(Gour Goswami)
ছিলেন সে এক বাঁশিওয়ালা, গায়ের বর্ণ গৌর, নামেও গৌর। বাস ছিল, হ্যামলিন নয়, উত্তর কলকাতা। কাজ করতেন আকাশবাণীতে। তিনি প্রখ্যাত বংশীবাদক পণ্ডিত গৌর গোস্বামী। নিত্যানন্দ গোস্বামীর পঞ্চদশ বংশধর। আর এক প্রবাদ প্রতিম বংশীবাদক পণ্ডিত পান্নালাল ঘোষের সুযোগ্য শিষ্য। বাঁশের বাঁশির যে শাস্ত্রীয় ধারাটি বিগত পঞ্চাশ বছর ধরে বাংলায় প্রবহমান সেটির প্রাণপুরুষ গৌর গোস্বামী। এই দিনটি তাঁর ১০২ তম জন্মদিন। (Gour Goswami)
চলে যাই প্রায় পঞ্চাশ বছর পিছনে…
সবপেয়েছির আসরের ছোট্ট বাঁশিতে সা-রে-গা-মা শেখার পর এবং মেলা থেকে আনা একটি আড় বাঁশি পেয়ে আমি সেই সময় বাজারে উপলব্ধ সব ধরনের গান প্রবল বেগে বাজানো শুরু করেছি। সাল ১৯৭৪। মা শ্রীমতী রেখা চ্যাটার্জী, নিজে শাস্ত্রীয় সংগীতের শিল্পী হওয়ায় সেই সময় একজন উপযুক্ত গুরুর প্রয়োজন অনুভব করছিলেন। (Gour Goswami)
মা তখন কলকাতা আকাশবাণীর নিয়মিত শিল্পী। প্রতি দুই মাস পর পর অনুষ্ঠান করতে যেতেন। ইতিমধ্যে গৌরবাবুর নাম শুনেছি আর রেডিওতে বাজনাও শোনা হয় গেছে। সেইসময় একদিন আমাকে সঙ্গে করে সোজা চলে গেলেন পণ্ডিত গৌর গোস্বামীর কাছে। (Gour Goswami)

আমার স্পষ্ট মনে আছে, এখন আকাশবাণী কলকাতার ক্যান্টিনে যে টেবিলটায় বসে আমরা গল্প করি, ঠিক সেই জায়গাটায় আরও কিছু সহকর্মীর সঙ্গে বসেছিলেন সংগীতাচার্য গৌর গোস্বামী। মা তাঁকে গিয়ে বললেন “আমার ছেলেটাকে আপনার কাছে দেবো”। উনি একবার আমার দিকে দেখে আশ্চর্য হয়ে বললেন “এইটুকু পুঁচকে ছেলে বাঁশি বাজাতে পারে?”। আমার অকুতোভয় মা জননী বললেন “সঙ্গে বাঁশি আছে, যদি বলেন…!” (Gour Goswami)
“ঢুকেই বাঁ দিকে ওঁর ক্লাসঘর (এখনও আছে) তারপর ডান দিকে বড় আয়তকার উঠান এবং বড় ঠাকুরঘর, যেখানে রাধা গোবিন্দ, এবং শ্রী চৈতন্যের বিগ্রহ নিত্য পূজা হত।”
“আরে না না, বাজিয়ে দেখাতে হবে না, তবে আমি তো এত ছোট বাচ্চাকে শেখাই না! আমার ছাত্র গোপাল রায়- রানাঘাটে থাকে, ওর কাছে এখন বছর খানেক শিখুক, তারপর আমি না হয় রাগের তালিম দেবো”। সেই আমার শিক্ষা শুরু, ওঁর ছত্রছায়াতে। সেই সময় উনি music supervisor পদে কর্মরত। (Gour Goswami)
১৯৪২-এ উনি আকাশবাণীর নিয়মিত শিল্পি হন। ১৯৪৩ সালে অনুষ্ঠান পরিচালক সুনীল বসুর সহায়তায় ওখানে চাকরি পান। এর দু’বছর বাদে প্রখ্যাত দিলরুবা বাদক দক্ষিনামোহন ঠাকুর যখন আকাশবাণীর চাকরি ছাড়লেন তখন গৌরবাবুর উপরে পড়ল বিভিন্ন নাটক, সংগীত, বৃন্দবাদন ইত্যাদির সুর রচনার দায়িত্ব। ১৯৪৯ সালে পদোন্নতি হয়ে মিউজিক সুপারভাইসর। এখন আর ওই পোস্টটি নেই। ১৯৭৬-এ ওঁর শেষ দিন পর্যন্ত, ওই পদেই কর্মরত ছিলেন। (Gour Goswami)
