Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

সার্পেন্টিনা

ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়

নভেম্বর ২১, ২০২৫

Short Story
Bookmark (0)
Please login to bookmark Close
(Short Story)

সার্পেন্টিনা, সার্পেন্টিনা… কোথায় যেন শুনেছিল এই নাম? বহুদিনের অচর্চিত রসায়নের রসনা উসকে দিল স্মৃতি। ন্যাচারাল প্রডাক্টস… জৈব রসায়নের ছাত্রী সুমেধার প্রিয় বিষয় ছিল একসময়। এখন সে কর্পোরেট ল-ইয়ার। অতএব রাউলফিয়া সার্পেন্টিনা মাথা থেকে বেরিয়ে যাওয়ারই কথা। মনে পড়েছে… সর্পগন্ধা… প্রচুর ভেষজ গুণ সে গাছের। তার শিকড়ের রস খেলে ঝিম ধরে, ক্ষতি হয় শরীরের, তবে ওষুধ তৈরি করে খেলে নানা রোগের অব্যর্থ। ইংরাজিতে বলে ইন্ডিয়ান স্নেকরুট, সার্পেন্টাইন উড… এইসব। (Short Story)

মহানগরের একটু আবডালে এই সার্পেন্টিনা ক্লাবটির বিষয়ে কৌতূহল ক্রমশই বাড়ছিল সুমেধার। সমাজের নেপথ্যে থেকে কাজ করে চলে এই সোশ্যাইটি। দেশের ও দশের উন্নতি করে। ঠিক যেন ইউরোপের ইলিউমিনাটি বা ফ্রি মেসন। রথী মহারথীরা সব মেম্বার সেখানে। সবাই বিদ্বান, প্রাজ্ঞ, পণ্ডিত প্রবর। নিজ নিজ ক্ষেত্রে সুপ্রতিষ্ঠিত। বিজ্ঞানী থেকে দার্শনিক, চিত্রশিল্পী থেকে জ্যোতির্বিদ… তবে কোনও প্রকাশ নেই এঁদের কাজের। শহর কলকাতায় এমন এক সোশ্যাইটির সদস্যপদের জন্যই সেদিন সুমেধার সেখানে হাজির হওয়া। সাধারণতঃ মেয়েরা মেম্বার হয়নি আজ অবধি। সুমেধাই প্রথম আর সেদিন সঙ্গে নিয়ে গেছে তার বন্ধু ইন্দ্রাণীকেও। দুজনেরই খুব আগ্রহ। এক পার্টিতে আলাপ সেই ক্লাবের একজন বৈজ্ঞানিকের সঙ্গে। (Short Story)

আরও পড়ুন: কালীপুজোর নিরামিষ আমিষ

সুমেধার স্বামী অর্জুন। মস্ত পুলিশ অফিসার ঘূণাক্ষরেও টের পাননি বৌয়ের এই অপরিচিত জায়গায় অভিযানের কথা। তবে একদিন মধ্যরাতে বিছানায় ঘনিষ্ঠ হতে গিয়ে সুমেধার বুকের কাছে সাপের ট্যাটু দেখে প্রায় আঁতকে উঠেছিলেন দুঁদে অফিসার। (Short Story)

এটা আবার কবে করালে?
বাহ রে! সব তোমায় জিগেস করে করতে হবে? ভাল হয়েছে কী না বলো! আনইউজ্যুয়াল না?

Short Story
মহানগরের একটু আবডালে এই সার্পেন্টিনা ক্লাবটির বিষয়ে কৌতূহল ক্রমশই বাড়ছিল সুমেধার

সুমেধা সুকৌশলে এড়িয়ে গেছিল সেদিন। এখনকার আধুনিকাদের স্টাইল স্টেটমেন্ট সুমেধার নখদর্পণে। নিত্য নতুন নেইল আর্ট থেকে হেয়ার কালার সবেতেই আছেন তিনি। কর্পোরেট ল-ইয়ারের সমাজের বড় বড় মানুষের সঙ্গে ওঠাবসা… নিয়মিত পার্টিতে যাওয়া… অর্জুন কথা বাড়াননি আর। বুদ্ধিমতী স্ত্রী এমন কিছুই করবে না যাতে নিজের ক্ষতি হয়… সেটা বিশ বছর ঘর করে বুঝে গেছেন।
সার্পেন্টিনা সোশ্যাইটির সদস্য পদের জন্য সাপের ট্যাটুই আবশ্যক। তাই ইন্দ্রাণীকে নিয়েই ট্যাটু করানো। (Short Story)

