(Prasanta C. Mahalanobis)
আমরা সবাই জানি, প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশ, ভারতে আধুনিক রাশিবিজ্ঞান বা পরিসংখ্যানবিদ্যার গোড়াপত্তন করেছিলেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত, ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিকাল ইন্সটিটিউট (সংক্ষেপে আই.এস.আই) পরিসংখ্যানবিদ্যাতে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রথম শ্রেণির শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসাবে পরিচিত। আমাদের দেশে, বিশেষ করে দ্বিতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা তৈরিতে প্রশান্তচন্দ্র ও আই.এস.আই-এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। সেই প্রতিষ্ঠানও শতবর্ষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে। প্রথম যুগে আই.এস.আই, প্রেসিডেন্সি কলেজের অভ্যন্তরে কাজ শুরু করেছিল, ১৯৫৩ সালে সেটি বরানগরে বর্তমান ক্যাম্পাসে স্থানান্তরিত হয়। প্রশান্তচন্দ্রের জন্ম হয়েছিল ১৮৯৩ সালের ২৯ জুন; আজ তাঁর জন্মদিনে আমরা আই.এস.আই প্রতিষ্ঠার ও প্রথম যুগের ইতিহাস, সংক্ষেপে ফিরে দেখব। (Prasanta C. Mahalanobis)
আরও পড়ুন: কবির অনুজপ্রতিম বিশ্বস্ত সহচর
পরিসংখ্যানবিদ্যার সঙ্গে প্রশান্তচন্দ্রের যোগাযোগ হয়েছিল কিছুটা আকস্মিকভাবেই। তিনি কেমব্রিজের কিংস কলেজে গণিত ও পদার্থবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন, পরে প্রেসিডেন্সি কলেজে পদার্থবিজ্ঞানে অধ্যাপনা করেছিলেন। ১৯১৫ সালে কেম্ব্রিজ থেকে ট্রাইপস করার পরে দুই নোবেলজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী জে.জে.টমসন ও সি.টি.আর.উইলসনের ল্যাবরেটরিতে তাঁর কাজ করার কথা ছিল। তিনি ঠিক করেন যে, অল্প দিনের জন্য দেশে যাবেন, ফিরে এসে গবেষণায় যোগ দেবেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের জন্য জাহাজ চলাচল নিয়মিত ছিল না; পরীক্ষার পরের অবসরে তিনি কিংস কলেজের লাইব্রেরিতে বই ঘাঁটছিলেন, সেই সময় তাঁর অধ্যাপক ডব্লিউ.এইচ.মেকলে ‘বায়োমেট্রিকা’ নামের পরিসংখ্যানবিদ্যার পত্রিকার কয়েকটি সংখ্যা তাঁকে পড়তে দেন। বিষয়টি সম্পর্কে উৎসাহ পেয়ে প্রশান্তচন্দ্র দেশে ফেরার সময় পত্রিকার যতগুলি সম্ভব সংখ্যা কিনে আনেন এবং জাহাজে সেগুলি পড়তে পড়তে আসেন। বিষয়টি তাঁর কাছে খুবই আকর্ষণীয় ঠেকেছিল। (Prasanta C. Mahalanobis)

কিন্তু বিশ্বযুদ্ধের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছিল বলে দেশে ফেরার পরে তাঁর আর ইংল্যান্ডে যাওয়া হয়ে উঠল না। কাকা সুবোধচন্দ্র ছিলেন প্রেসিডেন্সি কলেজের শারীরবিদ্যার অধ্যাপক, তাঁর সূত্রে প্রশান্তচন্দ্র প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়ানোর সুযোগ পান। পরিসংখ্যান বিষয়ে তাঁর আগ্রহের খবর পেয়েছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শনের অধ্যাপক ব্রজেন্দ্রনাথ শীল। ব্রজেন্দ্রনাথের প্রতিভা ছিল বহুমুখী, বিশেষ করে গণিতেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাপদ্ধতি বিষয়ে এক কমিটির তিনি সভাপতি হয়েছিলেন, পরীক্ষার কিছু ফল রাশিবিজ্ঞানের সূত্র অনুযায়ী বিশ্লেষণের জন্য তিনিই প্রশান্তচন্দ্রকে অনুরোধ করেন। তাঁকে লেখা ব্রজেন্দ্রনাথের চিঠি থেকে দেখা যায় ব্রজেন্দ্রনাথ পরিসংখ্যান বিষয়ে যথেষ্ট ওয়াকিবহল ছিলেন। এভাবেই প্রশান্তচন্দ্র তাঁর পড়াশোনাকে বাস্তবে প্রয়োগের প্রথম সুযোগ পান। (Prasanta C. Mahalanobis)