জন্ম ১৯২২ এর ৪ আগস্ট W.C.Banerjee lane এর বাড়িতে। আমার বেশ মনে আছে, বেশ বড় বনেদি আমলের দোতলা বাড়ি। ঢুকেই বাঁ দিকে ওঁর ক্লাসঘর (এখনও আছে) তারপর ডান দিকে বড় আয়তকার উঠান এবং বড় ঠাকুরঘর, যেখানে রাধা গোবিন্দ, এবং শ্রী চৈতন্যের বিগ্রহ নিত্য পূজা হত। (Gour Goswami)
“আমার সেইসময় গৌর গোস্বামীর বাজনা বেশি ভাল লাগত। খুবই মিষ্টি, রোমান্টিক আর সহজ সরল।”
ওঁর দাদু বলাইচাঁদ গোস্বামী এবং বাবা বীরেশ্বর গোস্বামী শুধু পণ্ডিতই ছিলেন না, সঙ্গে খেয়াল-ধ্রুপদ গানেরও চর্চা করতেন। মেলা থেকে কিনে আনা একটা বাঁশের বাঁশি দিয়ে তাঁর বাজনা শুরু হয়। দাদা ব্রজেশ্বর গোস্বামীর বীণা, সেতার আর সুরবাহারে দখল ছিল। এই দাদাই তাঁর প্রথম গুরু। বাঁশির সাথে দিদিদের গানের শিক্ষক সতীশ চ্যাটার্জীর কাছে গান ও শিখতেন ছোট্ট গৌর। এই কারণেই যেদিন ওঁর বাড়ি প্রথমবার যাই দেখেছিলাম উনি কয়েকজন ছাত্রীকে গান শেখাচ্ছেন। সেই গানের কথা আমার মনে আছে এখনও- “এ মাটির গন্ধে আছে ভালোবাসা”। আমার আশ্চর্য লেগেছিল যে এই ভদ্রলোক বাঁশি তো বাজানই, তার সাথে এত ভাল গান করেন! হারমোনিয়ামও বাজাতে পারেন! (Gour Goswami)
তো যাই হোক, সেইসময় এবং আমি যখন বাজানো শুরু করলাম অর্থাৎ ১৯৭৪ সালে সবার ধারণা ছিল বাঁশি বাজালে T. B হয় এবং সামনের দাঁত পড়ে যায় ইত্যাদি ইত্যাদি। এটা গৌরবাবুর প্রতিবেশীরাও বলেছিলেন। এই কারণেই ৭০ এবং ৮০ র দশকে পশ্চিমবঙ্গে বাঁশি বাদকের সংখ্যা ছিল হাতে গোনা। (Gour Goswami)

ওঁর বাঁশি এবং পড়াশুনা চলতে থাকল। ম্যাট্রিক পাশ করে বিদ্যাসাগর কলেজে ভর্তি হন। এই সময় হারান দাদাকে। পণ্ডিত পান্নালাল ঘোষ ছিলেন দাদার বন্ধু, তাঁর কাছেও শিক্ষা চলছিল। কিন্তু বেশিদিন নয়। ভাগ্য অন্বেষণে মুম্বাই পাড়ি দিলেন পান্নাবাবু। অথচ শেখার ইচ্ছে- জানার ইচ্ছে প্রবল তাই প্রখ্যাত কণ্ঠ সংগীত শিল্পী শ্রী রামকিষন মিশ্রর কাছে শিখতে থাকলেন। এঁর কাছে প্রায় দশ বছর শিক্ষা নেওয়ার পরে উনি যান মাস্তান গামার কাছে উপশাস্ত্রীয় সংগীতের তালিম নিতে, সঙ্গে পান্নাবাবুর তালিমও চলছিল- যখন উনি কলকাতায় আসতেন। কোনও একটি যন্ত্রে, (সে বাঁশি, বেহালা, সেতার, সরোদ যাই হোক না কেন ) যদি technical skill টা আয়ত্ত করা থাকে তাহলে যেকোনও বিষয়ের গুরুর কাছ থেকে শিক্ষা নেয়া যায়। গৌরবাবুর বাজনায় গায়কী অঙ্গ বেশি ছিল। পান্নাবাবু আবার গান আর তন্ত্র বাদ্য দুটি ধারা মিশিয়ে বাজাতেন। আমার সেইসময় গৌর গোস্বামীর বাজনা বেশি ভাল লাগত। খুবই মিষ্টি, রোমান্টিক আর সহজ সরল। বেশ কয়েকবার রেডিও তে শুনেছি। দুঃখের বিষয় সেই বাজনার কিছুই সংরক্ষণ করা নেই। (Gour Goswami)
“আমার গুরুজী পণ্ডিত দেবপ্রসাদ ব্যানার্জী এবং গৌরবাবুর অন্যান্য ছাত্রদের বলে যেতেন “দেখো, গৌর যেন একটু রেয়াজ করে! ওর তো সামনে অনেক অনুষ্ঠান”
