banglalive logo
Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

কবিতার সঙ্গে বসবাস- জয়দীপ রাউতের কবিতা- শেষ পর্ব

Bookmark (0)
ClosePlease login

No account yet? Register

Poetries of Barnali Koley

জয়দীপ রাউতের ‘আঁখিগুল্মলতা’ নামক কৃশ, অপরিচিত কাব্যগ্রন্থটি থেকে আমি আরও দুটি কবিতা তুলে আনছি এবার। প্রথম কবিতাটি এইরকম: 

শ্যাম

রাতের নক্ষত্র হল
অশ্রু টলোমলো
দৃষ্টি হল স্থির

আকাশ মাধব হল
আর মেঘ
      মীরার মন্দির

Cloudy Monsoon Sky
আকাশ মাধব হল/ আর মেঘ/ মীরার মন্দির…

পুরো কবিতায় একটিও যতিচিহ্ন নেই। প্রথম তিন লাইনের পর একটি স্পেস আছে। কবিতাটির পাঠ, লাইন ধরে ধরে, ধীরগতিতে এগিয়ে চলে। ভাঙা ভাঙা ছয় লাইনের এই কবিতাটি পড়ার পর মনে হয়, লেখাটি যেন ভেসে আছে মেঘে। কারণ কোথাও কোনও যতিচিহ্ন নেই যে! ‘আকাশ মাধব হল’– এই উচ্চারণ ভুলতে পারা যায় না, তারপরই মেঘের ভেতরে মীরার মন্দির যেন আমরা দেখতে পেয়ে যাই। অনির্বচনীয় আনন্দ জন্মায় মনে এমন বিশুদ্ধ লিরিক কবিতার সঙ্গে সম্পর্ক ঘটলে। এ যেন নারীপুরুষের প্রাথমিক সম্পর্ক ঘটার মতোই মাধুর্য দিয়ে ঘেরা।

তবে কেবল লিরিকধর্মী কবিতাই নয়, জয়দীপ রাউতের কবিতায় কখনও কখনও ভয়াবহতাও দেখা দিয়েছে। পরবর্তী কবিতাটি দিয়ে আমি জয়দীপের সেই প্রবণতার স্পর্শ-লাগা কবিতাবলির দিকে এগোব। কিন্তু তার আগে বলে নেব একটি জরুরি প্রসঙ্গ– যা জয়দীপের এই দুটি বইয়ের কবিতা আমাকে মনে করিয়ে দিয়েছে। আগে পরবর্তী কবিতাটি বলি। এই কবিতা থেকেই জয়দীপের লেখার ভেতরে লুকনো ভয়ঙ্করতার দিকচিহ্নগুলি উত্থাপন করব আমি। 

ভৈরব

দুর্বোধ্য দেবতা তুমি। 
               নাচো,
তোমার তরঙ্গে নাচে

আমার পিশাচও

প্রথম লাইনে ‘দুর্বোধ্য দেবতা তুমি’ এই উচ্চারণের পর একটি পূর্ণচ্ছেদ রাখা হয়েছে। তার পরের লাইনটি একটু নেমে আসে। নেমে, প্রথম লাইনে অবস্থিত ‘তুমি’ শব্দটির নীচে বসানো হয় দেবতার উদ্দেশে বলা ‘নাচো’ শব্দটি। এখানে একটি কমা দেখা দেয়। লক্ষণীয় যে, ‘নাচো’ শব্দটির আগে অথবা পরে দ্বিতীয় লাইনে আর একটিও শব্দ রাখা হয়নি। অর্থাৎ ‘নাচো’ কথাটির দুদিকে অফুরন্ত সাদা জায়গা ছেড়ে রাখা আছে যেন ভৈরবের নৃত্যের জন্যই। তাই একটি লাইনে ‘নাচো’ শব্দটি স্বাভাবিক রেঞ্জে না বসিয়ে একটু ঠেলে দিয়ে প্রথম লাইনের ‘দুর্বোধ্য দেবতা তুমি’ পঙক্তিটির তলায় বসানো হয়েছে। এর ফলে কী হল? ‘নাচো’ শব্দটির দুদিকে ছড়িয়ে পড়ল শূন্যতা। আমরা যেন ভুলে না যাই যে কবিতা আমরা চোখ দিয়ে পড়ি। ফলে তা দেখারও জিনিস। নাচো শব্দটিকে একটি লাইনে একাকী স্থাপন করার মধ্যে ওই দুর্বোধ্য দেবতার নেচে চলা বোঝানো হয়েছে যেন!

