাম ও পিছনে হাঁটতে শুরু করলাম। সেই মহিলাও ঘুরলেন, এবং আমরা দু’জনে মুখোমুখি হলাম। ভদ্রমহিলা নিশ্চয়ই কারুর জন্য অপেক্ষা করছেন, মনে মনে ভাবলাম। নিজে কৌতূহলী হলাম এই দেখবার জন্য যে উনি কার আসার অপেক্ষায় আছেন। এবং আমি আবার পাশ দিয়ে গেলাম। (Translation)
যখন তৃতীয়বার দেখা হল, আমি আমার টুপি নামিয়ে, কথা শুরু করলাম।
“শুভ সন্ধ্যা! আপনি কি কারুর জন্য অপেক্ষা করছেন?”
মহিলা চমকিত হলেন। না, -মানে, হ্যাঁ– উনি কারুর জন্য অপেক্ষা করছেন।
ওঁর কি আপত্তি আছে যদি আমি ওঁকে সঙ্গ দিই, যতক্ষণ না উনি– যাঁর জন্য অপেক্ষারত তিনি– পৌঁছান? (Translation)
না– ওঁর সামান্যতম আপত্তি নেই, এবং মহিলা আমাকে ধন্যবাদ দিলেন। একদিক থেকে, মহিলা ব্যাখ্যা করলেন, তিনি কারুর জন্য অপেক্ষা করছেন না। চারিদিকের এই স্থিরতার মাঝে তিনি মুক্ত বাতাসের খোঁজে এসেছেন।
আমরা আস্তে আস্তে পাশাপাশি, পায়চারি করলাম। আমরা কথাবার্তা শুরু করলাম বিভিন্ন বিষয়ে, যা খুব জরুরি বিষয় নয়। আমি আমার বাহু বাড়িয়ে দিলাম।
“ধন্যবাদ, কিন্তু না” ভদ্রমহিলা বললেন। নিজের মাথা ঝাঁকিয়ে বললেন। (Translation)
“আপনি কি আমার হাতটি ধরবেন না?” আমি আবার আমার প্রস্তাব দিলাম, “আপনাকে হয়তো কিছুটা হলেও আরাম দেবে।”
মহিলা আমার হাতটি গ্রহন করলেন।
এইরকমভাবে পাশাপাশি হেঁটে, খুব যে মজা হচ্ছিল, তা কিন্তু নয়। আমি অন্ধকারে ভদ্রমহিলাকে ভাল ভাবে দেখতে পাচ্ছিলাম না। আমি একটা দেশলাই জ্বালালাম কটা বাজে দেখবার জন্য। আমি দেশলাইটি উঁচু করলাম, এবং ভদ্রমহিলাকে দেখলাম। (Translation)
“ন’টা তিরিশ”, আমি বললাম।
মহিলা কেঁপে উঠলেন, যেন বরফ-ঠান্ডা হয়ে পড়েছে শরীর। আমি সঙ্গে সঙ্গে সুযোগটি গ্রহণ করলাম।
“আপনি কাঁপছেন?” আমি প্রশ্ন করলাম। “আমরা কি কোথাও গিয়ে, কিছু পান করতে পারি? টিভোলি-তে? কিংবা ন্যাশনাল-এ?”
“কিন্তু, আপনি কি দেখতে পাচ্ছেন না, আমি এখন কোথাও যেতে পারব না”, উত্তরটা এল মহিলার দিক থেকে। (Translation)

এবং আমি দেখলাম, এই প্রথম, মহিলার পরণে একটি খুব লম্বা, কালো আবরণ যা দিয়ে তিনি তার মুখশ্রী ঢেকে রেখেছেন। আমি ক্ষমা চেয়ে নিলাম, আর সেই আঁধারকে দায়ী করলাম আমার ভ্রমের জন্য। এবং যেভাবে উনি আমার ক্ষমা-চাওয়াকে গ্রহণ করলেন, আমার বিশ্বাস হয়ে গেল যে মহিলা সাধারণ রাত্রি প্রাণী নন।
“আপনি কি আমার হাতটি ধরবেন না?” আমি আবার আমার প্রস্তাব দিলাম, “আপনাকে হয়তো কিছুটা হলেও আরাম দেবে।”
মহিলা আমার হাতটি গ্রহন করলেন। (Translation)
আমরা সমান তালে রাস্তার বাঁক ধরে, এ মাথা থেকে ও মাথা হাঁটলাম। ভদ্রমহিলা আমাকে সময়টা দেখতে আবার শুধালেন।
“দশটা বাজে”, আমি বললাম। “আপনি কোথায় থাকেন?”
