বিরাট পরিধি তাঁর, একাধিক পরিচয়ে উজ্জ্বল তিনি, সাধারণ মাপকাঠিতে তাঁকে ধরা যায় না। দুর্গাপুজোর আগে আগে এমনই এক দশভুজাকে পেয়ে ধন্য হল বাংলালাইভ। তিনি শমীতা দাশ দাশগুপ্ত। একাধারে সমাজকর্মী, ‘মানবী’ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা, সুলেখিকা ও কবি, অধ্যাপিকা ও নিবিড় সংসারী, যাঁর হাত আক্ষরিক অর্থেই, কখনও থেমে থাকে না। ভিডিও-আড্ডার সময়েও নিজের উল-কাঁটার বাস্কেটটি নিয়ে তারপর বসলেন কথা বলতে।
উনিশ বছর বয়সে স্বামী সুজন দাশগুপ্তের সঙ্গে চাকরিসূত্রে দেশ ছেড়ে প্রবাসে বাসা বেঁধেছিলেন শমীতাদেবী। তখন থেকেই বিদেশে একলা অসহায় মেয়েদের সাহায্যের কথা তাঁর মাথায় ছিল। আমেরিকায় দক্ষিণ এশীয় অভিবাসী মেয়েদের সমস্যা দেখে সমমনস্ক আরও জনাকয়েক মেয়েকে নিয়ে ১৯৮৫ সালে তৈরি করলেন ‘মানবী’। মার্কিনদেশে দক্ষিণ এশিয়ার মেয়েদের যে কোনও সমস্যায় সাহায্যের হাত বাড়াতে ‘মানবী’ই প্রথম প্রতিষ্ঠান। একটানা তিরিশ বছর সক্রিয়ভাবে কাজ করেছেন, নেতৃত্ব দিয়েছেন।
সংসারের উনকোটি চৌষট্টি দাবিদাওয়া সামলে, কোলে একরত্তি মেয়ে নিয়ে নতুন করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শুরু করেন শমীতাদেবী। মাস্টার্য় থেকে পিএইচডি পর্যন্ত আর থামেননি। নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা শুরু করলেন ‘মানবী’র কাজের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে। সঙ্গে চলল সমাজসেবা আর লেখালেখি। কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ। প্রবাসী বঙ্গসাহিত্যের জগতে এখন একটি অতিপরিচিত নাম শমীতা দাশ দাশগুপ্ত।
আর ঘরে? অসামান্য রন্ধনপটিয়সী শমিতাদেবীর যত্নের ছোঁয়া থেকে বঞ্চিত হয় না তাঁর গাছেরাও। নিউ জার্সির বাড়িতে বাগান করেন শৈল্পিক নৈপুণ্যে। উলকাঁটার যুগলবন্দিতে অনায়াসে তৈরি করে ফেলেন বাহারি শীতপোশাক। কিন্তু আদ্যন্ত প্রচারবিমুখ। নিজেকে নিয়ে একেবারেই মুখ খুলতে চান না। তাঁর কাছে নারীবাদ তাত্ত্বিক কচকচি নয়, একান্তভাবে প্রায়োগিক। হাতে হাতে কাজ করে সমানাধিকার অর্জন। এটিই তিনি জীবনভ’র করে এসেছেন। এখনও করে চলেছেন নিরলস।মৃণ্ময়ীর আবাহনের দিন এমনই এক দশভুজার সাক্ষাৎকার বাংলালাইভে।
বাংলালাইভ একটি সুপরিচিত ও জনপ্রিয় ওয়েবপত্রিকা। তবে পত্রিকা প্রকাশনা ছাড়াও আরও নানাবিধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে থাকে বাংলালাইভ। বহু অনুষ্ঠানে ওয়েব পার্টনার হিসেবে কাজ করে। সেই ভিডিও পাঠক-দর্শকরা দেখতে পান বাংলালাইভের পোর্টালে,ফেসবুক পাতায় বা বাংলালাইভ ইউটিউব চ্যানেলে।