নিজের গাড়ি না নিয়েই সেদিন সার্পেন্টিনা ক্লাবে পা দিয়েছিলেন সুমেধা আর ইন্দ্রাণী। পার্কস্ট্রিটের প্রত্যন্ত গলিঘুঁজির মধ্যে দিয়ে অ্যাপ ক্যাব এঁকে বেঁকে ঠিক পৌঁছে দিয়েছিল। সামনে লোক দেখানো বার ও রেস্তোরাঁ। পেছনে সার্পেন্টিনা লজ। সেখানেই ক্লাবের অফিস। অফিসের গ্লোসাইনেও জ্বলজ্বল করছে সাপ। ঠিক যেন কুলকুন্ডলিনী। মাথায় জ্বলছে লাল আলো। লাল-কালো এই সাপের গ্লো সাইনটা দেখেই ছমছম করে উঠল গা। ইন্দ্রাণী বলল, যাবে আর? চল, ফিরে যাই। (Short Story)

“এঁরা নাকি দেশের ইলেকশনও কন্ডাক্ট করেন? আড়াল থেকেই দেশকে উন্নতির দিকে ঠেলে দেন? বড় বড় ঘটনা এই ক্লাবের সদস্যদের দ্বারাই ঘটে থাকে?”

সুমেধা ছেড়ে দেওয়ার পাত্রী নয়।
আরে! এসেছি যখন দেখেই যাই একবার। আসল সাপ তো নেই। ভয় পাচ্ছোই বা কেন?
পার্টিতে আলাপ হওয়া বিজ্ঞানী আলাপ করিয়ে দিলেন সোশ্যাইটির কয়েকজনের সঙ্গে।
ইউ আর মোস্ট ওয়েলকাম টু আওয়ার সোশ্যাইটি।
আপ্লুত হয় সুমেধা। কত নামীদামী মানুষজন। কাগজে এঁদের ছবিও দেখেছে বহুবার কিন্তু এই সোশ্যাইটির কথা ঘূণাক্ষরেও তাঁরা জানান না সেখানে। (Short Story)

এঁরা নাকি দেশের ইলেকশনও কন্ডাক্ট করেন? আড়াল থেকেই দেশকে উন্নতির দিকে ঠেলে দেন? বড় বড় ঘটনা এই ক্লাবের সদস্যদের দ্বারাই ঘটে থাকে? নিউক্লিয়ার পাওয়ার থেকে চন্দ্রযান, মঙ্গল গ্রহে জমি দেখা থেকে রকেট অভিযান মানে আরবিআই থেকে আর্মি, স্পেস থেকে পাওয়ার… সবেতেই আছেন এঁরা… ফিসফিস করে সুমেধা বলে ইন্দ্রাণীকে। ডোন্ট ওয়ারি। হ্যাভ ফেইথ অন মি। (Short Story)

Short Story
শহর কলকাতায় এমন এক সোশ্যাইটির সদস্যপদের জন্যই সেদিন সুমেধার সেখানে হাজির হওয়া

সুমেধার আড়ষ্টতা নেই কিন্তু ইন্দ্রাণী নার্ভাস। এমন জায়গায় সে জন্মেও আসেনি। সামান্য এক অধ্যাপক সে।
ক্লাবের খাতায় নাম সই করে ক্লাব সদস্যদের উষ্ণ অভ্যর্থনায় এগিয়ে চলে সুমেধা ও ইন্দ্রাণী।
ইন্দ্রাণী ওমনি বলে ওঠে, তা এদ্দিন কোনও মহিলা সদস্য কেন হয়নি এই সোশ্যাইটিতে?
আরে বোঝোনা কেন, পুরুষশাসিত সমাজ ব্যাবস্থায় মেয়েরা চিরকালই ব্রাত্য ছিল। এখন যুগ ধর্ম বদলেছে। ওরাও বুঝেছেন যে মেয়েদের নিলে আরও উন্নত হতে পারে এই ক্লাব।
কেউ যেন শুনতে পায় ওদের এই ফিসফাশ আলাপচারিতা। (Short Story)

