Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

কবিতার সঙ্গে বসবাস: নাগরিক আত্মার কেন্দ্রস্থল

জয় গোস্বামী

ডিসেম্বর ১৯, ২০২২

Abstration in poetry
Bookmark (0)
Please login to bookmark Close

কবিতার সঙ্গে বসবাস – কবিতাসত্য, কবিতাচিন্তা
কবিতার সঙ্গে বসবাস – জয়দীপ রাউতের কবিতা- ১
কবিতার সঙ্গে বসবাস – জয়দীপ রাউতের কবিতা – শেষ পর্ব
কবিতার সঙ্গে বসবাস – লিটল ম্যাগাজিন থেকে
কবিতার সঙ্গে বসবাস – বর্ণালী কোলের কবিতা
কবিতার সঙ্গে বসবাস – সুমন ঘোষের কবিতা

সুমন্ত মুখোপাধ্যায়ের কবিতা

একটি সন্ধ্যার ঘর। ঘরে, মেঝেতে, দেওয়ালে পিঠ দিয়ে বসে একজন কবিতা পড়ছেন। কবির পাশেই একটি ছোট টেবিলল্যাম্প। যিনি কবিতা পড়ছেন তাঁকে ধরেই ঘরে লোকসংখ্যা সাতজনের বেশি নয়। আমি সেই সাতজন শ্রোতার একজন। একঘণ্টা পার হয়ে গেল। তারপর কবি নিজেই তাঁর পাঠ বন্ধ করে আমাদের দিকে মুখ তুলে তাকিয়ে বললেন, অনেক অনেকক্ষণ বিরক্ত করেছি আপনাদের। আর নয়। 

প্রতিবাদধ্বনি উঠল। এলো আরও কবিতা পড়ার অনুরোধ। কিন্তু তিনি অটল রইলেন। 

সেই সন্ধ্যাটি আমার মনে চিরদিনের জন্য স্থায়ী হয়ে গেল। এই যে কবি— যাঁর বয়স পঞ্চাশে পৌঁছয়নি এখনও— লিখছেন প্রায় ত্রিশ বছর ধরে। এঁর বিষয়ে দু একটি কথা বলা দরকার। খুব কমই প্রকাশ পেয়েছে এর কবিতা। ত্রিশ বছরে তিনটি বই। দুটি পুস্তিকা, ষোলো পৃষ্ঠার। ইনি কিন্তু লিখে চলেছেন নিয়মিত। অথচ লেখা প্রকাশে একেবারেই উদ্যোগী নন। যে-বিশেষ সন্ধ্যাটির কথা বললাম, তা ছিল এক শীত ঋতুর সন্ধ্যা। এই দিন তিনি পড়ছিলেন প্রধানত তাঁর নবতম কাব্যগ্রন্থটির কবিতা। এই কাব্যগ্রন্থের নাম ‘অটোরুট’। এই বইয়ের কবিতাগুলি লেখা হয়েছে ২০০৯ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত বারো বছর ধরে। 

বারো বছর? এতদিন ধরে নিজের কোনও কবিতার বই না-ছাপিয়ে একটানা লিখে যেতে পারেন কেউ, আজকের দিনেও? আমার অভিজ্ঞতায় দেখেছি, লেখামাত্র তৎক্ষণাৎ নিজের কবিতা প্রকাশে উন্মুখ হয়ে থাকেন কবিরা। আমি নিজেও কি তার ব্যতিক্রম? এই প্রবণতা থেকে নিজেকে আমি মুক্ত করতে পারিনি। কিন্তু এই কবি পেরেছেন। যিনি কবিতা লিখতে এসেছেন আমার দু’দশক পরে। ফল কী হয়েছে এঁর ক্ষেত্রে? ফল হয়েছে এই যে, এ-কবির নাম কবিতাসমাজে তেমন পরিচিতি পায়নি। সেজন্যে অবশ্য তাঁকে দুঃখপ্রকাশ করতেও দেখিনি কখনও। বরং বাংলা কবিতার জগতে চিরস্থায়ী কিছু সম্পাদনার কাজ তিনি করেছেন ইতিমধ্যেই— যার জন্য গ্রন্থসম্পাদনার ক্ষেত্রে তাঁর নাম শ্রদ্ধার সঙ্গেই উচ্চারিত হয়। নিজের কবিসত্তাকে সম্পূর্ণ আড়াল করে রেখে বিপুল শ্রম ও নিষ্ঠা দ্বারা এই কবি সম্পাদনা করেছেন ভাস্কর চক্রবর্তীর দু’ খণ্ড কবিতসমগ্র। ভাস্করের গদ্যসমগ্র সম্পাদনার কাজেও এঁর ভূমিকাই অগ্রগণ্য। সেখানেই থেকে না থেমে থেকে ইনি প্রয়াত কবি প্রণবেন্দু দাশগুপ্তের দু’খণ্ড কবিতাসমগ্র সম্পাদনার কাজও সুচারুরূপে সম্পন্ন করেছেন। কিন্তু নিজের কবিতা? সে-বিষয়ে তাঁর প্রকাশ-কুণ্ঠা অপরিসীম। 

কবিতার ছোটবড় লাইনসজ্জার ভিতরে থাকে কবির স্বরের উচ্চাবচতা!

