banglalive logo
Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

‘অমানুষ’-এর মহিম ঘোষাল কিংবা ‘গোলমাল’-এর ভবানীশঙ্কর – দু’য়েতেই বাজিমাৎ

Bookmark (0)
ClosePlease login

No account yet? Register

Utpal Dutt

উৎপল দত্ত সেই বিরল প্রতিভাধর অভিনেতাদের মধ্যে একজন, যিনি শিল্পধর্মী এবং বাণিজ্যিক, উভয় শ্রেণির ছায়াছবিতেই দাপটের সঙ্গে অভিনয় করেছেন। শুধু তা-ই নয়, দর্শকদের কাছে এক স্বতন্ত্র এবং নিজস্ব চাহিদা তৈরি করে দারুণ জনপ্রিয়তাও অর্জন করেছিলেন। তাঁর প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে আমাদের এই যে আলোচনা, এটা আমরা সীমাবদ্ধ রাখব শুধুমাত্র উৎপল দত্ত অভিনীত বাণিজ্যিক (এবং মিডল রোড) ছায়াছবিতে তাঁর অভিনয় দক্ষতা এবং বহুমুখিতার মধ্যেই।

Utpal Dutt
মধু বসুর পরিচালনায় ‘মাইকেল মধুসূদন’ ছবিতে উৎপল দত্তর প্রথম পর্দায় আগমন। ছবি সৌজন্য – artemisnt.blogspot.com

সকলেই জানেন, উৎপল দত্ত মূলতঃ মঞ্চের লোক। সেখানে তাঁর সৃজনশীলতার (অভিনয় এবং পরিচালনা) পরিচয় নিয়ে নতুন করে বলবার কিছু নেই। কিন্তু এতখানি মঞ্চসফল এবং রাজনৈতিক ভাবে সক্রিয় একজন অভিনেতা-পরিচালক কেন, কী ভাবে ছায়াছবির জগতে এলেন? তাঁর ছবির জগতে আসার মূল কারণ হিসেবে বলা যায়, তাঁর নাটকের দলকে বাঁচিয়ে রাখা। ছায়াছবি থেকে উপার্জিত অর্থের অধিকাংশই উৎপলবাবু ব্যয় করতেন তাঁর নাট্যদলের উন্নতিকল্পে, এ কথা শোনা যায়। উৎপলবাবুকে প্রথম ছায়াছবির প্রস্তাব দেন অতীত দিনের বিশিষ্ট পরিচালক মধু বসু। তাঁর আহ্বানে এবং তাঁরই পরিচালনায় ‘মাইকেল মধুসূদন’ (১৯৫০) ছবিতে নামভূমিকায় প্রথমবার রুপোলি পর্দায় আসেন উৎপল দত্ত। ছবিটি জীবনীমূলক হলেও প্রথাগত বাণিজ্যিক ধারারই ছবি ছিল। নিজের অভিনয় দক্ষতা ছাড়াও অসাধারণ ইংরেজি বাচনভঙ্গিতে তিনি দর্শকদের মুগ্ধ করেন। পরিচালকদেরও মনে ধরেছিল উৎপলবাবুর সেই ব্রিটিশ অ্য়াকসেন্টে বলা ইংরিজিকথন, যা সেই সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে ছিল এক বিরল গুণ। সুতরাং স্বাভাবিক ভাবেই বাণিজ্যিক বাংলা ছায়াছবির পরিচালকেরা চাইছিলেন, তাঁদের ছবিতে এই গুণের ব্যবহার করতে।

