তবু কেন
তবু কেন কিছু ভাল লাগছে না?
মানুষ কি নেই আগের মতো? বদলে
গেছে চোখ-মুখের ভাষা? সম্পর্কের
শিকড় শিথিল হয়েছে ভিতরে ভিতরে?
কখনো কখনো চেনাজনকেও অচেনা
লাগে; যেন দীর্ঘকালীন প্রবাসে কাটিয়ে
হঠাৎ-ই এসে পড়েছি অপরিচিতের ভিড়ে;
অপ্রতিভ হাসিতে আড়াল করি দূরত্ব
আমি কি পরদেশি? আমি কি কেউ নই
এই ভিটেমাটি, এই দেশ, পড়শিজনের?
চেনা পরিবেশ, চেনা পরিজন, এতকিছুর
মধ্যেও একা লাগে, বড্ড একা লাগে; যেন
নতুন ঘাটে ভিড়েছে ভিনদেশি নৌকো।
সমুদ্র সৈকতে
রাশি রাশি ঝিনুক উগরে দিচ্ছে সমুদ্র;
যেন গতরাতের মৃত নক্ষত্ররা
ঝরে পড়ে আছে সৈকত জুড়ে
যত দূরে তাকাই, বিপুল জলরাশির পাশে
পিরামিডের মতো উঁচু হয়ে আছে মৃতের পাহাড়
ভিজে বালির উপর পা রাখি,
আর সন্তর্পণে মৃতদের পাশ কাটাই
মৃত্যুর এমন মহোৎসব দেখিনি আগে;
সমুদ্রগর্ভের সন্তানেরা স্তূপীকৃত শব
সৈকতের অন্যপারে সূর্য ডোবার দৃশ্যে
পৃথিবীকে আশ্চর্য মায়াবি মনে হয়।
জীবন ও মৃত্যুর মাঝখানে দেখি,
দিগন্ত চিরে চলে গেছে সূক্ষ্মরেখা
অজিত বাইরীর জন্ম হুগলি জেলার কনকপুর গ্রামে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কৃষি বিভাগে আধিকারিকের পদে যোগদান ১৯৭১ সালে, অবসর গ্রহণ করেন 2008 সালে। অজিত বাইরীর কাব্য়গ্রন্থের সংখ্য়া ২৩। এর মধ্য়ে রয়েছে 'অবেলায় রোদ্দুরে তোমার মুখ', 'প্রিজন ভ্য়ান এবং কালপুরূষ', 'শব্দের টেরাকোটা', 'আগুনের চাদর', 'বিষণ্ণ অর্কিড'। তিনি একটি উপন্যাস ও একটি গল্পগ্রন্থও প্রকাশ করেছেন।