Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

কেরাম হয়ে রঙ্গো 

অমর কুমার নায়ক

আগস্ট ৬, ২০২৪

Travelogue on Kalimpong offbeat tourist spots
Bookmark (0)
Please login to bookmark Close

গরমের ছুটিতে সপরিবারে রিশপ যাওয়ার প্ল্যান বাতিল হওয়ার পর বেশ হতাশ হয়েছিলাম। তাই চটজলদি শুভজিতের সঙ্গে কালিম্পঙের অফবিট (Kalimpong offbeat) জায়গায় ফড়িং আর প্রজাপতির খোঁজে যাব ঠিক হল। হঠাৎ করেই ঠিক হওয়া এই প্ল্যানে অনিরুদ্ধও জুড়ে গেল। ২৯’শে মে লোটাকম্বল নিয়ে বেরিয়ে বর্ধমান জংশন স্টেশন। কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেস রাত দশটায়।  

চা বাগান – রেলপথে

সকালে শিলিগুড়ি জংশন ছাড়ার পর থেকেই ট্রেনের জানালা দিয়ে নির্ভেজাল প্রকৃতিকে উপভোগ করতে লাগলাম। মহানন্দা ওয়াইল্ড লাইফ স্যাংচুয়ারির মধ্যে দিয়ে দুপাশের ঘন জঙ্গলকে চিরে ট্রেন চলেছে। গাছগাছালির পাশাপাশি জারুলের অপরূপ স্নিগ্ধ রূপ আলাদাই লাবণ্য এনে দিচ্ছে। একটা হল্ট স্টেশনের কাছে চা-বাগানের মধ্যে একটা গাছে বসে থাকতে দেখলাম ব্ল্যাকবাজা পাখিকে। জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে উড়ে গেল পাইড হর্নবিল। নানান পাখি, প্রজাপতি উড়ছে গাছের পাতার ফাঁকে। এসব দেখতে দেখতে পৌঁছে গেলাম নিউ মাল জংশনে। 

রেল পথে যেতে যেতে

এখান থেকে মেটেলি। সারাদিন প্রজাপতি আর ফড়িং খুঁজে বিকেলে রিজার্ভ করা গাড়িতে রওনা হয়েছিলাম কেরামের উদ্দেশে। যাত্রাপথে আমাদের বেশ কয়েকটা চা বাগান হয়ে যেতে হয়েছিল। কুমাই ফরেস্টের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় গাড়িটা থামালাম। কিছুক্ষণ আগে বৃষ্টি হয়েছে, পথে জল জমেছে। পাতা থেকে দু-এক ফোঁটা তখনও টুপটাপ ঝরে পড়ছে। আলো কমে এসেছে, বনের ভেতরে গাছেদের কালো ছায়াছবি মনে হচ্ছে।  

গাছের মাথায় ছোট ছোট পাখিরা খেলা করছে, গান গাইছে। সেই পাখিদের ডাক আমার পাখি দেখিয়ে মনকে চঞ্চল করে তুলল। কিন্তু পাখি দেখতে না পেয়ে প্রজাপতিতে মন দিলাম। রাস্তার পাশে পাডলিং করছে। এরই মধ্যে আবার বৃষ্টি শুরু হল, গাড়িতে গিয়ে বসলাম।  

ইয়েলো জেজাবেল প্রজাপতি

দুপাশের বৃষ্টিভেজা পরিবেশ দেখতে দেখতে আমরা পারেন, চিসাং হয়ে পৌঁছে গেলাম তোদে বাজার। সেখান থেকে গাড়ি বদল। যখন তোদে পৌঁছলাম, বৃষ্টি আমাদের সঙ্গী হয়েছে। সদা হাস্যময় ওয়াংডি ভুটিয়ার গাড়িতে চেপে তোদে বাজার থেকে আমাদের হোমস্টের উদ্দেশে বেরোলাম। পাহাড়ের গায়ে মেঘের আলোয়ান জড়ানো। একটা ছোট ব্রিজের কাছে দেখি জল ঝাঁপিয়ে পড়ছে পাথরগুলোকে স্নান করাবে বলে। পথের পাশে নানা ধরণের গাছ।  

আরও পড়ুন: জঙ্গল পাহাড়ের গল্প

আমরা পৌঁছতেই বৃষ্টি নামল ঝেঁপে। ওপারে ভুটানের পাহাড় আর মাঝে বয়ে চলেছে চুমাং বা দাওয়াইখোলা নদী। নদীবক্ষে নুড়ি পাথরের সাথে সবুজের বন্ধুত্ব দেখে মন জুড়িয়ে গেল। হোমস্টে চালান নামগেল ভুটিয়া আর তাঁর ছেলে মার্টিন। কী মিষ্টি হাসি ছেলেটির!  

