দিশাহারা বোধ করছে রমেশ। হতাশ। অবসন্ন। কিছুই ভালো লাগছে না। একমাত্র মেয়ে, তার প্রাণাধিক প্রিয় রূপাকে নিয়ে গত কয়েকবছর ধরে লাগাতার টানাপোড়েন চলছে তো চলছেই। কারণ আর কিছুই না, রূপা ঠিক করেছে তার থেকে বয়েসে বারো বছরের বড় একজনকে বিয়ে করবে। তাও ঠিক ছিল, যদি না, লোকটা বিপত্নীক হত। তার আবার একটা দশ বছরের মেয়েও আছে। রূপার নাকি মেয়েটার প্রতিও খুব মায়া পড়ে গেছে। মেয়েটার জন্যেই রূপা আর লোকটার প্রথম পরিচয় ঘটেছিল এবং তার জন্যেই নাকি আজ এই সম্পর্কটাকে আরও একধাপ বাড়ানোর কথা ভাবছে ওরা।
অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেছে রমেশ। সব বিফল। রূপার খুব জেদ। বাপেরই মতো। একবার যখন ঠিক করেছে, তখন আটকানোর বিশেষ উপায় নেই। তবে রমেশও এত সহজে হার মানতে নারাজ। সে ‘অনার কিলিং’-এর কথাও শুনেছে, কিন্তু সেটা করতে পারবে না। তার জগৎ জুড়ে আছে তার মেয়ে। রূপার কোনওরকম ক্ষতিই সে করতে পারবে না সজ্ঞানে। কিন্তু এমন একটা বিয়ে মেনে নেওয়াও তো পরোক্ষভাবে মেয়ের সর্বনাশ ডেকে আনা। না, না, এ হয় না।
দোনামোনা করে ফোনটা করেই ফেলল রমেশ। কিন্তু অপর প্রান্তে ফোন বেজে গেল, কেউ ধরল না। এই লোকটার নম্বরটা দিয়েছিল তার বন্ধু ও বিজ়নেস পার্টনার অসীম। ওর অনেক রকম যোগসাজশ আছে। বলাই বাহুল্য, তার অনেকটাই অনৈতিক। কিন্তু ব্যবসায় নানারকম ঝুট-ঝামেলা ঠেকাতে তো সব সময় সোজা পথে হাঁটা সম্ভব নয়। এবার রমেশ অসীমকেই ফোন করল।
– হ্যালো, কী রে? লোকটা তো ফোনই ধরল না।…কী?…অচেনা নম্বর ধরে না?… তাহলে, আমি কি করে রিচ্ করব লোকটাকে? …ও, তাহলে আর আমাকে নম্বর দিলি কেন…। বেশ, তাহলে, তুই যোগাযোগ কর…। হ্যাঁ, হ্যাঁ– আমি ঠিক করে ফেলেছি। আমার আর উপায় নেই কিছু। ও কিছুদিন পরেই সব ভুলে যাবে, সব নর্মাল হয়ে যাবে। কিন্তু ধরা পড়ার চান্স নেই তো? দেখিস্ ভাই… খুব টেনশন হচ্ছে… কিছুই ভালো লাগছে না… হ্যাঁ, তুই প্লিজ় ব্যবস্থা কর। আমি টাকাটা তোর অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করে দিচ্ছি। তুই ক্যাশ তুলে যা করার কর। আমি তাহলে আর লোকটাকে ফোন করছি না। …রাখছি এখন।

ফোন রেখে রেখে দিল রমেশ। বসার ঘরে এসে গুম হয়ে বসল সোফায়। তার জীবনটা তো অন্যরকম হওয়ার কথা ছিল। এত বড় বিজনেস এম্পায়ারের মালিক সে। একমাত্র মেয়ে– পড়াশুনো করে, আজ তার সঙ্গে কাঁধ মিলিয়ে এই ব্যবসা চালাতে পারত। খুব ধুমধাম করে তার বিয়ে দেওয়ারও প্ল্যান ছিল। কিন্তু… অজান্তেই একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এল রমেশের। একরকম বাধ্য হয়েই অসীমের পরামর্শে কন্ট্র্যাক্ট কিলারকে মেয়ের প্রেমিককে খুনের বরাত দিয়েছে রমেশ। মেয়েকে বাঁচাতে লোকটাকেই মারতে হবে। অথচ রূপার যেন এতটুকু সন্দেহ না হয়। এর পেছনে তার বাবা আছে জানলে, মেয়ে তাকে কখনও ক্ষমা করবে না। অথচ এইসব কিছু সে রূপার জন্যেই করছে।
ফোনটা বেজে উঠল। অসীম ফোন করছে।
