অভিযোগ আর অনুযোগের পাহাড় পেরিয়ে এবার সামনের দিকে তাকাতে চাইছে কলকাতা মেট্রো। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২১ সালের মধ্যে সপ্তাহের কাজের দিনে ৯০ সেকেন্ড অন্তর মেট্রো চলবে কলকাতায়। আধিকারিদের দাবি, এর জন্য মেট্রোর পরিকাঠামোগত যে উন্নয়ন প্রয়োজন, তা করা হবে। ইতিমধ্যেই রেল বোর্ড থেকে এই বিষয়ে সম্মতি মিলেছে। প্রয়োজনিয় অর্থও বরাদ্দ করেছে রেল। এবার কেবল কাজ শুরুর অপেক্ষা।
মেট্রো সূত্রের খবর, দমদম থেকে কবি সুভাষ স্টেশন পর্যন্ত লাইনের সিগন্যালিং ব্যবস্থা সম্পূর্ণ নতুন করে তৈরি করা হবে। সেখানে আগের ফিক্সড ব্লক অনুযায়ী সিগন্যাল পোস্টের প্রয়োজন পড়বে না। নতুন ব্যবস্থায় একই ট্র্যাকে একটির পিছনে আরেকটি ট্রেন থাকলে লাইনের ব্লক এড়াতে স্বয়ংক্রিয় এবং ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে সিগন্যাল নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। ১০০ মিটার লম্বা ট্রেনের জন্য লাইনে ১৩০ মিটার লম্বা ব্লক তৈরি করা হবে। এর ফলে একই লাইনে পরপর অবস্থান করা দু’টি ট্রেনের মধ্যে ৩০ মিটার ফাঁক রাখা সম্ভব হবে। স্বাভাবিকভাবেই অনেক বেশি রেক চালাতে পারবেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ।
কলকাতা মেট্রোর এক শীর্ষ আধিকারিক জানান, সম্প্রতি আধুনিক প্রযুক্তির সিগন্যাল সিস্টেম বসাতে চেয়ে বোর্ডের কাছে আবেদন করা হয়েছিল। চলতি মাসের শুরুতে বোর্ড সেই প্রস্তাবে সবুজ সংকেত দিয়েছে। এই কাজের জন্য বরাদ্দ হয়েছে মোট ৪৬৭ কোটি টাকা। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর মতোই দমদম থেকে কবি সুভাষ পর্যন্ত কমিউনিকেশন বেসড ট্রেন কন্ট্রোল সিস্টেম বা সিবিটিসিসি বসানো হবে। আগামী অক্টোবর থেকে কাজ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানাচ্ছেন মেট্রোকর্তারা।
মেট্রোর এক আধিকারিক জানান, এখন প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৭ লক্ষ যাত্রী মেট্রো ব্যবহার করেন। এই বিপুল যাত্রীর চাপ সামলাতে আরও অনেক বেশি ট্রেনের প্রয়োজন। তাঁর কথায়, “দিনের অধিকাংশ সময়ই মেট্রোয় অস্বাভাবিক ভিড় হয়। দুর্ঘটনার সম্ভাবনা দেখা দেয়। একাধিকবার এই ধরনের ঘটনায় আমাদের মুখ পুড়েছে। দেড় মিনিট অন্তর ট্রেন চালালে ভিড়ের চাপ কমবে প্রায় ৭০ শতাংশ। তাই এমন পদক্ষেপ।”
কিন্তু কলকাতা মেট্রোর ভাঁড়ারে যা রেক রয়েছে, তা দিয়ে কি আদৌ ৯০ সেকেন্ড অন্তর ট্রেন চালানো সম্ভব? সূত্রের খবর, সমস্যা মেটাতে একঝাঁক নতুন রেক আমদানি করছেন কর্তৃপক্ষ। প্রথমে আনা হবে ২৬টি আইসিএফ মেধা রেক। রায়বেরিলির মর্ডান কোচ ফ্যাক্টরি থেকে আনা হবে ৩টি উন্নত রেক। এছাড়া ১৪টি সিআরআরসি ড্যালিয়ন রেক আনার পরিকল্পনা রয়েছে।