Rakta_Bhairava
তোমার তরঙ্গে নাচে/ আমার পিশাচও

তারপর এল তৃতীয় লাইন। ‘তোমার তরঙ্গে নাচে’– হ্যাঁ এই লাইনেও ছন্দের অপূর্ণপর্ব এল না। ফলে, অপূর্ণপর্বটির জন্য পাঠকের আকাঙ্ক্ষা জাগ্রত হয়ে রইল। সেই আকাঙক্ষাকে আরও বাড়িয়ে তুলল একটি স্পেসের প্রয়োগ। শ্বাস ধরে রাখলাম আমরা, পাঠকরা। অবশেষে এল সমাপ্তিসূচক লাইন যেখানে অপূর্ণপর্ব আমাদের শ্বাস ফেলতে দিল। সেই লাইনটি কী? ‘আমার পিশাচও’। শেষলাইনের পরেও কোনও যতিচিহ্ন এল না। তাহলে কী পেলাম আমরা? কী দেখলাম? দুর্বোধ্য দেবতা আর কবির পিশাচ নেচে চলেছে, নেচে চলেছে, নেচে চলেছে…। এই নৃত্য কোনওদিন শেষ হবে না।

কী অসামান্য কবিতা! কত অল্প শব্দে অক্ষরবৃত্ত ছন্দের অব্যর্থ কাঠামোয় ও অনিবার্য ভাঙন দ্বারা সৃষ্ট এই লেখায় এক ভয়ঙ্কর নৃত্যচিত্র চলমান রইল চিরদিনের জন্যই।

‘ভৈরব’ কবিতাটিতে পুরাণ প্রসঙ্গ এল। পুরাণের ব্যবহারও জয়দীপ রাউতের কবিতায় এসেছে, কখনও স্পষ্টমূর্তি নিয়ে, কখনও ছদ্মবেশে। এসেছে মঙ্গলকাব্যও। কিন্তু ওই যা বললাম, এত অল্প শব্দ, এত ক্ষুদ্রাকার সে সব কবিতা, যে পাঠকের দৃষ্টি এড়িয়ে চলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকেই। তাতে অবশ্য জয়দীপ রাউতের মনে কোনও চাঞ্চল্য তৈরি হয় না– তিনি আবারও একটি ক্ষুদ্রাকার কবিতারচনায় মনোনিবেশ করেন। এখন যে কবিতাটি বলছি, সেখানে মাত্র চারটি লাইন। কবিতাটি দেখা যাক: 

বেহুলা

আমি তোর বর।

মনসাতাড়িত
ভীত
এক লখিন্দর  

এই কবিতায় প্রথম লাইনে ‘আমি তোর বর’ বলার পরেই পূর্ণচ্ছেদ এল। তারপরেই স্পেস। এবং স্পেস বা নীরব বিরতির পরের তিনটি লাইনে চারটিমাত্র শব্দ, যথাক্রমে ‘মনসাতাড়িত’, ‘ভীত’, ‘এক’, ‘লখিন্দর’। পাঠক লক্ষ করুন, প্রথম লাইনের শেষ শব্দের সঙ্গে সমাপ্তিসূচক লাইনের একটি অন্ত্যমিল রয়েছে। কিন্তু সেই মিলপ্রয়োগ চোখেই পড়ে না। আবার ‘মনসাতাড়িত’ শব্দের পরের লাইনে ‘ভীত’– এও মিল। কিন্তু ছন্দের পর্ব অপূর্ণ থাকায় পাঠকের মনে জেগে উঠছে পরবর্তী লাইনটিতে পৌঁছনোর বাসনা। শেষদিকে এসে ‘ভীত’ ‘এক’ এবং ‘লখিন্দর’ শব্দতিনটি একটি ভয়াবহতা তৈরি করল, ‘মনসাতাড়িত’ কথাটিতে যে ভয়ের উদ্ভব। 

শঙ্খ ঘোষ ১৯৬৬ সালে একটি তিন পৃষ্ঠার গদ্য লিখেছিলেন, যে-গদ্যের ভাষা প্রায় স্বগতোক্তির মতো। পরবর্তী দশকগুলি ধরে শঙ্খ ঘোষ যে সুদীর্ঘ প্রবন্ধাবলি লিখে চলবেন– এই ১৯৬৬-র আগেও রবীন্দ্রনাথের নাটক বিষয়ে যেসব প্রবন্ধ তিনি রচনা করেছেন– তার সঙ্গে কোনও সাদৃশ্য নেই এই হঠাৎ-লেখা তিন পৃষ্ঠার স্বগতোক্তিমূলক রচনার। সেই গদ্যের নাম ‘নিঃশব্দের তর্জনী’। সেখানে, শঙ্খ ঘোষ, বলেছিলেন এমন কিছু কথা যা আজও স্মরণীয় হয়ে আছে। আমি সেইসব কথা থেকে কয়েকটি লাইন তুলে দিচ্ছি এখন। শঙ্খ ঘোষ বলছেন: ‘এমন কথা কি নেই যাতে নীরবও গড়ে ওঠে?’ এই প্রশ্নের পরেই তিনি বলছেন নিজের কবিতা লেখার ইচ্ছে বিষয়ে দু’চার কথা।

কেমন কথা সেসব? বলছেন: ‘এখন ইচ্ছে করে যেমন-তেমন বলতে, খুব আপনভাবে কাঁচা রকমে। খুব ছোট আর খুব সহজ।’ বলছেন, ‘বড় বেশি বেড়ালের চোখে ভরে গেল সমাজ, চাতুর্য বড় অনায়াস, সুলভ, সর্বসাধ্য’– বলছেন, ‘সমস্ত দিনের পর গভীর রাতে বাড়ি ফিরে গ্লানির মতো লাগে। কথা, কথা। যেন একটু চুপ ছিল না কোথাও, থাকতে নেই…’ এরপরে শঙ্খ ঘোষ বলছেন, হ্যাঁ, স্বগতোক্তির মতোই বলছেন এমন একটি কথা, যা নিয়ে বাংলা কবিতার প্রজন্মের পর প্রজন্ম আলোচনা চালিয়ে যাবে। ভাবনা চালিয়ে যাবে। কেউ কেউ সে-কথাকে করে তুলবেন আরাধ্য মন্ত্রের মতো। সকলেই মন দিতে বাধ্য হবেন সেই কথাটির প্রতি– আবারও বলছি, সেকথা কিন্তু শঙ্খ ঘোষ উচ্চারণ করেছিলেন প্রায় স্বগতোক্তির মতো।