এরপর ১৯২০ সাল নাগাদ জুওলজিক্যাল ও অ্যান্থ্রোপলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার অধিকর্তা নেলসন অ্যানানডেলের অনুরোধে প্রশান্তচন্দ্র কলকাতার অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান সমাজের কিছু নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করেন। এই বিষয়ে আগ্রহী হয়ে তিনি জাতিগত বৈশিষ্ট্য নিয়ে আরও কাজ করেন এবং তা করতে গিয়েই তিনি প্রথম তাঁর বিখ্যাত ডি-স্কোয়ার পরিসংখ্যান প্রয়োগ করেন। এই সময় থেকেই তিনি প্রেসিডেন্সি কলেজে কয়েকজন অস্থায়ী সহকারীর সাহায্যে উত্তরবঙ্গ ও উড়িষ্যাতে বন্যানিয়ন্ত্রণ, জলনিকাশী ইত্যাদি নানা সমস্যার সমাধানে রাশিবিজ্ঞানের প্রয়োগ করেন। তাঁর প্রথম সহকারীদের মধ্যে ছিলেন সুধীরকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় ও নিস্তারণ চক্রবর্তী। প্রেসিডেন্সি কলেজের বেকার ল্যাবরেটরির মধ্যেই এক আলাদা ল্যাবরেটরি তৈরি করেন প্রশান্তচন্দ্র। (Prasanta C. Mahalanobis)
“তিনি প্রেসিডেন্সি কলেজে কয়েকজন অস্থায়ী সহকারীর সাহায্যে উত্তরবঙ্গ ও উড়িষ্যাতে বন্যানিয়ন্ত্রণ, জলনিকাশী ইত্যাদি নানা সমস্যার সমাধানে রাশিবিজ্ঞানের প্রয়োগ করেন।”
১৯৩১ সালের জুলাই মাসে ইম্পিরিয়াল (এখন ইন্ডিয়ান) কাউন্সিল ফর এগ্রিকালচারাল রিসার্চ কৃষি বিষয়ক কাজের জন্য তিন বছরে বার্ষিক আড়াই হাজার টাকা মঞ্জুর করে। সেই প্রকল্পে প্রশান্তচন্দ্রের ছাত্র শুভেন্দুশেখর বসুকে অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে নিয়োগ করা হয়। প্রশান্তচন্দ্র এই সময় থেকে তাঁর ল্যাবরেটরিকে এক স্থায়ী কাঠামো দেওয়ার কথা ভাবছিলেন। তাঁর বন্ধু কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক হরিশচন্দ্র সিংহ ও শুভেন্দুশেখরের আগ্রহে তিনি সেই দিকে অগ্রসর হন। (Prasanta C. Mahalanobis)
১৯৩১ সালের ১৭ ডিসেম্বর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক (ও পরে উপাচার্য) প্রমথনাথ ব্যানার্জি, ফলিত গণিত বিভাগের অধ্যাপক নিখিলরঞ্জন সেন ও প্রশান্তচন্দ্রের উদ্যোগে এক সভা হয়; সভাপতিত্ব করেন স্যার রাজেন্দ্রনাথ মুখার্জি। সভাতে ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিকাল ইন্সটিটিউট স্থাপনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। রাজেন্দ্রনাথ মুখার্জী হন তার প্রথম প্রেসিডেন্ট। পরের বছর, ২৮ এপ্রিল সেটি নিবন্ধীকৃত অর্থাৎ রেজিস্টার করা হয়। ১৯৩৩ সাল থেকে আইএসআই-এর গবেষণালব্ধ ফল প্রকাশের জন্য প্রশান্তচন্দ্র ‘সংখ্যা’ নামের একটি পত্রিকা শুরু করেন। এটি এখন রাশিবিজ্ঞানে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে একটি সুপরিচত গবেষণা পত্রিকা হিসাবে পরিচিত। ১৯৩৫ সাল থেকে ভারত সরকার আই.এস.আই-কে বার্ষিক পাঁচ হাজার টাকা মঞ্জুর করে। (Prasanta C. Mahalanobis)

আমরা যদি একটু পিছিয়ে যাই, তাহলে দেখব আমাদের দেশে ভারতীয়দের উদ্যোগে স্থাপিত অধিকাংশ বিজ্ঞান গবেষণা প্রতিষ্ঠানই ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী কলকাতায় তৈরি হয়েছিল। প্রথম এমন মৌলিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান হল ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দি কাল্টিভেশন অফ সায়েন্স; ১৮৭৬ সালে ডাক্তার মহেন্দ্রলাল সরকার এটি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯১৪ সালে স্যার আশুতোষের চেষ্টায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে তৈরি হয় ইউনিভার্সিটি কলেজ অফ সায়েন্স। ১৯১৭ সালে জগদীশচন্দ্র, বসু বিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এর পরের উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠানটিই হল আই.