আজ প্রেম দিবস। ইংরিজিতে। বঙ্গপ্রেমের দিন যদিও আগামী মঙ্গলবার, বসন্ত পঞ্চমীতে। তবে নববর্ষে শাড়ি পরব বলে কি আর নিউ ইয়ারে হট প্যান্ট পরব না? বাঙালি কবে আর সে সব মেনেছে। কাজেই ইঙ্গপ্রেম বঙ্গপ্রেম ঘেঁষাঘেঁষি গুঁতোগুঁতি করে দুইয়েতেই জমজমাট পালনোৎসব মিলনোৎসব! আগে ভ্যালেন্তি পুজো, তারপর সস্বোতি পুজো। প্রবলেম কী? ভালবাসার উদযাপন দিয়ে কথা।
আজ চ্যানেলে চ্যানেলে, ফেসবুকের পাতায় পাতায়, ডালে ডালে প্রেমের ফুলের চাষ যখন হচ্ছেই, আর তাতে যখন তামাম দুনিয়া মনের সুখে হলুদ বো বাঁধা গোলাপি হৃদয়ের ইমোজি বিলোচ্ছে, তখন আপনি কেন ঘরে বসে রামনাম জপবেন? চলুন চলুন, প্রেমযমুনায় হেব্বি ঢেউ দিয়েছে। এই বেলা আকুল হিয়া নিয়ে দুকূল ভেঙে ভেসে পড়া যাক! ভাসতে ভাসতে শোনা যাক সেই সব সত্যিকারের প্রেম-খেলোয়াড়দের ছক্কা হাঁকানোর গপ্পো যা ঠাঁই করে নিয়েছে বইয়ের পাতায়!
[the_ad id=”266918″]
দশরথ মাঝিকে মনে পড়ে? না না। ওই মোবাইল দেখে দেখে দশরথ মাঝি বললেই নওয়াজউদ্দিনের ঘেমো মুখখানা মনে পড়লে চলবে না। রিয়েল লাইফ মানুষটাকে মনে করে দেখুন। নাহয় নীচের ছবিটা দেখেই মনে করুন। আপনার আমার ভাষায় এ লোকটা একেবারে গেঁয়ো ভূত। ইংরিজি তো দূরের কথা, পড়াশোনাই জানে কিনা সন্দেহ। গায়ের রং ঘোর কালো, চুল-দাড়ির যত্ন নেই, সারা গায়ে ধুলো মাখা এক মেঠো লোক। বিহারের গেহলোর গাঁয়ে জন্ম।

সেই পঞ্চাশের দশকে, কিশোরবেলায় বাবা-মা এক শিশুকন্যের সঙ্গে তার বিয়ে দিয়ে দেয়। তারপর আর কী? তুম কাঁহা ঔর ম্যায় কাঁহা। দশরথ চলে গেল ধানবাদে কয়লা কাটতে। সাত বছর পরে ফিরে এসে গাঁয়ের এক কন্যেকে দেখে ঘাড়মোড় ভেঙে দশরথ পড়ল তার প্রেমে। ভাগ্যদেবী দারুণ সদয়! জানা গেল, ওই মেয়েই নাকি তার বালিকা বধূ! প্রেমের জোয়ারে হাবুডুবু খেতে লাগল দশরথ। কিন্তু মেয়ের বাবা বেঁকে বসলেন। জামাই কাজ ছেড়ে ফিরে এসেছে, মেয়েকে তিনি ঘর করতে পাঠাবেন না। অগত্যা দশরথ বিয়ে করা বউ নিয়ে ইলোপ করল। তারপর সুখে শান্তিতে ঘরকন্না শুরু। ছেলেপুলে হতে লাগল।
কিন্তু সুখ কপালে সইলে তো? দশরথ খেতি করে। পোয়াতি বউ খাবার নিয়ে আসে দুপুরে। এক দুপুরে এল না। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করে ক্লান্ত দশরথ কাজে ফিরবে, গাঁয়ের লোক এসে খবর দিল, বৌ পাহাড় থেকে পড়ে গেছে। পড়মরি ছুটে পাহাড়ের ঢাল গড়িয়ে রক্তমাখা বৌকে কাঁধে নিয়ে ৭০ কিলোমিটার পাহাড়ি পথ পেরিয়ে শহরের হাসপাতালে পৌঁছল মাঝি। ডাক্তারবাবুরা জানালেন, পথেই মারা গিয়েছে বৌ। শোকে দুঃখে ক্ষোভে রাগে পাগলপারা দশরথের মাথার ঠিক থাকল না। ঠিক করল ওই অমঙ্গুলে পাহাড়ের উপরেই প্রতিশোধ নেবে। পাহাড় ফাটিয়ে পাথর কেটে রাস্তা বানাবে, যাতে শহরে যাওয়া সহজ হয়। আর কোনও দশরথ যেন কখনও তৈরি না হয়। চিকিৎসার অভাবে আর কাউকে যেন ভালবাসার মানুষটিকে হারাতে না হয়।
[the_ad id=”266919″]
