প্ল্যাস্টিক দূষণ সম্পর্কে আমরা সকলেই কম বেশি জানি। প্ল্যাস্টিক প্যাকেট ব্যবহার কমানো নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। কিন্তু এ তো গেল বাইরের কথা। বাড়িকে কি আপনারা প্ল্যাস্টিক মুক্ত করতে পেরেছেন? কথায় আছে না সমাজ বদলাতে গেলে, শুরুটা নিজেকে দিয়ে করতে হয়। এ ক্ষেত্রেও কথাটা একশো ভাগ সত্যি। তাই সবার প্রথমে নিজের বাড়িতে প্ল্যাস্টিকের ব্যবহার কমান। কীভাবে?
● প্ল্যাস্টিকের বোতলে জল খাওয়া বন্ধ করুন
কাচ বা স্টেনলেস স্টিলের বোতলে জল খাওয়া শুরু করুন। সফ্ট ড্রিংঙ্কের খালি বোতলগুলো জমিয়ে রাখবেন না। ফ্রিজ এবং বাড়ি থেকে এগুলো বিদায় করুন। এগুলো ফেলে দিলে রিসাইকেল করা সম্ভব। পরিবেশ সচেতনতা কিন্তু এভাবেই গড়ে ওঠে।
● ময়লা ফেলতে প্ল্যাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার করবেন না
সাধারণ মধ্যবিত্ত বাড়িতে ময়লা ফেলার সবচেয়ে সহজ পন্থা অবশ্যই প্ল্যাস্টিকের প্যাকেট। আর তাই যখন প্যাকেটের ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল, তখন বেজায় ফাঁপড়ে পড়েছিলেন সবাই। কারণ প্ল্যাস্টিকের প্যাকেটের বদলে অন্য কিছুর ব্যবহার তখন জানা ছিল না। তবে এখন অনেক ধরনের জীবাণুবিয়োজ্য ময়লা ফেলার ব্যাগ পাওয়া যায়। দামও খুব বেশি নয়। তা হলে আর অপেক্ষা করছেন কেন?
● ক্লিং শিট আর অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল বাতিল করুন
রোজকার ব্যবহারের মধ্যে ক্লিং শিট আর অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল অপরিহার্য। কিন্তু এর চেয়ে ঢের ভাল বিজওয়্যাক্স স্ট্রিপ। এর প্রাকৃতিক জীবাণুনাশক গুণ ও জোজোবা অয়েল প্ল্যাস্টিকের চেয়ে বেশি সময় খাবার টাটকা রাখে। ফলে খাবার নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনাও কমে যায়।
● প্ল্যাস্টিকের টুথব্রাশ আর নয়
জানেন কি, প্ল্যাস্টিকের টুথব্রাশ আবর্জনার সঙ্গে ফেললে ক্ষয় হতে কয়েকশো বছর লেগে যেতে পারে? তার চেয়ে বাঁশের তৈরি টুথব্রাশ ব্যবহার করুন। দীর্ঘ দিন ব্যবহার করতে পারবেন আর ফেলে দিলে নিজেই থেকেই ক্ষয়ে যাবে। ফলে পরিবেশ দূষণ অনেকটাই কম হবে।
● প্যাকেজড ড্রিঙ্ক খাওয়া বন্ধ করুন।
সোডা বা কোল্ড ড্রিংকের প্ল্যাস্টিক বোতল কিনবেন না। এগুলো খাওয়া বন্ধ করলে, স্বাভাবিক ভাবেই এর উৎপাদনও কমবে। এমনিতেও এই ধরনের পানীয় শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক। তার চেয়ে ডাবের জল, লেবুর সরবতের মতো প্রাকৃতিক পানীয় খান। শরীর ভাল থাকবে আবার পরিবেশও সুরক্ষিত থাকবে।
● স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করবেন না
স্যান্যিটারি ন্যাপকিন কতটা ক্ষতিকর, তা নিয়ে প্রচুর আলোচনা হয়েছে। পরিবেশের জন্য যে এগুলো ভাল নয়, তা কিন্তু প্রমাণিত। প্ল্যাস্টিকে মোড়া ট্যাম্পুনসও তাই। ফলে সারা বিশ্বের মহিলারা এখন এগুলো ছেড়ে কাপড়ের প্যাড ও মেনস্ট্রুয়াল কাপের দিয়ে ঝুঁকছেন। আপনিও ব্যবহার করে দেখুন। ঠকবেন না!
● এয়ার পিউরিফায়ারের চেয়ে ধূপকাঠি ভাল
বাড়ি-ঘর সুগন্ধিত রাখতে আমরা সকলেই কম বেশি এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করি। কিন্তু এই কাজটা ধূপকাঠিও অনায়াসে করতে পারে। পিউরিফায়ারের বোতল কিন্তু প্ল্যাস্টিকের তৈরি। পাশাপাশি এতে অনেক কেমিক্যালও থাকে। অন্য দিকে ধূপকাঠি প্রাকৃতিক ভাবে তৈরি করা হয়। এর মধ্যে কোনওরকম বিষাক্ত পদার্থ থাকে না আবার রিসাইকেল করাও সম্ভব।
● কাপড় পরিষ্কার করতে রিঠা ব্যবহার করুন
রিঠা চুলের জন্য তো বটেই কাপড় পরিষ্কার রাখতেও দারুণ উপযোগী। কাপড় কাচার সময় সাবানের বদলে রিঠা ব্যবহার করতে পারেন। রিঠা প্রাকৃতিক কীটনাশক হিসেবে কাজ করে পোশাক ভাল রাখে। রিঠা ব্যবহার করলে জলও কম খরচ হয়, কারণ সাবানের মতো পোশাকের গায়ে লেগে থাকে না। অল্প ঘষলেই উঠে আসে।
বাংলালাইভ একটি সুপরিচিত ও জনপ্রিয় ওয়েবপত্রিকা। তবে পত্রিকা প্রকাশনা ছাড়াও আরও নানাবিধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে থাকে বাংলালাইভ। বহু অনুষ্ঠানে ওয়েব পার্টনার হিসেবে কাজ করে। সেই ভিডিও পাঠক-দর্শকরা দেখতে পান বাংলালাইভের পোর্টালে,ফেসবুক পাতায় বা বাংলালাইভ ইউটিউব চ্যানেলে।