কবিতা পড়ুন
আপনারই রাজ্যে দাউদাউ আগুন জ্বলছে, আপনি কবিতা পড়ুন। কে যেন কয়েকজনকে বাড়িতে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে মেরে দিল, আপনি কবিতা পড়ুন, কবিতা, তারপর ছবি দিন, নিজের কবিতা পাঠের ভিডিও দিন, কার কার সঙ্গে ‘দেখা’ হল তার বিবরণ দিন, মুড়ি মুড়কির মতো বোমা পড়ছে, সেটা তুলে নিয়ে খেলতে গিয়ে শ্যারনের হাত ধরে নিচ্ছে শিশুরা! এখন আপনি বলবেন শ্যারন কে! এখন আপনি বলবেন শিশুরা কে, কোথায় বাড়ি? কিন্তু বোমা কারা বানালো এটা কি বলবেন আপনি? না বলবেন না, কারণ আপনি হারামি, আপনি জানেন এসব কারা বানিয়েছে । এসব না বলে বরং আপনি মিষ্টি প্রেমের কবিতা পড়বেন, সাংকেতিকতার কথা বলবেন, আপনি আসলে সেই চাদর ঢেকে নিচ্ছেন যা মাথা ঢাকে তো পা বেরিয়ে যায়… তবু আপনি কঠিন কথা বলার আগে একটু এদিক ওদিক তাকিয়ে নেন, হে আমার গ্যাসম্বলের লিরিক কবি!
সেফ খেলতে খেলতে সেফ খেলতে খেলতে লক্ষ্য করেননি কখন নিজে আপনি হয়ে গেছেন একটি কন্ট্রাসেপ্টিভ! আপনাকে ঢাকা নিয়ে শুয়ে পড়ছে শাসক!
(অথবা, নিজের শিল্পের কাছে বারেবারে যেতে যেতে আপনি বুঝতেই পারছেন না আপনার প্রিয় টাইটানিক জাহাজটি ডুবছে… আর আপনাকে আপনাদের দেখে হেসে উঠছে তামাম দর্শককুল!)

হয়
সার্কাস কম্পানি এসে, এ শহরে ছেড়ে গেছে
ব্যর্থ কিছু ঘোড়া, সাদা, খয়েরি ও ধূসর বাদামি,
এইসব অনাথেরা ক্রুদ্ধ হয় রাত্রিবেলা
যখন ঢপের চাঁদ ইন্টুমিন্টু ক’রে বলে “ শোন রে হারামি
সাদা টাট্টু ওই দেখ ছুটছে প্রান্তরে…
কবিতা পায়?”
নিরুত্তরে ভরে ওঠে ল্যাংটো সব লিরিকের খাতা
সে খাতায় ক্ষুর-ধুলো
উত্থিত ব্যাকুল লিঙ্গ, ঘোড়া বলে: জানি জানি জানি
কবিরা প্রস্বাবরত,
আমাদেরও বহুদিন ভুলে গেছে সার্কাস কম্পানি
ছবি সৌজন্য: Adobe stock, Pixels
কুন্তল মুখোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৭৬৷ পেশা শিক্ষকতা। পড়াশোনা ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে। মূলত কবিতাই আগ্রহের বিষয়। ২০১৬ সালে প্রকাশিত হয় প্রথম কবিতার বই “দুখীরামের গোপন জার্নাল” সিগনেট, আনন্দ থেকে। ২০১৮ সালে একটি কবিতাপুস্তিকা প্রকাশিত হয় তবুও প্রয়াস থেকে। নাম: অন্য এক অন্ধকার। ২০১৯ সালে ভাষালিপি থেকে প্রকাশিত হয় “নির্জনতা, এগারো মাইল”। ২০২০ সালে একটি গদ্যের বই প্রকাশিত হয় তাঁর। নাম: এইখানে সরোজিনী শুয়ে আছে ও অন্যান্য গদ্য।