মহিলা তার বাসস্থানটি বললেন।
আমি ওঁকে থামালাম। (Translation)
“আমি কি আপনাকে গেট অবধি পৌঁছে দিয়ে আসতে পারি?” জিজ্ঞেস করলাম।
“না, এখন না”, উনি প্রতিউত্তরে জবাব দিলেন। “না, আপনাকে আসতে বলতে পারি না… আপনি ব্রেডগ্রেডে থাকেন, তাই না?”
“আপনি কি করে জানলেন?” আমি বিস্মিত হলাম।
“ওহো! আমি জানি আপনি কে,” মহিলা উত্তর দিলেন। (Translation)

একটি বিরতি। আমরা হাঁটতে লাগলাম হাত ধরাধরি করে, আলোকিত রাস্তা ধরে। মহিলা দ্রুত গতিতে হাঁটছিলেন, তাঁর লম্বা ওড়নাটি স্রোতের মতো ভাসছিল, পিছনে।
“আমরা একটু তাড়াতাড়ি হাঁটলে ভাল হয়”, উনি বললেন।
নিজের বাড়ির দরজা পর্যন্ত এসে, ভদ্রমহিলা আমার দিকে ঘুরে দাঁড়ালেন, যেন তিনি আমাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন, আমি সঙ্গ দিয়ে ভদ্রতা দেখিয়েছি বলে। আমি মহিলার হয়ে দরজাটি খুললাম, এবং তিনি আস্তে আস্তে ভিতরে ঢুকলেন। ধাক্কা দিয়ে, আমি আমার কাঁধটা হেলিয়ে দিলাম দরজার দিকে এবং পেছন পেছন ভিতরে প্রবেশ করলাম। ভিতরে গিয়ে, মহিলা আমার হাতটি দখল করে নিলেন। আমরা কেউই কোনও কথা বললাম না। (Translation)
“আমার ইচ্ছে করছিল জিজ্ঞেস করি তিনি কে, ওঁর স্বামী কোথায়, যদি কেউ থেকেই থাকে! এবং এটি কার বাড়ি যেখানে আমি দাঁড়িয়ে, কিন্তু মহিলা নিজেকে ছুঁড়ে দিচ্ছিলেন প্রত্যেকবার আমার প্রশ্ন করবার আগেই, কৌতূহলী হতে মানা করতে করতে।”
আমরা সিঁড়ির দুটো ধাপের সারি উঠলাম, আর দাঁড়ালাম তৃতীয় তল বা চারতলায়। মহিলা নিজেই নিজের অ্যাপার্টমেন্টের দরজার তালা খুললেন, তারপর একটি দ্বিতীয় দরজা এবং আমার হাত ধরে, স্বয়ং ভিতরে নিয়ে গেলেন। সেটা বসবার ঘর ছিল; আমি দেয়ালঘড়ির টিকটিক শুনতে পাচ্ছিলাম। ভিতরে গিয়ে, মহিলা মুহুর্তের জন্য থামলেন, হঠাৎ তার দুটি হাত ছুঁড়ে দিলেন আমার দিকে, ও গভীর, আবেগপূর্ণ, অস্থিরভাবে চুম্বন করতে লাগলেন। ঠিক আমার ঠোঁটের উপরে। (Translation)
“আপনি বসবেন?” মহিলা প্রস্তাব দিলেন। “এখানে সোফা। আমি বরং একটু আলোর ব্যবস্থা করি।”
এবং তিনি একটি বাতি জ্বালালেন।

আমি চারিদিকে তাকালাম, অবাক হয়ে, কিন্তু জিজ্ঞাসু চোখে। দেখলাম আমি এক প্রশস্ত এবং প্রচন্ড সুসজ্জিত বসবার ঘরে আছি, যেটা অন্য ভেজানো দরজা, যা বিভিন্ন ঘরগুলির সঙ্গে যুক্ত। আমি আমার জীবনের বিরল অভিজ্ঞতাকে অনুভব করতে করতে ভাবলাম, এ কেমন ব্যক্তি যার সাথে হঠাৎ দেখা হল! (Translation)
“কী চমৎকার ঘরটি!” বিস্মিত হয়ে বললাম। “আপনি কি এখানে থাকেন?”
“হ্যাঁ। এইটাই আমার বাসস্থান।” ভদ্রমহিলা উত্তর দিলেন।
“এটি আপনার নিজের বাড়ি? আপনি আপনার মা-বাবার সঙ্গে থাকেন তাহলে?”
“আরে না”, মহিলা হাসলেন। “আমি এক বয়স্কা মহিলা, আপনি দেখতে পারবেন!”
