(Poetry)
কোনও পাথেয় ছাড়াই হাজার ক্রোশের পথে পাড়ি দিলাম। লাঠিতে ভর দিয়ে পথ চলি। লাঠিটা প্রাচীন এক ঋষির। শোনা যায় কোনও এক মাঝরাতের চাঁদের আলোয় তিনি মহাশূন্যে বিলীন হয়ে যান। জৌকিয়ৌ আমলের হেমন্তে অষ্টমীর রাতে আমার যাত্রা শুরু। নদীর তীরে পড়ে থাকা আমার জীর্ণ কুঁড়েঘর ছেড়ে চললাম, বাতাসের শব্দ কেমন অদ্ভূত ঠাণ্ডা। (Poetry)
শুকনো হাড় মনে আমার
বুক চিরে কলিজায় লাগে
বাতাস
হেমন্ত
দশ বছর পরে এদোয় ফিরছি
পুরনো ভিটায়
ঘোড়ার পিঠে আধোঘুমে
যেন স্বপ্নে দেখা যায়
দূরে চাঁদ আর সকালের চায়ের ধোঁয়ার সারি
১
বৃষ্টি আর কুয়াশা
ফুজিয়ামা ঢেকে ফেলেছে
ভালোই লাগছে
২
পথের পাশে গোলাপ
একের পর এক ছিঁড়ে খাচ্ছে
একটা ঘোড়া
৩
ঘোড়ার পিঠে আধোঘুমে
যেন স্বপ্নে দেখা যায়
দূরে চাঁদ আর সকালের চায়ের ধোঁয়ার সারি
(Poetry)
৪
অমাবস্যার নিকষ আঁধারে
প্রাচীন গাছগুলোকে জড়িয়ে ধরছে
তেজী হাওয়ার বাহু
৫
নদীতে আলু ধুয়ে রাখছে
ওই মেয়েটিকে নিয়েও
সাগিয়ো কবিতা লিখতেন
৬
নরম অর্কিড ছুঁয়ে বসে আছে প্রজাপতি
ডানায় ডানায়
জ্বলে তার মিষ্টি ধূপের গন্ধ
(Poetry)
৭
আইভিলতা উঠেছে দেওয়াল বেয়ে
আর কয়েকটা বাঁশগাছ
ঝড়ের অপেক্ষায়
৮
হাতের মুঠোয় ধরা বরফের সুতো
আমার মায়ের পাকাচুল
গলে যাবে আমার চোখের জলের উত্তাপে
প্রাচীন মন্দির, আমার আদরের প্রিয়া
একবার তোমার ঘণ্টার স্বর
আমায় শুনতে দাও
৯
বাঁশের ঝাড়ের ফাঁকে ছোট্টো বাড়িটা
একতারার সুরের মতো ভেসে আসছে
ধুনুরির একটানা স্বর
১০
হাজার বছরের পাইন
অনাদি অনন্ত এক বিধানের মতো
কত শত ঋষি আর সকালের ফুল এর তলে ঝরে গেছে
(Poetry)
১১
প্রাচীন মন্দির, আমার আদরের প্রিয়া
একবার তোমার ঘণ্টার স্বর
আমায় শুনতে দাও
১২
শিশিরের ফোঁটা দিয়ে দিয়ে
জগতের সমস্ত ধূলো
একবার ধুয়ে দিতে চাই
১৩
সম্রাটের সমাধি মন্দিরে
বুনো ঘাস
ফেলে আসা দিন ফিরে আসে
১৪
হেমন্তের হিমেল বাতাস
মহান ইয়োশিতোমোর
হিমঠাণ্ডা হৃদয়ের মতো
(Poetry)
১৫
ঝোপঝাড়, মাঠ
এককালে এখানেই ফুওয়ার তোরণ ছিল
হেমন্তের হাওয়া বয়ে যায়
বাতাসের হাহাকার
উন্মাদ চিকুসায়ের মতো হেঁটে চলি
মাথার ভিতরে একটুকরো পাগলামি, ‘কবিতা’
১৬
অনেক স্বপ্নের শেষে আজও বেঁচে আছি
আমার চলার পথে
হেমন্তের বেলা পড়ে আসে
১৭
শীতের পিওনি ফুল
দূরে ডাহুকের ডাক
বরফের মাঝে কোকিল ডাকল কি?
১৮
ভোর
সাগরের জলে
রুপালি মাছের ঝাঁক
১৯
আগাছার মতো স্মৃতিগুলোও
আজ মৃত
সরাইখানায় একমুঠো ভাত খেলাম
২০
বাতাসের হাহাকার
উন্মাদ চিকুসায়ের মতো হেঁটে চলি
মাথার ভিতরে একটুকরো পাগলামি, ‘কবিতা’
২১
ঘাসের বালিশে শুয়ে
বৃষ্টির শব্দের মধ্যে শুনি
রাত পাহারার কুকুরের ডাক
২২
পাহাড় পেরিয়ে এসে
দেখলাম
ভায়োলেট ফুলের হাসিমুখ
আলোকময় দত্ত ২০১৭ সালে সিনিয়র প্রফেসর পদে সাহা ইনস্টিটিউট অফ নিউক্লিয়ার ফিজিক্স থেকে অবসর নেওয়ার পর রাজা রামান্না ফেলো হিসাবে সেন্ট্রাল গ্লাস অ্যান্ড সেরামিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটে তিন বছর অতিবাহিত করেন। বর্তমানে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের এমেরিটাস অধ্যাপক।