– হ্যালো… ও! কথা হয়ে গেছে। আজকেই অ্যাকশন? …ও আচ্ছা …কোন হোটেল? …আচ্ছা, আচ্ছা… এই খুব ভয় করছে রে… না, মানে, কিছু হবে না তো?…কি? এক্সপার্ট কিলার?…প্রমাণ রাখে না?…কিন্তু বাই চান্স যদি কেউ দেখে ফেলে?…ওহ্ তাকেও খতম করে দেয়?…আচ্ছা, ওকে। ঠিক আছে, আমি খোঁজ নিচ্ছি কোথায় আছে। বলেছিল আজ আসতে দেরি হবে… আচ্ছা রাখছি।
কাঁপা কাঁপা হাতে ফোন রেখে দিল রমেশ। এবার নাকি অসীমের ফোন বেশ কিছুক্ষণ বন্ধ থাকবে। ও যেন যোগাযোগ না করে। অসীমই ওকে ফোন করবে পরে। বরং রমেশকে কাজ দিয়েছে রূপা কোথায় আছে, খোঁজ নেওয়ার জন্য। রূপাকে ফোন করল রমেশ। রূপা কেটে দিল। একটু পরেই রূপার টেক্সট মেসেজ এল– “সূরয এয়ারপোর্টের কাছে একটা হোটেলে ডে-নাইট কনফারেন্সের জন্য রয়েছে। দেরি হয়ে যাবে বলে আজ আর বাড়ি ফিরবে না। একটা রুম বুক করেছে। সূরযের ড্রাইভার ওর মেয়েকে হোটেলে পৌঁছে দিতে যাচ্ছিল। আমি ওকে একা ছাড়লাম না। তাই আমিই ওকে পৌঁছে দিচ্ছি। আমার ফোন কিছুক্ষণ সুইচ অফ্ থাকবে”।

আকাশ ভেঙে পড়ল রমেশের মাথায়। তড়িঘড়ি করে ফোন, হোয়াটস্যাপে সবরকম চেষ্টা করল রূপাকে ধরার। সুইচড অফ্। অসীমকেও চেষ্টা করল। ওরও ফোন বন্ধ। বুকের চিনচিনে ব্যথাটা আবার শুরু হয়েছে রমেশের। অসীমের কথাটা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে সারাক্ষণ- এক্সপার্ট কিলার, কোনও প্রমাণ রাখে না, বাই চান্স যদি কেউ দেখে ফেলে, তাকেও খতম করে দেয়। শরীরটা খারাপ লাগছে। চোখটা ঝাপসা হয়ে আসছে। সোফায় গা এলিয়ে দিল রমেশ।
দুই
কনফারেন্সের পর হোটেলের রুমে ঢুকেই আগে মেয়ের নম্বর ডায়াল করল সূরয।
– হ্যালো, কী করছ বেটা? আমি জাস্ট হোটেলে ঢুকলাম… হ্যাঁ একটু পরেই ড্রাইভার তোমাকে এখানে পৌঁছে দেবে। …তাই?…বেশ তোমার সারপ্রাইজের জন্য ওয়েট করব আমি। …ওকে ওকে বাবা, দরজায় নক্ করলে আমি আই-হোল দিয়ে দেখব না। প্রমিস, সোজা দরজা খুলে দেব আর চোখ বন্ধ করে রাখব যতক্ষন না তুমি চোখ খুলতে বলছ…
সূরয হেসে ওঠে। মোটে দশ বছরের মেয়ে– এদিকে যেন পাকা গিন্নি। সূরয ঠিক সময় খেয়েছে কিনা, শরীর খারাপ করল কিনা, সব কিছুর উপর কড়া নজর সুনীতির। তারপর আজ আবার কী সারপ্রাইজ দেবে। সূরযও অবিশ্যি চোখে হারায় মেয়েকে। সুলু তার প্রাণ। আগে মা-মরা মেয়েটাকে বাড়িতে একা রেখে আসতে মন চাইত না একদম। এদিকে কাজের সূত্রে বাড়ি ফিরতে প্রায়ই খুব দেরি হত। তার চেয়ে এই ব্যবস্থাটা ভালো হয়েছে। বেশি দেরি হলে, মেয়েকে হোটেলেই ডেকে নেয়। সুলু রুমে বসেই হোমওয়ার্ক করে, টিভি দেখে আর সূরয অফিসের মিটিং আর কাজ শেষ করে। তারপর একসঙ্গে ডিনার করে। জায়গার পরিবর্তনও হল, একটু অন্যরকমভাবে কাটানো হল, বাইরে খাওয়াও হল।