তারপরের ইতিহাস তো সবার জানা। কাগজে পড়া, টিভিতে দেখা। বাইশ বছরের অনন্ত সংগ্রামের গল্প। হার-না-মানা জেদের কাহিনি। বাইশ বছর। পুরো বাইশটা বছর ধরে একা গাঁইতি ছেনি বাটালি হাতুড়ি হাতে পাহাড় কেটে রাস্তা তৈরি করেছিল দশরথ মাঝি। বুকে তার ভালবাসার মশাল, চোখে তার প্রেমের ঘোর। ঘাম রক্ত পুঁজ হয়ে ঝরছে তার সব-হারানোর যন্ত্রণা। খরায় গ্রামের সব লোক তখন পালাচ্ছে। দশরথের বাবা বললেন, পায়ে পড়ি, দোহাই তোর, শহরে চল। এ কী পাগলামো শুরু করেছিস? দশরথের এক গোঁ। সবাই চলে গেলেও সে যাবে না পাহাড় ছেড়ে। যায়ওনি। গাছের পাতা খেয়ে, নালার জল খেয়ে একা পাহাড় কুঁদেছে বাইশটা বছর। ভালবেসে।
এ তো গেল জানা গল্প। কিন্তু ফৈজুল কাদরির গল্পটা? সে-ও দশরথের মতোই উত্তরপ্রদেশের এক প্রত্যন্ত গাঁয়ের পোস্টমাস্টার। গাঁয়ের নাম কাসের কালান, বুলন্দশহরের অদূরে। হাতে সামান্য চাকরি। ঘরে বৌ। আর বুকে তিরতির করে কাঁপা মাটির প্রদীপের মতো প্রেম। তাকে বাইরে থেকে দেখা যায় না, বোঝা যায় না, জানা যায় না। সেই পঞ্চাশের দশকেরই গল্প। তরুণ ফৈজুলের বিয়ে হল কিশোরী তাজামুল্লির সঙ্গে। ভাব হল, ভালবাসা হল, অনেক প্রেম-প্রতিশ্রুতির দেওয়া নেওয়াও হল নির্ঘাত। গোপনে গোপনে। অন্ধকারে, চুপিসাড়ে! সেসব কেউ জানতে পারেনি।

জানা গেল আটান্ন বছর পর, যখন তাজামুল্লির ইন্তেকাল হল। নিজের চাষের জমিতে বৌকে গোর দিয়ে ফৈজুল জানাল, সে তাজামুল্লিকে কথা দিয়েছে, শাহজাহান যেমন মুমতাজ়ের স্মৃতিতে তাজমহল বানিয়েছিলেন, বৌকে ভালবেসে তার স্মৃতিতে সে-ও বানাবে এক মিনি-তাজমহল। গাঁয়ের লোক তাজ্জব। কিন্তু ফৈজুলের মুখে কথাটি নেই। বৌয়ের ছবি হাতে করে, নিজের জমিজিরেত, বৌয়ের গয়না সব বেচে, চাকরি থেকে জমানো শেষ সম্বলটুকু দিয়ে তাজমহল বানাতে লাগল ফৈজুল।

খবর গেল মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। তিনি এসে ফৈজুলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাকে অর্থসাহায্য করতে চাইলেন। ফৈজুল পত্রপাঠ মানা করে দিল। তাজামুল্লির তাজে মন্ত্রীর টাকা ঢালবে? প্রাণ থাকতে নয়। মুখ্যমন্ত্রীকে সে বললে, ওই টাকায় মেয়েদের কলেজ গড়ে দিন গাঁয়ে। আমার তাজামুল্লির তাজে ও টাকা লাগবে না। তিন বছর ধরে টানা কাজ চলল। তৈরি হল ইট-কংক্রিটের তাজমহলের কাঠামো। কিন্তু টাকা সব শেষ।
নিঃস্ব ফৈজুলকে সাহায্য করতে এল গাঁয়েরই এক শ্রমিক আসগর। নিজের হাতে বানিয়ে দিল গম্বুজ, খিলান। এখনও অনেক পথ বাকি। নিঃস্ব ফৈজুল হিসেব কষেন, মার্বেল পাথর লাগাতে হবে, সবুজ ঘাসের গালচে বানাতে হবে, পুকুরটা বাঁধাতে হবে। কোথা থেকে আসবে এত টাকা? জানে না ফৈজুল। শুধু তাজামুল্লির ছবির দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে ভাবে, একদিন ঠিক শেষ করব…।