ভেতরে প্রবেশ করতেই চমকে উঠলেন ওরা। আলোআঁধারিতে বসে গুরুগম্ভীর আলোচনা চলছে। মধ্যমণি সার্পেন্টিনা ক্লাবের নেতা। তাঁকে ঘিরে আরও জনা পাঁচেক সব রইস আদমি। তবে নামডাক আছে সমাজে। সবার পরণে চকমকে সাটিনের আলখাল্লা। কালোর মধ্যে লালের প্রিন্ট। ঠিক হিলহিলিয়ে অজস্র সাপ উঠছে নামছে যেন গায়ের ওপর দিয়ে। কিলবিল করছে নানা সাইজের সাপ। ইন্দ্রাণীর শিরদাঁড়ায় ঠাণ্ডা স্রোত ওঠানামা করছে তা দেখে। সুমেধার কুছ পরোয়া নেই। ইন্সটাগ্রামে এমন ছবি দেখেই সে আকৃষ্ট হয়েছিল। সেদিন ক্লাবের হেড সাপ নিয়েই বক্তৃতা দিচ্ছেন। সাপের পুরাণ মাহাত্ম্য, নাগেদের ঐতিহ্য এসব নিয়ে। (Short Story)

আরও পড়ুন: আরন্ধের রাঁধাবাড়া কি বর্ষাশস্যের থ্যাংক্সগিভিং?

ওপাশ থেকে সেই গোলচক্র বৈঠকের একজন পুরুষ সদস্য বলে ওঠেন, বৌদ্ধ বিহারে মেয়েরা প্রবেশ করেই কিন্তু বৌদ্ধধর্ম একসময় উচ্ছন্নে যেতে বসেছিল। সেটাও চিন্তার বিষয়।
সুমেধা ও ইন্দ্রাণী একে অপরের দিকে তাকায়।
অমনি সেই মধ্যমণি ভদ্রলোক বলে ওঠেন, মেয়েরা কেমন স্পেস স্টেশনে থেকে এল বলুন? (Short Story)

আসুন আপনারা। ইউ আর মোস্ট ওয়েলকাম ইন আওয়ার সার্পেন্টিনা সোশ্যাইটি। আপনাদের নাম নথিভুক্ত করবার আগে আমাদের সার্পেন্টিনা সোশ্যাইটির নিয়ম অনুযায়ী দু’একটা ফরম্যালিটিজ আছে। (Short Story)

সবার পরণে চকমকে সাটিনের আলখাল্লা। কালোর মধ্যে লালের প্রিন্ট। ঠিক হিলহিলিয়ে অজস্র সাপ উঠছে নামছে যেন গায়ের ওপর দিয়ে

প্রথমটি হল আমাদের একটা ড্রেস কোড আছে এখানে। এই নিন। ড্রেস দুটি চাপিয়ে ফেলুন।
সাটিনের সেই আলখাল্লা দেখে চোখ চকমক করে ওঠে ওদের।
আর দ্বিতীয়টি হল একটি ছোট্ট পরীক্ষা। (Short Story)

ইন্দ্রাণী আবারও নার্ভাস। সুমেধার ডোন্টকেয়ার ভাব। তখনও দুজনের কেউই জানে না তাদের জন্য কী পরীক্ষা অপেক্ষা করে আছে। শাড়ির ওপর দিয়েই দু’জনে সেই লাল-কালো সাপের ছাপওলা সাটিনের আলখাল্লা গায়ে চাপায়। 
আসুন এবার আমার সঙ্গে। সার্পেন্টিনা সোশ্যাইটির সেই মাথা বা নেতার কথামতো দু’জনে এগিয়ে চলে আরেকটি ঘরের দিকে। (Short Story)

“সোশ্যাইটির হেড মুচকি হাসলেন। আগে তো পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হোন। আসলে আমাদের এখানে মেম্বার হতে গেলে একবার অন্ততঃ সাপের কামড় খেতেই হবে, বুঝলেন?”