Shankha Ghosh
শঙ্খ ঘোষের বিখ্যাত প্রবন্ধ ‘নিঃশব্দের তর্জনী’-তে তিনি বলেছেন নীরব কবিতার কথা

কী সেই কথা? শঙ্খ ঘোষ বলছেন: ‘লিখতে হবে নিঃশব্দে কবিতা এবং নিঃশব্দ কবিতা। শব্দই জানে কেমন করে সে নিঃশব্দ পায়… তার জন্য বিষম ঝাঁপ দেওয়ার দরকার আছে দুঃসহ আড়ালে থেকে।’ এবং শঙ্খ ঘোষ তাঁর তিন পৃষ্ঠার চিরজীবী গদ্যটির শেষদিকে এসে বলছেন: ‘হয়তো এখন সেই কবিতার খোঁজ দেবে কেউ। নিঃশব্দ, নিবিড় আয়তনের কবিতা।’ বলছেন: ‘যেখানে… গতি ভিতরে ভিতরে জায়গা রেখে দেয় যতির জন্য…’

এই গদ্যটি রচিত হওয়ার ঠিক পরের বছর ১৯৬৭ সালে শঙ্খ ঘোষের একটি কবিতার বই প্রকাশ পায় যার নাম ‘নিহিত পাতালছায়া’। ১৯৬০ থেকে ১৯৬৬, এই সাত বছর ধরে রচিত যেসব কবিতা স্থান পায় এ কাব্যগ্রন্থে, তারই যেন একটি ম্যানিফেস্টো হিসেবে আমরা দেখতে পাই ‘নিঃশব্দের তর্জনী’ নামক গদ্যটিকে। জল, বৃষ্টি, মুনিয়া, রাঙামামিমার গৃহত্যাগ, ইট, জন্মদিন– এই ধরনের অনেক লেখার মধ্যে সেদিন ভরে দেওয়া ছিল নিঃশব্দ কবিতা কাকে বলা যায়, তার সঙ্কেত। পরের দশকেও নিহত ছেলের মা, খড়, ছিপ, শুশ্রূষা, ইন্দ্র ধরেছে কুলিশ– এই কবিতাগুলি এবং ‘পাঁজরে দাঁড়ের শব্দ’ নামক পুরো কাব্যগ্রন্থটি ভ’রে শঙ্খ ঘোষ রেখে গিয়েছেন ‘নিঃশব্দ কবিতা’ বলতে কী বোঝায় তার প্রমাণ। 

Joydeep Raut Poetry book
জয়দীপ কোনও কোনও কবিতায় সত্য-উপলব্ধিকে প্রায় ছবিবিহীনভাবে ব্যবহার করেছেন

ষাট দশকের উজ্জ্বলতম কবি ভাস্কর চক্রবর্তী তাঁর সারাজীবনের কাব্যচর্চায় ‘নিঃশব্দ কবিতার’ আরাধনাও করে গেছেন অন্য অনেক রকমের কবিতা রচনার পাশাপাশি। তবু গত পঞ্চাশ বছরে যেসব কবিতালেখক এসেছেন, তাঁদের কাজের মধ্যে ‘নিঃশব্দ কবিতা’র দিকে এগিয়ে যাওয়ার সাধনা আবছা ও অস্পষ্ট হয়ে এসেছে। শেষ বত্রিশ বছরের কবিতাচর্চায় বহুল পরিমাণে ঝোঁক পড়েছে বিবরণধর্মী কবিতার দিকেই। হয় ছন্দমিলযুক্ত বিবরণ, নয়তো ছন্দমিলমুক্ত বিবরণ। কিন্তু বিবরণের দিকটিই প্রাধান্য পেয়েছে। আকারে সে-কবিতা মাঝারি অথবা দীর্ঘ, যে-রকমই হোক, সেসব লেখার প্রধান প্রবণতা হয়ে উঠেছে বিবরণের ধর্মপালন। দুর্লভ হয়েছে সঙ্কেতধর্ম বিশিষ্ট কবিতারচনার আগ্রহ। 