প্রথম বছর ছ’মাস পর পর দু’বার আমি গোপালদা আর মায়ের সঙ্গে গিয়েছিলাম ওঁকে দেখাতে- যে আমার শিক্ষা কেমন চলছে? উনি গোপালদাকে বলে দিতেন যে এর পর কী শেখানো হবে। ওঁর তখন কত ছাত্র! তাও যে উনি আমার মধ্যে কিছু একটা সম্ভবনা লক্ষ করে আমাকে guidence দিয়েছিলেন সে জন্য প্রতি মুহূর্তে ওঁকে কৃতজ্ঞ চিত্তে স্মরণ করি। (Gour Goswami)
ওঁর বাঁশি বাদন সম্বন্ধে কিছু টেকনিকাল বিষয় আলোচনা করি। যেহেতু উনি নিজে নিজেই বাজানো শুরু করেছিলেন সেই কারণেই কী না জানি না উনি বাঁ দিকে বাঁশি ধরতেন। আমিও বাঁ দিকেই বাজাই। এখনকার আরও অনেক প্রখ্যাত বাঁশি বাদক বাঁ দিকে বাঁশি ধরেন। আমাদের বাঁশিতে নিচে ডান দিকে একটা ছিদ্র থাকে যেটাকে seventh hole বলে এবং ওটা হাতের কড়ে আঙ্গুল দিয়ে বাজানো হয়। এবং এই ছিদ্রটা মন্দ্র এবং মধ্য সপ্তকের কড়ি মধ্যম এবং শুদ্ধ মধ্যম বাজাতে ব্যবহার হয়। উনি কিন্তু বাঁশিটাকে একটু ভিতরের দিকে বাঁকিয়ে অত্যন্ত কুশলতার সঙ্গে ওই মধ্যম দু’টো বাজাতেন ওই seventh hole টা ব্যবহার না করেই। রেওয়াজ করতেন, তবে কম এবং mood ভাল থাকলে। এটা ওঁর গুরু পান্নালাল ঘোষও জানতেন। সেই কারণে কলকাতা থেকে প্রতিবার যাওয়ার সময় আমার গুরুজী পণ্ডিত দেবপ্রসাদ ব্যানার্জী এবং গৌরবাবুর অন্যান্য ছাত্রদের বলে যেতেন “দেখো, গৌর যেন একটু রেয়াজ করে! ওর তো সামনে অনেক অনুষ্ঠান”। (Gour Goswami)
“গৌরবাবু ধমক দিয়ে বলতেন “চুপ কর, তোকে জ্ঞান দিতে কে বলেছে?” তারপরেই বলতেন “বাগেশ্রী বাজাব, মধ্যলয়ের বন্দিশ টা কী শিখিয়ে ছিলাম যেন?”
আমার গুরুজীর সাথে ওঁর বয়সের তফাৎ খুব বেশি ছিল না। দেবু কাকু সবসময় ওঁর সঙ্গে ছায়ার মতো থাকতেন। প্রায় প্রতিদিন অফিস থেকে ওঁর বাড়ি যেতেন, গান বাজনা করে বেশ রাতে ওই উত্তর কলকাতা থেকে হেঁটে ওঁর কেয়াতলা লেনের বাড়িতে ফিরতেন। সে সময় কাকুর আর্থিক অবস্থা ভাল ছিল না তাই ওটা ছিল বাস ভাড়া বাঁচানোর রাস্তা। গৌরবাবুর প্রায় সব অনুষ্ঠানে বাঁশিতে সহযোগিতা করতেন। ওই যে বললাম, গৌর গোস্বামী নিজের ইচ্ছায় বাজাতেন, তাই মাঝে মধ্যে সুরের সমুদ্রে অবগাহনের কারণে বিলম্বিৎ একতালের সমটা খুঁজে পেতেন না। আমার গুরুজী সেই মুহূর্তগুলোতে সম টা ধরে দিতেন। খুব মিষ্টি একটা সম্পর্ক ছিল দেবুকাকু আর গৌরবাবুর মধ্যে। সামনে কোনও অনুষ্ঠান থাকলে আমার গুরুজী ওঁকে বারে বারে মনে করাতেন “ওস্তাদ, একটু রেয়াজ করুন, সামনে অনুষ্ঠান”! গৌরবাবু ধমক দিয়ে বলতেন “চুপ কর, তোকে জ্ঞান দিতে কে বলেছে?” তারপরেই বলতেন “বাগেশ্রী বাজাব, মধ্যলয়ের বন্দিশ টা কী শিখিয়ে ছিলাম যেন?” HMV থেকে প্রকাশিত গৌর গোস্বামীর একটি মাত্র LP রেকর্ডে আমার গুরুজী ওঁকে বাঁশিতে সহযোগিতা করেছেন। তবলায় ছিলেন উস্তাদ আফাক হুসেইন খান। রেকর্ডের পিছনের Introduction-টাও দেবু কাকুর লেখা, এতে একদিকে বাগেশ্রী আর অন্য দিকে নট ভৈরব বাজিয়েছিলেন। এখন বাজনাটা Youtube-এ পাওয়া যায়। (Gour Goswami)