রেডি তো আপনারা?
ইন্দ্রাণী আর সুমেধার চোখের সামনে তিনটে আয়তাকার বাক্স রাখা। তার ওপরে বিচিত্র সব সাপের নকশা। ছবি রং তুলিতে মূর্ত হয়ে উঠেছে। কোনওটা সবুজ সাপ, কোনওটা মেরুণ, কোনওটা কালো।
সুমেধা প্রশ্ন করে এটি কি টিবেট থেকে আনা? কলকাতায় কোথায় পাব বলতে পারেন, এই অ্যান্টিক বক্স? আমার আবার ঘর সাজানোর খুব বাতিক কী না। (Short Story)

সোশ্যাইটির হেড মুচকি হাসলেন। আগে তো পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হোন। আসলে আমাদের এখানে মেম্বার হতে গেলে একবার অন্ততঃ সাপের কামড় খেতেই হবে, বুঝলেন? তা শুনে ইন্দ্রাণী তখনই যেন মূর্ছা যাওয়ার উপক্রম হল। সুমেধার হাতটা ধরে ফেলে সে শক্ত করে। (Short Story)

এ কি তুমি এত নার্ভাস কেন ইন্দ্রাণী? তোমার হাত তো পাথরের মতো ঠাণ্ডা। তোমার এখানে আসা ঠিক হয়নি মোটেও। ঘাবড়াও মাত।
তাহলে আপনারা প্রস্তুত তো? দু’জনের সামনে রাখা তিনটি কাঠের সুদৃশ্য বাক্স। কিছুটা ভাগ্য পরীক্ষা যেন। কে কোন বাক্সের ওপর নিজের হাত রাখবে সেটা সম্পূর্ণ তাদের ওপর। (Short Story)

“কী মুশকিল! আপনি তো তাঁকে জোর করে এখানে নিয়ে আসেননি। তিনি স্বেচ্ছায় এসেছেন তো। আপনারা দু’জনেই অ্যাডাল্ট।”

সুমেধাই এগিয়ে গেল প্রথমে। তারপর ইন্দ্রাণী। দু’জনের দুই হাতের চেটো নিজেদের পছন্দের মতো বাক্সের ওপর রাখল ফ্ল্যাট করে। আর মুহূর্তের মধ্যেই প্রবল চিৎকারে ছিটকে সরে গেল দু’জনে দু’প্রান্তে। সোশ্যাইটির একজন ডাক্তার সদস্য এগিয়ে এসে দুজনেরই নাড়ী পরীক্ষা করলেন। পালস নেই দুজনেরই। ওদিকে পুরুষ সদস্যদের মধ্যে গুরুগম্ভীর আলোচনা শুরু হয়ে গেছে তখন। (Short Story)

এইজন্যই কি মেয়েদের এতদিন প্রবেশাধিকার দেওয়া হচ্ছিল না? সার্পেন্টিনা সোশ্যাইটি কি আজন্মকাল এমনই জেন্ডার বায়াসড হয়েই থাকবে?
এসব কথাগুলো যেন ইথার তরঙ্গে ভাসতে ভাসতে সুমেধার কানে পৌঁছাল। জ্ঞান এসেছে তার।
কী কামড়েছিল আমাকে? সাপ? সে প্রশ্ন করে।
হ্যাঁ, ভয় পাবেন না। আপনি পাশ করে গেছেন তো। আপনি নির্বিষ ঢোঁড়া সাপের বাক্সের ওপর হাত রেখেছিলেন তো। কিন্তু আপনার বন্ধুটি হয়তো বাঁচবে না। বিষ দাঁতের দংশন তো। তবে এখুনি চিকিৎসা হলে… দেখছি কী করা যায়? এই বলে সেই ডাক্তারবাবু ইন্দ্রাণীর হাতের ওপর কতকিছু বেঁধে, ওষুধ ইঞ্জেকশন পরখ করতে শুরু করলেন।
সে কি? ইন্দ্রাণী নেই?
আপাতত না। (Short Story)

আরও পড়ুন: ইলিশ নামে মৎস্যটি

এটা হবে জানলে… আমরা তো জানতাম না যে বাক্সের মধ্যে ছিদ্র আছে। জানতাম না যে তখনই আমাদের সাপের কামড় খেতে হবে। ইন্দ্রাণীর বাড়িতে আমি মুখ দেখাই কেমন করে? 
কী মুশকিল! আপনি তো তাঁকে জোর করে এখানে নিয়ে আসেননি। তিনি স্বেচ্ছায় এসেছেন তো। আপনারা দু’জনেই অ্যাডাল্ট। (Short Story)

আমার স্বামী পুলিশের বড় অফিসার। তাঁকে ঘটনাটা জানানো দরকার একবার। এতক্ষণে তিনিও হয়তো আমাকে খুঁজতে বেরিয়ে পড়েছেন। আমরা দুজনেই তো মোবাইলের লোকেশন অফ করে দিয়েছিলাম আসার আগে। বাড়িতে কিছু বলেও আসিনি। (Short Story)

