একদিকে নিজের কেরিয়ার, অন্যদিকে সন্তানকে সুন্দর করে বড় করে তোলার সদিচ্ছে, এই দুটোর মধ্যে কেমন যেন স্যান্ডউয়িচ হয়ে যান মহিলারা। অফিস করতে গিয়ে মনে হয় অবহেলা করে ফেলছিনা তো বাচ্চাকে? এই অপরাধবোধ কি স্বাভাবিক না অমূলক, বিশ্লেষণ করলেন মনোবিদ ডা. তিলোত্তমা মুখোপাধ্যায়।
সারা পৃথিবীর সামাজিক এবং অর্থনৈতিক কাঠামো ক্রমশ বদলে যাচ্ছে। আর তার জেরেই এখন অধিকাংশ বাড়িতে পুরুষদের সঙ্গে মহিলারাও রীতিমতো বাইরে বেরচ্ছেন, চাকরি করছেন। এতে স্ট্যান্ডার্ড অব লিভিং-ও সবার যে ভাল হয়েছে তা নিশ্চয় স্বীকার করবেন! তা ছাড়ে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা মহিলাদের আত্মবিশ্বাসীও করে তুলেছে। কিন্তু সন্তান হওয়ার পর অনেক মায়েদের মধ্য়ে অপরাধবোধ কাজ করতে পারে। সন্তানকে পর্যাপ্ত সময় দিতে না পারার কারণে অনেকে নিজেদের দোষী মনে করেন। অথচ সাম্প্রতিক কিছু গবেষণা বলছে, চাকুরিরত মায়েরা বাচ্চাদের সঙ্গে ভাব আদানপ্রদানে অনেক বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করেন। নিজের প্রতিটা পদক্ষেপ ভেবেচিন্তে নেওয়ার স্বাধীনতা পান বলে সন্তানের সঙ্গে কথাবার্তায় তা ফুটে ওঠে। বাচ্চার সঙ্গে সম্পর্কে উষ্ণতার কোনও অভাব থাকে না। তাঁরা কখনওই মনে করেন না যে মা হিসেবে তাঁরা দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করতে পারছেন না।
বেলজিয়ামের ‘ইউনিভার্সিটি অব ঘেন্ট’-এর গবেষক ক্যাটিজিন ব্রেনিং একটি স্টাডিতে জানিয়েছেন যে বাচ্চার সঙ্গে মায়ের সম্পর্কের উপর নির্ভর করে মায়ের ভাল থাকা। বাচ্চার স্বভাব বা ব্যবহার মায়ের ভাল থাকার নির্দেশক না হলেও, তার আচরণ মা-এর মধ্যে তৈরি হওয়া ফ্রাস্ট্রেশন, নিজেকে সমালোচনা করার প্রবণতাকে অনেকটাই নিউট্রালাইজ করতে পারে।
প্রসঙ্গত বলতে পারি, একজন মা তো মহিলাও বটে। তারও নিজস্ব কিছু চাহিদা, প্রয়োজনীয়তা থাকতে পারে। মানসিক স্বাস্থ্য ভাল রাখতে মাদের নিজস্ব জগৎ খুঁজে নেওয়াটা জরুরি। প্রত্যেক মাই নিজের সন্তানের জন্যে সেরাটা দিতে চান, তাই কখনওই মনে করা উচিত নয় যে তিনি মা হিসেবে তাঁর দায়িত্ব পালন করছেন না। তার চেয়ে বাচ্চার সঙ্গে কীভাবে সময় কাটানো যেতে পারে তা ভাবা উচিত। সম্পর্কের মাধুর্যই এখানে মূল কথা। মহিলারা যত ইতিবাচক মানসিকতা রাখবেন, ততই বাচ্চার সঙ্গে সম্পর্ক সুন্দর হবে। বাচ্চার সঙ্গে কথা বলা বা আবেগ আদানপ্রদানেও ইতিবাচক প্রভাবই পড়বে।
আমি নিজেও একজন চাকুরিরত মা। অনেক মহিলাই দেখেছি চাকরি করার জন্য অপরাধবোধে ভোগেন। আর এর ফলে মনের মধ্যে উদ্বেগ জন্ম নেয়। ক্রমশ মনে হয় যে বাড়ি এবং অফিস কোনওটাই সামলানোর ক্ষমতা তাঁদের নেই। এক রকমের হীনমন্যতা দেখা যায়। চাকুরিরত মা এবং তাঁর সন্তানে ক্ষেত্রে সেপারেশন অ্যাংজাইটি কাজ করে। মা-এর সর্বক্ষণের উপস্থিতি বাচ্চার মনের মধ্য়ে প্রসান্তি আনে। কিন্তু যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের পক্ষে বাড়িতে থাকাটা সব সময় সম্ভব নয়। এই যে দিনের অনেকটা সময় আলাদা থাকতে হয়, তা উভয়পক্ষের ক্ষেত্রেই কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। সব সময় মনে হয় সন্তানের সঙ্গে থাকাটাই তো মায়ের কর্তব্য। অন্য মহিলাদের