বাংলা কবিতার গত ষাট বছরের ইতিহাসের দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাব, একই কবি কখনও রচনা করেছেন বিবরণধর্মী কবিতা, আবার তাঁরই কলমে অন্য সময়ে পাওয়া গেছে সঙ্কেতধর্মী কবিতাও। যেমন সুভাষ মুখোপাধ্যায় কখনও লিখছেন ‘মেজাজ’। আবার সুভাষেরই কলম আমাদের উপহার দিয়েছে ‘যত দূরেই যাই’। শঙ্খ ঘোষ কখনও লিখছেন ‘রাতেও ওদের সঙ্গে রাতেও স্রোতের সঙ্গে কথা বলি কথা বলি কথা’– আবার সেই শঙ্খ ঘোষের কলম থেকেই বেরিয়ে আসছে এমন লাইন– ‘পুলিশ কখনও কোনও অন্যায় করে না তারা যতক্ষণ আমার পুলিশ।’ আসছে ‘রাতে ঘুমোবার আগে ভালোবাসবার আগে প্রশ্ন করো কোন দল তুমি কোন দল’। কিন্তু শঙ্খ ঘোষ এবং সুভাষ মুখোপাধ্যায়কে বড় কবি বলে বাংলা কবিতার পাঠক সসম্মানে শিরোধার্য করে নিয়েছেন বহুদিন আগেই। আমি ভাবি, এই ‘নিঃশব্দ কবিতার’ সাধনা আজ, গত ত্রিশ-বত্রিশ বছরে লিখতে এলেন যাঁরা, তাঁদের মধ্যে থেকে লুপ্ত হয়ে গেল একেবারে?

না, সম্পূর্ণ লুপ্ত হয়নি। অল্প দু’তিনজনের মধ্যে বেঁচে আছে সেই সাধনাপ্রবাহ। কিন্তু তাঁরা প্রায় অপরিচিতই থেকে গেছেন বৃহত্তর পাঠকসমাজের কাছে। সেরকমই একজন কবি হলেন এই জয়দীপ রাউত। শঙ্খ ঘোষের ‘নিঃশব্দের তর্জনী’ লেখার ৫৫ বছর পরে, জয়দীপের প্রকাশিত দুটি বই থেকে যেসব কবিতা আজ আপনাদের সামনে তুলে ধরছি, সেখানে ওই ‘নিঃশব্দ কবিতা’র দিকে এগিয়ে যাওয়ার পথ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, তা নিশ্চয়ই পাঠক বুঝতে পারছেন। আমি বারবার বলেছি আমাদের এই কথাবার্তায়, জয়দীপ রাউত যতিচিহ্ন ব্যবহার করেন অতি অল্প– আর কবিতায় স্পেস বা বিরতি ব্যবহার করেন বেশিমাত্রায়। কেন? তার কারণগুলি শঙ্খ ঘোষের ওই অমোঘ গদ্যটি প্রকাশের ৫৫ বছর পরে প্রকাশিত দুটি শীর্ণকায় কাব্যগ্রন্থের মধ্যে ছড়িয়ে আছে। 

কী সেই অমোঘ সূত্র? ‘গতি ভিতরে ভিতরে জায়গা রেখে দেয় যতির জন্য’। অক্ষরবৃত্ত ছন্দের ভাঙা ভাঙা ব্যবহার, ছন্দের কৌশলে শ্বাসকে টেনে রাখা, হঠাৎ এসে যাওয়া স্পেস, কবিতার ক্ষুদ্র আকার– শব্দ ও বাক্যের বিকল্পরূপে স্পেসকে ব্যবহার করা, মধ্যে মধ্যে উল্লম্ফনক্রিয়াকে কাজ করানো, প্রত্যক্ষ অর্থের পশ্চাদ্ধাবন না করার সাহস, এবং যতিচিহ্নহীনভাবে কবিতার উপসংহার ঘটিয়ে তাকে চিরায়তের শূন্যে ভ্রাম্যমাণ রাখা– এই সকল চরিত্রসম্পদ জয়দীপের কবিতাকে ‘নিঃশব্দ কবিতা’ রচনার আদর্শটিকে প্রতিষ্ঠা দেওয়ার পথে এগিয়ে নিয়ে গেছে। শঙ্খ ঘোষ বলেছিলেন, ‘লিখতে হবে নিঃশব্দে কবিতা এবং নিঃশব্দ কবিতা।’ বলেছিলেন ‘তার জন্য বিষম ঝাঁপ দেওয়ার দরকার আছে দুঃসহ আড়ালে থেকে।’ এও বলেছিলেন ‘অন্তরাল সহ্য করাই মানুষের পক্ষে সবার চেয়ে কঠিন।’

Silence
জয়দীপ রাউত নৈঃশব্দ ও অন্তরাল সহ্য করতে জানেন

জয়দীপ রাউত এই অন্তরাল সহ্য করতে জানেন। আজ পর্যন্ত কোনও শারদীয় সংখ্যায় জয়দীপের একটিও কবিতা ছাপা হয়নি। কবিতাপাঠের সভায় তিনি প্রায় ডাকই পান না বলা যায়। সম্প্রতি গত তিন বছর ধরে লিটল ম্যাগাজিন মেলায় বছরে একবার কবিতা পড়ার সুযোগ পাচ্ছেন মাত্র। জয়দীপ রাউতকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি। কবিতা লিখে তিনি কোনও খ্যাতি পরিচিতি লাভ করেননি ঠিকই, কিন্তু সেজন্য কিছুমাত্র দুঃখবোধ লালন করেন না জয়দীপ। আমার সঙ্গে দেখা হলে কবিতার লাইন সংস্থাপন, কবিতার অন্তর্বস্তুর প্রকাশ, ছন্দ ও স্পেস ব্যবহার– এগুলি ঠিকমতো হচ্ছে কিনা নিজের কবিতার ক্ষেত্রে, এইসব বিষয়েই সবিশেষ সন্দেহ প্রকাশ করে থাকেন তিনি। 