Short Story
আজ থেকে আমি হলাম এই সার্পেন্টিনা সোশ্যাইটির হেড। এই প্রথম কোনও মহিলা হেড হল

(২)

অর্জুনের চিন্তার শেষ নেই। রাত বেড়েছে। বৌ বাড়ি ফেরেনি। এমন তো হয়নি কোনওদিন। কর্পোরেট ঘরণীর ব্যস্ত সমস্ত শেডিউল। কিন্তু যেখানেই যায় বলে যায়। রাতে বাড়ি ফেরে সময়মতো। বাড়ি থেকে বেরোনোর পর কথা হলেও তারপর আর কথা হয়নি আর মধ্যরাত থেকেই ফোন সুইচড অফ। লোকেশন অজানা। ভারি বিপদে পড়লেন পুলিশ কর্তা। অগত্যা নিজেই বেরিয়ে পড়লেন ভোর রাতে। কিন্তু কোথায় খুঁজবেন? শহরের এমন সব ঘটনার খোঁজ পেলেই ফোর্স নিয়ে অকুস্থলে হাজির হন। কিন্তু সে রাত ব্যাতিক্রম। কে নেবে তাঁর টেনশন? উথালপাথাল অবস্থা এহেন দুঁদে পুলিশ অফিসারের। (Short Story)

“অর্জুন পকেট থেকে সার্ভিস রিভলবার বের করে সোজা তাক করলেন সেই লোকটার দিকে। এই মহিলাকে আপনি খুন করেছেন আর আমার স্ত্রী সুমেধা কোথায়?”

অবিশ্যি টাওয়ার ম্যাপিং ভরসা, সেরাতে কোথায় কোথায় গেছে তবে সুমেধা? সেখান থেকেই বেরোল পার্ক স্ট্রিটের নাম। সুমেধা পার্ক স্ট্রিটে পৌঁছানোর আগে টেক্সট করেছিল। পার্ক স্ট্রিটের কোন রেস্তোরাঁ? সে তো বিশাল এলাকা। থিকথিক করছে ফুড জয়েন্ট। প্রতিটি রেস্তোরাঁর সিসি টিভি ফুটেজ খুঁটিয়ে দেখতে দেখতেই অবশেষে সার্পেন্টিনা সোশ্যাইটির লজের সামনে সেই সাপের গ্লো সাইন দেখে থমকে দাঁড়ালেন অর্জুন। অবিকল সেই ট্যাটু দেখেছেন তিনি বৌয়ের শরীরে। তার মানে নিশ্চয়ই এর সঙ্গে কোনও সংযোগ আছে সুমেধার। এবার অর্জুনের মনে দোলাচল শুরু। তবে কি সুমেধা এমন কোনও জায়গায় গেছে যার নাম সে স্বামীকে জানাতেও অপারগ? রাগ হল খুউব। কিন্তু সেই মুহূর্তে রাগের চেয়েও বৌকে খুঁজে পাওয়ার লক্ষ্যেই অবিচল তিনি। (Short Story)

নানান কুচিন্তা যে মাথায় আসছে না তা নয়। দিনকাল বড় খারাপ। কর্তব্যনিষ্ঠ পুলিশ অফিসারের ওপর কেউ বদলা নিল তবে? সার্পেন্টিনা সোশ্যাইটির সেই ঘুপচি লজের সামনে এসেই দড়াম করে বুট জুতো দিয়ে দরজাটা প্রায় ভেঙেই ফেললেন যেন অর্জুন। একটু বেশিই রিঅ্যাক্ট করে ফেললেন হয়তো কিন্তু উপায় ছিল না তাঁর। দায়িত্ববান পুলিশ অফিসারও একজনের স্বামী সেই মুহূর্তে। আর সেটাই তাঁর অন্যতম পরিচয় তখন। অন্ধকার ছমছমে সেই ঘরের মধ্যে ক্লাবের সেই নেতা বসে আছেন থম মেরে। মুখটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে না। তাঁর সামনে ইন্দ্রাণীর নিথর ডেড বডি দেখে আঁতকে উঠলেন অর্জুন। কে খুন করেছে একে? তাহলে সুমেধা? সে ই বা কোথায় গেল? (Short Story)

“সুমেধা বলল, খবর গেছে ওর বাড়িতে। সাপে কেটেছে ওকে। ফার্স্ট এইড দিয়েছেন ওঁরা। এখনও বেঁচে আছে সে। আমরা ওকে নার্সিংহোমে নিয়ে যাই তবে?”