বাড়ি থেকে বহুবার সূরযকে ফের বিয়ে করতে বলেছে। কিন্তু সে রাজি হয়নি। এই সুলুর মাধ্যমেই সূরযের প্রথম আলাপ হয়েছিল রূপার সঙ্গে। সুলুর স্কুলে বি এডের পরীক্ষা দিতে এসেছিল রূপা। ওদিকে ব্যবসার কাজে আটকে পড়ায়, স্কুলে সুলুকে পিক-আপ করতে অনেক দেরি হয়ে গেছিল সূরযের। সুলু ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছিল ফাঁকা স্কুলে। রূপা তাই দেখে রয়ে গেছিল। সঙ্গ দিয়েছিল ছোট্ট মেয়েটাকে। সূরযের কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা ছিল না।

সেই শুরু। তারপর আস্তে আস্তে সেই সম্পর্ক বন্ধুত্বে গড়িয়েছে। সুলুর আরো কাছের ও ভরসার মানুষ হয়ে উঠেছে রূপা। সবাই বলল নিজের জন্য না হলেও, সুলুর জন্য যেন বিয়ের কথা আবার ভাবে। অবশেষে মেয়ের আবদারে সূরযকে রাজি হতে হয়েছে রূপার সঙ্গে নতুন সম্পর্ক সূচনাতে। স্বাভাবিকভাবেই রূপার বাড়ির থেকে এর জন্য বিরোধিতার সম্মুখীন হতে হয়েছে। কিন্তু রূপা নিজে রাজি। আর সুলুর ভালো লাগার জন্য তারা দু’জনেই সব কিছু করতে পারে। তাই সব বাধাবিপত্তি অগ্রাহ্য করে ওরা বিয়ে করবে স্থির করেছে। বাড়িতে সুলুকে দেখভাল করার কেউ থাকলে সূরযকেও আর এরকম হোটেলে ডেকে আনতে হবে না মেয়েকে।
ফ্রেশ হয়ে নিল সূরয। একটু পরেই সুলু চলে আসবে। নক করলে তাকে আই-হোলে না দেখে দরজা খুলে দিয়ে চোখ বন্ধ করে রাখতে হবে। মজা লাগল ভাবতে বেশ। মনটা কেমন খুশিতে ভরে উঠল আর ঠোঁটের কোণে এক চিলতে হাসি দেখা দিল। আধঘণ্টা পরে দরজায় শব্দ হল। কিন্তু পূর্বনির্ধারিত শর্ত অনুযায়ী সূরয কোনও প্রশ্ন না করে, দরজার ওপারে কে না দেখেই দরজা খুলে চোখ বন্ধ করে, বাহু প্রসারিত করে দাঁড়িয়ে রইল মেয়ের আলিঙ্গনের জন্য। মুখে সেই এক চিলতে হাসি।
আকাশ ভেঙে পড়ল রমেশের মাথায়। তড়িঘড়ি করে ফোন, হোয়াটস্যাপে সবরকম চেষ্টা করল রূপাকে ধরার। সুইচড অফ্। অসীমকেও চেষ্টা করল। ওরও ফোন বন্ধ। বুকের চিনচিনে ব্যথাটা আবার শুরু হয়েছে রমেশের। অসীমের কথাটা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে সারাক্ষণ- এক্সপার্ট কিলার, কোনও প্রমাণ রাখে না, বাই চান্স যদি কেউ দেখে ফেলে, তাকেও খতম করে দেয়। শরীরটা খারাপ লাগছে।
আগন্তুক একটু হকচকিয়ে গেছিল। এত সহজে তার কাজ হাসিল হবে সে ভাবেইনি। ঘরে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিল। আর তারপরেই গর্জে উঠল পিস্তল।
তিন
প্রতিবারের মতো এবারও নিখুঁতভাবে নিজের কাজটা সম্পন্ন করল রশিদ। বুলেটটা টার্গেটের শরীরটা এফোঁড় ওফোঁড় করে গেছে। হোটেলের ঘরে মেঝেতে পড়ে আছে সূরযের নিথর দেহটা। সাইলেন্সর লাগিয়ে গুলিটা চালানোয় কেউ জানতেও পারেনি। সুকৌশলে রুমের সিসিটিভিটাও আগে থেকে জ্যাম করে দিয়েছিল। শিক্ষিত যুবক সে। বিএ পাশ করে, চাকরি না পেয়ে, বহু পথে ঠোক্কর খেয়ে আজ সে নামকরা সুপারি কিলার। তবে ছোটখাটো কন্ট্র্যাক্ট নেয় না। হাই প্রোফাইল কেস না হলে তার কাছে কেউ আসে না। পারিশ্রমিকও মোটা অঙ্কের। রশিদের পরিবার অবিশ্যি তার কাজের ব্যাপারে কিছু জানে না। তারা জানে রশিদ কারখানায় কাজ করে।