কিন্তু সব ছবিতেই তো আর মাইকেল মধুসূদনের মতো চরিত্র পাওয়া যাবে না। তাই ছবিতে আমদানি করতে হল ইউরোপীয়ান চরিত্র – যারা ছবিতে ‘ট’ মিশ্রিত বাংলা (করিটে পারিবে না, ঘুরিটে পারিবে না, জাতীয়) এবং সম্ভাব্য ক্ষেত্রে ইংরিজি বলতে সক্ষম হবে। তাছাড়া উৎপল দত্তের গোরা সাহেব মার্কা গুরুগম্ভীর চেহারাটাও এই ধরনের চরিত্রে অভিনয়ের পক্ষে সহায়ক ছিল। তাই এই ছাঁচে ঢেলে শুরু হল পরপর কিছু এই ধরনের বাণিজ্যিক বাংলা ছবি তৈরি। যেমন – ‘সিরাজদৌল্লা’ (১৯৫২) বা ‘কীর্তিগড়’ (১৯৫৬) ইত্যাদি। ‘কীর্তিগড়’ ছবির ক্ষেত্রে তো প্রযোজকেরা বিজ্ঞাপনেও লিখে দিতেন ‘গঞ্জালেস-এর ভূমিকায় উৎপল দত্ত’(গঞ্জালেস ছিল ছবির এক পর্তুগিজ জলদস্যুর চরিত্র)।

Utpal Dutt
শেষ অঙ্ক ছবিতে মেজাজি উকিলের ভূমিকায় নজর কেড়েছিলেন উৎপল দত্ত। ছবি সৌজন্য – youtube.com

কিন্তু এই তত্ত্বও বেশিদিন চলল না। বোধহয় একঘেয়েমি এবং উপযুক্ত গল্পের অভাবই ছিল এই তত্ত্ব বাতিলের কারণ। এর পর আমদানি হল এক নতুন তত্ত্বের। বাঙালি বাড়ির কাহিনিতে মামলা-মোকদ্দমার অভাব ছিল না। আর মামলা-মোকদ্দমা থাকলে উকিল-ব্যারিস্টারের চরিত্র থাকবেই। একটু সাহেবি কেতার ইংরিজি জানা উকিলের চরিত্র হলে অবধারিত ভাবে সেই চরিত্রে থাকবেন উৎপল দত্ত। তাঁর বিপরীতে উকিল থাকবেন মধ্যবিত্ততায় আক্রান্ত কোনও অভিনেতা। যাতে বৈপরীত্যটা ভালো ফোটে। এই ধরনের ছবির সেরা উদাহরণ ছিল ‘শেষ অঙ্ক’, যেখানে ছবির নায়ক উত্তমকুমারের পক্ষে উকিল ছিলেন উৎপল দত্ত – মেজাজি এবং কিছুটা অধৈর্য – চরিত্রানুযায়ী। আর উৎপলবাবুর দত্তের বিরুদ্ধে সাদামাটা পোশাকে ওকালতি বুদ্ধিতে ভরপুর কমল মিত্র।

Utpal Dutt

এই কনসেপ্টের ফাঁদে একদা মৃণাল সেনও পা দিয়েছিলেন তাঁর ‘কলকাতা – ৭১’ (১৯৭২) ছবিতে, একই ধরনের চরিত্রে উৎপল দত্তকে নির্বাচন করে। এ ধরনের উকিলের চরিত্রে উৎপল দত্তের অভিনয় দর্শকদের কেমন লাগে সেটা ‘শেষ অঙ্ক’ ছবিতে কমল মিত্রের একটি সংলাপেই কায়দা করে বলে দেওয়া হয়েছিল –‘থামুন মশাই! কায়দা করে মুখ বেঁকিয়ে দু’টো ইংরিজি বললেই উকিল হওয়া যায় না। তার জন্য আইনটা জানতে হয়!’

Utpal Dutt
‘ফরিয়াদ’ ছবি দিয়ে খলনায়ক উৎপল দত্তের যাত্রা শুরু। ছবি সৌজন্য – muktadhara.com

কিন্তু এই উকিল সাজার পাটও একদিন চুকল। এবার উৎপল দত্ত ছবিতে দেখা দিলেন খলনায়ক হিসেবে। বলে রাখা ভালো, এই উকিল চরিত্রদের আচরণ এবং অভিনয়েই লুকিয়ে ছিল পরবর্তীকালে ‘ভিলেন’ উৎপল দত্তের বীজ। উৎপলবাবু বাংলা ছবিতে দুঁদে খলনায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলেন ১৯৭১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত বিজয় বসুর ‘ফরিয়াদ’ ছবিতে। বিপরীতে সুচিত্রা সেন।