এস.আই। কলকাতার বাইরে প্রথম উল্লেখযোগ্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্থাপিত হয় ব্যাঙ্গালোরে; ১৯১০ সালে টাটারা তৈরি করেন ইন্সটিটিউট অফ সায়েন্স। নিচের তালিকাতে ভারতে রাশিবিজ্ঞানের সুচনা ও আইএসআই-এর প্রথম যুগের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি মাইলফলক দেওয়া আছে। (Prasanta C. Mahalanobis)
১৮৯৫ | কলকাতাতে স্ট্যাটিস্টিক্যাল ব্যুরো স্থাপন |
১৯০৫ | কলকাতাতে ডিপার্টমেন্ট অফ কমার্সিয়াল ইন্টালিজেন্স এন্ড স্ট্যাটিসটিক্স প্রতিষ্ঠা |
১৯৩১ | আইএসআই স্থাপন |
১৯৩১ | ইম্পিরিয়াল কাউন্সিল অফ এগ্রিকালচারাল রিসার্চ-এর পরিসংখ্যান শাখার সূচনা |
১৯৩৩ | ‘সংখ্যা’ প্রকাশ |
১৯৩৮ | প্রথম সারা ভারত রাশিবিজ্ঞান সম্মেলন, সভাপতি বিখ্যাত রাশিবিজ্ঞানী রোনাল্ড ফিশার |
১৯৩৯ | আই.এস.আই-তে এক বছরের পাঠক্রম শুরু |
১৯৩৭-১৯৪২ | আই.এস.আই-এর পরিচালনাতে বাংলাদেশে পাট উৎপাদন নিয়ে বড় মাপের নমুনা সমীক্ষা |
১৯৪১ | কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক স্তরে পরিসংখ্যান পাঠের সূচনা ও স্নাতকোত্তর বিভাগ প্রতিষ্ঠা, বিভাগীয় প্রধান প্রশান্তচন্দ্র, সমস্ত শিক্ষকই আই.এস.আই-এর গবেষক |
১৯৪২ | ইন্ডিয়ান সায়েন্স কংগ্রেসে গণিত শাখাতে পরিসংখ্যানবিদ্যার অন্তর্ভুক্তি |
১৯৪৫ | প্রশান্তচন্দ্র রয়্যাল সোসাইটির ফেলো নির্বাচিত |
১৯৪৫ | ইন্ডিয়ান সায়েন্স কংগ্রেসে স্বতন্ত্র শাখা হিসাবে পরিসংখ্যানবিদ্যার আত্মপ্রকাশ |
১৯৫০ | স্বাধীন ভারতে ন্যাশনাল স্যাম্পেল সার্ভের সূচনা, পৃথিবীর প্রথম বহুমাত্রিক স্যাম্পেল সার্ভে |
১৯৫৩ | আই.এস.আই বরানগরে নিজস্ব ক্যাম্পাসে স্থানান্তরিত |
সরকার রাশিবিজ্ঞানের গুরুত্ব বুঝতে পেরেছিল। ১৯৩২ থেকে ১৯৩৯-এর মধ্যে ১৫০ জন সরকারি কর্মচারি আই.এস.আই-তে স্বল্পকালীন ট্রেনিং নিয়েছিলেন। প্রথম যুগে প্রশান্তচন্দ্রের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন আরও কয়েকজন তরুণ। এঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য রাজচন্দ্র বসু, সমরেন্দ্রনাথ রায়, জিতেন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত, কেশবন রাঘবন নায়ার, দেবব্রত লাহিড়ী, রামকৃষ্ণ মুখার্জী, অনিল ভট্টাচার্য, অজিত দাশগুপ্ত, সি.আর.রাও প্রমুখ। সবাই অবশ্য আই.এস.আই-তে সমস্ত কর্মজীবন কাটিয়েছিলেন এমন নয়। যেমন রাজচন্দ্র ও সমরেন্দ্রনাথ ১৯৪০-এর দশকের শেষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক হিসাবে যোগ দেন। সকলের সম্মিলিত প্রয়াসে আই.এস.আই এমনই আন্তর্জাতিক খ্যাতি লাভ করছিল যে ১৯৪৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম স্ট্যাটিসটিক্স ইন্সটিটিউট স্থাপনের সময় তাকেই মডেল করা হয়েছিল। (Prasanta C. Mahalanobis)
আরও পড়ুন: স্পিন আবিষ্কারের শতবর্ষ, অটো স্টার্ন ও এক ‘ভুল’ পরীক্ষা
সরকারি স্তরে নমুনা সমীক্ষা নিয়ে বিরোধিতা সে সময় সব দেশেই ছিল, ভারতও তার ব্যতিক্রম ছিল না। ১৯৪৩-এর দুর্ভিক্ষের পরে সরকার আই.এস.আইকে বাংলাতে ধান উৎপাদন বিষয়ে সমীক্ষার দায়িত্ব দেয়। মার্কিন পরিসংখ্যানবিদ উইলিয়াম ডেমিং স্মৃতিচারণা করেছেন যে প্রশান্তচন্দ্র এক মন্ত্রীকে বোঝাতে না পেরে ডেমিং-কে সেই দায়িত্ব দিয়েছিলেন। ডেমিং-ও সফল হননি, কিন্তু নির্বাচনে সেই মন্ত্রী পরাজিত হওয়াতে নিজে থেকে সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। (Prasanta C. Mahalanobis)
