পুরুষদের তুলনায় মহিলারা অনেক দ্রুত গতিতে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। বিশেষ করে জরুরি অবস্থা বা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে মহিলারা অনেক তড়িৎ গতিতে কাজ করতে পারেন। পুরুষদের থেকে তাঁরা চটপট ভাবতে পারেন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, পুরুষদের তা বোঝাতে পারেন না। ফলে তাঁরা অবেহলিত মনে করেন নিজেদের। সম্প্রতি একটা গবেষণা তাই দাবী করেছে। আমেরিকার ‘কোলোডার বোল্ডার ইউনিভার্সিটি’-র তরফ থেকে করা হয়েছে এই গবেষণা। প্রধান লেখক মেলিসা ভিলারিয়াল জানিয়েছেন, ‘প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সময় মহিলাদের নানা প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয়। বিশেষ করে পুরুষরা তাঁদের কোনওরকম সিদ্ধান্তে সামিল করতে চান না। এর ফলে বিপর্যয় কেটে গেলেও, তাঁদের সুস্থির হতে অনেক সময় লেগে যায়।’
গবেষণটি টেক্সাসের দু’ই শহরের ৩৩জন মহিলা ও ১০ জন পুরুষের উপর করা হয়। বিশদে তাঁদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। অংশগ্রহণকারীদের একাংশ গ্রেনবারির বাসিন্দা। ২০১৩ সালে গ্রেনবারি ইফ-৪ টর্নেডোর ধাক্কায় বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিল। ছ’জন মারা যায় আর প্রায় ৬০০টি বাড়িঘর নষ্ট হয়ে যায়। অন্যরা আবার ওয়েস্টে থাকেন। ২০১৩ সালেই একটি সার প্রস্তুতকারর সংস্থায় বিস্ফোরণ ঘটে ১৫ জন মারা যায়। ১০০টি বাড়িঘর নষ্ট হয়ে যায়। দূর্ঘটনার দু’রকমের হলেও প্রভাব কিন্তু একইরকম হয়েছিল।
অংশগ্রহণকারীদের কাছে দূর্ঘটনার ছ’মাস ও এক বছর পর তাঁরা কেমন আছেন তা জানতে চাওয়া হয়। পরিস্থিতি আলাদা হলেও দেখা গেছে যে পুরুষ আর নারীদের অভিজ্ঞতার মধ্য়ে স্পষ্টতই ফারাক আছে। ভিলেরাল জানিয়েছেন, ‘মহিলাদের বিপদকে বোঝা এবং সেই সময় ঠিক কী করা উচিত, তা একেবারেই পুরুষদের ভাবনার চেয়ে আলাদা। সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় তাঁদের মতামত পুরুষরা একেবারেই গ্রাহ্য করেননি। এর ফলে কিছু ক্ষেত্রে পরিবারকে অনেক বড় বিপদে পড়তে হয়েছে।’
উনি আরও বলেছেন বিপদের সময় পুরুষরাই সব সিদ্ধান্ত নেবেন, এই চেনা ছক থেকে বেরিয়ে আসাটা জরুরি। তা হলে বাড়ির সকলেই অনেক তাড়াতাড়ি ট্রমা থেকে বেরিয়ে আসতে পারবেন। দূর্ঘটনার পরে দেখা গেছে যে মহিলাদের থেকে কোনও রকম পরামর্শ নেন না পুরুষরা। তাঁদের কাজ বাড়িকে আবার সারিয়েগুছিয়ে তোলা আর সন্তানদের দেখাশোনা করা। এর ফলে তাঁদের মধ্যে এক রকম মানসিক অশান্তি তৈরি হয়। তাঁরা এগিয়ে আসতে চান, সিদ্ধান্ত নিতে চান, কিন্তু সেই সুযোগ তাঁরা পান না। ফলে তাঁদের উদ্বেগ দীর্ঘদিন পর্যন্ত কমে না, যা সমগ্র বাড়ির জন্যেই ক্ষতিকারক।