জয়দীপকে তাঁর সহযাত্রী কবিবন্ধুরা অপমান করে গেলেও তিনি কোনও প্রত্যুত্তর দেন না। মুখ বুজে সহ্য করে যান। দুঃসহ আড়ালে থেকে জয়দীপ ঝাঁপ দিচ্ছেন, বিষম ঝাঁপ, ‘নিঃশব্দ কবিতার’ দিকে। অথচ জেনেশুনে কবিতার কোনও তত্ত্ব আশ্রয় করে তিনি পথ চলেন না। স্বতঃস্ফূর্তভাবেই নিজের প্রায় অজান্তেই জয়দীপের কবিতার ‘নিঃশব্দ কবিতার’ তীর্থপথগামী হয়ে উঠেছে।

জয়দীপের অন্য ধরনের দু’ একটি কবিতা, যা ভয়াবহতাযুক্ত, এখন তুলে ধরছি পাঠকদের সামনে। প্রথম কবিতাটি এরকম: 

পাঁজর

কাছেই গিয়েছি
অস্ত্রের যতটা কাছে গেলে
হাত কেটে যায়… 

ভাবি, এত কাছে আসা তাহলে সম্ভব? 

সে হঠাৎ 
অমোঘ আঁচল খুলে আমাকে দেখায়

তার বুকে শুয়ে থাকা
সার সার পুরুষের শব। 

এই কবিতাটি একটি ভয়ঙ্করতার চিত্র তুলে ধরে। এটিও প্রেমেরই কবিতা, কিন্তু অকস্মাৎ তার পরিসমাপ্তির কাছে এসে, অবিশ্বাসের কবিতা হয়ে উঠল কি? অর্থাৎ কবির প্রার্থিতা সেই নারী হঠাৎ দেখিয়ে দিল, তার জীবনে সংখ্যাহীন পুরুষের আসাযাওয়ার সংবাদ? এই প্রশ্ন আমাদের নিস্তার দেয় না। আরও একটি কবিতা জানাতে ইচ্ছে করছে পাঠকদের– যে কবিতাও মূলত প্রেমের কবিতা– তবু এক অসহনীয় যন্ত্রণাও এর মধ্যে প্রকাশ পায়। 

দণ্ডিত

আমাকে শাস্তির জন্য অপেক্ষা করতে বলে
সে কোথায় গেল। খড়্গ আনতে? 
আমি সেই কবে থেকে বসে আছি
দু-হাঁটুর ফাঁকে মাথা নত, দুহাত পিছন থেকে বাঁধা

আমাকে হত্যার জন্য এত আয়োজন
এত অস্ত্রসাধা 

যেমন গান শেখার জন্য গলা সাধা দরকার, তেমনই হত্যার জন্য দরকার অস্ত্রসাধা। গলা সাধার অনুষঙ্গ ‘অস্ত্রসাধা’ শব্দটির মধ্যে এনে হত্যা ও সঙ্গীত যুক্ত করা হল যেন। কার কাছে যুক্ত করা হল? যে আমার নয়, যে আমার হবে না কখনও– তেমন কোনও নারীর জন্য রাখা হল এই সংযুক্তি– প্রেমের দণ্ডাজ্ঞাপ্রাপ্ত এক কয়েদির কাছে। যেহেতু প্রণয় এই কবিতার বিষয়, তাই সঙ্গীত। এবং ছেড়ে যাওয়া বা বিচ্ছেদও এই কবিতারই মর্মবস্তু, তাই হত্যা। আশ্চর্যের বিষয়, শেষ দুই লাইনেও জিজ্ঞাসাচিহ্ন ব্যবহার করেননি জয়দীপ। কারণ কী? কারণ একটাই। চিহ্ন না থাকলেও উচ্চারণে তো জিজ্ঞাসা আছেই। তাহলে কেন যতিচিহ্ন আনা? অতিরিক্ত হয়ে যায় না কি? ঠিক যুক্তি। 

Sword
আমাকে হত্যার জন্য এত আয়োজন/ এত অস্ত্রসাধা

এই কবিতার মতো যন্ত্রণাদগ্ধ কবিতা ‘অপরূপকথাখানি’ বইয়ের মধ্যে আরও আছে। আমি আপনাদের বলেছিলাম, এই বইয়ের উৎসর্গ কবিতা বা প্রবেশক কবিতাটির প্রসঙ্গ? বলেছিলাম তো? যেখানে বইয়ের প্রথম লাইনে পাচ্ছি ‘তুমি অপরূপ আলপনা।’ বইয়ের নাম ‘অপরূপকথাখানি’– তার প্রথম বা প্রবেশক পঙক্তিই ‘অপরূপ’ শব্দটির ব্যবহার নিয়ে এল। আমরা দেখতে পেলাম, তিন লাইনের কবিতাটির মধ্যে আঙিনাভ’রে আলপনা আঁকা। আর কবি বা কথক বলছেন ‘উঠোন ছাড়িয়ে আর কোথাও যাব না।’ সেই বইটি সম্পূর্ণ করছে কোন কবিতা? সেখানে কী বলা হচ্ছে? 