এই বিশেষ সন্ধ্যায় তিনি যে-বইটি থেকে কবিতা পড়লেন তার নাম ‘অটোরুট’— আগেই বলেছি। কিন্তু তারও আগের বইটির নাম কী ছিল? সেই বইয়ের নাম ‘কালকেতুর শহরে’। এই দুটি নাম থেকেই বোঝা যায় যে আজন্ম এই কলকাতা শহরে বাস করার সূত্রে আমাদের কবির রচনার কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছে এই মহানগরী। পথে পথে হেঁটে বেড়াবার, হাসপাতাল হাসপাতালে ঘুরে বেড়াবার, বাইপাসের ধার দিয়ে দ্রুতগতির যানে ছুটে বেড়াবার অভিজ্ঞতার পাশাপাশি রাস্তার মাঝখানে একেবারে একা দাঁড়িয়ে থাকার একটি নাগরিক আত্মার কেন্দ্রস্থল তাঁর কবিতায় স্থাপিত। সেদিন তাঁর পাঠ শুনে বুঝতে পারলাম, কবিতার স্বরের ভেতর তিনি যা লুকিয়ে রাখেন, তা হল এক সাংকেতিক ছদ্মবেশ। কবিতার ছোটবড় লাইনসজ্জার ভিতরে থাকে তাঁর স্বরের উচ্চাবচতা। প্রচণ্ড উত্তপ্ত তোলপাড় করা এক নাট্যসঙ্ঘাত এই কবি ধরে রেখে দেন ছোট ছোট, কখনও বা ছোটবড়, আবার কখনও একটি লম্বা লাইনের পরেই এক সংক্ষিপ্ত পঙক্তির সংস্থাপনে। আজ যখন পড়ছেন, তখন ওই তীব্র তোলপাড়, ওই উথালপাথাল নাট্যসঙ্ঘাত তাঁর সংযত স্বরের মধ্যে দিয়ে ধরতে পারছি আমার কানে। পুরো এই শহরটা কি সারাক্ষণ তোলপাড় করছে না? দৌড়ে বেড়াচ্ছে না? বিভিন্ন সংলাপে সংলাপে বিদীর্ণ হয়ে যাচ্ছে না কি এই মহানগরের মন? সেই সংক্ষুব্ধ ঝড়ের মধ্যে একাকী এক কবিপ্রাণ ভ্রমণরত। সে ভ্রমণে ধরা পড়ছে শ্মশান, লোহার শিক, কালু ডোম, বাজারের পাগল, আবার হাসপাতালে শুয়ে থাকা নিজের বাবা। একান্ত নিজস্ব পরিবার আর এই বিরাট ও প্রত্যহ নিজের সীমানা ছাড়িয়ে বড় হয়ে যাওয়া কলকাতা নামক ক্রমপ্রসারিত ইউনিভার্সের প্রতিটি টুকরো ধরে রেখে দিচ্ছে যেন মহাকাশে পরিক্রমাকারী গ্রাহকযন্ত্রের মতো এই কবিতাগ্রন্থ। 

বড় কবি কাকে বলে? যিনি মঞ্চে মঞ্চে ডাক পান সপ্তাহে তিন-চারটি সন্ধ্যায়? যিনি পরপর প্রকাশ করে চলেছেন কাব্যপুস্তক, এই আমারই মতো? এবং আমারই মতো ‘মালতীবালা’, ‘মেঘবালিকা’, ‘টিউটোরিয়াল’ প্রভৃতি কবিতার পাঠে বাচিক শিল্পীরা মাতিয়ে দিচ্ছেন শ্রোতাদের? ভবিতব্য এমনই যে এইসব কাহিনিমূলক কবিতার দ্বারা আমার মতো কেউ কেউ সহজ জনপরিচিতি পেয়ে যান। ঘটনাচক্রে বাচিক শিল্পীদের কণ্ঠে উঠেছিলাম বলে আমার নাম আজ অনেকের কাছেই জানাশোনা। কিন্তু ওই ‘অটোরুট’ কাব্যগ্রন্থের কবির কবিতাপ্রাণ মঞ্চে দাঁড়িয়ে যদি উচ্চারণ করতে হয়, তাহলে দরকার হবে এই কবিকেই, যিনি নিজে শোনাবেন তাঁর নিজের রচনা। না, মঞ্চে নয়। ছোট একটি ঘর দরকার এঁর মূল স্বরকেন্দ্রকে হৃদয়ঙ্গম করবার জন্য। কেননা এই কবি ইচ্ছে করেই তাঁর কবিতার অন্তর্গুঢ় হৃৎস্পন্দনের ধাক্কা কাব্যশরীরের মধ্যে লুক্কায়িতভাবে বহমান রাখেন— এক একটি কবিতার প্রত্যেকটি লাইনকে যদি কবিতার ধমনী বলে বিশ্বাস করি— তাঁর এই ‘অটোরুট’ কাব্যগ্রন্থ পড়তে গেলে দেখব— প্রতিটি ধমনীর মধ্যে ধাবিত রক্তবেগ যেমন মানবশরীররে বাইরে দাঁড়িয়ে দেখা যায় না, অথচ যা মানবশরীরকে জীবন্ত ও সচল রাখে— এই কাব্যগ্রন্থের প্রত্যেকটি লেখাই সেইভাবে ধমনীর রক্তবেগকে সংগুপ্ত রেখে প্রতিটি কবিতাকেই প্রাণবান ও গতিময় করে তুলেছে। 