এই বলে, মহিলা নিজের ওড়না ও পোশাক সরালেন। (Translation)
আরও পড়ুন: ওসিপ মান্দেলস্তাম-এর দু-টি কবিতা: ভাষান্তর: শতানীক রায়
“দেখলেন! আমি কি বলেছিলাম!” বলে, তিনি নিজের বাহু আমার দিকে ছুঁড়ে দিলেন, আবার হঠাৎ, যেন এক অসংযত, প্রবল ইচ্ছে পেয়ে বসেছে।
মহিলা হয়তো বাইশ বা তেইশ বছর বয়সী, একটি আংটি পরেছিলেন ডান হাতে, এবং হয়তো সত্যিই এক বিবাহিত নারী। সুন্দরী? ওঁর মুখশ্রী দাগ-ভরা ও প্রায় ভ্রুহীন ছিল। কিন্তু এক প্রাণবন্ত বায়ু ওঁর চারিদিকে, এবং মহিলার ঠোঁট আশ্চর্যরকম সুন্দর ছিল। (Translation)

আমার ইচ্ছে করছিল জিজ্ঞেস করি তিনি কে, ওঁর স্বামী কোথায়, যদি কেউ থেকেই থাকে! এবং এটি কার বাড়ি যেখানে আমি দাঁড়িয়ে, কিন্তু মহিলা নিজেকে ছুঁড়ে দিচ্ছিলেন প্রত্যেকবার আমার প্রশ্ন করবার আগেই, কৌতূহলী হতে মানা করতে করতে।
“আমি এলেন” মহিলা ব্যাখ্যা করলেন। “আপনি কি মদ্যপানে আগ্রহী? এতে কেউ বিব্রত হবেন না! যদি ডাকি। হয়তো আপনি ভিতরে, শোবার ঘরে, আসতে পারেন, এই সময়ে।” (Translation)
আমি ভিতরে বেডরুমে প্রবেশ করলাম। বসবার ঘরের আলোটি আংশিকভাবে আলোকিত করছিল। দু’টি শয্যা পাতা ছিল। এলেন ডেকে ওয়াইন অর্ডার দিলেন এবং আমি শুনলাম এক পরিচারিকা ওয়াইন নিয়ে ঢুকলেন ও বেরিয়ে গেলেন। একটু পরে, এলেন ঢুকলেন শোবার ঘরে আমার সঙ্গে, কিন্তু দাঁড়িয়ে পড়লেন দরজাটির সামনে। আমি এক পা এগোলাম। একটি ছোট চিৎকার করে, এলেনও সঙ্গে সঙ্গে আমার দিকে এগোলেন। (Translation)
“আমার যখন ঘুম ভাঙল আজ, তখন আকাশটা আলোকিত হতে আরম্ভ করেছে। দিনের আলো ধীরে ধীরে ঘরে ঢুকছে, পর্দার দুই দিক দিয়ে।”
এটি হয়েছিল গতকাল সন্ধ্যায়।
কিন্তু তারপর কী হল? ও, ধৈর্য্য ধরুন! অনেক কিছু ঘটল! (Translation)
আমার যখন ঘুম ভাঙল আজ, তখন আকাশটা আলোকিত হতে আরম্ভ করেছে। দিনের আলো ধীরে ধীরে ঘরে ঢুকছে, পর্দার দুই দিক দিয়ে। এলেনও জেগে ছিল ও আমার দিকে ফিরে হাসল। তার দু’বাহু ধবধবে সাদা ও মখমলের মতো, স্তন অস্বাভাবিক উঁচু। আমি ফিসফিস করে কিছু বললাম, ও সে আমার মুখ বন্ধ করে দিল তার নিজের মুখ দিয়ে। দিনটি আরও আলোকিত হতে শুরু করল। (Translation)

দু’ঘন্টা পরে, আমি নিজের পায়ের উপর দাঁড়ালাম। এলেনও উঠে পড়েছিল– ব্যস্ত নিজেকে সাজাতে– দেখলাম ওর পায়ে জুতো পরা। তারপর আমি অনুভব করলাম যেটা আমার মনে হয় এক ভয়াবহ স্বপ্ন। আমি মুখ ধুতে দাঁড়িয়েছিলাম। এলেন তার কোনও কাজ নিয়ে পাশের ঘরে ছিল, এবং যেইমাত্র সে দরজা খুলল, আমিও ঘুরে দাঁড়িয়ে, ভিতরে উঁকি দিলাম। খোলা জানলা দিয়ে ঠান্ডা বাতাস দ্রুতগতিতে আমার উপর আছড়ে পড়ল, ও আমি দেখলাম ঠিক ঘরটির মাঝখানে, একটি মৃতদেহ টেবিলের উপর শোয়ানো। একটি মৃতদেহ, কফিন-বন্দি, সাদা পোশাক-পরা, ধূসর দাড়ি– একটি পুরুষের মৃতদেহ। তার হাঁটুর হাড় বেরিয়ে আছে, ঠিক যেন শিটের নীচে উন্মাদ-হওয়া মুষ্টিবদ্ধ বাহুযুগল, মুখটা হলদেটে ও ভয়াবহ। (Translation)
আমি দিনের আলোয় সব দেখতে পাচ্ছিলাম। ঘুরে দাঁড়ালাম এবং একটিও কথা বললাম না।
এলেন যখন ফিরে এল, তখন আমি নিজের পোশাক পরে বাইরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। আমি এলেনের জড়িয়ে ধরাতেও কোনও প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারলাম না। সে বাড়তি কিছু কাপড় পরে, চাইছিল আমার সঙ্গে বাইরের দরজা অবধি আসতে। আমি তাকে আসতে দিলাম, এখনও মুখে একটিও কথা না বলে। দরজায় এসে, সে দেয়ালে নিজেকে সেঁটে দিল, যাতে কেউ দেখতে না পায়। (Translation)
“তিনি কে ছিলেন? আর মৃতদেহটি? মুষ্টিবদ্ধ বাহু নিয়ে এবং ঠোঁটের কোণগুলি ঝুলছিল– কী ভয়াবহভাবে কমিক্! পরশু সে আমাকে আশা করবে। আমার কি তার সঙ্গে আবার দেখা করা উচিত?”