সঙ্গেও অজান্তেই নিজের তুলনা করে বসেন তাঁরা। অনেকে আবার মনে করেন যে বাড়ি এবং কর্মক্ষেত্রে তাঁরা ঠিকমতো নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না। গবেষণা করে দেখা গেছে যে আমেরিকায় প্রায় ৪০% পরিবারে মহিলারাই প্রধান উপার্জনকারী। ইউনাইটেড নেশন-এর রিপোর্ট অনুযায়ীও কর্মরতা মহিলারা সন্তানের দেখাশোনা ও বাড়ির কাজকর্ম প্রায় একাই সামলান। পরিবারের জন্য তাঁরা কেরিয়ারের সঙ্গে আপসও করে নেন।
কিছু জরুরি টিপস
১। প্রথমেই মায়েদের বলব অপরাধবোধে তখনই ভুগবেন যখন কোনও অন্যায় করবেন। চাকরি করাটা কোনও অন্যায় নয়। এর পরেও যদি মনে অপরাধবোধ হয়, তা হলে জানবেন যে এতে কারওরই কিন্তু কোনও উপকার হবে না। নিজেকে শুধু শুধু সমালোচনা করবেন না।
২। আপনি অপরাধবোধে ভোগেন কারণ আপনি একজন ভাল মা, কারণ আপনি আপনার সন্তানের কথা ভাবেন। যাঁরা সর্বক্ষণের আয়ার উপর ভরসা করেন, অফিসের পরে বাকি সময়টা নিজেদের মতো করে কাটান, তাঁদের কিন্তু কোনওরকম অপরাধবোধ হয় না।
৩। পারফেক্ট মা বলে কিন্তু কিছু হয় না। সকলেই ভাল মা। মাতৃত্ব মুখের কথা নয়। ঠিক যেমনভাবে আমরা মনে করি যে প্রতিটা বাচ্চা আলাদা, কেউই পারফেক্ট নয়, ঠিক তেমনটাই কিন্তু আপনাদের ক্ষেত্রেও খাটে। যদি মনে হয় অন্যরা আপনার চেয়ে ভাল মা, তা হলে বলব ভুল করছেন।
৪। আপনি আপনার সন্তানের জন্য যা করছেন, জানবেন খুব ভাল করছেন। আমি যখন আমার ব্যাগের নীচে দেখি ভাঙা বিস্কুটের গুঁড়ো পড়ে আছে, যেগুলো আমার মেয়েকে টিফিনের দিতে ভুল গেছি, আমি কিন্তু এইভাবেই ভাবি। সন্তানের সঙ্গে সম্পর্ক কতটা সুন্দর সেটা ভাবুন, কে তার সন্তানের জন্য কী করছে, আর আফনি কী করছেন এই তুলনামূলক ভাবনা কোনও প্রয়োজন নেই।
৫। সন্তানকে একা হাতে বড় করা কঠিন। প্রয়োজনে বাড়ির সকলের সাহায্য চেয়ে নিন। আপনার স্বামী তাঁর দায়িত্ব পালন করছেন কি না, সেটাও দেখা জরুরি।
৬। অন্য মায়েদের সঙ্গে কথা বলুন। দেখবেন সকলেই আপনার মতোই ভাবছেন। তাঁদের পরিস্থিতিও খুব একটা আলাদা নয়। সুতরাং আপনি একা নন। নিজেদের সমস্যা তখন দেখবেন খুবই সামান্য মনে হচ্ছে। হেসে উড়িয়ে দিন।
৭। মেনে নিন আপনি আপনার সন্তানের রোল মডেল। আমার মেয়ে যখন ক্লাস থ্রি-তে পড়ত, তখন বলত যে ও মেয়ে বলে খুব খুশি। তার কারণ বড় হয়ে ও এর মায়ের মতো হতে পারবে। মায়েরা সব করতে পারে, কাজ করতে পারে, বন্ধুদের সঙ্গে গল্প করতে পারে আবার স্টাইল করে চুলও বাঁধতে পারে।
" data-author-type="
Warning: Undefined array key "type" in /www/banglalivecom_170/public/wp-content/plugins/molongui-authorship/views/author-box/html-layout.php on line 18
" data-author-archived="
Warning: Undefined array key "archived" in /www/banglalivecom_170/public/wp-content/plugins/molongui-authorship/views/author-box/html-layout.php on line 19
">
Warning: Undefined array key "id" in /www/banglalivecom_170/public/wp-content/plugins/molongui-authorship/views/author-box/html-layout.php on line 39
-"
Warning: Undefined array key "archive" in /www/banglalivecom_170/public/wp-content/plugins/molongui-authorship/views/author-box/html-layout.php on line 40