আমার স্বাস্থ্য এখন আর প্রতিটি কবিতার ভিতরে যা অনুভব করছি তাকে লেখবার মতো শারীরিক সামর্থ্যের আনূকুল্য আমাকে দিচ্ছে না। তাই সামান্য পরিচয়মাত্র তুলে ধরবার চেষ্টা করছি এই গদ্যের দ্বারা, যা আসলে ‘অটোরুট’ নামক এই মুহূর্তের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাব্যগ্রন্থের উপযুক্ত সম্মানপ্রদানে ব্যর্থই হচ্ছে। তবু বলতে চাই যে এই ‘অটোরুট’ বইয়ের মধ্যে নিহিত আছে এক স্পন্দমান গর্জন— যে-গর্জনে চালিত এই মহাশহর, তার বিচিত্র জীবনযাত্রা, ছোট ছোট আঁচড়ে ফুটে ওঠা এক একটি চরিত্রের আভাস, নিজের রুদ্ধকান্না, একান্ত স্নেহসিঞ্চন, বাৎসল্য— পাশাপাশি এই মহাশহরের মধ্যে ঘুরে বেড়ানো শয়তান ও দেবদূত।

abstract cityscape
পুরো এই শহরটা কি সারাক্ষণ তোলপাড় করছে না?

এই ‘অটোরুট’ বইয়ের কবিতাগুলি লিখেছেন কবি সুমন্ত মুখোপাধ্যায়। এই বই প্রকাশ করেছে ‘একলব্য’ নামক এক নবীন প্রকাশন সংস্থা। পাঠক যদি এই বই হাতে নিয়ে পড়তে শুরু করেন, তাহলে তাকে একবার নামিয়ে রেখেই আবার তুলে নিতে হবে পরপর কয়েকটা দিন— একথা ঠিক। আমি দৃষ্টান্তস্বরূপ একটি কবিতার কথা বলছি। পাঠক ভেবে দেখুন, এ কবিতা কি একবার পড়ে সরিয়ে রাখা যায়? 

রাক্ষস 

মানুষ মানুষকে একদিন খাবে ঠিকই
খিদে নয়, লোভে

মার্কস-এর কথা কি? ক্লদ লেভি স্ত্রোস? 

বিড়ির দোকানে আমি দাঁড়িয়ে শুনেছিলাম
বাজারে-পাগল বিড়বিড় করছে একা: 

‘কুসুম কুসুম জল মানুষের মাংস ফেলব
ধোঁয়া উঠবে কাঁচা খাব’

পনের বছর

গনগনে আজব বারবেলা

সেই জ্বালা সত্যি হতে হতে দিন গেল

রাতের রাক্ষস রোডে বেরিয়েছে

যাকে পারবে তুলে খেয়ে নেবে।

পাঠক লক্ষ করুন: ‘মার্কসের কথা কী? ক্লদ লেভি স্ত্রোস?’ এর ঠিক পরেই আসছে ‘বাজারে-পাগল’-এর বিড়বিড় করে বলা কথা। মহান চিন্তকদের প্রসঙ্গের গায়েই এসে ধাক্কা খাচ্ছে বাজারে ঘুরে বেড়ানো উন্মাদের স্বগতোক্তি। এ কি প্রত্যক্ষ নাট্যব্যবহার নয়? অথচ কোথাও কোনও উচ্চঘোষণাস্বর নেই। নেই নাটুকেপনা। 

মার্চ ২০১৪ 

‘ফ্যাসিস্টরা যখন আসে, এইরকম চিহ্ন দেখা যায়।’
প্রশান্ত, প্রশ্নটা হল ফ্যাসিস্টরা কোত্থেকে আসে
যায়-ই বা কোথায়। এই অতিকায় বাড়ি মাঠের ভিতর
থেকে যখন লাফিয়ে উঠেছিল নিউটাউন নিউ ইয়র্ক
মুম্বই নয়ডায় ফ্যাসিস্টরা কোথায় বসেছিল?
আধখানা কামানো মাথা, বর্ডারে হাতপা বাঁধা
চোখের ভেতর থেকে ক্ষুর ফ্যাসিস্ট রুল ফ্যাসিস্ট
ভারতবর্ষের ম্যাপ ফ্যাসিবাদ নয়! পতাকা ঘুমিয়ে
আছে বিকেল পাঁচটায়। রামদণ্ডতলে রামপাখি
কনাট প্লেস থেকে এই কলকাতা আরও রাস্তা বাকি
আমরা কতটা এলাম? ফ্যাসিস্টরা বাণ্ডিল বেঁধে
নতলিঙ্গে ঘুমোচ্ছে যখন, প্রশান্ত, প্রশ্নটা হল
এবাজার গণতন্ত্রে কে আমাকে ডাকল
আমি জেগে উঠলাম