রাক্ষস 

সে যদি জিজ্ঞেস করে
কে হই তোমার
তুই বা কে হোস?
বোলো তাকে তুমি হও অপরূপকথাখানি আর
আমি হই তোমার রাক্ষস

পুরো কবিতাটির মধ্যে ‘তুই বা কে হোস’ এই লাইনের শেষে একটি জিজ্ঞাসাচিহ্ন আছে। আর কোথাও কোনও যতি দেওয়া নেই। দরকারও ছিল না। এই বইয়ে দেখা যায় দুটি জিনিস, যা, এই অপরূপকথাখানি কাব্যগ্রন্থ বিষয়ে আমার যাবতীয় কথাবার্তা একেবারে যখন তার গন্তব্যে পৌঁছচ্ছে– তখনই প্রকাশ করছি। প্রথমত, একদম আরম্ভের কবিতায় ‘অপরূপ’ শব্দটির ব্যবহার আছে, এবং শেষ কবিতায় যখন ‘অপরূপকথাখানি’ শব্দটি গোটাটাই ব্যবহৃত হল, তখন শোনা গেল কবিকথকের এই উচ্চারণ: ‘আমি হই তোমার রাক্ষস।’

rakshas
‘আমি হই তোমার রাক্ষস’

ওই আলপনার সৌন্দর্য, ওই আলপনা-অঙ্কিত আঙিনা ছাড়িয়ে কোথাও যাব না, এই শপথ দিয়ে শুরু হচ্ছে যে-কবিতার বই, সে বই নিজেকে সম্পূর্ণ করছে এই কথা বলে: আমি হই তোমার রাক্ষস। বইটির শেষ কবিতা হিসেবে আমরা ‘রাক্ষস’ নামক কবিতা পাচ্ছি, কিন্তু রাক্ষস কবিতার একটু আগেই আরও একটি কবিতা পাব, যার নাম ‘অসুর’। জয়দীপ রাউতের কবিতায় মাঝেমাঝে ভয়াবহতা দেখা দেয়, আগেই বলেছি। ‘অসুর’ কবিতাটি তারই এক দৃষ্টান্ত। 

অসুর

যে-আমি এ জন্ম-নামে জয়

সে-আমি এখন থেকে 
যেন তোর বামমুষ্টিবদ্ধ
মড়ার মুণ্ডুর মতো
মৃত্যুহীন হয়

এ কবিতাও প্রেমেরই কবিতা। তীব্র যন্ত্রণায় দগ্ধ হওয়ার কবিতা। লিরিক কবিতার স্নিগ্ধতা লেলিহান অবিশ্বাসের আগুনে পুড়ে গিয়েও যাকে ভালোবাসে তাকে ছাড়তে পারছে না। এ যুগের প্রেমিক-প্রেমিকারা পরস্পরকে ‘তুই’ সম্বোধন করে। সেই কারণে ‘তুই’ কথাটি যে প্রিয়তমা নারীর প্রতিই বলা, সে বিষয়টি কবিতায় গোপন থাকে না।

এই ‘অসুর’ কবিতার মধ্যেও কোনও যতিচিহ্ন নেই। প্রথম লাইনের পরে স্পেস আছে। প্রথম লাইনটি কী? কৌতূহলোদ্দীপক সেই লাইনটিতে নিজের নামকে ব্যবহারে এনেছেন জয়দীপ। ‘যে-আমি এ জন্ম-নামে জয়’– জয়দীপ নামটির ‘জয়’ অংশটিকে প্রয়োগ করেছেন কথক। জন্ম-নাম কথাটি যুক্ত হয়েছে ‘হাইফেন’ দিয়ে এবং প্রথম লাইনেই অন্তঃস্থ য এবং বর্গীয় জ-এর উপস্থিতির ফলে অনুচ্চ ধ্বনিসাম্য তৈরি হয়েছে– কোনও উচ্চকিত অনুপ্রাস নয়। তবু ধ্বনিস্রোত আমাদের শ্রুতির ভেতর মৃদু আলোড়ন তোলে। 

তারপরেই দেখা যায় এক ভয়াল চিত্র! কালীমূর্তির বামমুষ্টিবদ্ধ কর্তিত নরমুণ্ড। কিন্তু সেই মুণ্ড যেন মৃত হয়েও মৃত নয়– কারণ কালীমূর্তি চিরস্থায়ী, তাই তার মুষ্টিতে ধরা নরমুণ্ডও চিরস্থায়ী। কালীর বিনাশ নেই, তাই নরমুণ্ডেরও বিনাশ নেই। আশ্চর্য এই যে, নিজেকে মড়ার মুণ্ডুর মতো অস্তিত্বের অবস্থানকারী হিসেবে বুঝে গিয়েও সে-প্রেমিক তার নারীটিকে ছেড়ে আসতে পারছে না– অসংখ্য নরমুণ্ডের একটি বা সে-নারীর প্রচুর প্রেমিকের একজন হয়েও সে-পুরুষ ওই নারীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে নিরুপায়ভাবে বাধ্য হচ্ছে– কারণ ওই নারীকে ছাড়া সে এই পৃথিবীকে সহ্য করতে পারবে না।