অর্জুন পকেট থেকে সার্ভিস রিভলবার বের করে সোজা তাক করলেন সেই লোকটার দিকে। এই মহিলাকে আপনি খুন করেছেন আর আমার স্ত্রী সুমেধা কোথায়?
ক্লাবের সেই নেতা তখন বললেন, কেউ কাউকে খুন করেনি। করেও না। সবাই মৃত আবার সবাই জীবিত। কেউ আসে, কেউ যায়। (Short Story)

হেঁয়ালি করছেন আমার সঙ্গে? আপনি জানেন আমি কে? অর্জুনের কথায় সেই লোকটার নির্লিপ্তি আরও যেন ভাবিয়ে তুলল অর্জুনকে। লোকটা অবলীলায় হাসতে হাসতে আরেকটা কাঠের বাক্সের ওপর নিজের হাত দুটো রাখল। সেই বাক্সের মধ্যে ছিল সবচাইতে বিষধর এক সাপ। মুহূর্তের মধ্যেই লোকটা ঢলে পড়ল মৃত্যুর কোলে। অর্জুনকে বন্দুক চালানোর কোনও অবকাশই দিল না সে। (Short Story)

সঙ্গে সঙ্গে ঘরটির লাগোয়া দরজাটা খুলে গেল। সেখান থেকে বেরিয়ে এল সুমেধা স্বয়ং। অর্জুনের মনে হল তিনি যেন স্বপ্ন দেখছেন। ভাবেননি সুমেধাকে জীবিত দেখবেন।
কোথায় ছিলে? কেন এসব বাজে লোকজনের ডেরায় এসেছ? কী করছিলে ঘরের মধ্যে? এসব প্রশ্ন তখন অবাঞ্ছিত। সে যে বেঁচে আছে সেটাই যেন অর্জুনের কারে পরম কাঙ্খিত। (Short Story)

আরও পড়ুন: যোগকন্যা যোগমায়া

সুমেধা শুধু একটাই কথা বলল,
চলো।
চলো মানে? আমাকে তো ইনভেস্টিগেট করতেই হবে? আফটার অল, শহরের বুকে এমন সব অন্ধকার ডেরা। ইন্দ্রাণীও তো মারা গেছে দেখছি। তার কী হবে?
সুমেধা বলল, খবর গেছে ওর বাড়িতে। সাপে কেটেছে ওকে। ফার্স্ট এইড দিয়েছেন ওঁরা। এখনও বেঁচে আছে সে। আমরা ওকে নার্সিংহোমে নিয়ে যাই তবে?
আর তুমি? (Short Story)

এটা নিয়ে বেশি জলঘোলা করোনা অর্জুন। এখানে অন্য লেভেলে কাজ হয়। আজ থেকে আমি হলাম এই সার্পেন্টিনা সোশ্যাইটির হেড। এই প্রথম কোনও মহিলা হেড হল। এতদিন পুরুষদের একবগগা ছিল। আমারও জেদ চেপে গেছিল। আগ্রহ ছিল এঁদের সম্বন্ধে। ইন্দ্রাণীও ইন্টারেস্ট দেখিয়েছিল সো উই প্ল্যানড টুগেদার। বাট শি ইজ সো আনফরচুনেট। এনি ওয়ে, থ্যাঙ্ক গড শি হ্যাজ সারভাইভড। (Short Story)

মুদ্রিত ও ডিজিটাল মাধ্যমে সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
অলংকরণ- আকাশ গঙ্গোপাধ্যায়

Author Indira Mukhopadhyay

রসায়নের ছাত্রী ইন্দিরা আদ্যোপান্ত হোমমেকার। তবে গত এক দশকেরও বেশি সময় যাবৎ সাহিত্যচর্চা করছেন নিয়মিত। প্রথম গল্প দেশ পত্রিকায় এবং প্রথম উপন্যাস সানন্দায় প্রকাশিত হয়। বেশ কিছু বইও প্রকাশিত হয়েছে ইতিমধ্যেই। সব নামীদামি পত্রিকা এবং ই-ম্যাগাজিনে নিয়মিত লেখেন ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনি, রম্যরচনা ও প্রবন্ধ।