আমাদের মনে পড়তে পারে যে উদ্র হিন্দুত্ববাদী কেন্দ্রীয় সরকার যে-নির্বাচনের মাধ্যমে দিল্লিতে প্রতিষ্ঠিত হবে, সেই নির্বাচনের মাস দুয়েক আগে এই কবিতা লেখা। প্রবহমান অক্ষরবৃত্ত ছন্দের প্রবল গতিতে এই কবিতা চলছে। এর মধ্যে ‘আধখানা কামানো মাথা, বর্ডারে হাতপা বাঁধা’ এই চিত্রে এক্ষুণি নিহত হতে চলা যুদ্ধবন্দিদের কথা আমাদের মনে পড়ে। ‘ক্ষুর ফ্যাসিস্ট রুল ফ্যাসিস্ট/ ভারতবর্ষের ম্যাপ ফ্যাসিবাদ নয়!’ এখানে ‘ক্ষুর ফ্যাসিস্ট রুল ফ্যাসিস্ট’কে কীভাবে আটমাত্রায় ধরিয়ে দেওয়া হয় দেখে বিস্ময় লাগে। ‘ক্ষুর ফ্যাসিস্ট রুল ফ্যাসিস্ট’ এই আটমাত্রাকে দ্রুত পড়ার সময় চাবুক মারা এবং ফ্যাসিস্টবাহিনীর কুচকাওয়াজের কমান্ড মনে পড়ে। এবং এই আটমাত্রার মধ্যে একটি সংঘর্ষ উপস্থিত। বাইরে থেকে তা ছন্দের মাত্রার সংঘর্ষ— কিন্তু এর অন্তর্বস্তু যে কোনও শাসকের চূড়ান্ত খবরদারি মনে করায়। এই সংঘর্ষের এক শীর্ষ পরিণতি আসে যখন কবিতার শেষে আমরা দেখি: ‘এ বাজার গণতন্ত্রে কে আমাকে ডাকল/ আমি জেগে উঠলাম!’ 

কেন বলছি সংঘর্ষের শীর্ষ? কারণ পাঠকমাত্রেই বুঝতে পারছেন শঙ্খ ঘোষের বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ ‘গান্ধর্ব কবিতাগুচ্ছ’-এর প্রবেশক কবিতার প্রথম লাইন হল: ‘কে আমাকে ডাকল আমি জেগে উঠলাম।’ শঙ্খ ঘোষ অক্ষরবৃত্তে একটি পুরো বই লিখলেন— তার প্রবেশক কবিতাটিতে রাখলেন স্বরবৃত্ত ছন্দ। আর ‘মার্চ ২০১৪’  কবিতার লেখক প্রবহমান অক্ষরবৃত্তে চলচে চলতে নিজের কবিতার শেষ লাইনে ঢুকিয়ে নিলেন শঙ্খ ঘোষের গান্ধর্ব কবিতাগুচ্ছ-এর প্রথম লাইনটিকে, যা স্বরবৃত্তে রচিত। ‘মার্চ ২০১৪’ কবিতাটির কোথাও ছন্দপতন হল না। মনে হচ্ছে যে অক্ষরবৃত্তেই পড়ছি পুরোটা। 

কিছুকাল আগে, ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মহাকাশে স্থাপিত একটি গ্রাহকযন্ত্রে ধরা পড়েছে যে ১৫০ লক্ষ বছর পূর্বে মহাজগতের দূরতম কোনও স্থানে দুটি ব্ল্যাকহোল পরস্পরে ধাক্কা খেয়ে এক দেহে মিশে গিয়েছিল। সেই সংঘর্ষ থেকে উদ্ভূত তড়িৎ চৌম্বকীয় তরঙ্গরাশি এতদিন ধরে দৌড়তে দৌড়তে পৃথিবীর উপর দিয়ে চলে যাবার সময় মহাকাশে রাখা গ্রাহকযন্ত্রে ধরা পড়ে। এও সেইরকমই! এই সংঘর্ষের কথা নাসার বিজ্ঞানীরা জানতে পেরে একটি সাংবাদিক সম্মেলনে জানান যে আইনস্টাইনের মহাকর্ষ বলের সূত্রটির একটি প্রত্যক্ষ প্রমাণ এতদিনে পাওয়া গেল। কবিতাও একে অপরকে আকর্ষণ করে এক মহাকর্ষ বলের দ্বারাই। যিনি গৌণ কবি, তিনি সহজে অধিকতর শক্তিমান পূর্বতন কবির দ্বারা প্রভাবিত হয়ে পড়েন। আর যিনি স্বতন্ত্র ব্যক্তিত্বসম্পন্ন কবি, তিনি সেই পূর্বতনের কাব্যোক্তিকে নিজের প্রয়োজনে বাঁকিয়ে ধরে আপন কবিতায় সচেতন ব্যবহারের দ্বারা নতুন অর্থ নিষ্কাশন করে নেন। ‘মার্চ ২০১৪’ নামক কবিতায় তেমনই ঘটেছে। শঙ্খ ঘোষের ‘গান্ধর্ব কবিতাগুচ্ছ’ বইয়ের প্রবেশক কবিতার প্রথম লাইন ‘মার্চ ২০১৪’ কবিতায় এসে পরিগ্রহ করল নতুন অর্থ।