চা খেতে খেতে বাইরেটা দেখছি। মেঘেরা পাহাড়ের গায়ে লুটিয়ে পড়ছে আর ঝরে পড়ছে বৃষ্টি হয়ে অঝোরে। ফ্রেশ হতে না হতেই আরেক রাউন্ড চা আর গরম পকোড়া এসে হাজির। ততক্ষণে বৃষ্টি থেমে গেছে আর অন্ধকার কেরামের গাছপালা থেকে পতঙ্গ’রা আলোর টানে ছুটে আসছে ব্যালকনিতে। তাই ক্যামেরা নিয়ে পোকামাকড় আর মথের ছবি তোলা চলল বেশ রাত অবধি।  

চুমাং নদী থেকে ভুটানি গ্রাম

ডিনার করতে করতে ঠিক করলাম খাওয়ার পর রাতের কেরামকে দেখতে বেরোব। রুম থেকে বেরিয়ে একটা সিঁড়ি বেয়ে উপরে এসে জল জমা মেঠোপথে একটু এগোতেই কানে এল ঝিঁঝিঁ, ব্যাঙ আর ঝরনার আওয়াজ। নিস্তব্দ চারদিক, আমরা তিনটে প্রাণী টর্চ হাতে এগিয়ে চলেছি অজানাকে জানতে। একটা ব্যাঙ চোখে পড়ল কিছুটা যেতেই, একটা নালার মতো জায়গায় বসে আছে জলের তোড় সামলে। ওটার ছবি তুলে এগোতেই দুটো পাহাড়ি কুকুর চিৎকার জুড়ে দিল আমাদের দেখে।  

কাছেই নেওড়া ভ্যালি ন্যাশনাল পার্ক। মাথার উপর একটা তিলাজ বাজ চক্কর কাটছিল। ফড়িং আর প্রজাপতির খোঁজে ছোট্ট ব্রিজটা পার করে একটা পাহাড়ি পাকদণ্ডী পথ ধরলাম। উপরে একপাশে লম্বা পাইনের সারি। আর বাঁ পাশে পাথরের উপর থেকে গড়িয়ে পড়ছে ঝালংখোলা। নানান ধরণের প্রজাপতি আর বেশ কিছু বিরল ফড়িঙের সঙ্গে সাক্ষাৎ হল।  

আশেপাশে দু-চারটে মাত্র ঘর, এখন সবাই গভীর ঘুমে। কিছুটা গিয়ে আমরাও ফিরে চললাম। মেঘের গতিক ঠিক ছিল না। ভোর ভোর উঠে ফ্রেশ হয়ে মার্টিনের আনা গরম চায়ে চুমুক দিয়ে কেরামের চারপাশ দেখতে বেরোলাম। মেঘের চাদর সরতেই রোদ উঠল। আর পাখিরাও একে একে বেরিয়ে এল গোপন ডেরা ছেড়ে। রঙিন পাখনা মেলা প্রজাপতিরা উড়ছে বসছে পাতায়। ফড়িং রোদ পোহাচ্ছে, পাখিরা শিষ দিচ্ছে গাছের পাতার আড়ালে। এসব দেখতে দেখতে ব্রিজের কাছে যেতেই আবার মেঘ ঘনিয়ে এল। 

প্লাম্বাস রেডস্টার্ট

ফিরে এলাম রুমে। ব্রেকফাস্ট সেরে ঠিক করলাম চুমাং নদীর বুকে খুঁজে দেখব মানিক রতন। এর মধ্যে আলতাপরি, হরবোলা, ফুলঝুরি, কাঠকুড়ালি, পাহাড়ি বুলবুল, হিমালয়ান বুলবুল, পাহাড়ি হাঁড়িচাচা ও নীলাঞ্জনা দেখা দিয়ে গেছে আমাদের। হোমস্টের পেছনের পাকদণ্ডী দিয়ে নেমে গেলাম চুমাং নদীর বুকে। কত বুনো গাছের ভিড় সেখানে। নদীর ধারে দাঁড়িয়ে প্লাম্বাস রেডস্টার্ট পাখির খেলা দেখছি।  