১৮৯১ সালে সরবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের চব্বিশ বছরের নবাগতা পোলিশ পদার্থবিদ মারিয়া স্কলোডোস্কার সাথে স্বল্পভাষী, উদীয়মান এক ফরাসী পদার্থবিদের যেদিন আলাপ হয়, তখন কেউ স্বপ্নেও ভাবেননি, যে বিজ্ঞানের ইতিহাসে এক যুগান্তকারী প্রেমগাথার অঙ্কুরটি সেদিন উপ্ত হল। এই পদার্থবিদদের সমগ্র বিজ্ঞানজগত চেনে মারি ও পিয়ের কুরি নামে।
পিয়ের বিয়ের প্রস্তাব দিলে মারি প্রথমে রাজি হননি, কারণ তিনি চেয়েছিলেন নিজের দেশ পোল্যান্ডে গবেষণা করতে। কিন্তু ক্র্যাকাও বিশ্ববিদ্যালয়ে তখন মহিলাদের গবেষণার অধিকার ছিল না। অতএব পিয়েরের প্রস্তাবে রাজি হন মারি এবং থেকে যান পারিতে, সরবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯০৩ সালে পিয়ের কুরি নোবেল প্রাইজের জন্য মনোনীত হন। কিন্তু মারির নাম সেই তালিকায় ছিল না। ক্ষুব্ধ পিয়ের জানান, মারির নাম নোবেলের জন্য নথিভুক্ত না হলে তিনি পুরস্কার নেবেন না। নোবেল কর্তৃপক্ষ বাধ্য হন মারির নামও তালিকাভুক্ত করতে। ফলতঃ মারি হন প্রথম নোবেলজয়ী মহিলা।
১৯০৬ সালে এক পথ দুর্ঘটনায় আকস্মিক মৃত্যু হয় পিয়েরের। জীবনসঙ্গীর বিচ্ছেদ যেন মারির সংকল্প আরো দৃঢ় করে দেয়। পিয়েরের জায়গায় তিনি হন সরবোর্নের প্রথম মহিলা অধ্যাপক। শুধু তাই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি বিশ্বমানের গবেষণাগার বানিয়ে তা উৎসর্গ করেন তাঁর আজীবনের প্রেম, পিয়েরকে।
থাইল্যান্ডের শ্যাডিল ডেফির গপ্পোটা অবশ্য একদম আলাদা। সে হতদরিদ্র নয়। নুন আনতে তার পান্তা ফুরোয় না। টেলিভিশনে কাজ করত। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গিয়ে আলাপ সারিন্যা অ্যান কামসুক-এর সঙ্গে। কলেজের প্রেম ঠিক যেমনটি হয়। তারপর চাকরি, জীবনে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর লড়াই… বিয়েটা কেবলই পিছিয়ে যাচ্ছিল। দশ বছর প্রেম করার পর অবশেষে ঠিক হল বিয়ের তারিখ। কিন্তু ‘আই ডু’ বলার সুযোগ আর হল না অ্যানের। বিয়ের ঠিক আগে মাত্র ২৯ বছর বয়সে গাড়ি দুর্ঘটনায় সে মারা গেল।

তছনছ হয়ে গেল শ্যাডিলের জীবন। সে ঠিক করে, মৃত অ্যানের হাতে আংটি পরিয়ে তাকেই বিয়ে করবে। তারপর কফিনে দেবে অ্যানের দেহ। যেমন কথা তেমন কাজ। সৎকারের দিন কালো টপ হ্যাট আর টাক্সেডো পরে শ্যাডিল। অ্যানের দেহে পরানো হয় সাদা ধবধবে ওয়েডিং গাউন। মৃত প্রেমিকার অনামিকায় হিরের আংটি পরিয়ে তার কপালে চুমু এঁকে দেয় শ্যাডিল। সারা বিশ্বে হইচই পড়ে যায় শ্যাডিলের কাণ্ডে। কিন্তু শ্যাডিল নির্লিপ্ত, নির্বিকার। সে শুধু বলে, একে প্রেমের জন্য আত্মত্যাগ, এইসব নাম দেবেন না দয়া করে। সময় থাকতে যে কাজ করা উচিত ছিল, তা না করে যে ভুল করেছি, শুধু তারই প্রায়শ্চিত্ত করলাম।
[the_ad id=”266918″]
বরিস কজ়লভ আর অ্যানার গপ্পোটা অবশ্য সিনেমায় দেখেছি আমরা বহুবার। ফিল্মি গপ্পো, কিন্তু গপ্পো হলেও সত্যি! গত শতকের চল্লিশের দশকে বিয়ে হয়েছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের বাসিন্দা বরিস আর অ্যানার। কিন্তু তেরাত্তির পেরতে না পেরতেই বরিসের ডাক আসে লাল ফৌজে ফিরে যাবার। বৌকে চুমো খেয়ে বাড়ি থেকে বেরনোর সময় কেউই ভাবেননি, ফের দেখা হবে অর্ধশতক পার করে।