সাড়া জাগানো হিট সেই ছবিতে ঠিক প্রথাগত মার্কামারা ভিলেন অবশ্য ছিলেন না উৎপল দত্ত। ইংরিজি জানা পয়সাওয়ালা হোটেল মালিক বরেন মল্লিকের ভূমিকায় দারুণ অভিনয় করলেন তিনি। অভাবের সুযোগ নিয়ে এক মধ্যবিত্ত বিবাহিতা মহিলাকে নিয়মিত শোষণ করে, তাঁকে নিজের হোটেলে ক্যাবারে ডান্সার হতে বাধ্য করে একপ্রকার আত্মপ্রসাদে মগ্ন থাকত বরেন মল্লিক। শুধু নিজে নয়, তার হোটেলের খদ্দেরবর্গকেও সেই নারীর সঙ্গ করার সুযোগ দিত সে। মহিলার স্বামীও তাঁকে রক্ষা করার পরিবর্তে বরেন মল্লিকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যায়। শেষে মহিলার তরুণ পুত্র বরেন মল্লিককে খুন করে তাকে দুষ্কর্মের শাস্তি দেয় এবং মা-কে অত্যাচারের হাত থেকে উদ্ধার করে। খলনায়ক হয়েও অভিনয়ে কৌতুকরসের ছোঁওয়া লাগিয়ে এক নতুন ধরনের ভিলেনিতে দর্শককে মোহিত করে ফেললেন উৎপলবাবু। এবং যথারীতি তারপর এই কমিক-ভিলেন চরিত্রই তিনি পরপর ছবিতে করতে থাকেন।

-- Advertisements --

এরপর একে একে নানা ধরনের নেতিবাচক চরিত্র এবং তার নানা দিক বাঙালি দর্শকদের উপহার দিয়ে গেলেন উৎপল দত্ত। মূল উপাদানগুলি অবশ্য একই রইল – শঠতা, ক্রূরতা এবং নিষ্ঠুরতার সঙ্গে কৌতুকস্পর্শ – সরস সংলাপের মাধ্যমে। একটার পর একটা হিট বাংলা ছবিতে নানারূপে ভিলেন উৎপল দত্তকে দেখা যেতে লাগল। কখনও আরব্য রজনীর গল্পে দস্যু সর্দার – ‘মর্জিনা আবদাল্লা’ (১৯৭৩), কখনও সুন্দরবন অঞ্চলের ধনবান আড়তদার, যিনি পূর্বতন মালিককে খুন করে, মালিকের উত্তরাধিকারীকে ঠকিয়ে সম্পত্তি হাতিয়ে নিয়েছেন – ‘অমানুষ’ (১৯৭৪), আবার কখনও বা শরৎকাহিনির শিক্ষিত ভিলেন, যিনি শঠতার সঙ্গে বন্ধুকন্যার বিপুল সম্পত্তি হাতাতে গিয়ে বিফল হন – ‘দত্তা’ (১৯৭৬)।

Utpal Dutt
একের পর এক নেতিবাচক চরিত্র। আর সবেতেই অসামান্য অভিনয়। ছবি সৌজন্য – alchetron.com

‘দত্তা’য় রাসবিহারীর চরিত্রে দুর্দান্ত অভিনয় করলেও বাঙালি দর্শক উৎপলবাবুকে অনেক বেশি করে মনে রেখেছে ‘অমানুষ’ ছবির ‘মহিম ঘোষাল’ চরিত্রের জন্য। নায়ক উত্তমকুমারের অভিনয়ও বুঝিবা কিছুটা ম্লান হয়ে গিয়েছিল উৎপল দত্তের অভিনয়ের সূক্ষ্মতার কাছে। যদিও এই ‘ভিলেন’ উৎপল দত্তেরই অভিনয় ডাহা ফ্লপ করেছিল উত্তম অভিনীত আরেকটি ছবি ‘সিস্টার’-এ (১৯৭৭)। তবে তার প্রধান কারণ, বলা যেতে পারে গল্পের অবাস্তবতা এবং চরিত্রের উপস্থাপনা।

