হিট গানে কোমর দুলিয়ে নায়িকা যা-ই বলে থাকুন, রসগোল্লা কি শুধুই কলকাতার? এ হল গোটা বাংলার রসনার ধন। বরাবরই তাই ছিল। বছর দু’য়েক হল তাতে লেগেছে প্রাতিষ্ঠানিক শিলমোহর। জিআই ট্যাগ মিলেছে রসগোল্লার। এবার পরের ধাপের প্রস্তুতি শুরু করেছে প্রশাসন। রসগোল্লার ব্র্যান্ডিং এবং প্যাকেজিং! আর এ কাজে তাদের প্রধান সহায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগ।
ওই বিভাগের এক প্রবীণ অধ্যাপক জানিয়েছেন, রিসার্চ এন্ড ডেভেলাপমেন্ট (R&D) অংশের গবেষক-ছাত্ররা উদয়াস্ত কাজ করছেন এই নিয়েই। “আমাদের প্রধান লক্ষ্য হল রসগোল্লাকে দীর্ঘ সময় সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা করা। অর্থাৎ তার “শেলফ লাইফ” বাড়ানো। কী ধরনের রাসায়নিক সংরক্ষক বা প্রেজারভেটিভ ব্যবহার করলে রসগোল্লা অন্তত ছ’মাস টাটকা থাকবে, তার পুষ্টিগুণ নষ্ট হবে না, রসে ভেজা নরম তুলতুলে ভাবটি অক্ষুণ্ণ থাকবে, সেটাই আমাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিষয়। তবে এখনও আমাদের প্রযুক্তিগত সমাধান প্রশাসনের হাতে তুলে দেওয়া যায়নি। প্রক্রিয়া চলছে। সুতরাং কবে নবকলেবরে রসগোল্লার প্রবেশ ঘটবে বাজারে সেটা জানতে গেলে প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন ওঁরাই।“
তবে কি এখন থেকে বাঙালির পাতে পড়বে বাসি রসগোল্লা? পাড়ায় পাড়ায় রসগোল্লার ডাকসাইটে কারিগরদের দিন কি তবে ফুরিয়ে এল? সে উত্তর এখনও স্পষ্ট নয়। তবে প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের বক্তব্যে এটা অন্তত স্পষ্ট যে রসগোল্লার জাতীয় তথা আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডিং এবং মার্কেটিং নিয়ে রীতিমতো ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে সরকার। স্বপনবাবুর কথায়, “২০১৭-তে জিআই ট্যাগ পেয়েছে রসগোল্লা। তারপর থেকেই আমাদের ভাবনাচিন্তা চলছে। গত বছর ১৪ নভেম্বর আমরা রসগোল্লা দিবস পালন করেছিলাম রাজারহাটের মিষ্টি হাবে। এবার লক্ষ্য আরেকটু দূরে। রসগোল্লার উৎপাদন ও সংরক্ষণে জোর দিচ্ছি আমরা।“
মন্ত্রী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক দল, উভয়েই জানান, সংরক্ষণের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়ে গেলেই বিস্কুট-চকলেটের মতো রসগোল্লাও স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রে উৎপাদন ও প্যাকেজিং করা হবে। খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগ এ ব্যাপারে কিছু স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিধিও নির্ধারণ করে দিয়েছে। সেগুলি মেনেই ‘মাদার ডেয়ারি’র ব্র্যান্ডনেমে বাজারে আসবে প্যাকেটজাত রসগোল্লা। তবে প্রথমবারের উৎপাদিত পণ্যই বাজারে ছাড়া হবে না। তার খাদ্যগুণ, স্বাদ, স্বাস্থ্যসম্মতি নিয়ে চলবে দ্বিতীয় দফার পরীক্ষা-নিরীক্ষা। তারপর বিশেষজ্ঞদের অনুমতি পেলে তবেই বাজারজাত করা হবে একে। কারণ রসগোল্লার স্বাদ এবং গুণমান নিয়ে কোনও আপস করতে রাজি নন সরকার বাহাদুর।
লিখতে শিখেই লুক থ্রু! লিখতে লিখতেই বড় হওয়া। লিখতে লিখতেই বুড়ো। গান ভালবেসে গান আর ত্বকের যত্ন মোটে নিতে পারেন না। আলুভাতে আর ডেভিলড ক্র্যাব বাঁচার রসদ। বাংলা বই, বাংলা গান আর মিঠাপাত্তি পান ছাড়া জীবন আলুনিসম বোধ হয়। ঝর্ণাকলম, ফ্রিজ ম্যাগনেট আর বেডস্যুইচ – এ তিনের লোভ ভয়ঙ্কর!!