বিনুনি বাঁধা দক্ষিণের শাড়ি
তোমায় আমি কীই বা দিতে পারি
আকাশ জুড়ে মেঘ জুটেছে লোভী
পাড়ার পায়ে নূপুর পরিয়েছে
আকাশ তুমি আলুর চচ্চড়ি
শিখিয়ে দিও মেয়েটি যদি চায়
ছোট্ট সে দ্রোণফুলের আঁচল
সামলে নেয় রুটি গড়ার সময়
আটা মাখছে অপার্থিব আঙুল
উনুন তার সইয়ের গাঁথা মালা
নিজেকে সে কিচ্ছু ভাবে না
শূন্য দেয় সব পরীক্ষায়
গজদাঁতের ইলশেগুঁড়ি হাওয়ায়
ঘামতে থাকে হ্যারিকেনের শিখা
বাবার নাম উচ্চারণ হলে
খেলতে যায় গাদির মাঠে মাঠে
মায়ের চুলে বিলিয়ে দিলে ভোর
টগর ফোটে ঘন বারান্দায়
মেয়ের চোখে কাজল নেই যে
ভাবে একলা চড়াইপাখি ভাবে
নয়নতলে প্রদীপ জ্বলে মেয়ের
তুলসীতলা অঝোর সুরে দোলে
পড়া করার দিকে যে মন নেই
হৃদয় তার রাখাল বারোমাস
বাঁশি বাজায় ঠোঁটের নিঃশ্বাসে
মফস্সলে দূরের মত নদী
তাহার পরে ঝুলন শ্রাবণে
বিদ্যালয় পালায় বিনুনি
দোকান কত দোকান চারিপাশে
আলো আঁধার দৃষ্টিবিনিময়
কত দূরের মানুষ আসে মেলায়
ফুলিয়ে চুল টেরি বাগায় বিকেল
ঘটিহাতার নারীটি কথামালা
বাদাম আর জিলিপি চেখে নেয়
মেয়েটি একা ঘুরেছে পথে পথে
বন্দুকে সে বেলুন ফাটিয়েছে
মনে মনে, পয়সা কোথা পাবে
সংসারে তো টাকা দেয় না বাবা!
নাকছাবির মতন বন্ধুরা
ঝলমলে, মেহেদি পরে বসে
আহা অমন দুইটি টাকা পেলে
বিয়ের ঘ্রাণ পাঁজর ভ‘রে নিত
লাইব্রেরির পরাণসখা মাঠে
গুটিয়ে মুখ মেয়েটি দেখে চেয়ে
দোলনা ওলো দোলনা আশেপাশে
সুখি মানুষ ভিড় করতে জানে
এবার সে একাকী একদম, এবার তার ফিরে যাওয়ার পালা
বাঁচিয়ে ক্ষীণ রোগাটে সম্ভ্রম, পায়ের নিচে পথের কড়া নাড়া
পালিয়ে যাবে পালিয়ে যাবে সে, হারিয়ে যাবে দোকানিটির সাথে
যার দোকানে দুঃখে পাক দিয়ে কান্না বেচে শিমুলতলা ছেলে…
4 Responses
প্রতিটি চরণের পরতে পরতে বিস্ময়কর চিত্রময়তা। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে যাপিত মুহূর্তরা যখন ছবি হয়ে ওঠে হৃদয়ের ক্যানভাসে, তখনই এমন সব বিস্ময়কর চরণ উঠে এসে এই প্রাপ্ত জীবনের প্রতি তার ঋণ রেখে যায়। চিত্রকল্পের এই অবাক সাম্রাজ্যে অবগাহন ছাড়া আর কোন পথ দেখি না পাঠক হিসেবে….
অনেক ধন্যবাদ রে…
খুব সুন্দর।
অনেক ধন্যবাদ..