Kaali with garland of heads
কালীর বিনাশ নেই, তাই নরমুণ্ডেরও বিনাশ নেই

এই দুটি বই ‘অপরূপকথাখানি’ ও ‘আঁখিগুল্মলতা’ পাঠ করলে একটি প্রেমসম্পর্কের সঙ্কেত বারবার পাওয়া যাবে। কখনও সেই সম্পর্ক শান্তি আনছে, কখনও আনছে তীব্র অশান্তি। তাই ‘অপরূপ আলপনা’ দিয়ে যে বই শুরু, তার শেষে এসে পৌঁছে আমরা পাচ্ছি সুতীব্র আত্মগ্লানিভরা এই বাক্য ‘আমি হই তোমার রাক্ষস’। অর্থাৎ যে ছিল ‘অপরূপ আলপনা’ আমি দিনে দিনে তার ‘রাক্ষস’ হয়ে উঠলাম। সমাজ যেসব প্রেমসম্পর্ক স্বীকার করে নেয় না, হয়তো বিবাহ-অতিরিক্ত সম্পর্ক সেসব– তাদের ভিতর এই অশান্তির অগ্নিপ্রবাহ চলাচল করতেই থাকে, থামে না। তাই, ‘ভৈরব’, তাই ‘মনসাতাড়িত এক ভীত লখিন্দর’, তাই ভৈরবের সূত্রে কবির অন্তর্গত পিশাচের নেচে ওঠা, তাই পরিণামে নিজেকে ‘অসুর’ ও ‘রাক্ষস’-এ রূপান্তরিত করে দেখা। 

‘অপরূপকথাখানি’ কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশ পেয়েছে ঋত প্রকাশন থেকে। এবং ‘আঁখিগুল্মলতা’ বইটির প্রকাশক ‘অক্ষরযাত্রা’ নামক গ্রন্থসংস্থা। এই বইদুটি বাংলা কবিতার আদি উৎস ‘লিরিক কবিতা’র যে ক্ষীণ ধারাটি আজ ক্ষীণতর হয়ে বহমান, তারই স্নিগ্ধ স্রোতটি ধরে রেখেছে। অবশ্য লক্ষ করলে ওই স্নিগ্ধতার মধ্যে সরু সুতোর মতো একটি রক্তরেখাও দেখা যায় না তা নয়। তার ‘নিঃশব্দের তর্জনী’র মধ্যে এমন আশা প্রকাশ করেছিলেন শঙ্খ ঘোষ, ‘হয়তো এখন সেই কবিতার খোঁজ দেবে কেউ,নিঃশব্দ, নিবিড় আয়তনের কবিতা।’ সেই কবিতার খোঁজ এ যুগে যাঁর কাছে পাওয়া গেল, দুঃখের কথা, সেই কবি জয়দীপ রাউত ব্যক্তি শঙ্খ ঘোষের সঙ্গে পরিচিত হবার সুযোগ কোনওদিনই পাননি। শঙ্খ ঘোষও তাঁর ‘নিঃশব্দ কবিতা’ নামক ধারণাটিকে জন্ম দেওয়ার ৫৫ বছর পরে লিখিত জয়দীপের কাব্যগ্রন্থদুটিকে দেখে যেতে পারেননি। তবু– নাবিক– অনন্তনীর– অগ্রসর হয়– রাত্রির সমুদ্রপথে সেই একাকী জাহাজের নাবিক হয়তো তীর ও বন্দরে কোলাহলরত অন্যান্য নাবিকদের কাছে অজানাই থেকে যান। 

Joydeep Raut
তবু– নাবিক– অনন্তনীর– অগ্রসর হয়– রাত্রির সমুদ্রপথে

জয়দীপ রাউতের কবিতা নিয়ে আমার এই গদ্যটির উপসংহারে আমি কোনও ভয়ংকরতার দ্বারা আলোড়িত কবিতার আশ্রয়ে যেতে চাই না– বরং গোপন প্রণয়যোগের ভেতরকার আঘাত ও আদর যেখানে সঙ্কেতধর্ম নিয়ে নিজেকে উদ্ঘাটন করছে, তেমন একটি কবিতার ছায়ায় দাঁড়াই। কবিতাটি এইরকম: 

নিবেদন

গোপনীয়, 
সকল আঘাত আমি হাত পেতে
যেভাবে নিয়েছি, তুমি

আমাকে তেমন তীব্র
ভঙ্গিমায় নিও

কবিতাটির নাম ‘নিবেদন’। প্রথম লাইনে ‘গোপনীয়’ শব্দটি প্রয়োগের পরেই একটি কমা দেখা যায়– সঙ্গে সঙ্গে এসে পড়ে একটি স্পেস। যেন চিঠি লেখার আগে ওই সম্বোধনটি এল, তাই কমা। তাই ‘গোপনীয়’ শব্দটির পরে স্পেস– যেমন চিঠিতে সম্বোধনের পরের লাইনটি একটু নেমে যায়– এ-লেখাও তেমন চিঠির পথই নিচ্ছে। কিন্তু গোপন রাখছে সেই চিঠির ধরন। কার প্রতি চিঠি? যে আমার গোপনীয়। সমাজসংসারের কাছে যাকে আমি প্রকাশ্যে নিজের পাশে আনতে পারব না। এ এক নিরূপায়তা। এবং সেই গোপনীয়ের কাছে গোপনীয়তার কারণেই– আমি বারবার আঘাত পেয়েছি। তবে আদরও কি পাইনি? পাই না? সেইজন্যই তো কবিতার শেষ দুটি লাইন বলে: ‘আমাকে তেমন তীব্র/ ভঙ্গিমায় নিও’…