Space
কবিতাও একে অপরকে আকর্ষণ করে এক মহাকর্ষ বলের দ্বারাই…

এই কবি, সুমন্ত মুখোপাধ্যায়, তাঁর ‘অটোরুট’ বইয়ে কয়েকটি বিভাগ রেখেছেন। একটি বিভাগের নাম ‘অটোরুট’— অন্যটি ‘জড়ভরত’ এবং শেষ পর্যায়ের নাম ‘হ্যাপি ভ্যালি’। পাঠককে অনুরোধ করব এই কবিতার বই কলেজ স্ট্রিট থেকে সংগ্রহ করে পড়বার জন্য। একা ঘরে বসে পাঠ করা। তাহলে এই নীরব কবিতার অন্তঃসার ধীরে ধীরে ফুটে উঠবে যিনি পড়ছেন তাঁর মনে। এই অতীব গুরুত্বপূর্ণ বইটি নিয়ে কোথাও একটিও আলোচনা চোখে পড়েনি গত একবছরে। এরকম হয়। সাহিত্যজগৎ এরকম অভিজ্ঞতা বারবারই ধরে রাখে। ১৯৬৭ সালে প্রকাশিত বুদ্ধদেব বসুকৃত ‘হ্যেল্ডার্লিন’-এর কবিতার অনুবাদ-ভূমিকা-টীকা সম্বলিত গ্রন্থটি এবং ১৯৭০ সালে প্রকাশিত বুদ্ধদেব বসুরই অনুবাদ-ভূমিকা-টীকা সংযুক্ত রাইনের মারিয়া রিলকের কবিতাগ্রন্থদুটি খুবই মূল্যবান হয়ে আছে আমাদের কাব্য সাহিত্যের ইতিহাসে। প্রথম বইটি প্রকাশের সাতাশ বছর পর এবং দ্বিতীয় বইটি প্রকাশের চব্বিশ বছর পর বুদ্ধদেব বসুর পঞ্চম খণ্ড কবিতাসমগ্রের মধ্যে এই বইদুটি অন্তর্ভুক্ত হয়। সেই পঞ্চম খণ্ড সম্পাদনা করেন বুদ্ধদেব বসুর ছাত্র বিশিষ্ট কবি নরেশ গুহ। এই খণ্ডের গ্রন্থপরিচয় অংশে কবি নরেশ গুহ একটি বাক্য লিখেছিলেন হ্যেল্ডার্লিন ও রিলকের কবিতার বুদ্ধদেবকৃত অনুবাদগ্রন্থদুটি বিষয়ে। কী লিখেছিলেন তিনি? তুলে দিচ্ছি অবিকল: ‘হ্যেল্ডার্লিন ও রিলকে থেকে করা অনুবাদগ্রন্থ দুটির কোনও সমর্থ আলোচনা হয়েছে বলে জানা যায় না।’  

বুদ্ধদেব বসুর এই পরম উচ্চতাসম্পন্ন দুটি গ্রন্থের ক্ষেত্রে যদি এই নিয়তি নির্দিষ্ট করে থাকেন বাংলা কাব্য আলোচকরা, তাহলে নবীন প্রজন্মের কবি সুমন্ত মুখোপাধ্যায়ের ‘অটোরুট’ কাব্যগ্রন্থ সম্পর্কে নীরবতা কি খুব বিস্ময়কর? আমিও পুনরায় বলি, আমার স্বাস্থ্যের কারণে এই বইটির যথাযোগ্য সমাদর ও সম্মান আমার এই আলোচনায় দিতে পারলাম না। কারণ মন যতটা চলে শরীর অনেক সময়ই ততদূর যেতে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। সুমন্তরই একটি কবিতা উল্লেখ করে তার উদাহরণ দিই। 

স্রোত

আমাকে বেঁধো না তুমি
বলে দেখছি সুতোর রঙিন স্রোত
আকাশ গঙ্গায় বয়ে যাওয়া

এখানে ওখানে গিঁট
জটের পাহাড়

আমাকে খুলো না তুমি
বলে সুতো আবর্তে উধাও

লেখা বলতে এই সবই
ললাট লিখন। 

লেখা যে লেখকের কথা শোনে না, তারই নিজের ইচ্ছেমতন অবচেতনের চাপে অগ্রসর হয় অনেক সময়ই নিজের লেখকজীবনে তার প্রমাণ পেয়েছি। সুমন্তও পেয়েছেন— তারই প্রমাণ উপরের স্রোত কবিতাটি।

‘অটোরুট’ নামক এই কাব্যগ্রন্থ একদিন কেবল ব্যক্তিগত সম্পর্কসূত্রে জানাশোনা কবিসমাজের বৃত্ত ছাড়িয়ে সত্যকার একাগ্র পাঠকের শ্রদ্ধালাভ করবে, এই বিশ্বাস নিয়ে আজকে কবিতার সঙ্গে বসবাস সম্পূর্ণ করি। 

পুনশ্চ: এই আলোচনাটি শেষ করার পর মনে হল আরও দুটি কবিতা নিয়ে সামান্য দু’চার কথা না বললেই নয়। প্রথম কবিতাটি নীচে দিলাম: 

