পুজো মানেই নিয়ম থেকে ছুটি। দেদার খাওয়াদাওয়া, গল্প, আড্ডা, রাত জাগা। এর মাঝে বাচ্চাকে সুস্থ রাখাটাই বেশ কঠিন। উপায় দিলেন কনসালট্যান্ট নিওনেটোলজিস্ট ডা. ব্রজগোপাল রায়।
পুজোর সময় বাচ্চাদের ভারী মজা। মা-বাবার শাষণ নেই, বারণ নেই। ইচ্ছেমতো ঠাকুর দেখা, বন্ধুদের বাড়ি যাওয়া, রোল-ফুচকা খাওয়া, রাত জেগে গল্প করা। মানে ৩৬৫ দিনের মধ্যে পাঁচ দিনের নিছক ছুটি। কিন্তু বাচ্চাদের ছুটি হলেও, মা-বাবার কি আর ছুটি থাকতে পারে! সন্তানকে তো আর অসুস্থ হতে দেওয়া যায় না। তাই এই সময় থাকতে হয় আরও সচেতন। কী করবেন অভিভাবকরা যাতে পুজোর পর বাচ্চারা সুস্থ শরীরে রুটিনে ফিরতে পারে।
●পুজোর সময় মূলত পেটের সমস্যা, হজমের গন্ডগোল, সর্দি-কাশি দেখা যায়। প্রথমে বুঝতে হবে ইনফেকশন কোথা থেকে হতে পারে। জল, খোলা খাবার, কাটা ফল ইনফেকশনের সূত্র। তাই বাচ্চাকে নিয়ে যেখানেই যান না কেন, বাইরের জল খেতে দেবেন না। সঙ্গে বাড়ির জল থাকাটা আবশ্যক। বাচ্চা কী খাবার খাচ্ছে সে দিকেও নজর দিন। সব তো বারণ করতে পারবেন না, কিন্তু কাটা বা অনেকক্ষণ খোলা পড়ে আছে, সেই রকম খাবার যাতে বাচ্চা না খায়, সেদিকে খেয়াল রাখুন। অনেক সময় যিনি খাবার বানান, তাঁর থেকেও জীবাণু খাবারে চলে আসতে পারে। তাই প্রতি দিন বাইরের খাবার না খাওয়াই ভাল।
● পুজোর সময় অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে অনেক সময় বাচ্চাদের অ্যাসিডিটি হতে পারে। এর থেকে অনেক সময় ডায়ারিয়া হয়ে যায়। তবে এই ডায়ারিয়া অন্য পেট খারাপের চেয়ে আলাদা। খুব বেশি চিন্তা করার প্রয়োজন নেই। শুধু জোর করে খাওয়াবেন না। বাচ্চা যতক্ষণ না বলছে যে তার খিদে পাচ্ছে, ততক্ষণ না খাওনোই ভাল। প্রোটিন বেশি আছে, এমন খাবারও সেক্ষেত্রে না দেওয়াই ভাল। কারণ এতে পেট ভার হয়ে যায় আর অ্যাসিডিটি আরও বাড়তে পারেন। হাতের কাছে র্যান্টিডিন জাতীয় ওষুধ রাখুন। মনে রাখবেন এই সময় পেটকে বিশ্রাম দেওয়াই এক মাত্র ওষুধ। দুধও দেবেন না। সহজে হজম হতে পারে এমন খাবার খাওয়ানোই ভাল।
●পুজোর সময় আর একটা বড় সমস্যা সর্দি-কাশি। তার কারণ এক জায়গায় প্রচুর লোকের জমায়েত হয়। ফলে জীবাণু সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। বাচ্চাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাই তাদের চট করে সংক্রমণ হয়ে যায়।এর বেশিরভাগই ভাইরাল ইনফেকশন। সোয়াইন ফ্লু হতে পারে এই সময়। ওয়র্ল্ড হেলথ অর্গ্যানাইজেশন জানিয়েছে যে পাঁচ বছর পর্যন্ত ফ্লু-এর ভ্যাক্সিন নেওয়া বাধ্যতামূলক। বাচ্চার যদি এই ভ্যাক্সিন না নেওয়া থাকে, তা হলে পুজোর আগে অবশ্য করে দিয়ে নিন। ভাইরাল জ্বরে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। যদি দেখা যায় যে জ্বর ১০৩-১০৪ ডিগ্রি উঠে গেছে আর নামতেই চাইছে না, অথচ সর্দি-কাশি নেই তা হলে ডেঙ্গু বা ব্যাক্টেরিয়াল ইনফেকশনের জন্য রক্ত পরীক্ষা করানো উচিত। ৮০-৯০% ভাইরাল ইনফেকশনে প্যারাসিটামল দেওয়াই যথেষ্ট।
●এই সময় বাচ্চাকে বেশি করে জল খাওয়াবন। যেহেতু বাচ্চারা অনেকটা সময় বাড়ির বাইরে থাকে, তাই ডিহাইড্রেশন হতে পারে। সেক্ষেত্রে জল খাওয়া বাধ্যতামূলক।
বাংলালাইভ একটি সুপরিচিত ও জনপ্রিয় ওয়েবপত্রিকা। তবে পত্রিকা প্রকাশনা ছাড়াও আরও নানাবিধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে থাকে বাংলালাইভ। বহু অনুষ্ঠানে ওয়েব পার্টনার হিসেবে কাজ করে। সেই ভিডিও পাঠক-দর্শকরা দেখতে পান বাংলালাইভের পোর্টালে,ফেসবুক পাতায় বা বাংলালাইভ ইউটিউব চ্যানেলে।