প্রথম যুগে প্রতিষ্ঠান চালাতে প্রশান্তচন্দ্রকে অর্থের সমস্যাতে পড়তে হয়েছিল। ১৯৩০-এর দশকে আই.এস.আই-এর বাজেট ছিল মাত্র কয়েকহাজার টাকা, কিন্তু তাও জোগাড় করা যাচ্ছিল না। এই সময় বিশেষ সাহায্য করেছিলেন তাঁর পুরানো বন্ধু ও আই.সি.এস অফিসার চিন্তামন দ্বারকানাথ দেশমুখ। দেশমুখ ১৯৪৩ সালে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর হয়েছিলেন ও ১৯৫০ থেকে ১৯৫৭ ছিলেন স্বাধীন ভারতের অর্থমন্ত্রী। দেশমুখের চেষ্টাতেই প্রশান্তচন্দ্র জাতীয় স্তরে পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন। দেশমুখ ১৯৪৫ থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত আই.এস.আই কাউন্সিলের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। (Prasanta C. Mahalanobis)

এই লেখাতে রাশিবিজ্ঞান গবেষণা নিয়ে কোনও আলোচনা করা হয়নি, সে ক্ষমতাও বর্তমান লেখকের নেই। আই.এস.আই-এর সেই ইতিহাসও যথেষ্ট গৌরবময়। পঞ্চাশের দশকে সরকার ও আই.এস.আই-এর মধ্যে উদ্দেশ্য ও কর্মপদ্ধতি নিয়ে বিরোধ বেঁধেছিল কিন্তু প্রশান্তচন্দ্রের দৃঢ়তার কাছে সরকারকে হার মানতে হয়েছিল। ১৯৫৯ সাল থেকে আই.এস.আই জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হিসাবে চিহ্নিত হয়। সংসদে সেই বিল পেশ করেন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু। সেখানে তিনি স্বশাসনের উপর জোর দিয়েছিলেন এবং আই.এস.আই-কে সরকারি নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তনের বিরুদ্ধে মত প্রকাশ করেন। বর্তমানে কলকাতার বাইরেও বেশ কয়েকটি শহরে আই.এস.আই-এর কেন্দ্র স্থাপিত হয়েছে, আই.এস.আই-তেও রাশিবিজ্ঞান বহির্ভূত নানা বিষয়ে গবেষণা হচ্ছে। যে কটি ভারতীয় প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সমীহ আদায় করে নিতে পেরেছে তাদের মধ্যে প্রথম সারিতে থাকবে আই.এস.আই। (Prasanta C. Mahalanobis)
মুদ্রিত ও ডিজিটাল মাধ্যমে সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
তথ্যসূত্র:
প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশ- হীরেন্দ্রনাথ রায়, পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি
Mahalanobis and the Art and Science of Statistics: The Early Days, J.K. Ghosh, Indian Journal of History of Science, Vol 29, p. 89 (1994)
Indian Statistical Institute: Numbers and Beyond, 1931–47, Jayanta Ghosh, Pulakesh Maiti and Anil K. Bera, in Science and Modern India: An Institutional History c. 1784-1947, p. 1013, Ed. Uma Dasgupta, Vol. XV Part 4, History of Science, Philosophy and Culture in Indian Civilization, Gen. Editor D.P. Chattopadhyay
P.C. Mahalanobis (1893-1972), W. Edwards Deming, The American Statistician, Vol. 26. p. 49 (1972)
গৌতম গঙ্গোপাধ্যায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক। তিনি বর্তমানে সত্যেন্দ্রনাথ বসু প্রতিষ্ঠিত বঙ্গীয় বিজ্ঞান পরিষদের কর্মসচিব। বাংলায় বিজ্ঞান বিষয়ে লিখতে ভালোবাসেন। প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে আছে সত্যেন্দ্রনাথের একটি ছোট জীবনী।