itemscope itemid="" itemtype="https://schema.org/Person" >
Warning: Undefined array key "img" in /www/banglalivecom_170/public/wp-content/plugins/molongui-authorship/views/author-box/parts/html-avatar.php on line 4
Warning: Undefined array key "show_social_web" in /www/banglalivecom_170/public/wp-content/plugins/molongui-authorship/views/author-box/parts/html-socialmedia.php on line 6
Warning: Undefined array key "show_social_mail" in /www/banglalivecom_170/public/wp-content/plugins/molongui-authorship/views/author-box/parts/html-socialmedia.php on line 7
Warning: Undefined array key "show_social_phone" in /www/banglalivecom_170/public/wp-content/plugins/molongui-authorship/views/author-box/parts/html-socialmedia.php on line 8
Warning: Undefined array key "type" in /www/banglalivecom_170/public/wp-content/plugins/molongui-authorship/views/author-box/parts/html-name.php on line 17
Warning: Undefined array key "type" in /www/banglalivecom_170/public/wp-content/plugins/molongui-authorship/views/author-box/parts/html-name.php on line 19
Warning: Undefined array key "type" in /www/banglalivecom_170/public/wp-content/plugins/molongui-authorship/views/author-box/parts/html-name.php on line 21
Warning: Undefined array key "archive" in /www/banglalivecom_170/public/wp-content/plugins/molongui-authorship/views/author-box/parts/html-name.php on line 37
Warning: Undefined array key "name" in /www/banglalivecom_170/public/wp-content/plugins/molongui-authorship/views/author-box/parts/html-name.php on line 41
Warning: Undefined array key "job" in /www/banglalivecom_170/public/wp-content/plugins/molongui-authorship/views/author-box/parts/html-meta.php on line 10
Warning: Undefined array key "job" in /www/banglalivecom_170/public/wp-content/plugins/molongui-authorship/views/author-box/parts/html-meta.php on line 15
Warning: Undefined array key "company" in /www/banglalivecom_170/public/wp-content/plugins/molongui-authorship/views/author-box/parts/html-meta.php on line 17
Warning: Undefined array key "phone" in /www/banglalivecom_170/public/wp-content/plugins/molongui-authorship/views/author-box/parts/html-meta.php on line 26
Warning: Undefined array key "mail" in /www/banglalivecom_170/public/wp-content/plugins/molongui-authorship/views/author-box/parts/html-meta.php on line 36
Warning: Undefined array key "web" in /www/banglalivecom_170/public/wp-content/plugins/molongui-authorship/views/author-box/parts/html-meta.php on line 46
Warning: Undefined array key "bio" in /www/banglalivecom_170/public/wp-content/plugins/molongui-authorship/views/author-box/parts/html-bio.php on line 8