‘অমানুষ’ ছবির পরিচালক শক্তি সামন্ত অবশ্য তাঁর পরবর্তী দু’টি বাংলা ছবি ‘অনুসন্ধান’ (১৯৮১) এবং ‘অন্যায় অবিচার’-এ (১৯৮৫) ‘ভিলেন’ উৎপল দত্তকে একটু এদিক-ওদিক করে জামা পাল্টিয়ে ব্যবহার করেছিলেন। এই ছবি দু’টির নায়ক ছিলেন যথাক্রমে অমিতাভ বচ্চন এবং মিঠুন চক্রবর্তী। মাঝের একটা বাংলা ছবিতে শক্তি সামন্ত অবশ্য উৎপলবাবুকে অন্য ভাবে ব্যবহার করেছিলেন। সে কথায় পরে আসছি।

Utpal Dutt
মগনলাল মেঘরাজ সম্ভবত উৎপল দত্ত অভিনীত সেরা ভিলেন চরিত্র। ছবি সৌজন্য – facebook.com

উৎপল দত্ত অভিনীত খল চরিত্রের চরমতম রূপটি অবশ্য আমরা প্রত্যক্ষ করেছি সত্যজিৎ রায়ের ‘জয়বাবা ফেলুনাথ’ (১৯৭৯) ছবিতে। কৌতুকমিশ্রিত সংলাপে এবং শঠতা ও নিষ্ঠুরতায় হাড়ে ঠকঠকানি ধরিয়ে দেওয়া অভিনয় করেছিলেন তিনি। এমনই সে অভিনয় যে শিক্ষিত, জ্ঞানী অথচ অপরাধমনস্ক ভিলেনের পাশে গোয়েন্দা ফেলুদাকেও (সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়) কখনও কখনও অসহায় দেখিয়েছে। ফেলুদা অবশ্য ছবির শেষে তার প্রতিশোধ নিয়েছিল, কিন্তু সেটা তেমন জমেনি বলেই আমার বিশ্বাস। সম্ভবতঃ বাংলা ছবির সেরা ভিলেন চরিত্র (অদ্যাবধি) ‘জয়বাবা ফেলুনাথ’-এর মগনলাল মেঘরাজ। ১৯৬৯ সালে মৃণাল সেনের প্রথম হিন্দি ছবি ‘ভুবন সোম’-এর নাম ভূমিকায় অভিনয় করে উৎপল দত্ত সে বছর সেরা অভিনেতার জাতীয় পুরস্কার (ভরত পুরস্কার) পেয়েছিলেন। ভুবন সোম এক সিরিয়াস রেল অফিসারের চরিত্র হলেও তাতে বেশ কিছু কমিক এলিমেন্ট ছিল।

Utpal Dutt
মৃণাল সেন-এর ভুবন সোম চরিত্রটিতেও কিছুটা কমিক এলিমেন্ট ছিল। ছবি সৌজন্য – filmbuff.in

কিন্তু শুধুমাত্র ভিলেনিতে কমিকের ছোঁওয়া লাগিয়েই ক্ষান্ত রইলেন না অভিনেতা উৎপল দত্ত। পরিচালকদের দাবিতে আপাদমস্তক কমিক চরিত্রেও শুরু করলেন অভিনয়। কমিক চরিত্রে অভিনয়ের সব ক’টি গুণই ছিল উৎপল দত্তের মজ্জাগত। হাসির সংলাপ গম্ভীর মুখে বলার অনায়াস দক্ষতা, অসাধারণ কমিক টাইমিং এবং চোখ এবং মুখের পেশির চমৎকার ব্যবহারে উৎপলবাবু যে কোনও কমিক চরিত্রকেই বাস্তব-ঘেঁষা অথচ মজাদার করে তুলতে পারতেন। পরিচালক তরুণ মজুমদারই প্রথম ভেবেছিলেন যে একটি বাংলা ছবিতে আদ্যন্ত একটি কমিক চরিত্রে উৎপল দত্তকে দিয়ে অভিনয় করানো যেতে পারে। ছবির নাম – ‘শ্রীমান পৃথ্বীরাজ’ (১৯৭৩)। ছবিতে নায়কের জমিদার শ্বশুর, যিনি ইংরেজ মনিবদের নানাভাবে তোষামোদ করে ‘রায়বাহাদুর’ খেতাব পেতে অভিলাষী, এমন একটি চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন উৎপল দত্ত। একে তাঁর অন্যতম শ্রেষ্ঠ কৌতুকাভিনয় বললেও অতিশয়োক্তি হবে না। নবাগত কিশোর নায়ক-নায়িকা তো ছবির অন্যতম আকর্ষণ ছিলই। কিন্তু ছবিটি হিট করেছিল উৎপল দত্তের অনবদ্য অভিনের গুণে, এ কথা বলাই যায়।

