১
কে বলে দুর্বল তুমি?
কে বলেছে দৃঢ়চিত্ত নও
ওরা কতটুকু বলো,
কাছ থেকে দেখেছে তোমায়?
অস্থিসার পুরুষের পেলব হৃদয় এক
সযতনে পুলওভারে ঢাকা।
গলায় মাফলার আর মাথা জুড়ে শীতটুপিখানি
তোমাকে উষ্ণতা দেয়, যে তুমি কুণ্ঠিত বড়
দাবিদাওয়া বুঝেসুঝে নিতে।
দুমুঠো ভাতের থালা — সেও নির্মম হলে
চুপ করে বসে দ্যাখো, রোদ,
দক্ষিণ বারান্দায় নেমে আলোকিত করছে দুপুর।
সে হলুদে হাতড়াও
সবুজ ঘাসের কোমলতা।
ইদানিং তন্দ্রা আসে, আসে প্রেম, বয়সে স্বভাবে
২
যে সাঁকোটি প্রিয় খুব, সে কখনও একমুখী নয়।
গ্রাম থেকে গ্রামে যাও। সপ্তাহে হাটবার,
মাথায় কপির ঝাঁকা বয়ে বয়ে নিয়ে যাও
অনায়াস, সাঁকোপথ ধরে৷ ওই পথে বাড়ি ফেরো,
বাড়ি বাড়ি, পুঁইমাচা, ইঁটের দেওয়াল।
পরের পৌষ এলে পাকা ছাদ, দ্যাখ খুকি,
দেখে নিস ঠিক
যে সাঁকোটি প্রিয় খুব, সে কখনও একমুখী নয়।
বাবার বকুনি আর
ভাইয়ের খুনসুটি সহজ হাওয়ায় মিলেমিশে
অদূরের ঝিল হয়, সেই ঝিলে টলটলে জল।
জলে ভাসে সখাটির অন্যায় আবদার যত,
সেই জলে ডুব দেয় প্রেমিকের মুখভার,
আড়ি ভাব আদরে আদরে
যে সাঁকোটি প্রিয় খুব, সে কখনও একমুখী নয়
চারটি দশক পর মাঠগুলি, ঘরগুলি,
গাছগুলি, পাখিগুলি, হাওয়াতেই উতরোল হয়।
অবন্তিকা পাল। জন্ম ১৭ জুন ১৯৮৬, হাওড়া। কলকাতার স্থায়ী বাসিন্দা। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে জে.বি.রায়. স্টেট আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ ও হসপিটাল থেকে আয়ুর্বেদ চিকিৎসাশাস্ত্রে স্নাতক। স্নাতকোত্তর স্তরে মনস্তত্ত্বের পাঠ দ্বিতীয় বর্ষে অসমাপ্ত থেকে গেছে। তবে লেখার পরিসরে সমাজবিজ্ঞান ও মানবাধিকার চর্চা অব্যাহত। কবিতার সঙ্গে নৈকট্য আশৈশব। প্রথম কাব্যগ্রন্থ ২০১৩-তে। ২০১৭-এ প্রথম প্রবন্ধের বই। প্রথম সারির বাংলা দৈনিক, একাধিক জনপ্রিয় পত্রিকা ও ওয়েবম্যাগাজিনে তাঁর নিবন্ধ প্রকাশিত হয় নিয়মিতভাবে। সিএএ-বিরোধী আন্দোলনের সময়ে কবি ফৈজ আহমেদ ফৈজ-এর সর্বজনবিদিত 'হম দেখেঙ্গে' (দেখে নেবো আমরাই) কবিতাটির বাংলা অনুবাদ করে অবন্তিকা জাতীয় স্তরের সংবাদমাধ্যমেও জায়গা করে নিয়েছেন।