আমাদের ছোট থেকেই শেখানো হয় কারও বাড়িতে ঢোকার আগে জুতো বাইরে খুলে রাখতে| পাশ্চাত্যে কিন্তু এই রীতি নেই বললেই চলে| তবে সম্প্রতি অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যায়ের গবেষকরা জানিয়েছেন‚ ভারতীয় প্রথাটা অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর| তাঁরা জানিয়েছেন একটা জুতোর প্রতি ইঞ্চিতে কয়েকশো থেকে কয়েক হাজার জীবাণু থাকে যা আমাদের শরীরের পক্ষে খুবই ক্ষতিকর|
এর মধ্যে একটি ব্যাকটেরিয়া হল ই-কোলাই— এই ব্যাকটেরিয়ার কারণে ডাইরিয়া, মূত্র রোগ, নিউমোনিয়া এবং শ্বাসনালী সংক্রান্ত বিভিন্ন রোগ হয়ে থাকে।
এ ছাড়াও গবেষণা করে আরও একটা ক্ষতিকর জীবাণুর সন্ধান পান গবেষকরা | তাঁরা জানিয়েছেন ই-কোলাই ছাড়াও জুতোতে পাওয়া যায় Staphylococcus aureus যার থেকে বিভিন্ন ধরনের ত্বকের‚ রক্তের ও হৃদযন্ত্রের সংক্রমণ হতে পারে|
অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজিস্ট তথা এই গবেষণার প্রধান চার্লস গেরবা জানিয়েছেন, সমীক্ষার ফলাফলে নিজেই হতবাক হয়েছিলেন তিনি। গবেষণার জন্য ১০ জন ব্যক্তিকে নতুন জুতো দেওয়া হয়েছিল দু’সপ্তাহ ব্যবহার করার জন্য। নির্দেশ ছিল, তাঁরা নিজেদের জুতো যে ভাবে ব্যবহার করেন, ঠিক সেই ভাবেই এই জুতোও ব্যবহার করতে হবে। এর পর বৈজ্ঞানিকরা এই জুতোগুলোর থেকে জীবাণুর নমুনা সংগ্রহ করেন। দেখা যায়, বাইরে পরার জুতোয় শৌচালয়ের থেকেও অনেক বেশি জীবাণু উপস্থিত। জুতোয় জীবাণুর সংখ্যা ৪,২১,০০০ এবং বাড়ির ভেতরে অথবা শৌচালয়ে জীবাণুর সংখ্যা ২,৮৮৭। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, জুতোয় উপস্থিত জীবাণুর মধ্যে ৯৬ শতাংশই থাকে মলে। যাকে বলে ‘ফিকাল ব্যাকটেরিয়া’।
গেরবার মতে, ফলাফল থেকে অনুমান করাই যায় যে মলের সংস্পর্শে বহু বার আসার কারণেই এই ফল। জুতো থেকে মেঝে বা কার্পেটে জীবাণু প্রতিস্থাপন হওয়ার হার ৯০ শতাংশ। তবে ওঁর কথায় মাটির সংস্পর্শে আমরা খুব বেশি আসি না| তাই ভয় পাওয়ার দরকার নেই| কিন্তু যে বাচ্চারা মাটিতে হামাগুড়ি দেয় তাদের ক্ষেত্রে এটা ভয়ের কারণ হতে পারে| একই সঙ্গে উনি ওইসব ব্যক্তিদের সাবধান থাকতে বলেছেন যাদের সহজেই ইনফেকশন হয়|
এর প্রতিকার হিসেবে উনি বলেন ‘মেঝে নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে| সব থেকে ভাল হয় বাড়িতে ঢোকার আগে যদি জুতো খুলে ঢোকা যায়| বাইরের জুতো পরে বাড়ির মধ্যে চলাফেরা না করাই ভাল|