রাণাঘাটের বিখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ শিবকুমার চট্টোপাধ্যায়ের (গুলিন দা) সঙ্গে ওঁর ভাল পরিচয় ছিল। সেই গুলিনদার উদ্যোগে নগেন্দ্র সংগীত মহাবিদ্যালয়ের বাৎসরিক অনুষ্ঠানে বাজাতে যান রাণাঘাটে। যথারীতি অসাধারণ বাজান। ওখানেই উপস্থিত ছিলেন শৈলেন মুখোপাধ্যায়। একজন শাস্ত্রীয় সংগীত শিল্পী এবং কলকাতার তানসেন সংগীত সম্মেলনের অন্যতম আয়োজক। তিনি গৌরবাবুকে তাঁর অনুষ্ঠানে বাজাতে আমন্ত্রণ জানান। সেই শুরু। তারপর পশ্চিমবঙ্গ এবং রাজ্যের বাইরেও বহু শ্রোতারা তাঁর বাঁশির সুরে মুগ্ধ হয়েছেন। এমনকি পণ্ডিত পান্নালাল ঘোষকেও তিনিই প্রথম সুযোগ করে দেন কলকাতায় বাজানোর। (Gour Goswami)
মহালয়ার ভোরে আকাশবাণী কলকাতার সুপ্রসিদ্ধ গীতি আলেখ্য “মহিষাসুরমর্দিনী”তে, খেয়াল করে দেখবেন দুটি বাঁশি বাজে। তার একটি মধ্য সপ্তকের। যেটি বাজিয়েছিলেন শ্রী আলোকনাথ দে। আর “অখিল বিমানে”, “বিমানে বিমানে” আর “শান্তি দিলে ভরী” এই গানগুলির সঙ্গে যে মন্দ্র সপ্তকের বাঁশিটি আকাশ বাতাস অনুরণীত করে বেজে ওঠে, সেটি সংগীতাচার্য গৌর গোস্বামীর। এমনকি এই সংগীত রূপকের শুরু এবং শেষে যে শঙ্খধ্বনি শোনা যায় সেটিও গৌরবাবুর বাড়ির মন্দিরের শঙ্খ। ১৯৭৬ সালে হৃদরোগের কারণে এই মহান সংগীতজ্ঞের জীবনদীপ নিভে যায়। সেই বাঁশিই বেজে চলেছে গত একশো বছর ধরে, তাঁর শিষ্য শ্রী দেবপ্রসাদ ব্যানার্জী, গোপাল রায়, সমীর মজুমদার, অশোক ব্যানার্জী, স্টিভ গর্ন, মিকাডো এবং তাদের শিষ্য- প্রশিষ্যদের মাধ্যমে। আরও শতবর্ষ ধরে এই বাঁশি বাজুক, এই কামনা করি। (Gour Goswami)
ডিজিটাল ও মুদ্রিত মাধ্যমে সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
পণ্ডিত সুদীপ চট্টোপাধ্যায়, পণ্ডিত পান্নালাল ঘোষের ঘরানার অনুসারী একজন বাঁশি বাদক। বর্তমানে আকাশবাণী কলকাতায় কর্মরত।
4 Responses
বাহ এত সুন্দর বর্ণনা সব টা যেন চোখের সামনে দেখতে পেলাম
সুদীপবাবু সুলেখকও। ওনার বাঁশির মতই মিষ্টি লাগলো লেখাটা ।
প্রথমে আমার ভক্তি পূর্ণ প্রনাম নিবেদন করি। লেখাটি পড়ে অনেক সমৃদ্ধ হলাম। এধরনের লেখা একজন বাঁশির ছাত্র ও অনুরাগী কে অনেক মনোবল ও আশার আলো দেখতে সাহায্য করবে।
ওঁনাদের ব্যাপারে এগুলো জানতে পেরে অনেকটা ইচ্ছে আসে বাধাবিপত্তির মধ্যেও গান বাজনার চর্চা টা চালিয়ে যেতে। ওঁনাদের সময়ে কত কঠিন ছিল মানুষের জীবনযাত্রা, তা সত্ত্বেও তাঁরা তাদের ঘরানাটা চালিয়ে গেছেন। সেই তুলনায় আমরা তো এখন কত সহজে হাতের কাছে সব পেয়ে যায়। এটা আমাদের অবশ্য কর্তব্য তাঁদের এই সাধনাকে পরবর্তী কালেও জীবিত করে রাখা।