২০১৪

আঙুল উঠেছে চাপ দিতে
চোখে ছাপা ভাষা

ফুলে ফুলে পর্ণে পুঞ্জে হাতে হাতে
কবেকার পোকা

এরই নাম গণতন্ত্র

আমি তোর নাম বলব ওর সমর্থন 

তুই ওর নাম বলবি আমি সমর্থন

ও আমার নাম বলবে

ঘুণ সমর্থন

খুন সমর্থন মনে পড়ে

এক যুগ পার হল
আমার মরবার পরোয়ানা
দেশ সমর্থন করেছিল

পাঠক, জানি না ভুল বলছি কিনা, এই কবিতা পড়ে আমার মনে হচ্ছে কয়েক মাইল বিস্তৃত এক জলাধারের মধ্যে আমি আবদ্ধ, যে-জলাধারের চতুর্দিক তো বটেই, মাথা পর্যন্ত ঢাকা— অথচ এই বিশাল জলট্যাংকের ভেতরে কোনও অদৃশ্য উৎস থেকে প্রবল বেগে হাওয়ার ঝড় ঢোকানো হচ্ছে। ফলে মাথাঢাকা সেই প্রকাণ্ড জলপাত্রে ঢেউ উঠছে তোলপাড়, আমি ওলোটপালোট খাচ্ছি। এ-কবিতাটিও আমাদের এখনকার ভারতবর্ষের রূপ। এখানে ‘সমর্থন’ কথাটি বারবার আসছে এবং বারবার কবিতার মধ্যে এসে পড়ছে স্পেসের প্রয়োগ। ওই স্পেস বা ফাঁকা জায়গাটি হচ্ছে আমাদের দেশের ভেতরকার গণতন্ত্রবাহিত ফাঁকগুলি, যার মধ্যে দিয়ে অন্যায় ও দুর্নীতি ঢোকে। অত্যাচার ঢোকে। ঢোকে খুন। এখানে এই কবিতার আশ্চর্য ক্ষমতার পরিচয় রেখেছেন আগে পরে দুটি স্পেস রেখে তার মধ্যে ‘ঘুণ সমর্থন’ কথাটি বসিয়ে। এই ‘ঘুণ’ শব্দ কোথা থেকে এল? গণতন্ত্রের ঘুণ থেকে। কারণ এর ঠিক পরেই প্রযুক্ত হবে ‘খুন’ কথাটি। অসামান্য শৈল্পনৈপুণ্য এখানে ধরে রাখল আমাদের তথাকথিত গণতান্ত্রিক দেশে বাস করবার দমবন্ধ নিরূপায়তা। একেই বলে কবির মার। 

এরপর আরও একটি কবিতার উল্লেখ আমাকে করতেই হবে, যার ফলে পাঠক বুঝবেন আমাদের এই কবি, সুমন্ত মুখোপাধ্যায়, শুধু ভোট, গণতন্ত্র, খুন— এখানেই থেকে থাকেননি। যদিও একটা জিনিস পাঠক নিশ্চয়ই লক্ষ করেছেন, আগের কবিতায় যখন কবি প্রথম ‘খুন’ শব্দটি নিয়ে এলেন, তখন তা অপর নিরপরাধীদের অবিরাম খুন হয়ে যাওয়ার দিকেই অঙ্গুলিনির্দেশ করছিল। কিন্তু কবিতার শেষ দুটি লাইনে এসে অপরলোকের বারংবার খুন হওয়া রূপান্তরিত হল নিজেরই খুন হয়ে যাওয়ায়।

কবিতাটির নাম ‘২০১৪’। শেষ স্তবকের প্রথম লাইন ‘এক যুগ পার হল’। এই বাক্যটি পাঠককে অনুধাবন করতে বলি। কবিতার শেষ দুটি লাইন তাহলে তার নিজের স্বরূপ নিয়ে জ্বলজ্বল করে উঠবে স্তবকের প্রথম লাইনটির অমোঘ স্থাপনায়। শেষ দুটি লাইন হল: ‘আমার মরবার পরোয়ানা/ দেশ সমর্থন করেছিল’। আবার ফিরে যাই শেষ স্তবকটির প্রথম লাইনে। কী বলছে সে লাইন? ‘এক যুগ পার হল’। কবিতাটির রচনাসময় ২০১৪। এক যুগ পার হল মানে বারো বছর অতিবাহিত হয়েছে। বিদ্যুতের মতো আমার মনে ঢুকে পড়ে ২০১৪-র বারো বছর আগে এসেছিল ২০০২ সাল। যে ২০০২ সালে গুজরাতে উগ্র হিন্দুত্ববাদী দলগুলি মাত্র তিনদিনে ৭৯০ জন মুসলিম নারী-পুরুষ-শিশুকে খুন করে। এইবার দেখুন ‘খুন সমর্থন মনে পড়ে’ বাক্যটির আগেপরে স্পেস রেখে বাক্যটিকে একাকী ভাসিয়ে রাখা কী সাঙ্ঘাতিক অর্থ পরিবাহী হয়ে উঠল! এবং ওই ৭৯০ জন মুসলিম নারী-পুরুষ-শিশুর হত্যা এক কেন্দ্রীয় ‘আমি’ হয়ে উঠে বলে দিল ‘আমার মরবার পরোয়ানা/ দেশ সমর্থন করেছিল’। এই হল বড় জাতের কবিত্বের প্রমাণ। 