ওপারে আরেকটা স্টে, তবে তাঁবু খাটিয়ে থাকার ব্যবস্থা। ‘চুমাং রিভার নেস্ট’ স্টে-র রোহিত আমাদের আমন্ত্রণ জানাল ওদের ওখানে প্রজাপতি দেখতে যেতে। সেখানে প্রজাপতির হাট বসেছে। আমরাও নদীর অল্প জলের পাথর পেরিয়ে ওপারে গেলাম। আহা! কী অপূর্ব সুন্দর সে দৃশ্য! একবুক পাথর নিয়ে কুলকুল করে বয়ে চলেছে দাওয়াইখোলা। তিনপাশে প্রাচীন গাছের ভিড়, সামনে অনেকটা ফাঁকা জায়গা আর তারপাশে ভুটান পাহাড়। মেঘ ভেসে যাচ্ছে। মাঝে মাঝে ঝিরঝিরে বৃষ্টির ফাঁকে রোদ উঁকি দিচ্ছে। আমরা অনেকটা সময় কাটিয়ে ফিরে এলাম হোমস্টেতে।  

বয়ে চলা চুমাং নদী

দুপুরে লাঞ্চ সেরে বিকেলের অপেক্ষা না করে ছাতা নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম কেরামের অন্যপ্রান্তটা দেখব বলে। খুব বেশি হলে গোটা বিশেক ঘর গ্রামটায়। পথের পাশে নানান ধরনের গাছ। কষ্টশ্রমে দিনযাপন স্থানীয় মানুষের। আমরা হেঁটে যেতে যেতে আটকে পড়ছি দুপাশের গাছে পাতায় নানান জীববৈচিত্র্যকে ক্যামেরাবন্দি করতে। কিছুটা যেতেই নদীর বুকে গড়ে ওঠা সুসজ্জিত টেন্ট হাউস চোখে পড়ল। নদীর কাছেই ভারত-ভুটান  সীমান্ত পারাপারের নিয়মাবলী বোর্ড।   

সন্ধ্যে নামার আগে হোমস্টেতে ফিরলাম। জলখাবার খেয়ে মথ আর পোকা নিয়ে পড়লাম। আজ পাশের রুমে গেস্ট এসেছে। আমরা এসেছি নিভৃতে পাহাড়, জঙ্গল, নদীঘেরা এই নির্বাক কথকের গল্প শুনতে, আর এরা নিশ্চুপ নিস্তব্ধতাকে ভেঙে দিল বক্স বাজিয়ে হুল্লোড় করে।  

পরের দিন ফেরার পালা তাই আরেকবার সকালটা চুমাঙের নদীবক্ষে কাটিয়ে দিলাম। এদিন জল বেড়েছে নদীতে। আর তার মধ্যে জলপরীর মতো নৃত্য করছে ব্রাউন ডিপার পাখি। একটা উইন্ডমিল প্রজাপতি জলের উপর উড়ে গেল আলতাপেড়ে শাড়িপরা পরীর মতো।  

ব্যাম্বু কুইন হোমস্টে – রঙ্গো

বিনোদ রাই গাড়ি নিয়ে হাজির। ব্রেকফাস্টের পর বেড়িয়ে পড়লাম রঙ্গোর উদ্দেশ্যে। পথে একজোড়া ফ্রকটেল পাখি দেখলাম ঝরনার কাছে খেলা করছে। রঙ্গোতে আমাদের থাকার ঠিকানা ‘ব্যাম্বু কুইন হোমস্টে’। এর কিছুটা আগে গাড়ি থেকে নেমে হাঁটতে লাগলাম। পথে মাইম প্রজাপতির পাডলিং দেখে বিভোর হলাম। নামতে  নামতে দেখছি বাঁশ দিয়ে রানীর মতো সাজানো হোমস্টে। ব্যাগপত্তর রেখে লিকার চা খেয়ে বেড়িয়ে পড়লাম চারপাশটা দেখতে। ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে ঝালংখোলা বয়ে চলেছে আপনমনে। তার কাছাকাছি যেতেই একটা ফাঁকা জায়গায় বেশ কয়েক প্রজাতির প্রজাপতির ভিড়। সামনে অনেক উঁচু গাছের সারি।  

ঝালংখোলা

কাছেই নেওড়া ভ্যালি ন্যাশনাল পার্ক। মাথার উপর একটা তিলাজ বাজ চক্কর কাটছিল। ফড়িং আর প্রজাপতির খোঁজে ছোট্ট ব্রিজটা পার করে একটা পাহাড়ি পাকদণ্ডী পথ ধরলাম। উপরে একপাশে লম্বা পাইনের সারি। আর বাঁ পাশে পাথরের উপর থেকে গড়িয়ে পড়ছে ঝালংখোলা। নানান ধরণের প্রজাপতি আর বেশ কিছু বিরল ফড়িঙের সঙ্গে সাক্ষাৎ হল।  

