













(Rath Yatra) উত্তর কলকাতায় ১৫৪, তারক প্রামাণিক রোডের প্রামাণিক বাড়ি। দুর্গা পুজো ও কালী পুজোর পাশাপাশি এই বাড়ির আর এক বিখ্যাত উৎসব হলো রথযাত্রা। এই ঐতিহ্যবাহী রথ, আনুমানিক প্রায় ২৭৫ বছরের পুরনো। একসময় শুধু উত্তর ও মধ্য কলকাতা থেকেই ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় গোটা তিরিশেক রথ বের হত। কোনোটা রুপোর, কোনোটা পিতলের, কোনোটা আবার কাঠের ওপর লোহা দিয়ে সাজানো।
শতাব্দীর প্রথম ভাগে সাহাগঞ্জ থেকে কলকাতায় এসে মধ্য কলকাতার চোরবাগান-কাঁসারিপাড়া অঞ্চলে ভদ্রাসন নির্মাণ করেন কাঁসা-পিতলের ব্যবসায়ী গুরুচরণ প্রামাণিক৷ পুত্র তারক প্রামাণিকের হাতে ব্যবসার উন্নতি হয় বহুগুণে৷ পিতাপুত্রের উদ্যোগে রথ-রাস-জন্মাষ্টমীর পাশাপাশি কালীপুজো এবং দুর্গোৎসব শুরু হয়৷
ফটো স্টোরি: গুপ্তিপাড়ার রথযাত্রা
নিজেদের কাঁসা-পিতলের ব্যবসা থাকায় প্রামাণিকরা এক পিতলের রথ তৈরি করেন রথযাত্রার জন্য৷ ধাতুর রথের অনন্য সুন্দর নিদর্শন সেই রথটি আজও আছে৷ বড়বাজারে বিশাল আড়ত ছিল তাঁদের। হুগলীর ব্যান্ডেলে পারিবারিক কাঁসা-পিতলের কারখানায় তৈরি হয়েছিল এই রথ। ১২ ফুট উচ্চতার এই পিতলের রথটির ওজন ২ টন। হুগলীর কারখানা থেকে সেই রথ টেনে কলকাতায় প্রামাণিকদের বড়বাজারের কারখানায় নিয়ে আসা হয়েছিল। সেইখানেই ছিল ৭ দিন। তারপর উল্টোরথের দিন টেনে আনা হয়েছিল বাড়িতে। (Rath Yatra)
দোতলা পিতলের রথের প্রতিটি তলায় চার ধারে রয়েছে চারটি দাঁড়ানো পরীর মূর্তি। এখনও সাবেকি প্রথা মেনে রথ টানা হয় বাড়ির উঠোনেই। বাড়ির প্রতিষ্ঠিত নারায়ণ শিলা অর্থাৎ শ্রীধর জিউকে নামিয়ে আনা হয় উঠোনে। সকল রীতি মেনে পূজার পর তাঁকে রথে বসিয়ে টানা হয় বাড়ির উঠোনে।
এই ঐতিহাসিক রথের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এটির প্রতিটি অংশ খুলে রাখা যায়। এবং পুনরায় নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে প্রতিবছর রথযাত্রার আগে রথ প্রতিস্থাপন করা হয়। উল্টোরথের পরে রথটি প্রতিটি অংশ পুনরায় সম্পূর্ণ খুলে রাখা হয়। (Rath Yatra)
নেশা ও পেশা ফটোগ্রাফি। ডকুমেন্টারি স্টোরি টেলিং, স্ট্রিট ও ট্র্যাভেল ফটোগ্রাফিতে আগ্রহী।