এবার আমার আলোচনার সর্বশেষ কবিতাটিতে এসে পৌঁছেছি। 

লঘু গুরু

কোথায় জড়ানো সুতো বেয়ে
তুমি নেমে যাচ্ছ আমার বিলোপ

ঢাল বেয়ে উঠে আসা মেঘে আমি
এবার চায়ের কাপে ঠোঁট লাগালাম

সূর্য থেকে চাবুক বেরিয়ে এসে
লকলক করছে এই ভোরবেলা পৃথিবীর গায়ে

থেমে থাকবো শুয়ে থাকবো
প্রভু আর দাসের গুঞ্জন ভোরবেলা

গুরু অবসাদ আজ লঘুতে লেগেছে

ঘুম থেকে ছেড়ে আসছে ট্রেন

শুধু একটা কুকুর পায়ের নীচে নিয়ে কাল
সারারাত আকাশে ঘুরলাম

যদি একটা কুকুর পায়ের নীচে নিয়ে আমি
একা একা আকাশে ঘুরতাম

কবিতাটি এগিয়েছে প্রধানত দু’লাইনের একক অবলম্বন করে। শুধু মাঝখানে এক জায়গায় দুটি লাইনের একক ভেঙেছে এক লাইন এক লাইন করে। কবিতার শুরুতে আমরা দেখতে পাই এই কথা: ‘কোথায় জড়ানো সুতো বেয়ে/ তুমি নেমে যাচ্ছ আমার বিলোপ’। লাইনের শেষে কিন্তু কোনও জিজ্ঞাসাচিহ্ন নেই। কারণ এই কবি অত্যন্ত সংযমী। শুধু শব্দ ব্যবহারে নয়, যতিচিহ্ন ব্যবহারেও। ‘কোথায়’ শব্দটি থাকার জন্য বাক্যটিতে আমাদের জিজ্ঞাসাচিহ্ন প্রয়োজন হচ্ছে না। নিজে লুপ্ত হয়ে যাওয়ার কথা কবিতাটির সূচনায় আছে। তারপরেই দেখা দিচ্ছে এক সকাল। কিন্তু সকাল বললেই যে প্রসন্নতা, যে স্নিগ্ধ আবহাওয়ার রেশ ছড়িয়ে পড়ে, এখানে ইচ্ছে করেই কবি তাকে অনুপস্থিত রেখেছেন। বদলে আসছে এক ক্রূরতা। সকাল হবার সঙ্গে ক্রূরতার যোগ আমি ইতিপূর্বে বাংলা কবিতায় কোথাও খুঁজে পেয়েছি কিনা মনে পড়ছে না। ‘সূর্য থেকে চাবুক বেরিয়ে এসে/ লকলক করছে এই ভোরবেলা পৃথিবীর গায়ে’— এরকম কোনও সকাল আমি আমার দুর্বল স্মৃতি অনুযায়ী বাংলা কাব্যে কোথাও দেখিনি। কিন্তু এই কবিতা, এই নিষ্ঠুর ও তীব্র সকালের কবিতা, শেষ হচ্ছে এক আশ্চর্য রাত্রির বিস্তারে। 

শুধু একটা কুকুর পায়ের নীচে নিয়ে কাল
সারারাত আকাশে ঘুরলাম

যদি একটা কুকুর পায়ের নীচে নিয়ে আমি
একা একা আকাশে ঘুরতাম 

ওপরের চারটি লাইনে আমরা এক জাগ্রত কল্পনার প্রয়োগ দেখছি। পায়ের নীচে কুকুর নিয়ে সারারাত আকাশে ঘুরে বেড়ানো? এই পরাবাস্তব চিত্রের মধ্যে এসে মিশছেন মহাভারতের যুধিষ্ঠির আর তাঁর সঙ্গী সারমেয়। অথচ একটি মানবশরীর রাত্রিআকাশে পদচারণারত যার পায়ের তলায় চলমান কুকুর। এ কি কালপুরুষের আকাশ-অবস্থান? মন কত দূর দূর দিগন্তে চলে যায়…। এই কবির পাঠক কম থাকবে এটাই এই কবির পক্ষে সম্মানের বিষয়। 

আরও একবার পুনশ্চ: এই কবিতায় একটি লাইন বিষয়ে এক ব্যক্তিগত তথ্যের উল্লেখ আমি করছি যা আমার কবিতা আলোচনার নীতিবিরুদ্ধ। আমি কবিতাকে তার শব্দ ব্যবহার দিয়ে দেখি। ব্যক্তিগত সম্পর্ক ও পরিচয়লব্ধ জ্ঞান দিয়ে নয়। তা সত্ত্বেও এই কবি, সুমন্ত মুখোপাধ্যায় এমন শিল্পোত্তীর্ণভাবে একটি ব্যক্তিগত তথ্যের প্রয়োগ করেছেন যা পাঠকের কাছে না জানালে আমার চলছেই না। যে-লাইনটি বিষয়ে কথা বলছি সেই লাইনটি, ওই যে বললাম, দু-লাইনের একককে ভেঙে একা একলা লাইন হিসেবে বসানো হয়েছে। কী সেই লাইন? ‘গুরু অবসাদ আজ লঘুতে লেগেছে’— এবার আমি কবিতাটি থেকে বেরিয়ে এসে চলে যাচ্ছি ব্যক্তিগত সম্পর্কের বিবরণের দিকে। সুমন্ত মুখোপাধ্যায় কৈশোর থেকেই তাঁর গুরু হিসেবে মেনেছিলেন বাংলার চিরস্মরণীয় কবি ভাস্কর চক্রবর্তীকে। ভাস্করকে আমি বারো বছর— ’৭৮-এর শেষ থেকে ’৯১ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত— দেখেছি প্রবল অবসাদের শিকার হয়ে নিয়মিত ডাক্তারের প্রেসক্রাইব করা অ্যান্টি-ডিপ্রেসেন্ট ওষুধ খেয়ে যেতে। এই সূত্রে পাঠক আমার মনে হল, ‘গুরু অবসাদ আজ লঘুতে লেগেছে’ এই লাইন আমাকে কবিতা ছাড়িয়ে এক ব্যক্তিগত সম্পর্ক অনুষঙ্গের দিকে টান দিল। এখানে ‘লঘুতে’ শব্দটির ব্যবহারের অকল্পনীয়তা আমি বর্ণনা করতে পারছি না! শিষ্য তো আজীবন আপন গুরুর কাছে নিজেকে লঘু-ই ভাবে। 

এই দ্বিতীয় পুনশ্চটির জন্য আমি কবির কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।