প্রতিবারের মতো এবারও সে পকেট থেকে ছোট খামটা বার করে লাশটার উপর রেখে দিল। এটা তার সই। নিজের কাজকে রশিদ শিল্প মনে করে। প্রতিটা কেসে সে এরকম খাম রেখে আসে। এর ভেতর থাকে টার্গেটের একটা পাসপোর্ট সাইজ ছবি আর তার উল্টোদিকে ইংরেজির ‘আর’ অক্ষর। অর্থাৎ রশিদের নামের আদ্যক্ষর। এটা তার দস্তখৎ। আজ আসলে একটু তাড়া আছে। আজ তার ছ’বছরের ছোট্ট মেয়ে রাবেয়ার জন্মদিন। বড় পেয়ারের তার লাডলি। তার জিগর কা টুকড়া। তাই আজ একটা ছোট্ট দাওয়াত রেখেছে বাড়িতে। মেয়েকে এবার সে স্পেশাল কিছু একটা উপহার দিতে চায়। ইদানিং রোজগারটা বেশ ভালোই হচ্ছে। আর আজকের কেসটায় তো বিশাল পাওনা।
রাবেয়া বলেছে সে নিজে লিখে দেবে কী চায় সে। অন্য কিছু যেন তার আব্বু না কিনে আনে। রশিদ মনে মনে বলে, বেটি তুই বললে তোর জন্য তাজমহল নিয়ে আসব আমি। কাজ সেরে ঘরে ফিরতেই ছুট্টে আসে রাবেয়া। ঝাঁপিয়ে পড়ে রশিদের কোলে।
– এনেছ, এনেছ?
– কী আনব রে পাগলি… কী চেয়েছিস তুই, তাই তো জানি না।
ঠোঁট ফুলিয়ে রাবেয়া বলে,
– কেন? তুমি কারখানায় যাবার আগে যখন বাথরুমে গেলে, তখন আমার পছন্দের গিফটের নামটা একটা কাগজে লিখে, নীচে আমার নাম-ঠিকানা লিখে সই করে, তোমার জামার পকেটে যে খামটা ছিল, তাতে ঢুকিয়ে দিয়েছিলাম তো! তুমি দেখলেই না আব্বু?
*ছবি সৌজন্য: Pinterest, Fine Art America, Istock
‘কুহকী’ তাঁর ছদ্মনাম। এই নামে লেখক এর আগে প্রকাশ করেছেন 'একলব্য অতঃপর ও অন্যান্য গল্প' বইটি যা পাঠকমহলে যথেষ্ঠ প্রশংসা লাভ করেছে । এছাড়াও দুই বাংলার লেখকদের নিয়ে অভিযান পাবলিশারের 'থ্রীলার অভিযান' সংখাতেও কুহকীর লেখা স্থান পেয়েছে । নবকল্লোল, আনন্দমেলা ও অন্যান্য পত্রিকাতেও গল্প লিখছেন। কুহকীর জন্ম ১৯৭৫-এ কলকাতায়। আইআইটি থেকে ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার, বর্তমানে একটি বহুজাতিক তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত। বিজনেস ম্যানেজমেন্ট পেশা হলেও দেশবিদেশের সিনেমার বিশেষ অনুরাগী। নেশা, সাহিত্যচর্চা ও ছবি আঁকা।
11 Responses
দারুণ দারুণ! শেষ হয়েও না হ’ল শেষ।
খুব সুন্দর
খুব সুন্দর, একেবারে পারফেক্ট ছোট গল্প।
শেষ হয়ে হইলো না শেষ, এরপর, এরপরে…..
👌👌👌👌💐💐💐
খুব ভালো হয়েছে গল্পটি। গল্পের ভাষা ,ঘটনা, লেখার ধরন খুব সুন্দর।গল্পটি পড়ার পর অনেকক্ষণ তার রেস মনের মধ্যে থেকে যায়। এককথায় শেষ হয়ে হলো না শেষ।
darun….darun… aro galpo porar jonyo opekkha
korchi…nomoskar
Tumi to choto golper j defination ache prottek ta maintain kore kaj korcho🙂 .Naamkoron tao sarthok. Bhison bhalo legeche
দারুন লাগলো। শেষ টা তো জাস্ট অসাধারণ।
বাহ , বেশ টানটান গল্প, শেষের চমকটা খুব ভালো। দুর্দান্ত ওয়েব সিরিজ হতে পারে। লিখতে থাক
Ek kothay oshadharon… darun.. khub bhalo legeche.. Sesh ta unexpected but wonderful..
Oshadharon……keep writing
বেশ লাগলো….শেষের চমকটা দারুণ!