কিন্তু বরিস চলে যাবার পরই অ্যানার পরিবারে নেমে আসে বিপর্যয়। অ্যানার বাবার বিরুদ্ধে আনা হয় দেশদ্রোহের অভিযোগ। সাইবেরিয়ার প্রত্যন্ত প্রান্তে সপরিবার নির্বাসন দেওয়া হয় তাঁদের। লাল ফৌজের ভয়ে অ্যানার মা তাঁদের নতুন ঠিকানা রেখে যাননি। ফলে বরিস ফিরে এসে দেখলেন অ্যানা কোত্থাও নেই। সাইবেরিয়ায় নিয়ে গিয়ে অ্যানার ফের বিয়ে দেয় তার পরিবার। বরিসও বৌ মারা গেছে ভেবে ফের বিয়ে করেন।

এভাবেই কেটে যায় অর্ধশতক। আলাদা আলাদা জীবন কাটান অ্যানা আর বরিস, কিন্তু একটি দিনের জন্যও কেউ কারও কথা ভোলেননি। বরিস অ্যানাকে উৎসর্গ করে একটা বই পর্যন্ত লিখে ফেলেন। তবু অ্যানার খোঁজ মেলেনি। তারপর সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙে, রাজনীতির পালা বদলায়। বয়স বাড়ে অ্যানার, বরিসের। ৬০ বছর পর, বরিস ফিরলেন নিজের গ্রাম বোরোভ্লায়াঙ্কায়, বাবা মায়ের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে। ঠিক সেই সময়ই নিজের পুরনো বাড়িতে কয়েকদিনের জন্য এসেছিলেন অ্যানা।
আচম্বিতে বরফঢাকা সাইবেরিয়ার প্রান্তরে দেখা হয়ে যায় দু’জনের। ষাট বছর পরেও মুহূর্তে চিনে নেন পরস্পরকে। কপালের বলিরেখা, চোখের অস্বচ্ছ দৃষ্টি – বাধা হতে পারেনি কোনও কিছুই। বরিস অ্যানাকে অনুরোধ করেন, তাঁকে নতুন করে বিয়ে করতে। রাজি হয়ে যান অ্যানাও। আশি বছরের বরিস আর অ্যানা নতুন করে গাঁটছড়া বাঁধেন। নতুন করে শুরু করেন সংসার।
[the_ad id=”270086″]
কাজেই, প্রেম যে অবাধ তার এত এত প্রমাণ দাখিল করা গেল নিঃসন্দেহে! কী মনে হচ্ছে? চিরন্তন, শাশ্বত, এসব বিশেষণ পুরনো লেপের মতো বাতিল করবেন, নাকি নতুন সাটিনের ওয়াড় জড়িয়ে আদরে রাখবেন? চয়েসটা যদিও আপনার, তবু প্রেম দিবসে হোক না একটু হাত ছোঁয়াছুঁয়ি, চোখ তাকাতাকি, নাক ঘষাঘষি! গোলাপ, চকোলেট, রঙিন খাম না-ই থাকল। থাকুক একটু নীরব নীলচে রোম্যান্স, হালকা হলুদ অনুরাগ, আর ফিকে লাল হাসি-রাগ-অভিমান! রোববারের দুপুরে হাওয়ায় হাল্কা শিরশিরানি আর ধোঁয়া-ওঠা মাংসের ঝোলমাখা গরম ভাতে জমে উঠুক ভ্যালেন্তি পুজো। আপনার, আমার, সব্বার।
*তথ্যঋণ: nydailynews, the telegraph uk ও অন্যান্য
*ছবি সৌজন্য: pixabay, facebook, wikipedia, dailymail.co.uk, hindustantime
লিখতে শিখেই লুক থ্রু! লিখতে লিখতেই বড় হওয়া। লিখতে লিখতেই বুড়ো। গান ভালবেসে গান আর ত্বকের যত্ন মোটে নিতে পারেন না। আলুভাতে আর ডেভিলড ক্র্যাব বাঁচার রসদ। বাংলা বই, বাংলা গান আর মিঠাপাত্তি পান ছাড়া জীবন আলুনিসম বোধ হয়। ঝর্ণাকলম, ফ্রিজ ম্যাগনেট আর বেডস্যুইচ – এ তিনের লোভ ভয়ঙ্কর!!
One Response
খুব ভালো কমপাইলেশন। ভ্যালেন্টাইন্স ডে নিয়ে এ অবধি সেরা লাগল। কত রিসার্চ! তবে সুপার হিরো দানা মাঝি!