 
 
 
পরবর্তী পর্ব প্রকাশিত হবে ২১ জানুয়ারি ২০২২
ছবি সৌজন্য: Fanpop, Freepik

 

Joy Goswami

জয় গোস্বামীর জন্ম ১৯৫৪ সালে, কলকাতায়। শৈশব কৈশোর কেটেছে রানাঘাটে। দেশ পত্রিকাতে চাকরি করেছেন বহু বছর। আনন্দ পুরস্কার পেয়েছেন দু'বার - ১৯৯০ সালে 'ঘুমিয়েছ ঝাউপাতা?' কাব্যগ্রন্থের জন্য। ১৯৯৮ সালে 'যারা বৃষ্টিতে ভিজেছিল' কাব্যোপন্যাসের জন্য। ১৯৯৭ সালে পেয়েছেন বাংলা আকাদেমি পুরস্কার। দেশ বিদেশ ঘুরে বেড়িয়েছেন কবিতার সাহচর্যে। ২০১৫ সালে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাম্মানিক ডি.লিট পেয়েছেন।

Picture of জয় গোস্বামী

জয় গোস্বামী

জয় গোস্বামীর জন্ম ১৯৫৪ সালে, কলকাতায়। শৈশব কৈশোর কেটেছে রানাঘাটে। দেশ পত্রিকাতে চাকরি করেছেন বহু বছর। আনন্দ পুরস্কার পেয়েছেন দু'বার - ১৯৯০ সালে 'ঘুমিয়েছ ঝাউপাতা?' কাব্যগ্রন্থের জন্য। ১৯৯৮ সালে 'যারা বৃষ্টিতে ভিজেছিল' কাব্যোপন্যাসের জন্য। ১৯৯৭ সালে পেয়েছেন বাংলা আকাদেমি পুরস্কার। দেশ বিদেশ ঘুরে বেড়িয়েছেন কবিতার সাহচর্যে। ২০১৫ সালে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাম্মানিক ডি.লিট পেয়েছেন।
Picture of জয় গোস্বামী

জয় গোস্বামী

জয় গোস্বামীর জন্ম ১৯৫৪ সালে, কলকাতায়। শৈশব কৈশোর কেটেছে রানাঘাটে। দেশ পত্রিকাতে চাকরি করেছেন বহু বছর। আনন্দ পুরস্কার পেয়েছেন দু'বার - ১৯৯০ সালে 'ঘুমিয়েছ ঝাউপাতা?' কাব্যগ্রন্থের জন্য। ১৯৯৮ সালে 'যারা বৃষ্টিতে ভিজেছিল' কাব্যোপন্যাসের জন্য। ১৯৯৭ সালে পেয়েছেন বাংলা আকাদেমি পুরস্কার। দেশ বিদেশ ঘুরে বেড়িয়েছেন কবিতার সাহচর্যে। ২০১৫ সালে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাম্মানিক ডি.লিট পেয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Subscribe To Newsletter

কথাসাহিত্য

সংস্কৃতি

আহার

বিহার

কলমকারী

ফোটো স্টোরি

উপন্যাস

Banglalive.com/TheSpace.ink Guidelines

Established: 1999

Website URL: https://banglalive.com and https://thespace.ink

Social media handles

Facebook: https://www.facebook.com/banglaliveofficial

Instagram: https://www.instagram.com/banglalivedotcom

Twitter: @banglalive

Needs: Banglalive.com/thespace.ink are looking for fiction and poetry. They are also seeking travelogues, videos, and audios for their various sections. The magazine also publishes and encourages artworks, photography. We however do not accept unsolicited nonfiction. For Non-fictions contact directly at editor@banglalive.com / editor@thespace.ink

Time: It may take 2-3 months for the decision and subsequent publication. You will be notified. so please do not forget to add your email address/WhatsApp number.

Tips: Banglalive editor/s and everyone in the fiction department writes an opinion and rates the fiction or poetry about a story being considered for publication. We may even send it out to external editors/readers for a blind read from time to time to seek opinion. A published story may not be liked by everyone. There is no one thing or any particular feature or trademark to get published in the magazine. A story must grow on its own terms.

How to Submit: Upload your fiction and poetry submissions directly on this portal or submit via email (see the guidelines below).

Guidelines:

  1. Please submit original, well-written articles on appropriate topics/interviews only. Properly typed and formatted word document (NO PDFs please) using Unicode fonts. For videos and photos, there is a limitation on size, so email directly for bigger files. Along with the article, please send author profile information (in 100-150 words maximum) and a photograph of the author. You can check in the portal for author profile references.
  2. No nudity/obscenity/profanity/personal attacks based on caste, creed or region will be accepted. Politically biased/charged articles, that can incite social unrest will NOT be accepted. Avoid biased or derogatory language. Avoid slang. All content must be created from a neutral point of view.
  3. Limit articles to about 1000-1200 words. Use single spacing after punctuation.
  4. Article title and author information: Include an appropriate and informative title for the article. Specify any particular spelling you use for your name (if any).
  5. Submitting an article gives Banglalive.com/TheSpace.ink the rights to publish and edit, if needed. The editor will review all articles and make required changes for readability and organization style, prior to publication. If significant edits are needed, the editor will send the revised article back to the author for approval. The editorial board will then review and must approve the article before publication. The date an article is published will be determined by the editor.

 

Submit Content

For art, pics, video, audio etc. Contact editor@banglalive.com