উৎপল দত্তের কমিক চরিত্রে আরও একটি সেরা অভিনয় আমরা পেয়েছিলাম ‘বাবুমশাই’ (১৯৭৭) ছবিতে। গত শতকের চল্লিশের দশকের আশেপাশে কলকাতা শহরের গল্প। এক উচ্ছৃঙ্খল অপরিণতমনস্ক বড়লোক (জমিদার পুত্র) ভাগ্নের মামার ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। ভাগ্নেকে ভুলিয়ে ভালিয়ে একজন রক্ষিতা রাখতে উৎসাহ দিয়ে নিজেরই এক পরিচিতা মেয়েকে রক্ষিতা হিসেবে ভাগ্নের সঙ্গে জুড়ে দিয়ে ভাগ্নেকে নিজের তাঁবে আনার চরিত্রটি নিজের কমিক অভিনয়ে চমৎকার ফুটিয়েছিলেন উৎপল দত্ত। অবশ্য পাল্লা দিয়ে ভালো অভিনয় করেছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ও। দুঃখের বিষয়, এত চমৎকার কমেডি ছবিটি দর্শকে নেয় নি।

Utpal Dutt
কমিক চরিত্রে অভিনয়ের সব ক’টি গুণই ছিল উৎপল দত্তের মজ্জাগত। । ছবি সৌজন্য – jiyobangla.com

উৎপল দত্তের কমিক অভিনয়ের তৃতীয় উল্লেখযোগ্য নিদর্শন ছিল ‘মোহনবাগানের মেয়ে’ (১৯৭৬) ছবিটিতে। ইস্টবেঙ্গল সমর্থক ছেলের বাবা গোঁড়া মোহনবাগান। ছেলের জন্য পাত্রীর আবশ্যিক যোগ্যতা, তাকে অবশ্যই মোহনবাগান সমর্থক হতে হবে। কিন্তু ছেলের কেরামতিতে পাত্রীও হল ইস্টবেঙ্গল! কিন্তু শ্বশুর জানলেন, পাত্রী মোহনবাগান! তাই নিয়ে একের পর এক মজার ঘটনা। যথারীতি এই ছবিতেও নায়ক-নায়িকার থেকে ছাপিয়ে গিয়েছিল উৎপল দত্তের কমিক অভিনয়। ১৯৭৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ছুটির ফাঁদে’ ছবিটি গঠনগত দিক দিয়ে অনেকটাই ‘মোহনবাগানের মেয়ে’-র কাছাকাছি। এখানে শ্বশুরের বদলে ওখানে অফিসের বস। তাঁকে মিথ্যে বলে ছুটি নিয়ে নায়ক নায়িকা যেখানে বেড়াতে গেল, ঘটনাচক্রে সেখানেই বসের আগমন এবং ধরা পড়ার ভয়ে স্ত্রীকে রেখে স্বামীর পলায়ন। তারপর মজাদার সব ঘটনার শেষে সত্য উদ্ঘাটন।

Utpal Dutt
গোলমাল ছবিতে গুম্ফপ্রেমী ভবানীশঙ্কর বাজপেয়ীর চরিত্রে উৎপল দত্ত তাঁর অন্যতম সেরা কৌতুকাভিনয়টি করলেন। ছবি সৌজন্য – deccanherald.com