Picture of ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়

ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়

রসায়নের ছাত্রী ইন্দিরা আদ্যোপান্ত হোমমেকার। তবে গত এক দশকেরও বেশি সময় যাবৎ সাহিত্যচর্চা করছেন নিয়মিত। প্রথম গল্প দেশ পত্রিকায় এবং প্রথম উপন্যাস সানন্দায় প্রকাশিত হয়। বেশ কিছু বইও প্রকাশিত হয়েছে ইতিমধ্যেই। সব নামীদামি পত্রিকা এবং ই-ম্যাগাজিনে নিয়মিত লেখেন ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনি, রম্যরচনা ও প্রবন্ধ।
Picture of ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়

ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়

রসায়নের ছাত্রী ইন্দিরা আদ্যোপান্ত হোমমেকার। তবে গত এক দশকেরও বেশি সময় যাবৎ সাহিত্যচর্চা করছেন নিয়মিত। প্রথম গল্প দেশ পত্রিকায় এবং প্রথম উপন্যাস সানন্দায় প্রকাশিত হয়। বেশ কিছু বইও প্রকাশিত হয়েছে ইতিমধ্যেই। সব নামীদামি পত্রিকা এবং ই-ম্যাগাজিনে নিয়মিত লেখেন ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনি, রম্যরচনা ও প্রবন্ধ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Subscribe To Newsletter

কথাসাহিত্য

ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়
বিতস্তা ঘোষাল

সংস্কৃতি

আহার

শমিতা হালদার
অমৃতা ভট্টাচার্য
ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়

বিহার

কলমকারী

রূপায়ণ ভট্টাচার্য
রূপায়ণ ভট্টাচার্য

ফোটো স্টোরি

উপন্যাস

বিতস্তা ঘোষাল
বিতস্তা ঘোষাল
বিতস্তা ঘোষাল
[adning id="384325"]
[adning id="384325"]

Banglalive.com/TheSpace.ink Guidelines

Established: 1999

Website URL: https://banglalive.com and https://thespace.ink

Social media handles

Facebook: https://www.facebook.com/banglaliveofficial

Instagram: https://www.instagram.com/banglalivedotcom

Twitter: @banglalive

Needs: Banglalive.com/thespace.ink are looking for fiction and poetry. They are also seeking travelogues, videos, and audios for their various sections. The magazine also publishes and encourages artworks, photography. We however do not accept unsolicited nonfiction. For Non-fictions contact directly at editor@banglalive.com / editor@thespace.ink

Time: It may take 2-3 months for the decision and subsequent publication. You will be notified. so please do not forget to add your email address/WhatsApp number.

Tips: Banglalive editor/s and everyone in the fiction department writes an opinion and rates the fiction or poetry about a story being considered for publication. We may even send it out to external editors/readers for a blind read from time to time to seek opinion. A published story may not be liked by everyone. There is no one thing or any particular feature or trademark to get published in the magazine. A story must grow on its own terms.

How to Submit: Upload your fiction and poetry submissions directly on this portal or submit via email (see the guidelines below).

Guidelines:

  1. Please submit original, well-written articles on appropriate topics/interviews only. Properly typed and formatted word document (NO PDFs please) using Unicode fonts. For videos and photos, there is a limitation on size, so email directly for bigger files. Along with the article, please send author profile information (in 100-150 words maximum) and a photograph of the author. You can check in the portal for author profile references.
  2. No nudity/obscenity/profanity/personal attacks based on caste, creed or region will be accepted. Politically biased/charged articles, that can incite social unrest will NOT be accepted. Avoid biased or derogatory language. Avoid slang. All content must be created from a neutral point of view.
  3. Limit articles to about 1000-1200 words. Use single spacing after punctuation.
  4. Article title and author information: Include an appropriate and informative title for the article. Specify any particular spelling you use for your name (if any).
  5. Submitting an article gives Banglalive.com/TheSpace.ink the rights to publish and edit, if needed. The editor will review all articles and make required changes for readability and organization style, prior to publication. If significant edits are needed, the editor will send the revised article back to the author for approval. The editorial board will then review and must approve the article before publication. The date an article is published will be determined by the editor.

 

Submit Content

For art, pics, video, audio etc. Contact editor@banglalive.com