আপনার মেয়ে সবে ৩ বছরে পা দিয়েছে। এখন আধো আধো বুলিতে ‘মা দুগ্গা’, ‘অছুর’ বলতে শুরু করেছে। সিংহে বসার অভিনয়ও করে মাঝে মাঝে। এবার সে অর্থে প্রথম বার ঠাকুর দেখতে বেরবে। ভিড়-ভাট্টা, কোলাহল সবের মাঝে বাচ্চার মেজাজ ঠিক রাখা কিন্তু চাট্টিখানি কথা নয়। কিন্তু তার তো উন্মাদনা চরম। সে সকলকে বলে বেড়াচ্ছে যে ‘ঠাউর’ দেখতে যাবে। লাইন দিতে হবে বললেও উৎসাহে কোনও ভাঁটা নেই।
কিন্তু আপনার তো আর আবেগে গা ভাসালে চলবে না। আগে থেকে প্ল্যানিং করতে হবে। বাচ্চাকে নিয়ে বেরলে কত যে খুঁটিনাটি মাথায় রাখতে হয়, তার কোনও হিসেব নেই। সন্তানের সুরক্ষা, তার শরীরের চিন্তা, সব তো আপনাকেই ভাবতে হবে। কোন জিনিস সঙ্গে রাখবেন, তার তালিকা বানাতে হবে। নিশ্চয় মনে হচ্ছে এত কিছু করতে হলে তো পুজোর আনন্দটাই মাটি হয়ে যাবে। একেবারেই না, আমরা হাজির আপনার মুশকিল আসান করতে। কী করবেন আর কী করবেন না, তা বলে দিচ্ছি। আপনি শুধু আপনার বাড়ির খুদে সদস্যকে নিয়ে পুজোর আনন্দে মেতে উঠুন।
●বাচ্চাকে ঠাকুর দেখতে যাওয়ার সময় ভারী বা মোটা জামা পরাবেন না। হালকা সুতির জামাই ভাল। পুজোর সময় গরম ভাল থাকে, তার উপর আবার যখন তখন বৃষ্টি হতে পারে, ফলে সুতি বাদে অন্য পোশাক পরালে বাচ্চার কষ্ট হতে পারে।
●হাতের কাছে সব সময় একাধিক অতিরিক্ত জামা রাখুন। ঘাম বা জল পড়ে ভিজে যেতে পারে, নোংরা হয়ে যেতে পারে, খাবার ফেলে দিতে পারে, সুতরাং বাড়তি জামা রাখা ভাল আইডিয়া। জামা ছাড়াও অতিরিক্ত প্যান্ট, রুমাল সঙ্গে রাখুন। ডায়পার পরলে , তাও বেশি করে রাখুন আপনার কাছে। ওয়েট ওয়াইপস, ছোট একটা তোয়ালেও রাখতে পারেন।
●বাচ্চার ওষুধপত্র, ব্যান্ডএড, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যাগে রোখা জরুরি। সেরকম হলে ডাক্তারের কাছ থেকে কিছু এমার্জেন্সি ওষুধু জেনে নিতে পারেন। হঠাৎ বমি বা পেট ব্যথা করলে কী ওষুধ দিতে পারেন আগে থেকে জানা থাকলে আপনারই সুবিধে হবে।
●বাচ্চাকে খুব একটা বাইরের খাবার খাওয়াবেন না। ছোটখাটো কেক, মিষ্টি, বিস্কুট হাতের কাছে রাখুন। অল্প সময়ের জন্য বেরলে ভাত গরম করে মাখন দিয়ে মেখে টাইট ঢাকা দেওয়া বাটিতে নিতে পারেন। ফাঁক বুঝে খাইয়ে দিলে আপনি নিশ্চিন্তে ঘুরতে পারবেন।
●বাইরের জল ভুলেও বাচ্চাকে খাওয়াবেন না। জলের বোতল সব সময় সঙ্গে রাখুন। নুন-চিনির জলও বানিয়ে সঙ্গে রাখতে পারেন। খুব গরমে কাজে দেবে।
●বাচ্চাকে খুব ভিড়ের মধ্যে না নিয়ে যাওয়াই ভাল। কোনও সময় ওকে হাতছাড়া করবেন না। বাচ্চার জামার ভিতরদিকে বা পকেটে, একটা কাগজে আপনাদের নাম, ঠিকানা ও ফোন নম্বর লিখে রেখে দিন। বোঝার বয়স হলে বাচ্চাকে নিজের ফোন নম্বর, বাড়ির ঠিকানা মুখস্থ করিয়ে দিন। প্যান্ডেলে হারিয়ে গেলে কোথায় যাবে তা সম্ভব হলে দেখিয়ে দিন।
●বাচ্চা ছোট হলে ছোট প্র্যাম বা ক্যারিয়ার নিতে পারেন। বাচ্চাকে ওতে বসিয়ে দিলে আপনার হাত দুটে ফ্রি হয়ে যাবে। এতে আপনার ও বাচ্চার সুবিধেই হবে।
●রাত জেগে বাচ্চাকে ঠাকুর দেখানো খুব একটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। এতে বাচ্চার স্লিপ সাইকেল খামোখা নষ্ট হবে। ফলে ওর মেজাজ খারাপ হয়ে যাবে, কান্নাকাটি করবে। তার চেয়ে ঘুমের সময়টা ঠিক রাখার চেষ্টা করুন।