কবিতার দ্বিতীয় স্তবকে, দু নম্বর লাইনে ‘যেভাবে নিয়েছি’ বলার পর একটি কমা বসানো হয়েছে। লাইনটির ক্ষেত্রে এই সেই অক্ষরবৃত্ত ছন্দের অপূর্ণ পর্বকে না এনে পরবর্তী লাইনের জন্য পাঠকের দম বা শ্বাস আটকে রাখা। শ্বাস মুক্তি পায়? একেবারে শেষ লাইনে পৌঁছে এই যুগল যখন শৃঙ্গারের সঙ্কেত আনে ‘আমাকে তেমন তীব্র/ ভঙ্গিমায় নিও’ লাইনটি দ্বারা। এই লাইন সমাপ্ত করার সময় পাঠকের শ্বাস ও ছন্দ সম্পূর্ণতায় পৌঁছয়। ‘ভঙ্গিমা’ শব্দটির আগে ‘তীব্র’ কথাটি থাকার কারণে শৃঙ্গারসঙ্গেত আসে। এবং আমিও এই আলোচনা সাঙ্গ করতে পারি এক প্রেমিক-প্রেমিকার মিলনদৃশ্যে পৌঁছেই।

 

 

*ছবি সৌজন্য: Fizdi, Deviantart, Indian Eagle, Wikimedia Commons, Painting Venue

‘কবিতার সঙ্গে বসবাস’-এর পরবর্তী পর্ব প্রকাশিত হবে ৫ এপ্রিল।  

জয় গোস্বামীর জন্ম ১৯৫৪ সালে, কলকাতায়। শৈশব কৈশোর কেটেছে রানাঘাটে। দেশ পত্রিকাতে চাকরি করেছেন বহু বছর। আনন্দ পুরস্কার পেয়েছেন দু'বার - ১৯৯০ সালে 'ঘুমিয়েছ ঝাউপাতা?' কাব্যগ্রন্থের জন্য। ১৯৯৮ সালে 'যারা বৃষ্টিতে ভিজেছিল' কাব্যোপন্যাসের জন্য। ১৯৯৭ সালে পেয়েছেন বাংলা আকাদেমি পুরস্কার। দেশ বিদেশ ঘুরে বেড়িয়েছেন কবিতার সাহচর্যে। ২০১৫ সালে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাম্মানিক ডি.লিট পেয়েছেন।

One Response

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Subscribe To Newsletter

কথাসাহিত্য

সংস্কৃতি

আহার

বিহার

কলমকারী

ফোটো স্টোরি

উপন্যাস

Banglalive.com/TheSpace.ink Guidelines

Established: 1999

Website URL: https://banglalive.com and https://thespace.ink

Social media handles

Facebook: https://www.facebook.com/banglaliveofficial

Instagram: https://www.instagram.com/banglalivedotcom

Twitter: @banglalive

Needs: Banglalive.com/thespace.ink are looking for fiction and poetry. They are also seeking travelogues, videos, and audios for their various sections. The magazine also publishes and encourages artworks, photography. We however do not accept unsolicited nonfiction. For Non-fictions contact directly at editor@banglalive.com / editor@thespace.ink

Time: It may take 2-3 months for the decision and subsequent publication. You will be notified. so please do not forget to add your email address/WhatsApp number.

Tips: Banglalive editor/s and everyone in the fiction department writes an opinion and rates the fiction or poetry about a story being considered for publication. We may even send it out to external editors/readers for a blind read from time to time to seek opinion. A published story may not be liked by everyone. There is no one thing or any particular feature or trademark to get published in the magazine. A story must grow on its own terms.

How to Submit: Upload your fiction and poetry submissions directly on this portal or submit via email (see the guidelines below).

Guidelines:

  1. Please submit original, well-written articles on appropriate topics/interviews only. Properly typed and formatted word document (NO PDFs please) using Unicode fonts. For videos and photos, there is a limitation on size, so email directly for bigger files. Along with the article, please send author profile information (in 100-150 words maximum) and a photograph of the author. You can check in the portal for author profile references.
  2. No nudity/obscenity/profanity/personal attacks based on caste, creed or region will be accepted. Politically biased/charged articles, that can incite social unrest will NOT be accepted. Avoid biased or derogatory language. Avoid slang. All content must be created from a neutral point of view.
  3. Limit articles to about 1000-1200 words. Use single spacing after punctuation.
  4. Article title and author information: Include an appropriate and informative title for the article. Specify any particular spelling you use for your name (if any).
  5. Submitting an article gives Banglalive.com/TheSpace.ink the rights to publish and edit, if needed. The editor will review all articles and make required changes for readability and organization style, prior to publication. If significant edits are needed, the editor will send the revised article back to the author for approval. The editorial board will then review and must approve the article before publication. The date an article is published will be determined by the editor.

 

Submit Content

For art, pics, video, audio etc. Contact editor@banglalive.com