আরও পড়ুন: বনদেবীর ঝঙ্কারে, সুনীল সাগরে

একটা ‘ব্লু-হুইশ্লিং থ্রাশ’ পাখি একমনে জলের ধারে বসে গান গাইছিল, কাছে যেতেই উড়ে পালাল। পাথরের উপর দিয়ে নদী ডিঙিয়ে নামলাম নীচে। স্নান সেরে বাইরের খোলা বারান্দায় খেতে বসেছি, তুমুল ঝড়বৃষ্টি শুরু হল। দুপুর পেরিয়ে সন্ধ্যা অবধি বৃষ্টি চলল। বৃষ্টিতে ঝালংখোলার জলের স্রোত বেড়ে গেছে। রুমের মধ্যে বসে তার জলের তোড় শুনছি। সে রাত্রে আর আলো আসেনি। হোমস্টেতে বসে বাইরের প্রকৃতিকে মনের চোখ দিয়ে অনুভব করছিলাম। ব্যাঙ আর ঝিঁঝিঁদের গান শুনতে শুনতে বাইরে এসে দূরে পাহাড়ের কোলে আলো ঝলমলে ভুটানি গ্রাম দেখতে পেলাম।  

পার্পল স্যাফায়ার প্রজাপতি

সকালে চারপাশটা দেখতে বেরোলাম। পাশাপাশি আরও কয়েকটা হোমস্টে। কয়েকটি ঘর নিয়ে গড়ে ওঠা এই জনপদটি বেশ সুন্দর। কাছেই একটা ভিউ পয়েন্ট। তার উপর থেকে পুরো গ্রামটা আরও সুন্দর লাগে। একপাশে বুনো ফুলের গাছের ভিড়, অন্যপাশে বিশাল সব মহীরুহ। এভাবেই একবেলা কেটে গেল রঙ্গোতে। হোমস্টেতে দুপুরের খাবার খেয়ে প্রবীণ ভাইয়ের গাড়িতে চেপে ফেরার পালা।  

পথে বৃষ্টি ধোয়া স্নিগ্ধ পথঘাট দেখতে দেখতে পৌঁছে গেলাম কুমাই-টি-এস্টেট। গাড়ি থামাতে হল, সামনের গাছে তখন হুটোপুটি করছে একজোড়া ‘রুফাস-নেকড লাফিংথ্রাশ’। এসব দেখতে দেখতেই পৌঁছে গেলাম নিউ মাল জংশন। ট্রেনে ফিরে আসার পথে চলল ফড়িং, প্রজাপতি আর মথের পরিচিতি। ‘আবার দেখা হবে’, এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছি কেরামকে দাওয়াইখোলার তীরে, আর সাক্ষী রেখেছি ঝালংখোলাকে। 


কিভাবে যাবেন – ট্রেনে নিউ মাল জংশনে নেমে সেখান থেকে শেয়ার গাড়িতে চালসা হয়ে বা সরাসরি  রিজার্ভ  গাড়িতে যাওয়া যাবে। 

কোথায় থাকবেন – থাকার জন্য অনেক হোমস্টে আছে কেরাম এবং রঙ্গোতে। 

যোগাযোগের নম্বর –  কেরাম:  নামগেল ভুটিয়া (হোমস্টে)-  ৯৭৪৯৪৪৯২৩০     

ওয়াংডি ভুটিয়া (গাড়ি) –  ৯০৬৪৯৩৮১৫১    

রঙ্গো:   মেঘরাজ তামাং (হোমস্টে এবং গাড়ি) –  ৮৫৯৭০৮২৯৪৮ 

ছবি: লেখক

Author Amar Kumar Nayak

লেখক, পেশায় বিদ্যালয় শিক্ষক। ভালবাসেন পাহাড়ে ঘুরতে। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লেখালিখি করেন জীববৈচিত্র, পরিবেশ সংরক্ষণ এবং ইকোট্যুরিজম বিষয়ে। লেখকের প্রকাশিত বই – ‘বাংলার উভচর’।

Picture of অমর কুমার নায়ক

অমর কুমার নায়ক

লেখক, পেশায় বিদ্যালয় শিক্ষক। ভালবাসেন পাহাড়ে ঘুরতে। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লেখালিখি করেন জীববৈচিত্র, পরিবেশ সংরক্ষণ এবং ইকোট্যুরিজম বিষয়ে। লেখকের প্রকাশিত বই – ‘বাংলার উভচর’।
Picture of অমর কুমার নায়ক

অমর কুমার নায়ক

লেখক, পেশায় বিদ্যালয় শিক্ষক। ভালবাসেন পাহাড়ে ঘুরতে। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লেখালিখি করেন জীববৈচিত্র, পরিবেশ সংরক্ষণ এবং ইকোট্যুরিজম বিষয়ে। লেখকের প্রকাশিত বই – ‘বাংলার উভচর’।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Subscribe To Newsletter

কথাসাহিত্য

সংস্কৃতি

আহার

বিহার

কলমকারী

ফোটো স্টোরি

উপন্যাস