“বিদায়,” ফিসফিসিয়ে সে বলল।
“কাল অবধি?” প্রশ্ন করলাম, খানিকটা তাকে পরীক্ষা করতে।
“না, কালকে না।“
“কেন?” (Translation)
“এত প্রশ্ন নয়, প্রিয়। আমি কাল একটি শেষকৃত্যে যাব, এক আত্মীয় মারা গেছেন। এই দেখুন– আপনি জেনে গেছেন।”
“কিন্তু পরশু?”
“হ্যাঁ, পরশু, ঠিক এই দরজায়। আমি দেখা করব। বিদায়।” (Translation)
আমি চলে এলাম।
তিনি কে ছিলেন? আর মৃতদেহটি? মুষ্টিবদ্ধ বাহু নিয়ে এবং ঠোঁটের কোণগুলি ঝুলছিল– কী ভয়াবহভাবে কমিক্! পরশু সে আমাকে আশা করবে। আমার কি তার সঙ্গে আবার দেখা করা উচিত? (Translation)
আরও পড়ুন: এক চলন্ত কঙ্কালের পথনামচা: মাৎসুয়ো বাশৌ: তর্জমা – আলোকময় দত্ত
আমি সোজা বরনিনা কাফেতে চলে গেলাম ও একটি ডিরেক্টারি দিতে বললাম। আমি খুঁজতে খুঁজতে সেই ঠিকানায়, সেই নাম পেয়ে গেলাম। আরও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলাম, সকালের সংবাদপত্রগুলোর জন্য। তারপর তাড়াতাড়ি কাগজের মধ্যে মৃত্যুসংবাদ খুঁজতে থাকলাম। এবং– ঠিক তাই– আমি তারটাও পেয়ে যাই, একেবারে প্রথমে, মোটা অক্ষরে: “আমার স্বামী, তিপান্ন বছর বয়স, আজ মারা যান বহুদিন অসুস্থতার পর।” এই বিজ্ঞপ্তিটির তারিখ গতকাল। (Translation)
আমি অনেকক্ষণ বসলাম এবং ভাবলাম।
একটি পুরুষ বিবাহ করেন। তাঁর স্ত্রী তাঁর থেকে ত্রিশ বছরের ছোট। সে একটি কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়। একদিন হঠাৎ তাঁর মৃত্যু ঘটে। এবং তাঁর তরুণী ও বিধবা স্ত্রী একটি আরামের দীর্ঘশ্বাস ফেলে। (Translation)
মুদ্রিত ও ডিজিটাল মাধ্যমে সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
আমি, হৈমন্তী দত্ত রায়, যদিও ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে পড়াশুনা করেছি, বাংলা ভাষার চর্চা আমাদের বাড়ীতে বহু যুগ ধরে। মাতৃ ভাষা না পড়লে বা না জানলে, সে যেই হোক – পুরুষ কিংবা নারী – সঠিক অর্থে মানুষ হয়ে উঠতে পারে না।
বাংলা ভাষাতে লেখা বই পড়তে ভালো লাগে কেন? উত্তরে বলবো – ‘সেখানে আমি নিজের পরিচয় খুঁজে পাই।‘
আমার চারটির বেশী ইংরেজিতে লেখা বই এম্যাজনে পাওয়া যায় এখনও। বাংলায় আমি লিখতে শুরু করেছি খুবই ইদানীং। আত্মপ্রকাশ আমার লক্ষ্য এবং উপলব্ধি। পাঠক যদি আমার লেখা পড়ে আনন্দ পান, সেটাই হবে আমার সব থেকে বড়ো প্রাপ্তি।