হিন্দি মিডল রোড ছবির পরিচালকেরা যেমন হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায় বা বাসু চট্টোপাধ্যায় উৎপলবাবুর এই কমিক-অভিনয়ের সূক্ষ্মতার বিষয়টিকে তাঁদের ছবিতে সার্থক ভাবে কাজে লাগান। ফলে সর্বভারতীয় দর্শক ‘গুড্ডি’ (১৯৭২), ‘গোলমাল’ (১৯৭৭) বা ‘শৌকিন’ (১৯৮৪), ‘রঙ্গ বিরঙ্গি’ (১৯৮৩)- এর মতো ছবি দেখার সুযোগ পান। তিনটিই বাণিজ্যসফল ছবি এবং তিনটি ছবিতেই উৎপল দত্তের কাজ উচ্চ প্রশংসিত। রঙ্গ বিরঙ্গিতে তাঁর টিনের তরোয়াল নাটকের একটা ছায়া দেখতে পাওয়া যায়। যদিও তাঁর সেরা অভিনয়টি আমরা পেয়েছি ‘গোলমাল’ ছবিতে, কিন্তু বিষয়ের বাস্তবঘেঁষা অভিনবত্বে ‘শৌকিন’ অনেক বেশি উতরেছিল।

Utpal Dutt
হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায় বা বাসু চট্টোপাধ্যায়ের মতো মিডল রোড পরিচালকদের একের পর এক ছবিতে অনবদ্য অভিনয় করে গিয়েছেন উৎপল দত্ত। ছবি সৌজন্য – chhotahazri.blogspot.com

উৎপল দত্ত সেই বিরল শ্রেণির অভিনেতা যিনি বাংলা, হিন্দি এবং ইংরিজি এই তিনটি ভাষার ছবিতেই সমান দক্ষতায় অভিনয় করেছেন। যদিও বাংলা ও হিন্দির তুলনায় তাঁর ইংরিজি ছবির সংখ্যা অনেক কম। ১৯৬৫ সালে ‘শেক্সপিয়রওয়ালা’-তে ভালো অভিনয় করলেও ১৯৬৮ সালে নির্মিত ‘দ্য গুরু’ ছবি তাঁকে বিপুল খ্যাতি এনে দেয়।

2 Responses

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Subscribe To Newsletter

কথাসাহিত্য

সংস্কৃতি

আহার

বিহার

কলমকারী

ফোটো স্টোরি

উপন্যাস

Banglalive.com/TheSpace.ink Guidelines

Established: 1999

Website URL: https://banglalive.com and https://thespace.ink

Social media handles

Facebook: https://www.facebook.com/banglaliveofficial

Instagram: https://www.instagram.com/banglalivedotcom

Twitter: @banglalive

Needs: Banglalive.com/thespace.ink are looking for fiction and poetry. They are also seeking travelogues, videos, and audios for their various sections. The magazine also publishes and encourages artworks, photography. We however do not accept unsolicited nonfiction. For Non-fictions contact directly at editor@banglalive.com / editor@thespace.ink

Time: It may take 2-3 months for the decision and subsequent publication. You will be notified. so please do not forget to add your email address/WhatsApp number.

Tips: Banglalive editor/s and everyone in the fiction department writes an opinion and rates the fiction or poetry about a story being considered for publication. We may even send it out to external editors/readers for a blind read from time to time to seek opinion. A published story may not be liked by everyone. There is no one thing or any particular feature or trademark to get published in the magazine. A story must grow on its own terms.

How to Submit: Upload your fiction and poetry submissions directly on this portal or submit via email (see the guidelines below).

Guidelines:

  1. Please submit original, well-written articles on appropriate topics/interviews only. Properly typed and formatted word document (NO PDFs please) using Unicode fonts. For videos and photos, there is a limitation on size, so email directly for bigger files. Along with the article, please send author profile information (in 100-150 words maximum) and a photograph of the author. You can check in the portal for author profile references.
  2. No nudity/obscenity/profanity/personal attacks based on caste, creed or region will be accepted. Politically biased/charged articles, that can incite social unrest will NOT be accepted. Avoid biased or derogatory language. Avoid slang. All content must be created from a neutral point of view.
  3. Limit articles to about 1000-1200 words. Use single spacing after punctuation.
  4. Article title and author information: Include an appropriate and informative title for the article. Specify any particular spelling you use for your name (if any).
  5. Submitting an article gives Banglalive.com/TheSpace.ink the rights to publish and edit, if needed. The editor will review all articles and make required changes for readability and organization style, prior to publication. If significant edits are needed, the editor will send the revised article back to the author for approval. The editorial board will then review and must approve the article before publication. The date an article is published will be determined by the editor.

 

Submit Content

For art, pics, video, audio etc. Contact editor@banglalive.com